Ajker Patrika

ইরানে গোপন অভিযানের রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সাবেক মোসাদপ্রধান

আপডেট : ১২ জুন ২০২১, ১৩: ০৮
ইরানে গোপন অভিযানের রোমহর্ষক বর্ণনা দিলেন সাবেক মোসাদপ্রধান

ঢাকা : ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ কীভাবে ইরানে অভিযান পরিচালনা করে আসছে, তার রোমহর্ষক বর্ণনা তুলে ধরেছেন সাবেক মোসাদপ্রধান ইয়োসি কোহেন। ইসরায়েলি চ্যানেল ১২কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন।

সাক্ষাৎকারে ইয়াসি বলেন, ২০১৮ সালে ইরানের পরমাণু আর্কাইভে অভিযান চালিয়ে হাজার হাজার নথিপত্র চুরি করে ইসরায়েল। তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে ইরানের পরমাণু স্থাপনা নাতাঞ্জে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছিল এবং ইরানের একজন পরমাণুবিজ্ঞানীকে হত্যার পেছনেও ইসরায়েলি সম্পৃক্ততা রয়েছে।

ইসরায়েলি চ্যানেল ১২-এর সাংবাদিক ইলানা ডায়ানকে তিনি এই সাক্ষাৎকারটি দেন, যা ইসরায়েলে গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রচারিত হয়।

তার সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে রোমহর্ষক অংশ ছিল, যখন তিনি ইরানের পরমাণু আর্কাইভ থেকে চুরির বিস্তারিত জানাতে শুরু করেন।

২০১৮ সালে একটি সংবাদ সম্মেলনে চুরি যাওয়া এসব নথির কথা উল্লেখ করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরান একবার গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির চেষ্টা করেছে এবং অস্ত্র তৈরির প্রযুক্তি তাদের আছে। কিন্তু ইরান বরাবরই সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সাক্ষাৎকারে কোহেন বলেন, ইরানে ওই অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি নিতে তাঁদের দুই বছর লেগেছে। সেখানে ২০ জন মোসাদ এজেন্ট অংশ নিয়েছিলেন, যাঁদের একজনও ইসরায়েলি নাগরিক নন।

তেল আবিবের একটি কমান্ড সেন্টার থেকে ওই অপারেশন নজরদারি করেন মোসাদপ্রধান। এজেন্টরা ওয়্যারহাউজের ভেতরে প্রবেশ করে ৩০টির বেশি সিন্দুক ভাঙে। 

ওই অভিযানে অংশ নেওয়া  সবাই বেঁচে ফিরে এসেছেন এবং ভালো আছেন, যদিও তাঁদের কয়েকজনকে ইরান থেকে বের করে আনা হয়েছে বলে সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন কোহেন।

সাক্ষাৎকারের শুরুর দিকে ইরানের নাতাঞ্জ পরমাণুকেন্দ্রের বিষয়ে বলেন কোহেন। ইরান জানিয়েছিল, ২০২০ সালের জুলাই মাসের ওই নাশকতার ঘটনায় নাতাঞ্জ পরমাণুকেন্দ্রের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ অংশে আগুন লাগে। এই বছরের এপ্রিল মাসে নতুন সরঞ্জাম সংযোজনের পরদিনই কর্মকর্তারা জানান, সেখানে আবার নাশকতার ঘটনা ঘটেছে এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেসব ঘটনায় ইসরায়েলের বিরুদ্ধে 'পরমাণু সন্ত্রাসের' অভিযোগ আনে ইরান।

এ নিয়ে কোহেন বলেন, তিনি ওই পরমাণু স্থাপনা সম্পর্কে এত ভালোভাবে জানেন যে যেখানে ঘূর্ণমান যে সেন্ট্রিফিউজ রয়েছে, সেখানেও তাঁকে তিনি নিয়ে যেতে পারবেন।

সাক্ষাৎকারে তিনি ইরানের শীর্ষ পরমাণুবিজ্ঞানী মহসেন ফাখরিজাদকে নিয়েও কথা বলেন, যিনি গত নভেম্বরে তেহরানের উপকণ্ঠে একটি সড়কে গুপ্তঘাতকের হামলায় নিহত হন। ওই হামলার জন্য প্রকাশ্যেই ইসরায়েলকে দায়ী করে আসছে ইরান।

ওই মৃত্যুর সঙ্গে মোসাদের সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার বা অস্বীকার করেননি সাবেক প্রধান। কিন্তু তিনি বলেছেন, ওই বিজ্ঞানীকে বহু বছর ধরে 'টার্গেট' করা হয়েছিল, কারণ তার বৈজ্ঞানিক জ্ঞান মোসাদের উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছিল।

২০১৫ সালে মোসাদের প্রধান হিসেবে  ইয়োসি কোহেনকে নিয়োগ দেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে পড়াশোনা শেষে ১৯৮২ সালে তিনি এই গোয়েন্দা সংস্থায় যোগ দিয়েছিলেন।

মোসাদপ্রধানের দায়িত্ব থেকে গত সপ্তাহে অবসরে যান কোহেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত