Ajker Patrika

সিরিয়া থেকে আলাদা হয়ে যাওয়ার ডাক দিলেন দ্রুজ নেতা হিকমাত

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দ্রুজ সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা হিকমাত আল হিজরি। ছবি: দ্য ন্যাশনাল
দ্রুজ সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা হিকমাত আল হিজরি। ছবি: দ্য ন্যাশনাল

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় সুয়েইদা প্রদেশে নতুন করে অস্থিরতা ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দ্রুজ সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা হিকমাত আল হিজরি প্রথমবারের মতো সিরিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে আলাদা ভূখণ্ড গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) আমিরাত-ভিত্তিক ‘দ্য ন্যাশনাল’ জানিয়েছে, সোমবার কানাওয়াত শহরে সমর্থকদের সঙ্গে বৈঠকে ওই আহ্বান জানান হিকমাত। তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ সিরিয়ার দ্রুজ সম্প্রদায়কে রক্ষার জন্য আমাদের আলাদা অঞ্চল হতে হবে। স্বাধীন দেশগুলো ও মুক্তচিন্তার মানুষদের উচিত এই দাবিতে আমাদের পাশে দাঁড়ানো।’

এক মাস আগে দ্রুজ ও বেদুইন সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের পর এবার হিকমাতের এই ঘোষণাটি এসেছে। তাঁর অভিযোগ, সাম্প্রতিক সহিংসতার লক্ষ্য ছিল সিরিয়া থেকে দ্রুজদের নিশ্চিহ্ন করা। তিনি বলেন, ‘আমাদের পথচলা শুরু হচ্ছে নতুন পতাকার নিচে।’ তবে তিনি আলাদা হওয়ার প্রক্রিয়া কীভাবে বাস্তবায়ন করবেন, সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।

দ্রুজ নেতৃত্বের এমন প্রকাশ্য দাবি সিরিয়ার ইতিহাসে বিরল। সর্বশেষ ১৯২০-এর দশকে ফরাসি নিয়ন্ত্রিত শাসনামলে সুয়েইদা অঞ্চলটি কিছুদিনের জন্য পৃথক সত্তা হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত জটিল। কারণ আরব বিশ্বের একটি বড় অংশই সিরিয়ার নতুন নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি সমর্থন জানাচ্ছে। সম্প্রতি আল-কায়েদা থেকে বেরিয়ে আসা হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস) বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করে সিরিয়ার ক্ষমতা দখল করেছে।

হিকমাতের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার আহ্বান প্রসঙ্গে এখনো কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি সিরিয়ার সরকার। তবে দেশটির বর্তমান সরকারের প্রধান সমর্থক সৌদি আরব সরাসরি জানিয়েছে, তারা যে কোনো ধরনের বিচ্ছিন্নতাবাদী আহ্বান প্রত্যাখ্যান করছে। রিয়াদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সিরিয়ার সব সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নতুন রাষ্ট্র নির্মাণে কাজ করতে হবে।’

দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, সুয়েইদায় দ্রুজ সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ লোক বাস করেন। গত জুলাইয়ে এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে আনার সরকারি প্রচেষ্টা ইসরায়েলি আক্রমণে ব্যর্থ হয়। এরপর থেকে দ্রুজরা হিকমাত আল হিজরিকে ঘিরে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন। বর্তমানে এই অঞ্চলটিকে অবরোধ করে রেখেছে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী ও মিত্র মিলিশিয়ারা। ফলে সেখানে খাদ্য ও রসদ সরবরাহে বড় বাধার সৃষ্টি হয়েছে।

সিরিয়ার অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মতো দ্রুজদের টিকে থাকা এখন এইচটিএস-শাসিত নতুন পরিস্থিতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে আলোচিত হচ্ছে। হিকমাত আল হিজরি এরই মধ্যে সিরিয়ার সরকারকে ‘চরমপন্থী’ আখ্যা দিয়ে নাগরিক সংবিধান প্রণয়নের দাবি তুলেছেন এবং সুয়েইদার নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয় জনগণের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত