অনলাইন ডেস্ক
মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি ইরান ও ইসরায়েল। যুগের পর যুগ ধরে চরম বৈরী সম্পর্ক এই দুই শক্তির মধ্যে। গত কয়েক দিনে যা আরও বেড়েছে। ১৯৭৯ সালের পর দুই পক্ষের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ চললেও সরাসরি লড়াই ছিল না। এর আগে গত বছর দুই দফা পাল্টাপাল্টি হামলা হলেও খুব বড় আকার ধারণ করেনি। তবে এবার ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার পর উত্তেজনা চরমে উঠেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুরোপুরি সংঘাতে জড়াবে দুপক্ষ। কিন্তু সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?
তিন বাহিনীর সক্ষমতা
যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংকট্যাংক দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রকাশিত ‘দ্য মিলিটারি ব্যালেন্স’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, সেনাসংখ্যার হিসাবে এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের সক্রিয় সেনাসদস্য ৬ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ৩ লাখ ৫০ হাজার জন রয়েছেন মূল সেনাবাহিনীতে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসিতে আছেন ১ লাখ ৯০ হাজার জন সদস্য। নৌবাহিনীতে ১৮ হাজার, বিমানবাহিনীতে ৩৭ হাজার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটে রয়েছেন ১৫ হাজার সেনাসদস্য।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সক্রিয় সেনাসদস্য প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে সেনাবাহিনীতে আছেন ১ লাখ ২৬ হাজার, নৌবাহিনীতে ৯ হাজার ৫০০ ও বিমানবাহিনীতে ৩৪ হাজার জন। তবে রিজার্ভ সেনার সংখ্যায় এগিয়ে আছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনা ৪ লাখ ৬৫ হাজার সদস্য নিয়ে গঠিত। আর ইরানের রিজার্ভ সেনা রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার জন।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চের হিসাব অনুযায়ী, সামরিক খাতে ইরানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি ব্যয় করে ইসরায়েল। ২০২৩ সালে ইসরায়েল সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ইরান ব্যয় করেছে মাত্র ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
অস্ত্রশস্ত্রের হিসাবেও এগিয়ে আছে ইরান। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের ট্যাংক আছে ১০ হাজার ৫১৩টি, ভারী অস্ত্র আছে ৬ হাজার ৭৯৮ ও সাঁজোয়া যান আছে ৬৪০টি। ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে ৫০টি হেলিকপ্টার আছে। আর ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর আছে পাঁচটি। অন্যদিকে ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে ট্যাংক আছে ৪০০টি, ভারী অস্ত্র আছে ৫৩০টি এবং সাঁজোয়া যান আছে ১ হাজার ১৯০টি।
নৌবাহিনীর সক্ষমতার দিক দিয়েও এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের নৌবহরে আছে ১৭টি ট্যাকটিক্যাল সাবমেরিন (ছোট ও দ্রুত হামলার উপযোগী ডুবোজাহাজ), ৬৮টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ, সাতটি করভেট (ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ), ১২টি ল্যান্ডিং শিপ (সৈন্য ও যানবাহন পরিবহনের জন্য), ১১টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট (সৈন্য নামানোর ছোট জাহাজ) এবং ১৮টি লজিস্টিক ও সাপোর্ট যান (সহায়ক সরঞ্জাম ও জাহাজ)। বিপরীতে ইরানের আছে কেবল পাঁচটি সাবমেরিন এবং ৪৯টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ।
বিমানবাহিনীর সক্ষমতার হিসাবে কিছুটা এগিয়ে আছে ইসরায়েল। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, ইরানের বিমানবাহিনীর ৩১২টি যুদ্ধবিমান রয়েছে, অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে দুটি। এর পাশাপাশি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কাছে যুদ্ধবিমান আছে ২৩টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে পাঁচটি। এ ছাড়া ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর কাছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৫০টি। অন্যদিকে ইসরায়েলের ভান্ডারে যুদ্ধবিমান আছে ৩৪৫টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে ৪৩টি।
আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা
আকাশ প্রতিরক্ষার দিক থেকে এগিয়ে আছে ইসরায়েল। তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’কে বিশ্বের সেরা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবেও অভিহিত করেন কেউ কেউ। এটি এমন একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যা শত্রুপক্ষের ছোড়া রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথেই শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে। আয়রন ডোমে একটি রাডার থাকে, যা ইসরায়েলের দিকে আসন্ন রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও দিক নির্ণয় করে। এরপর নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র হিসাব করে দেখে—এই রকেট জনবসতির জন্য হুমকি কি না। যদি হুমকি না হয়, তাহলে সেটিকে ধ্বংস করা হয় না, বরং ফাঁকা জায়গায় পড়তে দেওয়া হয়। কিন্তু হুমকি হলে লাঞ্চার থেকে প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সেটিকে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। একটি লাঞ্চারে (ব্যাটারি) থাকে ২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরায়েলজুড়ে ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি মোতায়েন রয়েছে।
এর পাশাপাশি ইসরায়েলের কাছে রয়েছে আরও দুটি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। একটি হলো ডেভিডস স্লিং, যেটি ৪০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে পারে। আরেকটি হলো অ্যারো সিস্টেম, যা ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম।
অন্যদিকে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরান আজারাখশ নামের একটি স্বল্পপাল্লা ও নিচ দিয়ে উড়তে থাকা লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকারী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করে। এটি রাডার, ইনফ্রারেড ও ইলেকট্রো অপটিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং যানবাহনের ওপর বসিয়ে ব্যবহার করা যায়।
ইরানের অন্যান্য প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ৪২টির বেশি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা—যেমন রাশিয়ার এস-২০০, এস-৩০০ ও স্থানীয়ভাবে তৈরি বাভার-৩৭৩। মাঝারিপাল্লায় রয়েছে ৫৯টির বেশি। এর মধ্যে অন্যতম মিম-২৩ হক, এইচকিউ-টু ও খোরদাদ-১৫। আর স্বল্পপাল্লার জন্য রয়েছে ২৭৯টি সিস্টেম, যার মধ্যে রয়েছে চীনের সিএইচ-এসএ-৪ এবং রাশিয়ার নাইনকে ৩১ টোর-এম১।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক সক্ষমতা
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের কাছে অন্তত ১২ ধরনের স্বল্প ও মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তোন্দার-৬৯, যার সর্বোচ্চ পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার এবং আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র যেমন খোররামশহর ও সেজজিল, যেগুলোর পাল্লা প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত।
অন্যদিকে ইসরায়েলের কাছে অন্তত চার ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—যেমন লোরা, যার পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার এবং জেরিকো-৩, যার পাল্লা ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে ইসরায়েল অনেক এগিয়ে। আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। বিপরীতে ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলে ধারণা করা হয়। তবে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। দেশটিতে একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে।
মধ্যপ্রাচ্যের দুই পরাশক্তি ইরান ও ইসরায়েল। যুগের পর যুগ ধরে চরম বৈরী সম্পর্ক এই দুই শক্তির মধ্যে। গত কয়েক দিনে যা আরও বেড়েছে। ১৯৭৯ সালের পর দুই পক্ষের মধ্যে ছায়াযুদ্ধ চললেও সরাসরি লড়াই ছিল না। এর আগে গত বছর দুই দফা পাল্টাপাল্টি হামলা হলেও খুব বড় আকার ধারণ করেনি। তবে এবার ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্র ও সামরিক স্থাপনাগুলো লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলার পর উত্তেজনা চরমে উঠেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে, পুরোপুরি সংঘাতে জড়াবে দুপক্ষ। কিন্তু সামরিক সক্ষমতায় কে এগিয়ে?
তিন বাহিনীর সক্ষমতা
যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংকট্যাংক দ্য ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ প্রকাশিত ‘দ্য মিলিটারি ব্যালেন্স’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুসারে, সেনাসংখ্যার হিসাবে এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের সক্রিয় সেনাসদস্য ৬ লাখ ১০ হাজার। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশ ৩ লাখ ৫০ হাজার জন রয়েছেন মূল সেনাবাহিনীতে। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসিতে আছেন ১ লাখ ৯০ হাজার জন সদস্য। নৌবাহিনীতে ১৮ হাজার, বিমানবাহিনীতে ৩৭ হাজার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটে রয়েছেন ১৫ হাজার সেনাসদস্য।
অন্যদিকে ইসরায়েলের সক্রিয় সেনাসদস্য প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার। এর মধ্যে সেনাবাহিনীতে আছেন ১ লাখ ২৬ হাজার, নৌবাহিনীতে ৯ হাজার ৫০০ ও বিমানবাহিনীতে ৩৪ হাজার জন। তবে রিজার্ভ সেনার সংখ্যায় এগিয়ে আছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের রিজার্ভ সেনা ৪ লাখ ৬৫ হাজার সদস্য নিয়ে গঠিত। আর ইরানের রিজার্ভ সেনা রয়েছে ৩ লাখ ৫০ হাজার জন।
স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চের হিসাব অনুযায়ী, সামরিক খাতে ইরানের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি ব্যয় করে ইসরায়েল। ২০২৩ সালে ইসরায়েল সামরিক খাতে ব্যয় করেছে ২৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে ইরান ব্যয় করেছে মাত্র ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
অস্ত্রশস্ত্রের হিসাবেও এগিয়ে আছে ইরান। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের ২০২৩ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরানের ট্যাংক আছে ১০ হাজার ৫১৩টি, ভারী অস্ত্র আছে ৬ হাজার ৭৯৮ ও সাঁজোয়া যান আছে ৬৪০টি। ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর ভান্ডারে ৫০টি হেলিকপ্টার আছে। আর ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর আছে পাঁচটি। অন্যদিকে ইসরায়েলের অস্ত্রভান্ডারে ট্যাংক আছে ৪০০টি, ভারী অস্ত্র আছে ৫৩০টি এবং সাঁজোয়া যান আছে ১ হাজার ১৯০টি।
নৌবাহিনীর সক্ষমতার দিক দিয়েও এগিয়ে আছে ইরান। ইরানের নৌবহরে আছে ১৭টি ট্যাকটিক্যাল সাবমেরিন (ছোট ও দ্রুত হামলার উপযোগী ডুবোজাহাজ), ৬৮টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ, সাতটি করভেট (ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ), ১২টি ল্যান্ডিং শিপ (সৈন্য ও যানবাহন পরিবহনের জন্য), ১১টি ল্যান্ডিং ক্র্যাফট (সৈন্য নামানোর ছোট জাহাজ) এবং ১৮টি লজিস্টিক ও সাপোর্ট যান (সহায়ক সরঞ্জাম ও জাহাজ)। বিপরীতে ইরানের আছে কেবল পাঁচটি সাবমেরিন এবং ৪৯টি টহল ও যুদ্ধজাহাজ।
বিমানবাহিনীর সক্ষমতার হিসাবে কিছুটা এগিয়ে আছে ইসরায়েল। দ্য মিলিটারি ব্যালেন্সের সাম্প্রতিক হিসাব অনুযায়ী, ইরানের বিমানবাহিনীর ৩১২টি যুদ্ধবিমান রয়েছে, অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে দুটি। এর পাশাপাশি ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর কাছে যুদ্ধবিমান আছে ২৩টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে পাঁচটি। এ ছাড়া ইরানের প্রধান সামরিক বাহিনীর কাছে অ্যাটাক হেলিকপ্টার রয়েছে ৫০টি। অন্যদিকে ইসরায়েলের ভান্ডারে যুদ্ধবিমান আছে ৩৪৫টি আর অ্যাটাক হেলিকপ্টার আছে ৪৩টি।
আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা
আকাশ প্রতিরক্ষার দিক থেকে এগিয়ে আছে ইসরায়েল। তেল আবিবের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ‘আয়রন ডোম’কে বিশ্বের সেরা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসেবেও অভিহিত করেন কেউ কেউ। এটি এমন একটি প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যা শত্রুপক্ষের ছোড়া রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্র মাঝপথেই শনাক্ত করে ধ্বংস করতে পারে। আয়রন ডোমে একটি রাডার থাকে, যা ইসরায়েলের দিকে আসন্ন রকেট বা ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও দিক নির্ণয় করে। এরপর নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র হিসাব করে দেখে—এই রকেট জনবসতির জন্য হুমকি কি না। যদি হুমকি না হয়, তাহলে সেটিকে ধ্বংস করা হয় না, বরং ফাঁকা জায়গায় পড়তে দেওয়া হয়। কিন্তু হুমকি হলে লাঞ্চার থেকে প্রতিরক্ষামূলক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে সেটিকে আকাশেই ধ্বংস করা হয়। একটি লাঞ্চারে (ব্যাটারি) থাকে ২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র। ইসরায়েলজুড়ে ১০টি আয়রন ডোম ব্যাটারি মোতায়েন রয়েছে।
এর পাশাপাশি ইসরায়েলের কাছে রয়েছে আরও দুটি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। একটি হলো ডেভিডস স্লিং, যেটি ৪০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করতে পারে। আরেকটি হলো অ্যারো সিস্টেম, যা ২ হাজার ৪০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে সক্ষম।
অন্যদিকে ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তুলনামূলকভাবে বৈচিত্র্যপূর্ণ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরান আজারাখশ নামের একটি স্বল্পপাল্লা ও নিচ দিয়ে উড়তে থাকা লক্ষ্যবস্তু শনাক্তকারী প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মোতায়েন করে। এটি রাডার, ইনফ্রারেড ও ইলেকট্রো অপটিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত এবং যানবাহনের ওপর বসিয়ে ব্যবহার করা যায়।
ইরানের অন্যান্য প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে ৪২টির বেশি দূরপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা—যেমন রাশিয়ার এস-২০০, এস-৩০০ ও স্থানীয়ভাবে তৈরি বাভার-৩৭৩। মাঝারিপাল্লায় রয়েছে ৫৯টির বেশি। এর মধ্যে অন্যতম মিম-২৩ হক, এইচকিউ-টু ও খোরদাদ-১৫। আর স্বল্পপাল্লার জন্য রয়েছে ২৭৯টি সিস্টেম, যার মধ্যে রয়েছে চীনের সিএইচ-এসএ-৪ এবং রাশিয়ার নাইনকে ৩১ টোর-এম১।
ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পারমাণবিক সক্ষমতা
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের কাছে অন্তত ১২ ধরনের স্বল্প ও মাঝারিপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তোন্দার-৬৯, যার সর্বোচ্চ পাল্লা ১৫০ কিলোমিটার এবং আরও শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র যেমন খোররামশহর ও সেজজিল, যেগুলোর পাল্লা প্রায় ২ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত।
অন্যদিকে ইসরায়েলের কাছে অন্তত চার ধরনের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে—যেমন লোরা, যার পাল্লা ২৮০ কিলোমিটার এবং জেরিকো-৩, যার পাল্লা ৪ হাজার ৮০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
পারমাণবিক অস্ত্রের দিক থেকে ইসরায়েল অনেক এগিয়ে। আর্মস কন্ট্রোল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের কাছে প্রায় ৯০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। বিপরীতে ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র নেই বলে ধারণা করা হয়। তবে তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে। দেশটিতে একাধিক পারমাণবিক স্থাপনা ও গবেষণাকেন্দ্র রয়েছে।
পারস্য উপসাগরের উপকূলে ইরানের বুশেহর শহরে অবস্থিত পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যদি কোনো হামলার শিকার হয়, তবে তার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। শুধু ইরান নয়, পুরো উপসাগরীয় অঞ্চল পড়বে বিপদের মুখে।
৩ ঘণ্টা আগেবি-২ বিমানের সঙ্গে ছিল চারটি বোয়িং কেসি-৪৬ পেগাসাস ফুয়েল ট্যাংকার। এর মধ্যে দুটি ইতিমধ্যে প্রশান্ত মহাসাগরের আকাশে বি-২ বোমারুতে জ্বালানি সরবরাহ করেছে। বাকি দুটি প্রায় ৭৫ কিলোমিটার পেছনে অবস্থান করছে।
৩ ঘণ্টা আগেসামরিক শক্তিতে বরাবরই নিজেকে অপরাজেয় হিসেবে জাহির করা ইসরায়েলকে সত্যিই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ইরান। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলকে ইতিমধ্যেই ব্যতিব্যস্ত করার পর গতকাল শনিবার দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে সফল ড্রোন হামলা চালায় ইরান। ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে...
৩ ঘণ্টা আগেইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত নবম দিনে গড়িয়েছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের পক্ষে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে লোহিতসাগরে মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। হুতি বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে
৪ ঘণ্টা আগে