প্রতিনিধি
কলকাতা: ভারতে মোদি হাওয়া শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে। সাত বছর ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী, বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথাই ছিল ভারতে শেষ কথা। দল ও সরকার পরিচালনায় এই দুজনের উত্থানের পর বাকিরা তাঁদের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যান বলে বিজেপির অন্দরেও গুঞ্জন বহুদিনের। দুই গুজরাটি নেতার করপোরেট ঢঙে দল ও সরকার পরিচালনায় বিজেপির অন্য নেতারা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিলেন। দলের বাইরে দেশের নির্বাচন কমিশন থেকে অন্যান্য স্বশাসিত সংস্থা, এমনকি বিচার ব্যবস্থাতেও তাঁদের প্রভাব নিয়ে কথা উঠতে শুরু করে। দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা লালকৃষ্ণ আদভানি বা মুরুলি মনোহর যোশিরা অনেক আগেই রাজনৈতিক বাণপ্রস্থে চলে গেছেন। তাঁদের ইমেজ ভাঙিয়ে বিজেপির সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে সাত বছর ধরে মোদি-শাহ জুটি ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগের পর এখন দল ও সরকার পরিচালনায় শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বলে অনেকে মনে করেন।
২০১৪ সালে মনমোহন সিং সরকারের পতনের পর ভারতে শুরু হয় মোদি-রাজ। বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপিরও প্রথমসারির নেতারা কিছুদিন আগেও একান্তে বলতেন, মোদি-শাহের কথাই দলে শেষ কথা। বিজেপির মেন্টর বলে পরিচিত আরএসএস-এও ছিল একই গুঞ্জন। কিন্তু বিরোধীদের মতোই দলের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধমতকে মোটেই আমল দেয়নি এই জুটি। নিজেদের ইচ্ছাই ছিল তাদের কাছে শেষ কথা। বিজেপির দুই সাবেক সভাপতি রাজনাথ সিং এবং নীতীন গড়কড়ি মোদি–মন্ত্রিসভায় থাকলেও দলে বা সরকারে তাঁদের ভূমিকা ও গুরুত্ব অনেকটাই কম। আরেক সাবেক সভাপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু এখন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বিজেপিকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দেওয়ায় এতকাল কোনো সমালোচনাই হজম করতে হয়নি এই দুই নেতাকে। তাঁরাও পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজ্যে প্রভাব বাড়িয়েছেন। অভিযোগ, পাঁচতারা হোটেলের রাজনীতি করতে গিয়ে আরও বেশি করে করপোরেটদের স্বার্থরক্ষা করে চলেছে মোদি সরকার। ভারতে ভোট মানে হয়ে উঠেছে এখন বেসরকারি বিমান আর হেলিকপ্টারের ছড়াছড়ি। ভোটে খরচের কোনো সীমা নেই। দলের সাফল্যে চাপা পড়ে ছিল সমস্ত দলীয় ক্ষোভ।
কিন্তু করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকারের ব্যর্থতা মোদি-ম্যাজিকে চিড় ধরিয়েছে বলে বিজেপিরই একটি মহলের আশঙ্কা। তাই বিজেপির আদি নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথা বললেই শোনা যায়, দল ও সরকার পরিচালনায় গণতান্ত্রিক পরিবেশই আজ আক্রান্ত। আসলে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিজেপির হার মোদি-বিরোধীদের শক্তি জোগাতে শুরু করেছে। কংগ্রেসসহ বিজেপি–বিরোধীরা বহুদিন ধরেই বলছেন, দেশে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ জারি হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে ‘বিজেপির শাখা সংগঠন’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
সমস্ত বিরোধী দল, এমনকি সরকারের শরিক দলেরও বিরোধিতাকে আমল না দিয়ে অ-মুসলিমদের জন্য নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছে মোদি সরকার। অবসরের পরই প্রথা ভেঙে দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে জাতীয় সংসদের সদস্য মনোনীত করতেও কুণ্ঠিত হয়নি। অভিযোগ, সংসদীয় কোনো শিষ্টাচারকেই তিনি পরোয়া করেননি। দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে চলছে কৃষকদের আন্দোলন। সেই আন্দোলন বা বিরোধীদের বিভিন্ন বিষয়ে নীতিগত বিরোধিতাকে আমল দিতেই নারাজ তাঁরা। দলের নীতি ভেঙে অন্য দল থেকে ‘দাগি’ নেতাদের ভাঙিয়ে এনে হলেও এই জুটির কাছে সাফল্যই ছিল শেষ কথা। সরকার পরিচালনায় দেখা গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বেপরোয়া মনোভাব। ভারতীয় বিমান সেনার জন্য বেশি দাম দিয়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে বিতর্ক হলেও মোদি সরকার সেই বিতর্ককেও ধামাচাপা দিতে ব্যবহৃত হয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্র। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহারের এত অভিযোগ আগে ওঠেনি। এমন মত জাতীয় সংসদের বর্ষীয়ান সদস্য সৌগত রায়ের।
পশ্চিমবঙ্গে হারের পর মোদি-শাহ জুটির আগের মতো একচ্ছত্র আধিপত্য আর নেই, এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। বিজেপিরই একটা বড় অংশ এই গুজরাটি জুটির বিরুদ্ধে গুঞ্জন শুরু করে দিয়েছেন। মাস আটেক পরেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা ভোট। সেখানে মোদি-ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের বিরুদ্ধে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। ঠাকুর সম্প্রদায়ের যোগীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণ এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষিপ্ত। তবু যোগীতেই ভরসা রাখতে গিয়ে ২০১৪-এ প্রথমবারের মতো দলের ভেতরও প্রশ্ন চিহ্নের সামনে পড়তে হচ্ছে মোদি শিবিরকে। অনেকে এটিকে দলে মোদি-শাহ জুটির লাগাম আলগা হওয়ার লক্ষণ বলে মনে করছেন।
দলের পাশাপাশি সরকার পরিচালনা নিয়েও সমাজের বিভিন্ন স্তরে মোদি বিরোধিতা বাড়ছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সংঘাতে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত আমলাকুলকেও কিন্তু মমতার হয়েই কথা বলতে দেখা যায়। বিভিন্ন বিষয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের কটাক্ষও হজম করতে হচ্ছে মোদি সরকারকে। কিছুদিন আগেও মোদির সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহীর তকমা দেওয়া হতো। জেলসহ নানা হয়রানি ছিল প্রাপ্য। কিন্তু সম্প্রতি আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, সমালোচনা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা যাবে না। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার কথাও বলেছেন আদালত।
আসলে ভারতের ৭৪ বছর ধরে লালিত গণতান্ত্রিক পরিবেশ কিছুতেই টোল খেতে পারে না। এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। তাঁর মতে, দেশজুড়ে মোদি বিরোধিতা শুরু হয়েছে আসলে গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জরুরি অবস্থা জারির পরে ইন্দিরা গান্ধীর মতো ব্যক্তিত্বকেও ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় কিছুতেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধীদের প্রাপ্য মর্যাদাকে বিন্দুমাত্র টোল খেতে দেননি। কিন্তু মোদির আমলে তাঁরা ‘স্বৈরতান্ত্রিক শাসনকাল’ বলেই মনে করেন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মতে, মোদির নেতৃত্বে দেশ পিছিয়ে পড়ছে সবদিক থেকে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোনো মর্যাদা নেই। মোদিজির কথাই শেষ কথা, এটাই হচ্ছে এই আমলের সারমর্ম।
আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, মোদি নির্মম। নিষ্ঠুর। স্বৈরাচারী। বামেরা মোদিকে ‘ফ্যাসিস্ট শক্তি’ বলে বর্ণনা করছে। তবে স্মৃতি ইরানি বা অন্য মোদি ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি এখনও ‘বিকাশ পুরুষ’। মোদিভক্ত বা মোদি বিরোধী সব নেতারই নজর এখন উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটের দিকে। পর্যবেক্ষকদের মতে, মোদি-শাহের ‘পাঁচতারা পলিটিকস’ সেখানেও ব্যর্থ হলে বিজেপি থেকেই বাজতে শুরু করবে ‘বিসর্জনের সুর’। বিরোধীরাও সংঘবদ্ধভাবে সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে মরিয়া।
কলকাতা: ভারতে মোদি হাওয়া শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে। সাত বছর ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর বিশ্বস্ত সঙ্গী, বর্তমানে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কথাই ছিল ভারতে শেষ কথা। দল ও সরকার পরিচালনায় এই দুজনের উত্থানের পর বাকিরা তাঁদের ছায়ায় ঢাকা পড়ে যান বলে বিজেপির অন্দরেও গুঞ্জন বহুদিনের। দুই গুজরাটি নেতার করপোরেট ঢঙে দল ও সরকার পরিচালনায় বিজেপির অন্য নেতারা অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছিলেন। দলের বাইরে দেশের নির্বাচন কমিশন থেকে অন্যান্য স্বশাসিত সংস্থা, এমনকি বিচার ব্যবস্থাতেও তাঁদের প্রভাব নিয়ে কথা উঠতে শুরু করে। দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা লালকৃষ্ণ আদভানি বা মুরুলি মনোহর যোশিরা অনেক আগেই রাজনৈতিক বাণপ্রস্থে চলে গেছেন। তাঁদের ইমেজ ভাঙিয়ে বিজেপির সাফল্যের ওপর ভিত্তি করে সাত বছর ধরে মোদি-শাহ জুটি ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতা ভোগের পর এখন দল ও সরকার পরিচালনায় শক্ত চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন বলে অনেকে মনে করেন।
২০১৪ সালে মনমোহন সিং সরকারের পতনের পর ভারতে শুরু হয় মোদি-রাজ। বিরোধীরা তো বটেই, বিজেপিরও প্রথমসারির নেতারা কিছুদিন আগেও একান্তে বলতেন, মোদি-শাহের কথাই দলে শেষ কথা। বিজেপির মেন্টর বলে পরিচিত আরএসএস-এও ছিল একই গুঞ্জন। কিন্তু বিরোধীদের মতোই দলের অন্য নেতাদের বিরুদ্ধমতকে মোটেই আমল দেয়নি এই জুটি। নিজেদের ইচ্ছাই ছিল তাদের কাছে শেষ কথা। বিজেপির দুই সাবেক সভাপতি রাজনাথ সিং এবং নীতীন গড়কড়ি মোদি–মন্ত্রিসভায় থাকলেও দলে বা সরকারে তাঁদের ভূমিকা ও গুরুত্ব অনেকটাই কম। আরেক সাবেক সভাপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু এখন ভারতের উপ-রাষ্ট্রপতি। ২০১৪ ও ২০১৯ সালে বিজেপিকে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য এনে দেওয়ায় এতকাল কোনো সমালোচনাই হজম করতে হয়নি এই দুই নেতাকে। তাঁরাও পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে রাজ্যে প্রভাব বাড়িয়েছেন। অভিযোগ, পাঁচতারা হোটেলের রাজনীতি করতে গিয়ে আরও বেশি করে করপোরেটদের স্বার্থরক্ষা করে চলেছে মোদি সরকার। ভারতে ভোট মানে হয়ে উঠেছে এখন বেসরকারি বিমান আর হেলিকপ্টারের ছড়াছড়ি। ভোটে খরচের কোনো সীমা নেই। দলের সাফল্যে চাপা পড়ে ছিল সমস্ত দলীয় ক্ষোভ।
কিন্তু করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র সরকারের ব্যর্থতা মোদি-ম্যাজিকে চিড় ধরিয়েছে বলে বিজেপিরই একটি মহলের আশঙ্কা। তাই বিজেপির আদি নেতাদের সঙ্গে একান্তে কথা বললেই শোনা যায়, দল ও সরকার পরিচালনায় গণতান্ত্রিক পরিবেশই আজ আক্রান্ত। আসলে পশ্চিমবঙ্গের ভোটে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিজেপির হার মোদি-বিরোধীদের শক্তি জোগাতে শুরু করেছে। কংগ্রেসসহ বিজেপি–বিরোধীরা বহুদিন ধরেই বলছেন, দেশে ‘অঘোষিত জরুরি অবস্থা’ জারি হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে ‘বিজেপির শাখা সংগঠন’ বলেও কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী।
সমস্ত বিরোধী দল, এমনকি সরকারের শরিক দলেরও বিরোধিতাকে আমল না দিয়ে অ-মুসলিমদের জন্য নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করেছে মোদি সরকার। অবসরের পরই প্রথা ভেঙে দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে জাতীয় সংসদের সদস্য মনোনীত করতেও কুণ্ঠিত হয়নি। অভিযোগ, সংসদীয় কোনো শিষ্টাচারকেই তিনি পরোয়া করেননি। দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে চলছে কৃষকদের আন্দোলন। সেই আন্দোলন বা বিরোধীদের বিভিন্ন বিষয়ে নীতিগত বিরোধিতাকে আমল দিতেই নারাজ তাঁরা। দলের নীতি ভেঙে অন্য দল থেকে ‘দাগি’ নেতাদের ভাঙিয়ে এনে হলেও এই জুটির কাছে সাফল্যই ছিল শেষ কথা। সরকার পরিচালনায় দেখা গেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বেপরোয়া মনোভাব। ভারতীয় বিমান সেনার জন্য বেশি দাম দিয়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে বিতর্ক হলেও মোদি সরকার সেই বিতর্ককেও ধামাচাপা দিতে ব্যবহৃত হয়েছে রাষ্ট্রযন্ত্র। বিরোধীদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা ও তদন্তকারী সংস্থাকে ব্যবহারের এত অভিযোগ আগে ওঠেনি। এমন মত জাতীয় সংসদের বর্ষীয়ান সদস্য সৌগত রায়ের।
পশ্চিমবঙ্গে হারের পর মোদি-শাহ জুটির আগের মতো একচ্ছত্র আধিপত্য আর নেই, এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে দিল্লির রাজনৈতিক মহলে। বিজেপিরই একটা বড় অংশ এই গুজরাটি জুটির বিরুদ্ধে গুঞ্জন শুরু করে দিয়েছেন। মাস আটেক পরেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা ভোট। সেখানে মোদি-ঘনিষ্ঠ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য নাথের বিরুদ্ধে বিজেপির গোষ্ঠীকোন্দল এখন প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। ঠাকুর সম্প্রদায়ের যোগীর বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণ এবং পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষ ক্ষিপ্ত। তবু যোগীতেই ভরসা রাখতে গিয়ে ২০১৪-এ প্রথমবারের মতো দলের ভেতরও প্রশ্ন চিহ্নের সামনে পড়তে হচ্ছে মোদি শিবিরকে। অনেকে এটিকে দলে মোদি-শাহ জুটির লাগাম আলগা হওয়ার লক্ষণ বলে মনে করছেন।
দলের পাশাপাশি সরকার পরিচালনা নিয়েও সমাজের বিভিন্ন স্তরে মোদি বিরোধিতা বাড়ছে। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদলি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সংঘাতে ভারতের অবসরপ্রাপ্ত আমলাকুলকেও কিন্তু মমতার হয়েই কথা বলতে দেখা যায়। বিভিন্ন বিষয়ে হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের কটাক্ষও হজম করতে হচ্ছে মোদি সরকারকে। কিছুদিন আগেও মোদির সমালোচনা করলেই দেশদ্রোহীর তকমা দেওয়া হতো। জেলসহ নানা হয়রানি ছিল প্রাপ্য। কিন্তু সম্প্রতি আদালত জানিয়ে দিয়েছেন, সমালোচনা করলেই রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা করা যাবে না। সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষার কথাও বলেছেন আদালত।
আসলে ভারতের ৭৪ বছর ধরে লালিত গণতান্ত্রিক পরিবেশ কিছুতেই টোল খেতে পারে না। এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। তাঁর মতে, দেশজুড়ে মোদি বিরোধিতা শুরু হয়েছে আসলে গণতান্ত্রিক ভিত্তিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, জরুরি অবস্থা জারির পরে ইন্দিরা গান্ধীর মতো ব্যক্তিত্বকেও ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, প্রয়াত সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় কিছুতেই গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সংসদীয় ব্যবস্থায় বিরোধীদের প্রাপ্য মর্যাদাকে বিন্দুমাত্র টোল খেতে দেননি। কিন্তু মোদির আমলে তাঁরা ‘স্বৈরতান্ত্রিক শাসনকাল’ বলেই মনে করেন।
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর মতে, মোদির নেতৃত্বে দেশ পিছিয়ে পড়ছে সবদিক থেকে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বা স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের কোনো মর্যাদা নেই। মোদিজির কথাই শেষ কথা, এটাই হচ্ছে এই আমলের সারমর্ম।
আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, মোদি নির্মম। নিষ্ঠুর। স্বৈরাচারী। বামেরা মোদিকে ‘ফ্যাসিস্ট শক্তি’ বলে বর্ণনা করছে। তবে স্মৃতি ইরানি বা অন্য মোদি ঘনিষ্ঠদের কাছে তিনি এখনও ‘বিকাশ পুরুষ’। মোদিভক্ত বা মোদি বিরোধী সব নেতারই নজর এখন উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটের দিকে। পর্যবেক্ষকদের মতে, মোদি-শাহের ‘পাঁচতারা পলিটিকস’ সেখানেও ব্যর্থ হলে বিজেপি থেকেই বাজতে শুরু করবে ‘বিসর্জনের সুর’। বিরোধীরাও সংঘবদ্ধভাবে সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিতে মরিয়া।
ভারতের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, পাকিস্তান কোনো উত্তেজনা বাড়ানোর পদক্ষেপ নেবে না, তবে ভারত উসকানি দিলে তার দাঁতভাঙা জবাব দেবে।
১ ঘণ্টা আগেজাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদ (এনএসএবি) পুনর্গঠন করেছে ভারত সরকার। সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান অলোক জোশীকে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
১ ঘণ্টা আগেআজ থেকে ৫০ বছর আগে, ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল কমিউনিস্ট বাহিনীর হাতে দক্ষিণ ভিয়েতনামের রাজধানী সাইগনের পতনের মধ্য দিয়ে ভিয়েতনাম যুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু লাখ লাখ মানুষ আজও সেই যুদ্ধের রাসায়নিক উত্তরাধিকার, এজেন্ট অরেঞ্জের ভয়াবহ পরিণতির সঙ্গে প্রতিদিন লড়াই করছেন।
২ ঘণ্টা আগেপ্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমেছে। এ সময় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন এক বাণিজ্য কৌশল বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর দাবি, বিশ্বজুড়ে শুল্ক আরোপ করলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে। কিন্তু বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের এমন
৪ ঘণ্টা আগে