Ajker Patrika

এক দুপুরে গাজায় দুই পরিবারের শোকগাথা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গাজায় নিহত ১১ বছর বয়সী ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
গাজায় নিহত ১১ বছর বয়সী ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিন হাম্মাদ। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

গত শুক্রবার (২৩ মে) দুপুর তিনটার দিকে, গাজার খান ইউনুসের নাসের হাসপাতালে কর্মরত শিশু চিকিৎসক ডা. আলা আল-নাজ্জার যখন নিজের সাত সন্তানের পোড়া দেহাবশেষ গ্রহণ করেন। তাঁর আরও দুই সন্তান তখন চাপা পড়েছিল ধ্বংসস্তূপের নিচে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় আলার দশ সন্তানের মধ্যে ৯ জনই নিহত হয় সেদিন। মৃত্যুর সঙ্গে এখন পাঞ্জা লড়ছে তাঁর একমাত্র জীবিত সন্তান আদম এবং স্বামী হামদি।

এদিকে অল্প কিছু দূরেই একটি উদ্বাস্তু শিবিরে পরিবারের সঙ্গে একটি অস্থায়ী ঘরে থাকত ১১ বছর বয়সী ইয়াকিন হাম্মাদ। সেখানেই আরেকটি ভয়াবহ বিমান হামলায় নিহত হয় ইয়াকিন। এলাকার সবচেয়ে অল্প বয়সী সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সার হিসেবে পরিচিত ছিল সে। হামলাটির মুহূর্তে পানি দিচ্ছিল উদ্বাস্তু শিবিরের এক কোনায় জেগে ওঠা কিছু চারা গাছে। একই হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ইয়াকিনের ১৬ বছর বয়সী চাচাতো ভাই আইয়াদ এখন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে।

মর্মান্তিক এই দুটি ঘটনা শুধু গাজার দুই পরিবারের গল্প নয়। এটি পুরো গাজার জন্যই এক ভয়াবহ বাস্তবতার চিত্র। স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের হিসাব অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত ১৯ মাসে গাজায় নিহত শিশুদের সংখ্যা ১৬ হাজার ৫০০ ছাড়িয়ে গেছে—যা ইউক্রেনে নিহত শিশুদের সংখ্যার তুলনায় প্রায় ২৪ গুণ বেশি। অথচ ইউক্রেনের জনসংখ্যা গাজার ২০ গুণ।

ডা. আলা নাজ্জারের একমাত্র জীবিত সন্তান ১১ বছরের আদম বর্তমানে ৬০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে ভেন্টিলেটরে বেঁচে থাকার লড়াই করছে। আলার স্বামী হামদিও পেশায় একজন চিকিৎসক। বেঁচে থাকলেও তিনি মস্তিষ্কে বড় আঘাত পেয়েছেন, আর ছররার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে তাঁর শরীর।

ডা. আলার ভাই আলি আল-নাজ্জার ইতালির একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আদমকে গাজা থেকে সরিয়ে একটি উন্নত হাসপাতালে নিয়ে যান। আমি ইতালিয়ান সরকারকে অনুরোধ করছি—তাকে বাঁচান।’

ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি জানিয়েছেন, আদমকে চিকিৎসার জন্য ইতালি নিতে তারা প্রস্তুত।

চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে বেঁচে আছে শুধু আদম। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান
চিকিৎসক আলা আল-নাজ্জারের ১০ সন্তানের মধ্যে বেঁচে আছে শুধু আদম। ছবি: দ্য গার্ডিয়ান

গাজার যে হাসপাতালে এখন আদম মৃত্যুর সঙ্গে পাল্লা লড়ছে, সেই একই হাসপাতালে করিডরের অন্য পাশে শুয়ে আছে আইয়াদ। তার বাবা হোসেন একজন রেড ক্রিসেন্ট প্যারামেডিক। হোসেন জানান, তিনি হাসপাতালে ডিউটিতে থাকা অবস্থায় খবর পান, তাঁর ছেলে আহত হয়েছে এবং ভাগনি ইয়াকিন মারা গেছে।

হাসান বলেন, ‘কোনো সতর্কবার্তা ছাড়াই এই হামলা। বাচ্চারা ফুল গাছে পানি দিচ্ছিল—ওদের কেন লক্ষ্য বানানো হলো?’ কম বয়সী ইনফ্লুয়েন্সার ইয়াকিনের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই সামাজিক মাধ্যমে শোক ও শ্রদ্ধা জানাতে থাকেন সকলে। তার সম্পর্কে একজন লিখেছেন, ‘ও ছিল প্রাণবন্ত, সব সময় হাসিমুখ। শেষবার দেখেছিলাম মাসখানেক আগে, কাজের চাপে আর দেখা হয়নি। এখন শেষবার দেখলাম কাফনে মোড়া দেহ।’

আইয়াদের অবস্থাও সংকটাপন্ন। তার এক চোখ নষ্ট হয়ে গেছে, কাঁধ ভেঙে গেছে, শরীরজুড়ে ছররার আঘাত। তার বাবা হাসান বলেন, ‘ছেলেকে এই অবস্থায় দেখে বুক ফেটে যাচ্ছিল। গাজার সব শিশুর গল্পই যেন একইরকম। নিরপরাধ, অথচ এই যুদ্ধের বলি। ওরা কেবল সংখ্যা নয়—প্রত্যেকেরই আছে জীবন, স্বপ্ন, পরিবার।’

গাজা শহরের অন্য এক প্রান্তে, ফাহমি আল-জারজাওয়ি স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয় ৬ বছর বয়সী ওয়ারদ খলিলের মা ও দুই ভাইবোন। ওয়ারদের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এতে দেখা যায়, সে আগুনের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছে। পরদিন আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে বলে, ‘চোখ খুলে দেখি চারপাশে আগুন। মা মরে গেছে। আমি আগুনের মধ্য দিয়ে হেঁটে এসেছি, ছাদ আমার ওপর ভেঙে পড়েছে।’

এই সবকিছুর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গাজায় এখন চলছে দুর্ভিক্ষ। তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে খাদ্য সহায়তা বন্ধ থাকায় শিশুদের মৃত্যুর হার বেড়েছে। গত সপ্তাহে মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় ২৯ জন শিশু ও বৃদ্ধ মারা গেছে ক্ষুধায়। আইপিসি বলছে, আগামী মার্চ নাগাদ পাঁচ বছরের নিচে গাজার ৭১ হাজার শিশু চরম অপুষ্টিতে ভুগবে।

ইউনিসেফ জানিয়েছে, ৯ হাজারেরও বেশি শিশুকে ইতিমধ্যে অপুষ্টির চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, ‘গাজার শিশুদের দরকার সুরক্ষা, খাদ্য, পানি, ওষুধ এবং সবকিছুর আগে একটি অতি দ্রুত যুদ্ধবিরতি। আর দরকার সারা বিশ্বের সম্মিলিত পদক্ষেপ—এখনই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

উট ও সোনা বিক্রি করে সাম্রাজ্য গড়া দাগোলোর নিয়ন্ত্রণে এখন অর্ধেক সুদান

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
মোহাম্মদ হামদান দাগোলো। ছবি: বিবিসি
মোহাম্মদ হামদান দাগোলো। ছবি: বিবিসি

সুদানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার কেন্দ্রে উঠে এসেছেন এক ভয়ংকর নাম—মোহাম্মদ হামদান দাগোলো, যিনি ‘হেমেদতি’ নামে পরিচিত। তাঁর নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক বাহিনী র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এখন দেশের অর্ধেক ভূখণ্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। সম্প্রতি তারা সেনাবাহিনীর শেষ ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত দারফুর অঞ্চলের এল-ফাশের শহর দখল করে নিয়েছে। জাতিসংঘ স্বীকৃত খাদ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গত ১৮ মাস ধরে আরএসএফ-এর অবরোধের কারণে ওই শহরটি এখন ভয়াবহ দুর্ভিক্ষে পড়েছে।

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, দাগোলো কখনোই সেনাবাহিনীতে প্রশিক্ষিত হননি। তাঁর পরিবার ছিল রিজেইগাত সম্প্রদায়ের মহারিয়া শাখার উট ব্যবসায়ী। ১৯৭৪ বা ১৯৭৫ সালে জন্ম নেওয়া দাগোলো তাই কিশোর বয়সেই স্কুল ছেড়ে উট বিক্রি করে জীবিকা শুরু করেন। পরে তিনি লিবিয়া ও মিসরে উটের ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করেন।

সেই সময়টিতে দারফুর ছিল একটি আইনহীন বিশৃঙ্খল অঞ্চল। আরব মিলিশিয়া জাঞ্জাউইদ গোষ্ঠী এখানকার ফুর জনগোষ্ঠীর গ্রামগুলোতে প্রায় সময়ই হামলা চালাত।

২০০৩ সালে এই দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে দারফুরে বিদ্রোহ শুরু হলে, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির হামলাকারী জাঞ্জাউইদ বাহিনীকেই রাষ্ট্রীয় সমর্থন দেন। এর ফলে গণহত্যা, ধর্ষণ ও গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার মাধ্যমে তারা ফুর জনগোষ্ঠীর বিদ্রোহ দমন করে। দাগোলোর নেতৃত্বাধীন একটি ইউনিটও ২০০৪ সালে আদওয়া গ্রামে ১২৬ জনকে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এই সংঘাতকে গণহত্যা হিসেবে আখ্যা দেয়, যদিও দাগোলো ছিলেন তখন তুলনামূলক নিম্নপদস্থ কমান্ডার।

তবে কৌশলে সুযোগ কাজে লাগিয়ে দ্রুত ক্ষমতা বাড়াতে শুরু করেন দাগোলো। প্রথমে তিনি সেনাদের বকেয়া বেতন ও ভাইয়ের জন্য পদ দাবি করে বিদ্রোহ করেন। পরে প্রেসিডেন্ট বশির তাঁকে পুরস্কৃত করে শান্ত করেন।

এ অবস্থায় দারফুরের জেবেল আমির সোনার খনি দখল করে পারিবারিক কোম্পানি ‘আল-গুনাইদ’ গড়ে তোলেন দাগোলো। অল্প সময়েই এটি সুদানের সবচেয়ে বড় স্বর্ণ রপ্তানিকারক হয়ে ওঠে।

২০১৩ সালে র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গঠন করেন তিনি, যা সরাসরি আল-বশিরের অধীনে কাজ করত। পরে এই বাহিনী ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের হয়ে ভাড়াটে সৈন্য পাঠায়। এর মাধ্যমে দাগোলো আমিরাতের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বিন জায়েদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং স্বর্ণ ও অস্ত্র ব্যবসার মাধ্যমে বিপুল অর্থের মালিক হন।

২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট বশিরবিরোধী আন্দোলনের সময় সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে মিলে বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করেন দাগোলো। প্রথমে তাঁকে সংস্কারের প্রতীক হিসেবে দেখা হলেও অচিরেই তিনি তাঁর নির্মম মুখোশ খুলে ফেলেন। ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবিতে আন্দোলন শুরু হলে প্রতিবাদীদের ওপর গুলি চালায় দাগোলোর বাহিনী আরএসএফ। এতে শত শত মানুষ নিহত হয় এবং নারীদের ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগও ওঠে।

২০২১ সালে বুরহান ও দাগোলো একসঙ্গে ক্ষমতা দখল করলেও শিগগিরই তাঁদের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে আসতে আরএসএফ অস্বীকৃতি জানায়। ২০২৩ সালের এপ্রিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাতের সূত্রপাত হয়, যা এখনো চলছে। এই সংঘাতে রাজধানী খার্তুমসহ দারফুরে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। জাতিসংঘের হিসেবে শুধু দারফুরেই নিহত হয়েছে ১৫ হাজার সাধারণ মানুষ। যুক্তরাষ্ট্র একে গণহত্যা বলে অভিহিত করেছে।

বর্তমানে আরএসএফ উন্নত ড্রোনসহ আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত এবং পশ্চিম সুদানের প্রায় সব এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। দাগোলো এখন ‘শান্তি ও ঐক্যের সরকার’ নামে এক সমান্তরাল সরকার গঠন করেছেন এবং নিজেকে তার প্রধান ঘোষণা করেছেন।

সুদানের অনেকে মনে করেন, দাগোলো হয়তো একটি পৃথক রাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা করছেন, অথবা পুরো দেশ শাসনের স্বপ্ন দেখছেন। আবার কেউ কেউ মনে করেন, তিনি এমন এক রাজনৈতিক ছায়াশক্তি হতে চান—যার হাতে থাকবে ব্যবসা, ভাড়াটে বাহিনী ও রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ—যাতে সরাসরি ক্ষমতায় না থেকেও তিনি পুরো দেশ পরিচালনা করতে পারেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

শিশুসুলভ চেহারার অভিযোগে বিশ্বজুড়ে ‘সেক্স ডল’ বিক্রি বন্ধ করল শিন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত সপ্তাহে ফ্রান্সে শিনের পণ্য বিক্রি বন্ধে বিক্ষোভ হয়। ছবি: সংগৃহীত
গত সপ্তাহে ফ্রান্সে শিনের পণ্য বিক্রি বন্ধে বিক্ষোভ হয়। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স কোম্পানি শিন (Shein) তাদের প্ল্যাটফর্মে সব ধরনের ‘সেক্স ডল’ বিক্রি বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি তাদের ওয়েবসাইটে ‘শিশুসুলভ চেহারার’ পণ্য প্রদর্শনের অভিযোগ ওঠার পরই কোম্পানিটি এ সিদ্ধান্ত নিল।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহের শেষের দিকে ফ্রান্সের অলাভজনক সংস্থা কনজ্যুমার ওয়াচডগ প্রথম এই সেক্স ডলগুলো নিয়ে আপত্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করে। কনজ্যুমার ওয়াচডগ জানায়, এসব পণ্যের বিবরণী ও আকৃতি অনেকটা ‘শিশু পর্নোগ্রাফির’ মতো।

এরপর গতকাল সোমবার কোম্পানিটি জানায়, তারা ‘অবৈধ বা অসংগতিপূর্ণ সেক্স ডল বিক্রির সঙ্গে যুক্ত সব বিক্রেতার অ্যাকাউন্ট’ স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করেছে। শিন আরও জানায়, সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে তারা সাময়িকভাবে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক পণ্যের বিভাগটিও সরিয়ে নিয়েছে।

শিন নিশ্চিত করেছে, তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে ‘সেক্স ডল’ সম্পর্কিত প্রত্যেকটি তালিকা ও ছবি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। কোম্পানিটি আরও জানিয়েছে, তারা এটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনা করে বিক্রেতাদের ওপর আরও কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করবে।

শিনের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান ডোনাল্ড ট্যাং বলেন, ‘আমরা সব সময় শিশুদের ওপর যেকোনো সহিংসতার বিরুদ্ধে। আমাদের যেসব পণ্য নিয়ে বিতর্ক, সেগুলো তৃতীয় পক্ষের বিক্রেতাদের তালিকাভুক্ত পণ্য ছিল। আমরা এই উৎসগুলো খুঁজে বের করছি এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেব।’

প্যারিসের প্রসিকিউটর অফিস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শিনের পাশাপাশি অনলাইন আলি এক্সপ্রেস, তেমু ও উইশের বিরুদ্ধেও তারা শিশুদের মতো দেখতে সেক্স ডল বিক্রির বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছে। প্রসিকিউটর অফিস বলেছে, তারা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা প্রতিরোধে দায়িত্বপ্রাপ্ত ফরাসি এক সংস্থার (OFMIN) কাছে এ বিষয়ে তদন্তের ভার দিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সাদ্দামের পতন ও ইরাক ধ্বংসের অন্যতম হোতা ডিক চেনির মৃত্যু

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২১: ২৫
ডিক চেনি। ছবি: সংগৃহীত
ডিক চেনি। ছবি: সংগৃহীত

গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) থাকার মিথ্যা অভিযোগে সাদ্দাম হোসেনের সরকারের পতন ও ইরাক ধ্বংসের অন্যতম হোতা সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। চেনির পরিবার এক বিবৃতিতে তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

ডিক চেনি এক বিরল রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের অধিকারী। তিনি ছিলেন একাধারে হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ, কংগ্রেস সদস্য, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ভাইস প্রেসিডেন্ট।

জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনে ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে চেনি ছিলেন সরকারের নেপথ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি। বুশের চেয়ে কম অভিজ্ঞ হলেও তিনি প্রশাসনিক ও নিরাপত্তানীতিতে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করেছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে সন্ত্রাসী হামলার সময় বুশকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হলে চেনি তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডোনাল্ড রামসফেল্ডের সঙ্গে মিলে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তানীতির নিয়ন্ত্রণ নেন। এর পরপরই মার্কিন সেনারা আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে।

তবে ইতিহাসে চেনির নাম সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত হয় ইরাক যুদ্ধের সিদ্ধান্তের কারণে। প্রথম উপসাগরীয় যুদ্ধের (১৯৯০–৯১) সময় তিনি ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। কিন্তু ২০০৩ সালে প্রেসিডেন্ট বুশের সঙ্গে মিলে তিনি দাবি করেন, ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন আল-কায়েদার সঙ্গে যুক্ত এবং ৯/১১ হামলার পেছনে তাঁর ভূমিকা ছিল; পাশাপাশি তাঁর কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র (ডব্লিউএমডি) রয়েছে।

তবে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর এসব দাবির কোনোটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। চেনি পরে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ছিল ‘‘দেশ রক্ষায় যা কিছু প্রয়োজন, তা করা এবং আমরা তা করেছি’’।’

ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াটসন স্কুলের হিসাব অনুযায়ী, ২০০১ সালের পর থেকে ইরাক, আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইয়েমেন ও পাকিস্তানে অন্তত ৮ লাখ মানুষ সরাসরি যুদ্ধ ও সহিংসতায় নিহত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ’ চলাকালে বন্দীদের ওপর নির্যাতনের অনুমতি ও তা সমর্থনের জন্য চেনি ব্যাপক সমালোচিত হন। কিন্তু অবসরের পরে তিনি তাঁর এসব কর্মকাণ্ডকে যথার্থ বলে নিজের অবস্থান ব্যক্ত করে গেছেন।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ড্রপআউট চেনি ভিয়েতনাম যুদ্ধ এড়িয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু পরে রিপাবলিকান রাজনীতিতে বিশাল প্রভাব বিস্তার করেন। তিনি ছিলেন রিচার্ড নিক্সনের আমলে হোয়াইট হাউসের সহকারী, জেরাল্ড ফোর্ডের সময় সর্বকনিষ্ঠ চিফ অব স্টাফ, রোনাল্ড রিগ্যানের আমলে কংগ্রেস সদস্য, জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং সর্বশেষ জর্জ ডব্লিউ বুশের ভাইস প্রেসিডেন্ট।

২০০০ সালের নির্বাচনে জর্জ ডব্লিউ বুশ তাঁকে হ্যালিবার্টন করপোরেশন থেকে ডেকে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বানান। তত দিনে তিনি তিনবার হার্ট অ্যাটাক থেকে বেঁচে ফিরেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি একবার শিকারে গিয়ে ভুলবশত তাঁর এক কর্মীর মুখে গুলি করেছিলেন। ঘটনাটি সে সময় ব্যাপক আলোড়ন তোলে।

চেনির মেয়ে লিজ চেনি তাঁর বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ওয়াইমিং থেকে কংগ্রেস সদস্য নির্বাচিত হন—সেই আসনেই একসময় ডিক চেনি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিল দাঙ্গা নিয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়ায় রিপাবলিকান থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়।

ওই ঘটনার এক বছর পর স্মরণ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ডিক চেনি বলেন, ‘বর্তমান রিপাবলিকান নেতৃত্ব আমার সময়ের কারও মতো নয়। ৬ জানুয়ারির ঘটনাটিকে কখনোই হালকাভাবে নেওয়া যাবে না।’

এরপর ২০২৪ সালে তিনি ঘোষণা দেন, ট্রাম্প নয়, বরং কমলা হ্যারিসকে ভোট দেবেন, কারণ, তাঁর মতে, ‘আমেরিকার ২৪৮ বছরের ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে বড় হুমকি গণতন্ত্রের জন্য আর কেউ নন’। তিনি আরও বলেন, দেশের সংবিধান রক্ষার জন্য তাঁর কর্তব্য হলো দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে উঠে দেশকে প্রাধান্য দেওয়া।

চেনিকে অনেকে জনপ্রিয় টিভি সিরিজ স্টার ওয়ার্সের ‘ডার্থ ভেডার’ চরিত্রটির নামে ডাকতেন এবং চেনি নিজেও নামটি উপভোগ করতেন।

তাঁর জীবনীলেখক জ্যাক বার্নস্টিন ২০১৮ সালে দ্য গার্ডিয়ানকে বলেন, জর্জ ডব্লিউ বুশকে এখন অনেকে তুলনামূলকভাবে ভালো ভাবছেন, কারণ, ট্রাম্প সবকিছুকে ছাপিয়ে গেছেন। কিন্তু চেনি নিজেই পছন্দ করতেন যে তাঁকে ‘ডার্থ ভেডার’ বলা হোক। তাঁর ভাবমূর্তি নরম করার কোনো ইচ্ছা কখনোই ছিল না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

সৌদি আরবে সংগীত শিক্ষকের প্রশিক্ষণ পাবেন আরও ১৭ হাজার নারী

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

সৌদি আরব সরকার শিল্প-সংস্কৃতির বিকাশের অংশ হিসেবে বিদ্যালয় পর্যায়ে সংগীত শিক্ষা চালু করতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। এর অংশ হিসেবে দেশটির শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে সংগীত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে হাজারো শিক্ষককে। বিশেষ করে, কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নারী শিক্ষকদের।

সৌদি গণমাধ্যম জানিয়েছে, ২০২২ সালের শেষ দিকে দুই মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে মিউজিক কমিশন কর্তৃক পরিচালিত একটি কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। এর লক্ষ্য ছিল সংগীত শেখানোর দক্ষতা বাড়ানো এবং সংগীত শিক্ষক গড়ে তোলা। প্রথম ধাপে ১২ হাজারের বেশি নারী শিক্ষক সরকারি ও বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনে প্রশিক্ষণ নেন।

এবার শুরু হয়েছে দ্বিতীয় ধাপ—যেখানে আরও ১৭ হাজার নারী শিক্ষককে সংগীত শিক্ষার পেশাগত প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি মূলত একটি ‘সাংস্কৃতিক দক্ষতা উন্নয়ন কৌশলের’ অংশ, যার মাধ্যমে শিশুদের প্রাথমিক বয়স থেকে সংগীত ও শিল্পের সঙ্গে পরিচিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি সরকার।

গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংগীত শেখানোর এই উদ্যোগ সৌদি শিক্ষা ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যৌথ নীতি অনুসারে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এর লক্ষ্য হলো—সংগীত ও অন্যান্য শিল্পকে ক্রমান্বয়ে বিদ্যালয়ের মূল পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় রিয়াদের কিং সৌদ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আর্টস কলেজ প্রতিষ্ঠা করে, যেখানে শিল্পকলার পাশাপাশি সংগীত বিষয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করতে সেখানে উচ্চশিক্ষার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে।

এর আগে ২০২০ সালে সৌদি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘মিউজিক কমিশন’ গঠন করা হয়, যার কাজ হলো সংগীত খাতের বিকাশ তদারকি করা, সংগীত শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করা, তরুণ প্রতিভাকে উৎসাহিত করা এবং সংগীতকে দেশের অর্থনীতির অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সৌদি আরব দ্রুত পরিবর্তনের পথে। দেশে এখন নিয়মিত আয়োজন করা হচ্ছে কনসার্ট, সিনেমা প্রদর্শনী, নাট্যোৎসব ও বিভিন্ন সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা। শিল্প ও বিনোদনের এই উত্থান দেশের সামাজিক পরিবর্তনের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সংগীত শিক্ষকদের দায়িত্ব কী হবে

নতুন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা মূলত কিন্ডারগার্টেন ও প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের জন্য সংগীত শিক্ষা পরিচালনা করবেন। তাঁরা গান, তাল-লয়, বাদ্যযন্ত্রের মৌলিক ধারণা ও স্থানীয় লোকসংগীত শেখাবেন, যাতে শিশুরা ছোটবেলা থেকেই সংগীত ও শিল্পের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

নীলফামারীতে হচ্ছে চীনা সরকারের উপহার ১০০০ শয্যার হাসপাতাল

ট্রাকের নিচে ঢুকে গেল অটোরিকশা, কলেজশিক্ষার্থীসহ নিহত ৬

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত