Ajker Patrika

বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলার চাপ সৃষ্টির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ইমরানের

বিচারপতির বিরুদ্ধে মামলার চাপ সৃষ্টির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান ইমরানের

ঢাকা: বিরোধী পক্ষের বিরুদ্ধে মামলা ও তদন্ত শুরুর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের ফেডারেল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এফআইএ) সাবেক মহাপরিচালক বশির মেমন সম্প্রতি দেশটির বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেল আয়োজিত আলোচনায় এমন অভিযোগ তুলেছেন। অবশ্য আজ শুক্রবার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান খান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পাকিস্তানের দৈনিক দ্য ডন–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, এফআইএর সাবেক মহাপরিচালক গত কয়েক দিনে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে দেওয়া বক্তব্যে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন বলা যায়। তাঁর অভিযোগ, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কাজি ফায়েজ ইসার বিরুদ্ধে তদন্ত ও মামলা করার চাপ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। শুধু তাই নয়, ইমরান ওতাঁর দলের লোকেরা বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাঁকে চাপ দিয়েছেন। এমনকি বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো অপরাধের প্রমাণ না থাকলেও তাঁরা এ চাপ দিয়েছেন। তাঁরা কোনো কিছুই শুনতে চাইতেন না।

বশির মেমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তান মুসলিম লিগ–নওয়াজ (পিএমএল–এন) নেতা খাজা আসিফের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে মামলা করার চাপ দিয়েছিলেন। আসিফের অপরাধ, তাঁর বিদেশি ওয়ার্ক পারমিট রয়েছে। একইভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে যুক্ত থাকার অভিযোগে মামলা করার চাপ দেন তিনি। তবে তেমন কোনো প্রমাণ না থাকায় এসব চাপের কাছে নতি স্বীকার করেননি বলে জানান বশির মেমন। এ জন্য অবসরের নির্ধারিত সময়ের কয়েক দিন বাকি থাকতেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার এসব সাংবাদিকদের সঙ্গে বৈঠককালে এ সম্পর্কিত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন ইমরান খান। আজ শুক্রবার অন্য আরেক সভায় ইমরান এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে পুরো অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বশির মেমনের অভিযোগের তির ইমরানের সঙ্গে সঙ্গে আইনমন্ত্রী ফারোঘ নাসিম ও জবাবদিহি উপদেষ্টা শেহজাদ আকবরের দিকেও ছুটে গেছে। ইমরান খানের মতো তাঁরাও বশিরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। শুধু তাই নয়, তাঁরা বশির মেমনের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন।

আজ শুক্রবার আবারও বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইমরান খান। তিনি বলেন, `যখন আমি জানেন যে অভিযোগ দায়ের করা যাবে না, তবে কেন তা করার নির্দেশ দেব? এফআইএর সাবেক প্রধানকে কখনো আমি এ জাতীয় নির্দেশ দিইনি।'

তবে পিএমএল-এন নেতা খাজা আসিফের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে স্বীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। একজন স্থায়ী মন্ত্রী কীভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) ইকামা পেতে পারেন? এই তদন্ত না করার কারণেই বশির মেমনকে তাঁর পদ থেকে সরানো হয়েছে বলেও স্বীকার করেন তিনি।

ইমরান খানের এই বিলম্বিত স্বীকারোক্তি কিন্তু অনেকগুলো প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। দ্য ডনের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, বিষয়টি এখানেই শেষ হওয়া উচিত নয়। পদে থাকার সময় বশির মেমন বেশ দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। এখন তিনি সেই পদে নেই। এদিকে রাষ্ট্রের শীর্ষ পদধারীর বিরুদ্ধে তিনি বেশ গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। এসব অভিযোগের কিছুটাও যদি সত্য হয়, তবে তা নিয়ে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল সবার উদ্বিগ্ন হওয়া উচিত। এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে, পকিস্তানের ক্ষমতায় থাকা সবাই সব সময় বিরোধী পক্ষকে ধরাশায়ী করতে এমন বাঁকাপথে হেঁটেছে। নির্বাহী ক্ষমতাকে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করেছে তারা। নিজের লোকেদের সাত খুন মাফ থেকে শুরু করে বিরোধী পক্ষকে মাঠছাড়া করা পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই তারা এই ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটিয়েছে। এই বিষয়টিই বদলে দেওয়ার কথা বলে ক্ষমতায় এসেছিল ইমরান খানের তেহরিক–ই–ইনসাফ (পিটিআই)। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ইমরানও তার ব্যতিক্রম নন। এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উচিত খোলাখুলি কথা বলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘অপারেশন সিঁদুরে’ তিন শত্রুর মোকাবিলা করেছে ভারত, অন্য দেশের নাম জানালেন সেনা কর্মকর্তা

যুবলীগ নেতাকে ধরতে নয়, বাসাটি ঘেরাওয়ের নেপথ্যে অন্য কারণ

‘একটা মার্ডার করেছি, আরও ১০০টা মার্ডার করব’, ভিডিও ভাইরাল

জুলাই আন্দোলনের প্রথম অংশ ‘অবশ্যই মেটিকুলাসলি ডিজাইনড’: মাহফুজ

‘মালয়েশিয়ায় গ্রেপ্তার যুবকেরা সিরিয়া ও বাংলাদেশের জঙ্গিদের জন্য অর্থ পাঠাত’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত