Ajker Patrika

পাকিস্তানের নির্বাচন: ফলাফল-সংক্রান্ত দুই-তৃতীয়াংশ অভিযোগের নিষ্পত্তি হয়নি ১৪ মাসেও

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ২০
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের একটি দৃশ্য। ছবি: এএফপি
২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের একটি দৃশ্য। ছবি: এএফপি

পাকিস্তানের জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনের পর ফলাফল-সংক্রান্ত বিষয়ে তিন শতাধিক চ্যালেঞ্জ আবেদন জমা পড়েছিল। কিন্তু নির্বাচন হয়ে যাওয়ার এক বছরেরও বেশি সময় পর দুই-তৃতীয়াংশ আবেদন নিষ্পত্তি হয়নি। পাকিস্তানি অধিকার গোষ্ঠী ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন নেটওয়ার্কের (ফেফেন) প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের খবরে বলা হয়েছে, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচন হয়। সাধারণ নির্বাচনের ১৪ মাসেরও বেশি সময় পরও জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের আসনে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়নি।

ফেফেন জানিয়েছে, চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালগুলো সাধারণ নির্বাচন-সংক্রান্ত ২৪টি আবেদনের নিষ্পত্তি করেছে। এর ফলে মোট নিষ্পত্তিকৃত আবেদনের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৬টি, যা চার প্রদেশে বিচারাধীন মোট ৩৭২টি মামলার সাড়ে ৩৬ শতাংশ। এই ৩৭২টি মামলার ২৬ শতাংশ জাতীয় পরিষদ আসন-সংক্রান্ত এবং ৪২ শতাংশ প্রাদেশিক পরিষদ আসন-সংক্রান্ত।

নিষ্পত্তি হওয়া ২৪টি আবেদনের মধ্যে ২১টি পাঞ্জাবের, দুটি বেলুচিস্তানের এবং একটি সিন্ধ প্রদেশের। এ সময়ে খাইবার পাখতুনখাওয়া থেকে কোনো আবেদনের নিষ্পত্তি হয়নি। পাঞ্জাবে লাহোরের দুটি ট্রাইব্যুনাল আটটি, রাওয়ালপিন্ডির একটি ট্রাইব্যুনাল সাতটি এবং বাহাওয়ালপুরের একটি ট্রাইব্যুনাল ছয়টি মামলার নিষ্পত্তি করেছে। কোয়েটার দুটি ট্রাইব্যুনাল প্রত্যেকে একটি করে মামলার নিষ্পত্তি করেছে, আর করাচির একটি ট্রাইব্যুনাল মাত্র একটি মামলা নিষ্পত্তি করেছে।

ফেফেন জানিয়েছে, আগের মাসগুলোর তুলনায় পাঞ্জাবে নিষ্পত্তি হওয়া আবেদনের সংখ্যা বাড়লেও সার্বিকভাবে নিষ্পত্তির গতি কমেছে। এর কারণ হতে পারে, এই সময়ে চারটি ট্রাইব্যুনাল প্রায় অকার্যকর ছিল। এর মধ্যে দুটি খাইবার পাখতুনখাওয়াতে, একটি পাঞ্জাবে এবং ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল টেরিটরির (আইসিটি) একমাত্র ট্রাইব্যুনালটি অকার্যকর ছিল।

এখন পর্যন্ত বেলুচিস্তানের তিনটি নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল ওই প্রদেশে জাতীয় ও প্রাদেশিক আসনের জন্য দাখিল করা মোট ৫১টি আবেদনের মধ্যে ৪৩ টির (৮৩ শতাংশ) নিষ্পত্তি করেছে। পাঞ্জাবের আটটি ট্রাইব্যুনাল ১৯২টি আবেদনের মধ্যে ৬৬টির (৩৪ শতাংশ) নিষ্পত্তি করেছে। সিন্ধের পাঁচটি ট্রাইব্যুনাল ৮৩টি আবেদনের মধ্যে ১৮টির (২২ শতাংশ) নিষ্পত্তি করেছে। কেপির ছয়টি ট্রাইব্যুনাল ৪২টি আবেদনের মধ্যে ৯ টির (২১ শতাংশ) নিষ্পত্তি করেছে।

এ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হওয়া ১৩৬টি আবেদনের মধ্যে ১৩৩টি খারিজ হয়েছে এবং ৩টি মঞ্জুর হয়েছে। খারিজ হওয়া ১৩৩টি আবেদনের মধ্যে ৫২টি অগ্রহণযোগ্যতার কারণে খারিজ হয়েছে। এর মধ্যে ১০টি জাতীয় পরিষদ আসন সংক্রান্ত এবং ৪২টি প্রাদেশিক পরিষদ আসন-সংক্রান্ত ছিল।

পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশি আবেদনকারী, মোট আবেদনের ৫৫ শতাংশ তারা দাখিল করেছিলেন। এরপর রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রার্থী (১৩ শতাংশ), পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থী (৮ শতাংশ), স্বতন্ত্র প্রার্থী (৭ শতাংশ) এবং জেইউআই-এফ প্রার্থী (৬ শতাংশ)।

আরও ১৬টি অন্যান্য দলের প্রার্থীরা সম্মিলিতভাবে বাকি ১১ শতাংশ আবেদন করেছেন। এখন পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রায় ৫৬ শতাংশ, পিপিপি প্রার্থীদের ৫০ শতাংশ, পিএমএল-এন এবং জেইউআই-এফ প্রার্থীদের ৪২ শতাংশ করে এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের ৫৮ শতাংশ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়েছে।

পিএমএল-এনের নির্বাচিত প্রার্থীরাই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মামলায় বিবাদী, মোট আবেদনের ৩৯ শতাংশ তাদের বিজয়কে চ্যালেঞ্জ করে দাখিল করা হয়েছে। এরপর রয়েছে পিটিআই সমর্থিত প্রার্থী (১৬ শতাংশ), এমকিউএম-পি এবং পিপিপি প্রার্থী (১৩ শতাংশ করে), অন্য কোনো দলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন স্বতন্ত্র প্রার্থী (৬ শতাংশ) এবং জেইউআই-এফ (৫ শতাংশ)। আরও ১১টি অন্যান্য বিবাদী দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে বাকি ৮ শতাংশ আবেদন রয়েছে।

এখন পর্যন্ত অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা আবেদনের প্রায় ৫৮ শতাংশ, পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ৪৫ শতাংশ, জেইউআই-পি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ৩৯ শতাংশ, পিএমএল-এন এবং পিপিপি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ৩৬ শতাংশ করে, এমকিউএম-পি প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ২৭ শতাংশ এবং অন্যান্য দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে ২১ শতাংশ আবেদনের নিষ্পত্তি হয়েছে।

ফেফেনের প্রতিবেদন অনুসারে, নির্বাচন ট্রাইব্যুনালগুলোর ৫৪টি রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনটি আপিল করেছেন জয়ী প্রার্থীরা, যাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন-সংক্রান্ত আবেদনগুলো মঞ্জুর করা হয়েছিল। এ ছাড়া, সংশ্লিষ্ট নির্বাচন ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক আবেদন খারিজ করার বিরুদ্ধে ৫১টি আপিল দায়ের করা হয়েছে।

এই ৫১টি আপিলের মধ্যে চারটি সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শেষে খারিজ হয়েছে। বাকি ৪৭টি আপিল এখনো বিচারাধীন। নির্বাচন-সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করার বিরুদ্ধে দায়ের করা ৫১টি আপিলের মধ্যে ১১টি দাখিল করেছেন জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা। একইভাবে, ৪০টি আপিল দাখিল করেছেন প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থীরা। এর মধ্যে ২৪টি বেলুচিস্তান থেকে, ১২টি পাঞ্জাব থেকে এবং ৪টি সিন্ধ থেকে।

এই ৫১টি আপিলের মধ্যে ২২টি দাখিল করেছেন পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা, ছয়টি পিপিপি প্রার্থী, পাঁচটি পিএমএল-এন প্রার্থী, চারটি জেইউআই-পি প্রার্থী, তিনটি স্বতন্ত্র প্রার্থী, দুটি করে ন্যাশনাল পার্টি, আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি এবং জামহুরি ওয়াতান পার্টির প্রার্থী। একইভাবে, হাজারা ডেমোক্রেটিক পার্টি, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি, বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি আওয়ামী, খাদিম-এ-সিন্ধ এবং বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির প্রার্থীদের পক্ষ থেকে একটি করে আপিল দাখিল করা হয়েছে।

বিবাদীদের ক্ষেত্রে, ২৫টি আপিল দাখিল করা হয়েছে পিএমএল-এন-এর জয়ীদের বিরুদ্ধে, ছয়টি পিপিপি, পাঁচটি পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র, চারটি করে এমকিউএম-পি, জেইউআই-এফ এবং অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত নয় এমন স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে, দুটি ন্যাশনাল পার্টির বিরুদ্ধে এবং একটি বেলুচিস্তান আওয়ামী পার্টির জয়ীর বিরুদ্ধে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বৃষ্টি, বন্যা আর আবর্জনা: গাজাবাসীর অন্তহীন শীতের রাতের দুঃসহ বেদনা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজায় বৃষ্টি ও বন্যায় পরিস্থিতি অনেক বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের বাইরে যেতে না দেওয়া মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিনই নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে। ছবি: আনাদোলু
গাজায় বৃষ্টি ও বন্যায় পরিস্থিতি অনেক বেশি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের বাইরে যেতে না দেওয়া মৃত্যুর মিছিলে প্রতিদিনই নতুন নাম যুক্ত হচ্ছে। ছবি: আনাদোলু

প্রবল বৃষ্টি আর তীব্র বাতাসে গাজা উপত্যকার বাস্তুচ্যুত মানুষের জীবন আবারও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। মধ্য গাজার আল-ইয়ারমুক স্টেডিয়ামে একটি অস্থায়ী তাঁবুতে স্ত্রী ও সাত মেয়েকে নিয়ে থাকেন সাবার দাওয়াস। বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলের হামলায় বাড়ি ধ্বংস হওয়ার পর থেকেই এই তাঁবুই তাদের একমাত্র আশ্রয়। শীত শুরুর পর থেকে প্রতিদিনই তাঁবু ভেঙে পড়ার ভয়ে ছিলেন তিনি। দুই সপ্তাহ আগে টানা বৃষ্টিতে তাঁবুর ভেতরে প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত পানি জমে যায়। ঠাণ্ডায় তার মেয়েরা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা ধার করে প্লাস্টিকের ত্রিপল কিনে কাঠের খুঁটি দিয়ে তাঁবু শক্ত করার চেষ্টা করেছিলেন সাবার। কিন্তু কয়েক দিন আগে গাজায় আঘাত হানা সর্বশেষ ঝড়ে সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।

মিডল ইস্ট আইকে সাবার বলেন, “বৃষ্টির প্রথম রাত আমি নিজের হাতে তাঁবুটি ধরে রেখেছিলাম, যখন চারদিক থেকে বৃষ্টি ঢুকছিল।” তিনি জানান, “মনে হচ্ছিল যেন আমি কিছুই করিনি। বৃষ্টির প্রথম কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তাঁবুটি আমাদের ওপর ভেঙে পড়েছিল।” ভেতরের সবকিছু ভিজে যাওয়ায় তার মেয়েরা সারারাত কাঁপতে থাকে। সাবার বলেন, “আমাদের সব কাপড়, কম্বল এবং খাবার ভিজে গিয়েছিল। আমি জানতাম না কী করব বা আমার পরিবারকে কোথায় নিয়ে যাব।”

তার সবচেয়ে ছোট মেয়ে, মাত্র দুই বছর বয়সী, পেটের ক্যান্সারে আক্রান্ত। দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার কারণে ঠাণ্ডা তার জন্য আরও বিপজ্জনক। সাবার বলেন, “আমি তাকে ক্যাম্পের এক তাঁবু থেকে অন্য তাঁবুতে সরিয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি। সবকিছু প্লাবিত, এবং তার ফ্লু হয়েছে। আমি তার জন্য ওষুধও জোগাড় করতে পারছি না। আমি সেই দিন আসার আগে মরে যেতে চাইতাম, যেদিন আমি আমার মেয়েদের ঠাণ্ডায় কাঁপতে দেখব যখন আমি তাদের উষ্ণতা দিতে পারছি না।” যুদ্ধবিরতির বাস্তবতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “একটি যুদ্ধবিরতি কি এমন দেখতে হয়? আমরা আমাদের বাড়িতে থাকার পরিবর্তে ভঙ্গুর তাঁবুতে ঠাণ্ডায় মারা যাচ্ছি।”

এই দুর্ভোগ শুধু একটি পরিবারের নয়। ক্যাম্পজুড়ে বহু পরিবার একই পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। কয়েকটি তাঁবু দূরে থাকেন ৩৬ বছর বয়সী সানা আল-আয়ুবি। তার স্বামী, যিনি দুই পা হারিয়েছেন, এবং তাদের দুই সন্তান সারাহ ও মোহাম্মদকে নিয়ে তিনি একটি জীর্ণ তাঁবুতে থাকেন। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিম গাজা সিটির তেল আল-হাওয়ায় তাদের বাড়িতে ইসরায়েলি বিমান হামলায় এই ক্ষতি হয়। তখন সানা গর্ভবতী ছিলেন এবং গুরুতর আহত হন। সুস্থ হয়ে ওঠার পর থেকেই পরিবারটি তাঁবুতেই আশ্রয় নিয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে অকেজো পয়ঃনিষ্কাশন কূপ উপচে পড়ে। সানা বলেন, “তিন দিন ধরে বৃষ্টি থামেনি। ওপর থেকে আমাদের ওপর জল পড়ছে, আর তাঁবুর নিচ থেকে পয়ঃনিষ্কাশন উঠে আসছে।” এক পর্যায়ে তাঁবুর মাঝখানের কাঠের খুঁটি ভেঙে পরিবারের ওপর পড়ে যায়। তিনি বলেন, “আমার স্বামী জলের মধ্যে হামাগুড়ি দিচ্ছিলেন। তার শরীর পুরোপুরি ভিজে গিয়েছিল। আমি একটি ঝাঁটা দিয়ে তাঁবুটি ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলাম, কিন্তু বৃষ্টি খুব তীব্র ছিল।” তাঁবু পানিতে ডুবে থাকায় তার স্বামী কৃত্রিম পা ব্যবহার করতে পারছেন না। সানা জানান, “আমাকে তাকে বাইরে নিয়ে যেতে হয়েছিল। আমরা ঠাণ্ডায় জমে যাচ্ছি। তার পায়ে ব্যাকটেরিয়া তৈরি হচ্ছে কারণ সেগুলি এতক্ষণ ভেজা ছিল।”

পয়ঃনিষ্কাশনের পানি ঢুকে পড়ায় তাদের বেশিরভাগ বিছানা ও কাপড় ফেলে দিতে হয়েছে। তাঁবুর নিচের একটি পয়ঃনিষ্কাশন গর্ত ফেটে যাওয়ার পর গাজা পৌরসভার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কেউ আসেনি বলে অভিযোগ তার। যুদ্ধের আগে সানা ছিলেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং নিজের বাড়ির নিচে একটি ছোট লার্নিং সেন্টার চালাতেন। এখন পুরো পরিবার ক্যাম্পে বিতরণ করা দাতব্য খাবারের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, “আমরা নতুন শুকনো জামাকাপড়, একটি তাঁবু বা ওষুধ কেনার সামর্থ্য রাখি না।”

উত্তর গাজা সিটির আল-কারামা এলাকায় ২৮ বছর বয়সী নেসমা হাসান তার চার বছরের মেয়েকে নিয়ে পরিবারের ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির অবশিষ্ট অংশে থাকছেন। তার স্বামী আলী ২০২২ সালে একটি ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হন। যুদ্ধবিরতির এক মাস আগে তাদের চারতলা ভবনটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কেবল দুটি ছাদযুক্ত কক্ষ অবশিষ্ট থাকে। নেসমা বলেন, “আমরা শীতের জন্য প্রস্তুত হওয়ার চেষ্টা করেছিলাম। আমরা কাঠ, ত্রিপল এবং প্লাস্টিকের চাদর কিনেছিলাম। কিন্তু যখন বৃষ্টি শুরু হলো, বাতাস সবকিছু ছিঁড়ে নিয়ে গেল।” অবশিষ্ট কক্ষগুলোর প্রতিটি কোণ থেকেই পানি চুইয়ে পড়ছিল। তিনি বলেন, “আমরা সারারাত জল সরাচ্ছিলাম। আসবাবপত্র এবং তোষক ভিজে গিয়েছিল। বৃষ্টি এত ভারী ছিল যে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছিল না।”

বন্যা থেকে বাঁচতে নেসমা ও তার মেয়ে কক্ষের এক কোণে গুটিসুটি মেরে ছিলেন। নেসমা বলেন, “আমার মেয়ে তিন দিন ধরে ঠাণ্ডায় ভুগছে। আমি তাকে জামাকাপড়ের স্তরে স্তরে মুড়িয়ে রাখি, টুপি এবং গ্লাভস পরাই, কিন্তু এখনও মনে হয় আমরা রাস্তায় ঘুমাচ্ছি।” তিনি জানান, বজ্রপাতের শব্দ, ঘরের ভেতরে বৃষ্টির ফোঁটা আর ধ্বংসস্তূপে বাতাসের শব্দে তার মেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনি বাইরে ধ্বংসস্তূপের ওপর একটি তাঁবু স্থাপনের কথা ভাবছেন। নেসমা বলেন, “যুদ্ধের আগে আমি শীতকাল ভালোবাসতাম। এটি ছিল উষ্ণতা এবং পরিবারের সময়। এখন আমি কেবল এর শেষ হওয়ার অপেক্ষায় থাকি, ভয়ে আছি যে বাড়ির বাকি অংশ আমাদের ওপর ভেঙে পড়বে।”

গাজার সিভিল ডিফেন্স জানিয়েছে, গত তিন দিনে প্রবল বৃষ্টি ও তীব্র বাতাসে আংশিকভাবে ধ্বংস হওয়া বাড়ি ভেঙে পড়ে অন্তত ১১ জন নিহত এবং ১১ জন আহত হয়েছেন। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি জানায়, তারা ১৩টি আংশিকভাবে ধ্বংস হওয়া বাড়ি ধসে পড়ার ঘটনায় সাড়া দিয়েছে, যার বেশিরভাগই গাজা সিটি ও উত্তরাঞ্চলে। একই সঙ্গে শত শত প্লাবিত তাঁবু থেকে পানি সরানো এবং নিষ্কাশন খাল খুলে দেওয়ার কাজ করেছে তাদের দলগুলো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে হামলায় নিহত বেড়ে ১৫, আহত ৪০ জনেরও বেশি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮: ৪৬
হামলার সময় বন্ডি সৈকত আতঙ্কিত মানুষদের ছোটাছুটি। ছবি: সংগৃহীত
হামলার সময় বন্ডি সৈকত আতঙ্কিত মানুষদের ছোটাছুটি। ছবি: সংগৃহীত

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই বিচে এক ইহুদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে দুই বন্দুকধারীর গুলিতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ জনে। এবং ৪০ জনেরও বেশি মানুষ এই ঘটনায় আহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল রোববার এই ঘটনা ঘটে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন—অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম শহরের অন্যতম বড় পর্যটন কেন্দ্র এই বন্ডাই বিচে গুলিবর্ষণের সময় প্রায় ৫০ রাউন্ড গুলি চালানো হয়। ইহুদীদের হানুক্কা উৎসব পালনের জন্য আয়োজিত বার্ষিক এই অনুষ্ঠানে প্রায় ১ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।

পুলিশ বলেছে, বন্দুকধারীদের মধ্যে একজন হলেন ৫০ বছর বয়সী পিতা সাজিদ আকরাম, যিনি অফিসারদের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হয়েছেন। অন্যজন হলেন তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলে নাভিদ আকরাম, যিনি হাসপাতালে পুলিশের হেফাজতে গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন।

অস্ট্রেলিয়ার সময় সন্ধ্যা ৭টা বেজে ৪৭ মিনিটে নিউ সাউথ ওয়েলস পুলিশ এক্সে শেয়ার করা এক পোস্টে জানায়, তারা বন্ডাই বিচে একটি ‘ক্রমবর্ধমান ঘটনা’র প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তারা সতর্ক করে বলে, ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত সবাইক নিরাপদে আশ্রয় নিতে হবে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, কালো পোশাক পরা দুই বন্দুকধারী ভিড়ের দিকে গুলি চালাচ্ছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা একজন অস্ট্রেলীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হেরাল্ডকে বলেন, বন্দুকধারীরা নির্বিচারে শিশু এবং বয়স্কদের লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছে। কিছু ছবিতে লোকজনকে অন্যদের বুকের ওপর সিপিআর করতে দেখা যায়।

এই ঘটনার পর বিরোধী দলের নেতা সুসান লে বলেন, অস্ট্রেলিয়ানরা গভীর শোকে মূহ্যমান, ‘ঘৃণ্য সহিংসতা একটি আইকনিক অস্ট্রেলিয়ান সম্প্রদায়ের কেন্দ্রস্থলে আঘাত করেছে, যে জায়গাটিকে আমরা সবাই খুব ভালোভাবে জানি এবং ভালোবাসি, সেটি হলো বন্ডাই।’ তিনি বলেন, ‘এই হামলায় যে প্রাণহানি হয়েছে তা গুরুতর এবং আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত হয়ে সকল অস্ট্রেলিয়ানকে পুলিশ এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অফিসিয়াল পরামর্শ মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি। এই হামলাটি ঘটেছে যখন আমাদের ইহুদি সম্প্রদায় হানুক্কা বাই দ্য সি উদযাপনের জন্য একত্রিত হয়েছিল। এটি ছিল শান্তি এবং ভবিষ্যতের আশার একটি উদযাপন, যা ঘৃণা দ্বারা ছিন্ন করা হলো।’

অস্ট্রেলিয়ান জিউয়িশ অ্যাসোসিয়েশন এই গুলিবর্ষণের ঘটনায় আলবানিজ প্রশাসনের তীব্র সমালোচনা করেছে এবং বলেছে যে দেশের ইহুদিরা এখন তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, ‘আজ রাতে যা ঘটেছে তা একটি ট্র্যাজেডি, তবে এটি সম্পূর্ণরূপে অনুমেয় ছিল। আলবানিজ সরকারকে বহুবার সতর্ক করা হয়েছিল, কিন্তু ইহুদি সম্প্রদায়কে রক্ষা করার জন্য তারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। আজ রাতে, অনেক ইহুদি ভাবছেন যে অস্ট্রেলিয়ায় তাদের কোনো ভবিষ্যৎ আছে কিনা। আমাদের চিন্তা আমাদের সম্প্রদায় এবং ক্ষতিগ্রস্থ সকলের সাথে রয়েছে, যাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ডাই বিচে আহত এই ব্যক্তি ইসরায়েলে হামাসের হামলার মুখেও পড়েছিলেন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুকধারীর গুলিতে আহত আর্সেন অস্ত্রোভস্কি। ছবি: ডেইলি মেইল
অস্ট্রেলিয়ায় বন্দুকধারীর গুলিতে আহত আর্সেন অস্ত্রোভস্কি। ছবি: ডেইলি মেইল

দুর্ভাগ্য আর কাকে বলে—অস্ট্রেলিয়ার বন্ডাই বিচে বন্দুকধারীর গুলিতে আহত আর্সেন অস্ত্রোভস্কি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার কবলেও পড়েছিলেন। তবে সৌভাগ্য এই যে, দুই ঘটনায়ই তিনি অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন!

রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ডেইলি মেইল জানিয়েছে, বন্ডাই বিচে আহত অস্ত্রোভস্কি একজন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনজীবী। রক্তে ভেজা শরীর ও ব্যান্ডেজে মোড়ানো অবস্থায় তিনি অস্ট্রেলিয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি পরিবার নিয়ে এখানে এসেছিলাম। চারদিকে শিশু, বৃদ্ধ, পরিবার—সবাই আনন্দ করছিল। হঠাৎ করেই সবকিছু বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। চারদিকে গুলির শব্দ, মানুষ দৌড়াচ্ছে, লুকোচ্ছে—পুরো জায়গা জুড়ে ভয়াবহ আতঙ্ক।’

অস্ত্রোভস্কি জানান, কোন দিক থেকে গুলি আসছিল, তা কেউ বুঝতে পারছিল না। তিনি বলেন, ‘আমি নিজ চোখে দেখেছি এক বন্দুকধারী চারদিকে নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে। শিশুদের মাটিতে লুটিয়ে পড়তে দেখেছি, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীদের আহত হতে দেখেছি—এটা ছিল এক রক্তাক্ত বিভীষিকা।’

অস্ত্রোভস্কি এটাও জানান, তিনি ১৩ বছর ইসরায়েলে ছিলেন এবং ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের হামলার মুখোমুখি হওয়ার অভিজ্ঞতাও তাঁর আছে। তাঁর ভাষায়, ‘সেই ঘটনার পর আবার এমন ভয়াবহ দৃশ্য দেখলাম। কখনো ভাবিনি অস্ট্রেলিয়ায়, তাও আবার বন্ডাই বিচের মতো জায়গায় এমন কিছু ঘটবে।’

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বিখ্যাত বন্ডাই বিচে ইহুদি ধর্মীয় উৎসব হানুকা উদ্‌যাপনের সময় ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে শিশুও রয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ২৯ জন। স্থানীয় সময় রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে ‘চানুকাহ বাই দ্য সি’ নামে একটি অনুষ্ঠানের মাঝেই এই হামলা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্যাম্পবেল প্যারেড এলাকায় একটি গাড়ি থেকে নেমে দুই সশস্ত্র ব্যক্তি এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করেন। মুহূর্তের মধ্যেই উৎসবের আনন্দ রূপ নেয় বিভীষিকায়। পর্যটন এলাকা জুড়ে একের পর এক গুলির শব্দ শোনা যায়।

ঘটনাস্থলে বহু মানুষকে আহত অবস্থায় ঘাসের ওপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁদের হাসপাতালে নেওয়া হয়। পুলিশ জানিয়েছে, হামলাকারীদের একজনকে ঘটনাস্থলেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অপরজন আহত অবস্থায় আটক রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯: ৪৯
বন্ডাই বিচে হামলাকারীর অস্ত্র কেড়ে নিয়ে প্রশংসায় ভাসছেন, কে এই পথচারী

সিডনির বন্ডাই বিচে ইহুদিদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সশস্ত্র হামলাকারীর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁকে নিরস্ত্র করেছেন এক পথচারী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর সেই পথচারী হাজারো মানুষের প্রশংসায় ভাসছেন।

ভাইরাল ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, সাদা শার্ট পরা ওই পথচারী পার্কিং লট থেকে দৌড়ে গিয়ে রাইফেল হাতে থাকা হামলাকারীকে পেছন থেকে জাপটে ধরেন। এরপর তিনি হামলাকারীর কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নেন এবং সেটি হামলাকারীর দিকেই তাক করেন।

অকস্মাৎ পেছন থেকে জাপটে ধরায় হামলাকারী ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন এবং পিছু হটেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই পথচারীর এমন সাহসী পদক্ষেপে বহু মানুষের প্রাণ রক্ষা পেয়েছে।

যদিও ওই পথচারীর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি, তবে তাঁর এই অবিশ্বাস্য সাহসিকতার জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মানুষ তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক ব্যক্তি ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার হিরো (একজন সাধারণ বেসামরিক) হামলাকারীর কাছ থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নিয়ে তাঁকে নিরস্ত্র করেছেন। কেউ কেউ সাহসী আর কেউ কেউ...এই ধরনের।’ অন্য একজন বলেছেন, ‘এই অস্ট্রেলিয়ান বন্ডাই বিচে সন্ত্রাসীদের একজনকে নিরস্ত্র করে অসংখ্য জীবন বাঁচিয়েছেন। হিরো।’

নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স এটিকে তাঁর দেখা ‘সবচেয়ে অবিশ্বাস্য দৃশ্য’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘ওই লোকটি একজন প্রকৃত হিরো। তিনি নির্ভয়ে হামলাকারীর দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁকে নিরস্ত্র করলেন এবং অসংখ্য মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবন বিপন্ন করলেন। আমি নিশ্চিত যে, ওই ব্যক্তির সাহসিকতার জন্যই অনেক মানুষ বেঁচে আছেন।’

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজও হামলার সময় অন্যদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসা নাগরিকদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই অস্ট্রেলীয়রা বিপদেও ছুটে গেছেন অন্যদের রক্ষা করতে। তাঁদের সাহসিকতাই অনেক মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে।

উল্লেখ্য, গুলির ঘটনায় এখন পর্যন্ত হামলাকারীসহ ১২ জন নিহত বলে জানা গেছে। দুই হামলাকারীর মধ্যে একজন গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশের হেফাজতে আছেন। এ ঘটনায় তৃতীয় কোনো বন্দুকধারী জড়িত ছিলেন কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ আরও তিনজন গ্রেপ্তার

হাদিকে গুলি: আসামি গ্রেপ্তারের আশা ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

বুদ্ধিজীবী হত্যার দায়ে জামায়াতের দুই ছাত্রনেতা আশরাফ ও মুঈনুদ্দীনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল ট্রাইব্যুনাল

জামায়াত প্রার্থীর সভায় গান গাওয়া সেই পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত

হাদিকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হবে: প্রেস উইং

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত