অনলাইন ডেস্ক
ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাতের মধ্যে বিশ্বের চোখ আরও একবার ঘুরে গেল মোহসেন ফাখরিজাদের দিকে। ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচিত এই বিজ্ঞানী ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর এক চাঞ্চল্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। মূলত এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই ইসরায়েল ইরানের বুকে সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছিল। ফাখরিজাদের মৃত্যু যেমন তৎকালীন বিশ্বরাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছিল, তেমনি ইরানের ভেতরেও সৃষ্টি করেছিল এক স্থায়ী ক্ষতের।
নিরাপত্তার কারণেই হয়তো বছরের পর বছর শুধু গোপন নথিতে একটি নামমাত্র পরিচিতি ছিল ফাখরিজাদের। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করত, তিনিই ছিলেন ‘প্রজেক্ট আমাদ’-এর মাথা। ২০০০ সালের শুরুর দিকে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রয়াসই ছিল ‘প্রজেক্ট আমাদ’।
জনসমক্ষে ফাখরিজাদের কোনো বক্তব্য বা ছবি ছিল না বললেই চলে। তাঁকে ইরানের ওপেনহাইমার হিসেবেও অভিহিত করা হতো। ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তির সময়ও তাঁর নাম এতটাই স্পর্শকাতর ছিল যে কেউ তা উচ্চারণ করত না।
তবে ২০১৮ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ফাখরিজাদের নাম প্রকাশ্যে আনেন। তখনই তাঁর জীবনের ওপর হুমকির মাত্রা বেড়ে যায়।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর। ফাখরিজাদে তাঁর স্ত্রী ও দেহরক্ষীদের সঙ্গে রাজধানী তেহরানের অদূরে আবসার্দ শহরে অবস্থিত নিজ বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন। ওই পথেরই একটি স্পিড ব্রেকারের পাশে একটি পিকআপ ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল; যা বাইরে থেকে পরিত্যক্ত মনে হলেও এর ভেতরে ছিল একটি ৭.৬২ মিলিমিটারের এফএন-এমএজি মেশিনগান। আর এটি যুক্ত ছিল স্যাটেলাইট, বিস্ফোরক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির সঙ্গে। এটি পরিচালনা করার জন্য কোনো মানুষের উপস্থিতির প্রয়োজন ছিল না।
ইরানি কর্মকর্তাদের মতে, ওই অস্ত্র বিদেশে বসে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন ঘাতকেরা। আর এর নেপথ্যে ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত।
যে মুহূর্তে ফাখরিজাদের গাড়িটি স্পিড ব্রেকারের সামনে এসে গতি কমিয়েছিল, ঠিক তখনই পরিত্যক্ত ট্রাকে থাকা মেশিনগান থেকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। প্রথমে ফাখরিজাদের গাড়ির সামনের অংশে গুলি লাগে। এর ফলে তাঁর গাড়িটি দাঁড়িয়ে যায়। দ্বিতীয় দফার গুলি তাঁর কাঁধে এসে আঘাত করে। এই অবস্থায় তিনি গাড়ি থেকে নেমে পাশের দরজার আড়ালে আশ্রয় নেন। কিন্তু পরের তিনটি গুলি তাঁর মেরুদণ্ডে আঘাত করে, তিনি সড়কে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী তখন পাশে থাকলেও অক্ষত ছিলেন।
মাত্র ১৫টি গুলি, এক মিনিটের মধ্যেই সব শেষ। তারপরই ওই ট্রাক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিস্ফোরণে উড়ে যায়; তবে পুরোপুরি নয়। অস্ত্রের অনেক যন্ত্রাংশ আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। কিছু অংশ নষ্ট হলেও শনাক্তযোগ্য ছিল।
হত্যাকাণ্ডটি ছিল নিখুঁত প্রযুক্তিনির্ভর এবং পরিকল্পিত। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মোসাদ কয়েক মাস ধরে ফাখরিজাদেকে নজরদারিতে রেখেছিল। অস্ত্রটির বিভিন্ন অংশ খণ্ড খণ্ড করে ইরানে আনা হয়েছিল। পরে এটি গোপনে সংযোজন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার না করলেও মোসাদের সাবেক প্রধান ইয়োসি কোহেন পরোক্ষভাবে তাঁদের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলি ফাদাভি বলেন, ‘অস্ত্রটি এতটাই নিখুঁতভাবে কাজ করেছিল যে কেবল ফাখরিজাদেকেই আঘাত করে, তাঁর স্ত্রী বা দেহরক্ষীদের গায়ে একটি গুলিও স্পর্শ করেনি।’
এই হত্যাকাণ্ড ইরানের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে কঠোর করে তোলে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার গতি থেমে যায়। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে দেয় এবং অভ্যন্তরীণভাবে কট্টরপন্থীদের প্রভাব বাড়তে থাকে। ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত সেটিরই ধারাবাহিকতামাত্র।
ইসরায়েল ও ইরানের চলমান সংঘাতের মধ্যে বিশ্বের চোখ আরও একবার ঘুরে গেল মোহসেন ফাখরিজাদের দিকে। ইরানের গোপন পরমাণু কর্মসূচির ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে পরিচিত এই বিজ্ঞানী ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর এক চাঞ্চল্যকর ও প্রযুক্তিনির্ভর হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিলেন। মূলত এই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়েই ইসরায়েল ইরানের বুকে সবচেয়ে বড় আঘাত হেনেছিল। ফাখরিজাদের মৃত্যু যেমন তৎকালীন বিশ্বরাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছিল, তেমনি ইরানের ভেতরেও সৃষ্টি করেছিল এক স্থায়ী ক্ষতের।
নিরাপত্তার কারণেই হয়তো বছরের পর বছর শুধু গোপন নথিতে একটি নামমাত্র পরিচিতি ছিল ফাখরিজাদের। পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করত, তিনিই ছিলেন ‘প্রজেক্ট আমাদ’-এর মাথা। ২০০০ সালের শুরুর দিকে ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির প্রয়াসই ছিল ‘প্রজেক্ট আমাদ’।
জনসমক্ষে ফাখরিজাদের কোনো বক্তব্য বা ছবি ছিল না বললেই চলে। তাঁকে ইরানের ওপেনহাইমার হিসেবেও অভিহিত করা হতো। ২০১৫ সালের ইরান পারমাণবিক চুক্তির সময়ও তাঁর নাম এতটাই স্পর্শকাতর ছিল যে কেউ তা উচ্চারণ করত না।
তবে ২০১৮ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়ে ফাখরিজাদের নাম প্রকাশ্যে আনেন। তখনই তাঁর জীবনের ওপর হুমকির মাত্রা বেড়ে যায়।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর। ফাখরিজাদে তাঁর স্ত্রী ও দেহরক্ষীদের সঙ্গে রাজধানী তেহরানের অদূরে আবসার্দ শহরে অবস্থিত নিজ বাড়ির পথে যাচ্ছিলেন। ওই পথেরই একটি স্পিড ব্রেকারের পাশে একটি পিকআপ ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল; যা বাইরে থেকে পরিত্যক্ত মনে হলেও এর ভেতরে ছিল একটি ৭.৬২ মিলিমিটারের এফএন-এমএজি মেশিনগান। আর এটি যুক্ত ছিল স্যাটেলাইট, বিস্ফোরক ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রযুক্তির সঙ্গে। এটি পরিচালনা করার জন্য কোনো মানুষের উপস্থিতির প্রয়োজন ছিল না।
ইরানি কর্মকর্তাদের মতে, ওই অস্ত্র বিদেশে বসে নিয়ন্ত্রণ করেছিলেন ঘাতকেরা। আর এর নেপথ্যে ছিল ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হাত।
যে মুহূর্তে ফাখরিজাদের গাড়িটি স্পিড ব্রেকারের সামনে এসে গতি কমিয়েছিল, ঠিক তখনই পরিত্যক্ত ট্রাকে থাকা মেশিনগান থেকে গুলি বর্ষণ শুরু হয়। প্রথমে ফাখরিজাদের গাড়ির সামনের অংশে গুলি লাগে। এর ফলে তাঁর গাড়িটি দাঁড়িয়ে যায়। দ্বিতীয় দফার গুলি তাঁর কাঁধে এসে আঘাত করে। এই অবস্থায় তিনি গাড়ি থেকে নেমে পাশের দরজার আড়ালে আশ্রয় নেন। কিন্তু পরের তিনটি গুলি তাঁর মেরুদণ্ডে আঘাত করে, তিনি সড়কে লুটিয়ে পড়েন। তাঁর স্ত্রী তখন পাশে থাকলেও অক্ষত ছিলেন।
মাত্র ১৫টি গুলি, এক মিনিটের মধ্যেই সব শেষ। তারপরই ওই ট্রাক স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিস্ফোরণে উড়ে যায়; তবে পুরোপুরি নয়। অস্ত্রের অনেক যন্ত্রাংশ আশপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। কিছু অংশ নষ্ট হলেও শনাক্তযোগ্য ছিল।
হত্যাকাণ্ডটি ছিল নিখুঁত প্রযুক্তিনির্ভর এবং পরিকল্পিত। গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, মোসাদ কয়েক মাস ধরে ফাখরিজাদেকে নজরদারিতে রেখেছিল। অস্ত্রটির বিভিন্ন অংশ খণ্ড খণ্ড করে ইরানে আনা হয়েছিল। পরে এটি গোপনে সংযোজন করে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালানো হয়।
ওই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ইসরায়েল আনুষ্ঠানিকভাবে দায় স্বীকার না করলেও মোসাদের সাবেক প্রধান ইয়োসি কোহেন পরোক্ষভাবে তাঁদের সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।
ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলি ফাদাভি বলেন, ‘অস্ত্রটি এতটাই নিখুঁতভাবে কাজ করেছিল যে কেবল ফাখরিজাদেকেই আঘাত করে, তাঁর স্ত্রী বা দেহরক্ষীদের গায়ে একটি গুলিও স্পর্শ করেনি।’
এই হত্যাকাণ্ড ইরানের আন্তর্জাতিক অবস্থানকে কঠোর করে তোলে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় শক্তিগুলোর সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার গতি থেমে যায়। ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বাড়িয়ে দেয় এবং অভ্যন্তরীণভাবে কট্টরপন্থীদের প্রভাব বাড়তে থাকে। ইরান ও ইসরায়েলের চলমান সংঘাত সেটিরই ধারাবাহিকতামাত্র।
সামরিক শক্তিতে বরাবরই নিজেকে অপরাজেয় হিসেবে জাহির করা ইসরায়েলকে সত্যিই কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে ইরান। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলকে ইতিমধ্যেই ব্যতিব্যস্ত করার পর গতকাল শনিবার দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ভেদ করে সফল ড্রোন হামলা চালায় ইরান। ইরানের দুটি ড্রোন ইসরায়েলের উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলে...
৬ মিনিট আগেইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত নবম দিনে গড়িয়েছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্র যদি ইসরায়েলের পক্ষে সরাসরি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে লোহিতসাগরে মার্কিন জাহাজগুলোতে হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। হুতি বিদ্রোহীদের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে
২১ মিনিট আগেইরানের ইস্পাহান শহরে অবস্থিত একটি পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল হামলা চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘের পারমাণবিক পর্যবেক্ষক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি (আইএইএ)। সংস্থাটির প্রধান রাফায়েল গ্রোসি জানান, হামলার লক্ষ্য ছিল একটি সেন্ট্রিফিউজ ওয়ার্কশপ, যেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজে
১ ঘণ্টা আগেইরান-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
১ ঘণ্টা আগে