Ajker Patrika

গাজাবাসীদের সরানো হবেই, কেবল ‘ভালো’ ফিলিস্তিনিরাই ফিরতে পারবে: নেতানিয়াহু

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: আনাদোলু
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ছবি: আনাদোলু

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনাকে ‘বিগত কয়েক বছরের মধ্যে আসা প্রথম নতুন ধারণা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, এটি গাজার পরিস্থিতি আমূল বদলে দিতে পারে। পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, গাজাবাসীদের সরিয়ে দেওয়া হবেই এবং কেবল সন্ত্রাসবাদকে ঘৃণা করে এমন ‘ভালো’ ফিলিস্তিনিদের ফিরতে দেওয়া হবে।

মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম ফক্স নিউজের মার্ক লেভিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেন, ‘এটি (ট্রাম্পের প্রস্তাব) গাজায় সবকিছু বদলে দেওয়ার সম্ভাবনা রাখে।’ তিনি এমন এক সময়ে এই মন্তব্য করেন যখন তিনি ৬ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ওয়াশিংটনে অবস্থান করছিলেন।

সফরকালে নেতানিয়াহু তৃতীয়বারের মতো এমন একটি সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকার দিলেন, যারা সাধারণত তাঁর প্রতি ইতিবাচক মনোভাবাপন্ন। তবে তিনি সফরসঙ্গী বেশির ভাগ ইসরায়েলি সাংবাদিকদের এড়িয়ে গেছেন, যারা সম্ভবত তাঁর নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তগুলোর কঠোর বিশ্লেষণ করতেন।

ট্রাম্পের পরিকল্পনার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, ‘এটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ নয় এবং জাতিগত নির্মূলের পরিকল্পনাও নয়। তাঁর ভাষায়, ‘এটি জোরপূর্বক উচ্ছেদ নয়। এটি জাতিগত নির্মূল নয়। গাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে যেসব দেশ ও তথাকথিত মানবাধিকার কর্মীরা বলে যে, এটি একটি খোলা-কারাগার, তারা কেন চায় যে, তাদের সেখানেই আটকে রাখা হোক?’

অর্থাৎ, নেতানিয়াহুর বক্তব্য হলো—আন্তর্জাতিক মহলের অনেকেই গাজাকে ‘খোলা-কারাগার’ বলে অভিহিত করে থাকেন। তাহলে, যদি তাদের সেই পরিস্থিতি থেকে বের করে দেওয়া হয়, তবে তারা আপত্তি তুলছেন কেন?

নেতানিয়াহু আরও বলেন, গাজার বাসিন্দাদের জন্য এটি একটি সাময়িক পুনর্বাসনের পরিকল্পনা, যা তাদের স্থায়ীভাবে বাস্তুচ্যুত করার উদ্দেশ্যে নয়। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘তাদের একটি সাময়িক পুনর্বাসনের সুযোগ দিন। যাতে আমরা অঞ্চলটিকে আক্ষরিক অর্থেই পুনর্গঠনের পাশাপাশি উগ্রপন্থামুক্ত করতে পারি। আপনি ফিরতে চান? আপনাকে সন্ত্রাসবাদ পরিত্যাগ করতে হবে, তাহলেই আপনি ফিরতে পারবেন।’

অর্থাৎ, ফিলিস্তিনিদের সাময়িকভাবে অন্যত্র স্থানান্তরিত করা হবে। যাতে গাজাকে পুনর্গঠিত করা যায় এবং উগ্রবাদমুক্ত করা যায়। আর এরপর, যারা গাজায় ফিরে আসতে চান, তাদের অবশ্যই সন্ত্রাসবাদ পরিত্যাগ করতে হবে। অর্থাৎ, তারা যদি সন্ত্রাসবাদের পথ ছাড়েন, তাহলে তাদের ফিরে আসার অনুমতি দেওয়া হবে।

তবে নেতানিয়াহু স্বীকার করেন যে, এই পরিকল্পনার মূল চ্যালেঞ্জ হলো গাজার বাসিন্দাদের কোথায় স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু তিনি এটিকে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি হিসেবেই উপস্থাপন করেন। তাঁর ভাষায়, ‘এটি একটি নতুন ও সঠিক পন্থা...এটি খুবই ভালো, নতুন দৃষ্টিভঙ্গি।’

সাক্ষাৎকারে মার্কিন বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের ভূমিকা নিয়ে নেতানিয়াহুর কাছে জানতে চাওয়া হলে, তিনি অস্বীকার করেন যে তাঁকে হামাসের সঙ্গে চলমান বন্দিবিনিময় চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মধ্যে কেবল বন্ধুত্বপূর্ণ নয়, বরং চোখে-চোখ মিলিয়ে বাস্তব আলোচনা হয়েছে এবং ঘটনা হলো, আমি কয়েক মাস আগেই এই চুক্তিতে সম্মত হয়েছিলাম। কিন্তু হামাস এটি প্রত্যাখ্যান করেছিল।’

নেতানিয়াহু আরও বলেন, যুদ্ধের শুরুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি যে সমর্থন দেখিয়েছিল, তার জন্য তিনি কৃতজ্ঞ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বাইডেনের ওপর চাপ বাড়তে থাকে এবং যুক্তরাষ্ট্রের নীতিতে পরিবর্তন আসে। নেতানিয়াহু বলেন, ‘যখন বাইডেনের ওপর চাপ বাড়তে থাকে যাতে তিনি ইসরায়েল সম্পর্কে তাঁর অবস্থান পরিবর্তন করেন, তখন হোয়াইট হাউস জানিয়ে দেয় যে, যদি ইসরায়েল রাফাহে প্রবেশ করে, আমরা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেব।’

নেতানিয়াহু আরও দাবি করেন, তাঁর মন্ত্রিসভার কিছু সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতার কারণে গাজায় চলমান যুদ্ধ শেষ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এটিকে একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে মনে করেন। তাঁর সতর্কবাণী, ‘যদি আমরা একটি করদরাজ্য (ভ্যাসাল স্টেট) হয়ে যাই, তবে আমরা টিকতে পারব না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত