Ajker Patrika

ইসরায়েলে অরক্ষিত আরব বেদুইনদের আশ্রয়হীনতার করুণ চিত্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ১৫ জুন ২০২৫, ১৭: ৫৭
নেগেভ মরুভূমির দক্ষিণে একটি গ্রামের কাছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ব্যাটারির পাশ দিয়ে গাধার পিঠে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন এক বেদুইন। ছবি: এএফপি
নেগেভ মরুভূমির দক্ষিণে একটি গ্রামের কাছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি ব্যাটারির পাশ দিয়ে গাধার পিঠে চড়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন এক বেদুইন। ছবি: এএফপি

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা এখন চরমে। ইসরায়েলের মানুষ সার্বক্ষণিক ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আতঙ্কে ভুগছে। এরই মধ্যে তেল আবিব ও হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বহু স্থাপনা বিধ্বস্ত হয়েছে। হতাহতের সংখ্যাও অনেক। এই পরিস্থিতির মধ্যেও ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের আরব বেদুইন সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষ রয়ে গেছে সম্পূর্ণ অরক্ষিত ও অবহেলিত।

রাজধানী তেল আবিব কিংবা অন্যান্য ইহুদিপ্রধান শহরে যখন অত্যাধুনিক ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা এবং বোমা আশ্রয়কেন্দ্রের সুষ্ঠু অবকাঠামো রয়েছে, তখন নেগেভ মরুভূমির অসংখ্য বেদুইন পরিবার যেসব গ্রামে বসবাস করে, ইসরায়েল সরকার সেসব গ্রামকে বসতি হিসেবেই স্বীকৃতি দেয় না। সেখানে বাসিন্দাদের জন্য কোনো নিরাপদ আশ্রয় নেই। এমনকি সরকারিভাবে স্বীকৃত কোনো বাসস্থানের অধিকারও নেই তাদের।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইসরায়েলে বসবাসরত আনুমানিক ৩ লাখ বেদুইনের মধ্যে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার বাস করে প্রত্যন্ত গ্রামে। এসব গ্রামকে ইসরায়েল সরকার বসতি হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে সেগুলো উন্নয়ন পরিকল্পনা, মৌলিক নাগরিক সেবা এবং নিরাপত্তা সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এসব এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ তো দূরের কথা, স্থায়ী বসতিও প্রায়শ অবৈধ অবকাঠামো হিসেবে চিহ্নিত হয় এবং উচ্ছেদের নোটিশ জারি করা হয়।

ইরান থেকে ছোড়া এক ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে নেগেভের একটি বেদুইন গ্রামে ৭ বছর বয়সী এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। তার পরিবার টিনের ছাউনি ও প্লাস্টারবোর্ড দিয়ে নির্মিত অস্থায়ী ঘরে বসবাস করে।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের স্বীকৃত ইহুদি বসতিগুলোর প্রতিটি ভবনে বোমা আশ্রয়কেন্দ্র থাকার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া ‘আয়রন ডোম’ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার ডিজাইন করা হয়েছে মূলত মানচিত্রে স্বীকৃত নগর এলাকাগুলোর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে। অস্বীকৃত বেদুইন গ্রামগুলো বহু বছর ধরে ‘খোলা জায়গা’ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে। ফলে সেগুলোর দিকে ছোড়া রকেট, ড্রোন বা ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয় না। তাই এসব অঞ্চলের বাসিন্দারা সরাসরি হামলার শিকার হচ্ছে।

অরক্ষিত বাড়িতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বেদুইনরা। ছবি: সংগৃহীত
অরক্ষিত বাড়িতে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন বেদুইনরা। ছবি: সংগৃহীত

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতে, ইসরায়েলের ভূমি ও পরিকল্পনাসংক্রান্ত বৈষম্যমূলক নীতিই বেদুইন জনগোষ্ঠীকে এই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে ঠেলে দিয়েছে। বেঁচে থাকার অধিকার, নিরাপদ আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবার ন্যায্য প্রাপ্যতা থেকে তাদের বঞ্চিত রাখা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ইসরায়েল সরকার বেদুইনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে প্রায়শই তাদের পরিকল্পিত শহরে স্থানান্তরের কথা বলে, যা স্বভাবতই গ্রহণ করতে নারাজ বেদুইনরা। নগরজীবনকে তারা নিজেদের ঐতিহ্যবাহী জীবনধারা ও পৈতৃক ভূমি থেকে উচ্ছেদের সমতুল্য মনে করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, দক্ষিণ ইসরায়েলের বেদুইন জনগোষ্ঠীর মধ্যে পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডারের (পিটিএসডি) হার ইসরায়েলি ইহুদিদের তুলনায় অনেক বেশি। বোমা আশ্রয়কেন্দ্র, সাইরেন সতর্কতা ব্যবস্থা এবং স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোর অভাব এই মানসিক চাপকে আরও তীব্র করে তুলছে।

২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর, দক্ষিণ ইসরায়েলের বেদুইন গ্রাম উম্ম আল-খিরানে বেদুইন স্বেচ্ছাসেবকেরা কংক্রিটের রকেট শেল্টারে রং করছেন। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল
২০২৩ সালের ৭ ডিসেম্বর, দক্ষিণ ইসরায়েলের বেদুইন গ্রাম উম্ম আল-খিরানে বেদুইন স্বেচ্ছাসেবকেরা কংক্রিটের রকেট শেল্টারে রং করছেন। ছবি: টাইমস অব ইসরায়েল

ইসরায়েলের কিছু মানবিক সহায়তা সংস্থা ও বেদুইন-ইহুদি অ্যাডভোকেসি গ্রুপ বেদুইন গ্রামগুলোতে সীমিতসংখ্যক কংক্রিটের আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। তবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা, ‘অবৈধ অবকাঠামো’সংক্রান্ত বিধিনিষেধ এবং সরকারি স্বীকৃতির অভাবে এসব উদ্যোগ কার্যকরভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। একজন এনজিও কর্মী বলেন, ‘যতক্ষণ না সরকার এই গ্রামগুলোকে স্বীকৃতি দিচ্ছে এবং সমতাভিত্তিক উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করছে, ততক্ষণ এই আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ কার্যক্রম শুধু সাগরে একফোঁটা জল।’

তথ্যসূত্র: ইসরায়েলি সংবাদপত্র হারেৎজ

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ভারতে যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ, বহু হতাহতের আশঙ্কা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। ছবি: সংগৃহীত
দুর্ঘটনার ফলে যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের ছত্তিশগড়ের বিলাসপুর জেলায় একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে মালবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সংঘর্ষে কমপক্ষে চারজন নিহত ও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে জয়রাম নগর স্টেশনের কাছে একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে একটি মালবাহী ট্রেনের ধাক্কা লাগে। যাত্রীবাহী ট্রেনটি কোরবা থেকে বিলাসপুর যাচ্ছিল।

জেলা কালেক্টর সঞ্জয় আগরওয়াল দুর্ঘটনার খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

দুর্ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, যাত্রীবাহী ট্রেনের একটি বগি মালবাহী ট্রেনের ওপর উঠে গেছে। দুর্ঘটনাস্থলে প্রচুর লোক জড়ো হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ট্রাম্পের নেতৃত্বে ২ বছরের জন্য গাজার শাসনক্ষমতা চায় যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৭: ৩৯
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্র চায় ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে একটি ‘শান্তি পরিষদ’ আগামী দুই বছর গাজা শাসন করুক। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা অন্তত দুই বছরের জন্য গাজা শাসনের দায়িত্ব নিতে চায়। একই সঙ্গে গাজায় কোনো শান্তিরক্ষী বাহিনী নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক বলপ্রয়োগকারী বাহিনী মোতায়েন করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা। এ বিষয়ে দেশটি এর মধ্যে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্য দেশের কাছে একটি খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস মার্কিন প্রশাসনের এক ক্ল্যাসিফায়েড বা গোপন নথির বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র গতকাল সোমবার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্রকে গাজায় অন্তত দুই বছরের জন্য একটি আন্তর্জাতিক বাহিনী গঠনের খসড়া প্রস্তাব পাঠিয়েছে।

ওই খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকে গাজা শাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত বিস্তৃত ম্যান্ডেট দেওয়া হবে। প্রয়োজনে এই সময়সীমা বাড়ানো সম্ভব হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মার্কিন কর্মকর্তা অ্যাক্সিওসকে জানিয়েছেন, এই খসড়ার ভিত্তিতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যদের আলোচনা চলবে। লক্ষ্য হলো—আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাবটি গৃহীত করা এবং জানুয়ারির মধ্যে গাজায় প্রথম সেনা মোতায়েন করা।

মার্কিন ওই কর্মকর্তা জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী বা আইএসএফ (International Security Force) একটি ‘বলপ্রয়োগকারী বাহিনী’, শান্তিরক্ষী বাহিনী নয়। এ বাহিনীতে বিভিন্ন দেশের সৈন্য থাকবে এবং তা গঠিত হবে গাজার ‘বোর্ড অব পিস বা শান্তি পরিষদের’ পরামর্শে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, এ বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তিনিই দায়িত্ব নেবেন।

খসড়ায় বলা হয়েছে, বোর্ড অব পিস অন্তত ২০২৭ সালের শেষ পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। খসড়ার তথ্য অনুযায়ী, আইএসএফের দায়িত্ব থাকবে ইসরায়েল ও মিসরের সঙ্গে গাজার সীমান্ত নিরাপদ রাখা, সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ও মানবিক সহায়তার করিডর রক্ষা করা এবং নতুন ফিলিস্তিনি পুলিশ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া। এই নতুন পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে তারা কাজ করবে।

এ ছাড়া আইএসএফের দায়িত্ব থাকবে গাজার নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল করা। অর্থাৎ গাজা উপত্যকার নিরস্ত্রীকরণপ্রক্রিয়া নিশ্চিত করা। এর মধ্যে সামরিক, সন্ত্রাসী ও আক্রমণাত্মক অবকাঠামো ধ্বংস ও তা পুনর্গঠন রোধ করা এবং অ-রাষ্ট্রীয় সশস্ত্র গোষ্ঠীর অস্ত্র স্থায়ীভাবে নিষ্ক্রিয় করা।

এর মানে দাঁড়ায়, হামাস যদি স্বেচ্ছায় নিরস্ত্রীকরণে রাজি না হয়, তাহলে বাহিনী জোরপূর্বক তাদের নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব নেবে। খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, প্রয়োজন হলে গাজা চুক্তি বাস্তবায়নে আইএসএফ অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবে। এ বাহিনী গাজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এমন এক অন্তর্বর্তী সময়ে, যখন ইসরায়েল ধীরে ধীরে গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সরে আসবে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের সংস্কার সম্পন্ন করে দীর্ঘ মেয়াদে গাজার প্রশাসন গ্রহণের প্রস্তুতি নেবে।

অ্যাক্সিওসের আগের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়া, আজারবাইজান, মিসর ও তুরস্ক এই বাহিনীতে সৈন্য পাঠাতে আগ্রহ দেখিয়েছে। খসড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আইএসএফ বোর্ড অব পিসের কাছে গ্রহণযোগ্য একীভূত কমান্ড কাঠামোর অধীনে গাজায় মোতায়েন হবে। এতে জোর দিয়ে বলা হয়েছে, বাহিনী গঠন ও এর কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে ‘মিসর ও ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ পরামর্শ ও সহযোগিতার ভিত্তিতে’।

বাহিনীকে ‘আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আওতায় তাদের ম্যান্ডেট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা’ দেওয়া হবে। খসড়া প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, বোর্ড অব পিসকে একটি অন্তর্বর্তী প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে ক্ষমতায়িত করা হবে। এ প্রশাসন গাজার পুনর্গঠনের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করবে এবং অর্থ সংগ্রহ করবে। এ দায়িত্ব তারা পালন করবে যতক্ষণ না ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নিজেদের সংস্কার কর্মসূচি সন্তোষজনকভাবে শেষ করে এবং বোর্ড অব পিস তার অনুমোদন দেয়।

প্রস্তাব অনুযায়ী, বোর্ড অব পিসকে গাজার স্থানীয় যোগ্য, অরাজনৈতিক ও টেকনোক্র্যাট ফিলিস্তিনি নাগরিকদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি তদারক করবে ও সহায়তা দেবে। এই কমিটি গাজার বেসামরিক প্রশাসনের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনা করবে। মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই কমিটি গঠনের আগেই বোর্ড অব পিস কার্যকর হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, মানবিক সহায়তা বিতরণ করবে সেসব সংস্থা, যারা বোর্ড অব পিসের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। এসব সংস্থার মধ্যে রয়েছে—জাতিসংঘ, রেড ক্রস ও রেড ক্রিসেন্ট। কোনো সংস্থা যদি সাহায্য অপব্যবহার করে বা অন্যদিকে সরিয়ে নেয়, তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

‘তোমার জন্যই খুন করেছি’, স্ত্রীকে হত্যার পর প্রেমিকাকে সার্জনের বার্তা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৮: ১৪
৬ মাস আগে বিয়ে করেন এই দম্পতি। ছবি: এনডিটিভি
৬ মাস আগে বিয়ে করেন এই দম্পতি। ছবি: এনডিটিভি

স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ভারতের বেঙ্গালুরুর এক সার্জনের বিরুদ্ধে। ছয় মাস আগে ঘটে যাওয়া এ হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে সম্প্রতি তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গত বছরের ২৬ মে বিয়ে করেন সার্জন মহেন্দ্র রেড্ডি ও চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ কৃতিকা রেড্ডি। দুজনেই বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন।

মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ, কৃতিকা অসুস্থ হলে তাঁকে হাসপাতালে না নিয়ে ঘরেই অ্যানেস্থেটিক ওষুধ প্রোপোফল দেন মহেন্দ্র। যার মাত্রা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এরপর কৃতিকা আরও অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দ্রুত নিকটস্থ একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরীক্ষা করে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

সম্প্রতি এই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার সময় পুলিশ দেখতে পায়, অভিযুক্ত সার্জন এ ঘটনার কিছুক্ষণ পরই একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন। যেখানে লেখা, ‘তোমার জন্য আমি আমার স্ত্রীকে খুন করেছি।’

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত চিকিৎসক মহেন্দ্র রেড্ডি জেনারেল সার্জন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। তিনি এক নারীর সঙ্গে ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখতেন। হত্যার পর সেই অ্যাপের মাধ্যমেই তিনি ওই নারীকে এ বার্তা পাঠান। তাঁর ফোনের ফরেনসিক বিশ্লেষণের সময় পুলিশ বার্তাটি খুঁজে পায়।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁর বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। ওই নারীর পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ।

পরে ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির (এফএসএল) প্রতিবেদনে কৃতিকার দেহে প্রোপোফলের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। এতে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর চেয়ে হত্যার আশঙ্কা স্পষ্ট হয়। ঘটনার তদন্তে তাঁদের বাসা থেকে ক্যানোলা সেট, ইনজেকশন টিউবসহ বিভিন্ন চিকিৎসা সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।

এই প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর কৃতিকার বাবা মহেন্দ্রের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ সন্দেহ করে, নিজের চিকিৎসাজ্ঞান ব্যবহার করে মহেন্দ্র ঘটনাটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন।

অবশেষে ১৫ অক্টোবর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সীমান্ত কুমার সিং বলেন, এ পর্যন্ত সংগৃহীত প্রমাণগুলো স্পষ্টভাবে দেখাচ্ছে যে, অপরাধে স্বামীর ভূমিকা ছিল। তিনিই প্রথম স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে যান, কিন্তু তখন এমন কিছু উল্লেখ করেননি, যা সন্দেহজনক হতে পারত।

পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, ‘মহেন্দ্র দাবি করেছিলেন, কৃতিকা অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এখন আমরা জেনেছি, তাঁকে সিডেটিভ ইনজেকশন দেওয়া হয়েছিল, যা থেকে হত্যার উদ্দেশ্য স্পষ্ট হয়।’

আরও খবর পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে পেরুর সম্পর্কচ্ছেদ

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
পেরুর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজ। ছবি: সংগৃহীত
পেরুর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজ। ছবি: সংগৃহীত

অভিশংসনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে আশ্রয় দেওয়ায় মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে লাতিন আমেরিকার দেশ পেরু। দেশটির অভিযোগ—মেক্সিকো ২০২২ সালের অভ্যুত্থানচেষ্টার মামলায় বিচারাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেৎসি শ্যাভেজকে আশ্রয় দিয়েছে।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, গত রোববার এই ঘোষণা দেয় পেরু সরকার। এর কয়েক ঘণ্টা আগেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্যাভেজ মেক্সিকোর দূতাবাসে পালিয়ে যান।

পেরুর পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুগো দে সেলা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আজ আমরা বিস্ময় ও গভীর দুঃখের সঙ্গে জেনেছি যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়োর কথিত অভ্যুত্থানচেষ্টার অন্যতম অপরাধী বেৎসি শ্যাভেজকে মেক্সিকোর দূতাবাসে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই অবন্ধুসুলভ পদক্ষেপের কারণে এবং অতীতে ও বর্তমানে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রেসিডেন্টদের বারবার পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে পেরু সরকার আজ থেকেই মেক্সিকোর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ মেক্সিকো সরকার এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।

শ্যাভেজের আইনজীবী রাউল নোব্লেসিয়া স্থানীয় রেডিও আরপিপিকে বলেন, তিনি কয়েক দিন ধরে তাঁর মক্কেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। শ্যাভেজ আশ্রয়ের আবেদন করেছেন কি না, সেটিও তিনি জানেন না। শ্যাভেজ প্রেসিডেন্ট পেদ্রো কাস্তিয়োর সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০২২ সালের নভেম্বরে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পান। তখন প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্টের মধ্যে টানাপোড়েন চলছিল।

কাস্তিয়ো ছিলেন একসময় গ্রামের স্কুলশিক্ষক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা। তাঁকে বলা হয় পেরুর ‘প্রথম দরিদ্র প্রেসিডেন্ট।’ কিন্তু তিনি পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করলে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তাঁকে অভিশংসন করা হয়। এরপর থেকেই লিমা ও মেক্সিকো সিটির সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে।

অভিশংসনের পর কাস্তিয়ো মেক্সিকোর লিমা দূতাবাসে আশ্রয়ের চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু দূতাবাসে পৌঁছানোর আগেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। একই মামলায় বেৎসি শ্যাভেজকেও অভিযুক্ত করা হয়।

এর আগে, ২০২২ সালের ডিসেম্বরেই পেরু মেক্সিকোর রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কার করে। কারণ, তখন মেক্সিকো কাস্তিয়োর স্ত্রী ও সন্তানদের আশ্রয় দিয়েছিল। এর পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে পেরুর তৎকালীন প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেস ম্যানুয়েল লোপেস ওব্রাদরের বিরুদ্ধে কাস্তিয়োর পক্ষে কথা বলে পেরুর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অভিযোগ তোলেন এবং মেক্সিকো সিটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে নেন।

এই বছরের মার্চে সাবেক প্রেসিডেন্ট কাস্তিয়ো ও শ্যাভেজের বিরুদ্ধে মামলার বিচার শুরু হয়। কাস্তিয়ো অভিশংসনের পর থেকেই কারাগারে আছেন। শ্যাভেজ গত সেপ্টেম্বরে জামিনে মুক্তি পান।

প্রসিকিউটররা শ্যাভেজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তিনি কাস্তিয়োর সঙ্গে মিলে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে জড়িত ছিলেন। শ্যাভেজের বিরুদ্ধে ২৫ বছরের কারাদণ্ড এবং কাস্তিয়োর বিরুদ্ধে ৩৪ বছরের কারাদণ্ডের আবেদন করেছে প্রসিকিউশন। তবে দুজনই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

‘সাকিবের পোস্টার স্টেডিয়ামে ঢুকবে কি না, বিসিবির ডিসিপ্লিনারি কমিটি দেখবে’

আন্তর্জাতিক সালিসের দ্বারস্থ হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ-আদানি

দলীয় মনোনয়ন পছন্দ না হওয়ায় বিশৃঙ্খলা, বিএনপির ৪ নেতা বহিষ্কার

জোটেই ভোট করবে জামায়াত, চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা শিগগির

জোটে নিজ দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও অধ্যাদেশ জারি

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত