Ajker Patrika

ইরানে পুরোনো একটি কথা এখন তিক্ত রসিকতা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ১৪
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

ইসরায়েলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতের পর ইরানে এখনো জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ ফিরছে না। রাজধানী তেহরানসহ দেশটির সর্বত্র মানুষ এখন বিশ্বাস করছে—আবারও ফিরে আসবে যুদ্ধ। এই অনিশ্চয়তা অনেকের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। সবাই এখন ভাবছে—আবারও যুদ্ধ শুরু হলে কীভাবে বাঁচবে।

ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের একেবারে শুরুর দিকে পরিস্থিতি যুদ্ধের মতো দেখায়নি। সে সময় ইরানের বিপ্লবী গার্ডের জেনারেল ও পরমাণুবিজ্ঞানীরা নিহত হন আর কয়েকটি ভবন ধ্বংস হয়। অনেকে ভেবেছিলেন, ইসরায়েল একবার আঘাত করে সরে গেছে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনেই স্পষ্ট হয়—এটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ।

ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিন যুদ্ধের পর যুদ্ধবিরতি হয়েছে। তবে খুব কম মানুষই বিশ্বাস করে এটি স্থায়ী হবে।

সরকারি জরিপ সংস্থা আইএসপিএ জানিয়েছে, তেহরানের অর্ধেকের বেশি বাসিন্দা আরও এক দফা যুদ্ধের আশঙ্কায় ভুগছেন। ১৫ শতাংশ শহর ছেড়ে স্থায়ীভাবে চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন। এর ফলে মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, সামাজিক চাপ, আইনি জটিলতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হঠাৎ মৃত্যু বা বাস্তুচ্যুত হওয়ার ভয়।

যাঁদের সামর্থ্য বেশি, তাঁরা রাজধানীর বাইরে উত্তর প্রদেশ মাজানদারান ও গিলানে বাড়ি বা জমি কিনছেন। সেখানে ভাড়াও এখন কয়েক গুণ বেড়ে গেছে। কেউ কেউ বছরের জন্য বাড়ি ভাড়া নিয়েছেন, যাতে যুদ্ধ শুরু হলে পরিবার নিয়ে সরে যেতে পারেন।

তবে সীমিত আয়ের মানুষদের একমাত্র ভরসা খাদ্য মজুত করা আর যেভাবেই হোক টিকে থাকা। যেমন—ফারিদেহ নামের তেহরানের এক বাসিন্দা জানালায় লাগানো টেপ এখনো সরাননি। বোমার আঘাতে যেন কাচ ছিটকে না পড়ে, সে জন্য এই টেপ লাগানো হয়েছিল। অন্যদিকে সাবের নামের ৪২ বছরের এক টেকনিশিয়ান একটি জরুরি ব্যাগে তাঁবু, স্লিপিং ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে রেখেছেন।

যাঁদের রাজধানীর বাইরে যাওয়ার জায়গা আছে, তাঁরা গাড়ির জ্বালানি ট্যাংক সব সময় ভর্তি রাখছেন। ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক সিনা বলেন, ‘যুদ্ধের সময় তিন দিন গ্যাসের জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। এখন অর্ধেক খালি হলেই ভরে নিই। জানি, যেকোনো সময় ইসরায়েল আক্রমণ করতে পারে।’

তবে সবাই যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তা নয়। অনেকে ভয় ও মানসিক চাপ এড়াতে কিছুই করছে না। তাদের কাছে যুদ্ধ এতটাই ধ্বংসাত্মক মনে হয় যে, কোনো সচেতনতাই কাজে আসবে না।

কড়া ইসলামি অনুশাসনে থাকা ইরানের মানুষদের মাঝে বছরের পর বছর একটি সান্ত্বনা বাক্য প্রচলিত ছিল—‘অন্তত নিরাপত্তা তো আছে।’ আজ সেই লাইনও পরিণত হয়েছে এক তিক্ত রসিকতায়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে আরও ৩০ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র

বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো লতিফ সিদ্দিকীর ভাইকে

গোয়ালন্দে ‘নুরাল পাগলার’ লাশ তুলে পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধরা, আহত অর্ধশত

গরম মাড় পড়ে শিশু দগ্ধ, গলা টিপে হত্যার পর বস্তায় ভরে পুকুরে ফেলেন চাচি

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনায় নতুন রণক্ষেত্র ‘টুথপেস্ট’

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত