Ajker Patrika

ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরের পথে ধস, ৩০ জনের মৃত্যু

কলকাতা প্রতিনিধি  
বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: আইএনএস
বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার পথে ভয়াবহ ধসের ঘটনা ঘটেছে। ছবি: আইএনএস

টানা ভারী বর্ষণে বিপর্যস্ত ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরে আবারও ঘটেছে ভূমি ধসের ঘটনা। হড়পা বান ও ধসের ঘটনায় বৈষ্ণোদেবীর মন্দিরে যাওয়ার পথে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, ধসের কবলে এখনো অনেকেই আটকে রয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসি জেলায় বৈষ্ণোদেবীর পথে ধস নামে। কর্তৃপক্ষ জানায়, অর্ধকুঁয়ারীর কাছে ধস নামতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বহু পুণ্যার্থী এতে আটকা পড়েন। উদ্ধারকাজ শুরু হলেও টানা বৃষ্টির কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।

রিয়াসির সিনিয়র পুলিশ সুপার (এসএসপি) পরমবীর সিংহ জানান, ধসে চাপা পড়ে এখন পর্যন্ত ৩০ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হয়েছে।

বিগত তিন দিন ধরে অব্যাহত বৃষ্টিতে জম্মু-কাশ্মীরের জনজীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। কোথাও ভেসে গেছে সেতু, কোথাও ভেঙে পড়েছে রাস্তাঘাট। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বহু এলাকায়। মোবাইল টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত।

স্থানীয় প্রশাসন ও উদ্ধারকারী বাহিনী সমন্বিতভাবে কাজ শুরু করেছে। মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত অন্তত সাড়ে তিন হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে। তাঁদের জন্য অস্থায়ী ত্রাণকেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে থাকার পাশাপাশি চিকিৎসার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী দুই থেকে তিন দিন ভারী বৃষ্টি চলতে পারে। এরই মধ্যে জম্মু, সাম্বা, রিয়াসি, উধমপুর, ডোডা এবং কিশ্তওয়াড় জেলায় ভূমিধস ও হড়পা বানের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কাটরায় লাল সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে বৈষ্ণোদেবীর যাত্রা আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে।

বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিবছর বিপুলসংখ্যক ভক্ত সমবেত হন। দুর্ঘটনার পর পুণ্যার্থীদের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। মন্দির কর্তৃপক্ষ, সেনা ও স্থানীয় প্রশাসন মিলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। তবে প্রবল বর্ষণের কারণে অনেক জায়গায় কাদায় ভরে গেছে পথ, যা উদ্ধারকাজকে আরও জটিল করে তুলছে।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যাঁরা গুরুতর আহত, তাঁদের স্থানীয় হাসপাতাল থেকে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সাধারণ মানুষের জন্য খাদ্য ও ওষুধ সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। তবুও বিপুলসংখ্যক মানুষ এখনও ঝুঁকির মধ্যে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দা ও পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাহাড়ি এলাকায় অব্যাহত বৃষ্টি এমন প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে আরও ঘন ঘন ডেকে আনছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত