Ajker Patrika

রাশিয়ার ভেতরে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনীয় সেনারা, স্বীকার করলেন জেলেনস্কি

আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৪, ১৪: ০৭
রাশিয়ার ভেতরে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনীয় সেনারা, স্বীকার করলেন জেলেনস্কি

রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমণাত্মকভাবে যুদ্ধ করার কথা স্বীকার করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। টানা আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন চলছে এবং এর মধ্যেই প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় হামলার কথা স্বীকার করলেন তিনি।

আজ রোববার (১১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছেন, তাঁর সামরিক বাহিনী রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলে আক্রমণ চালাচ্ছে। গতকাল শনিবার রাতে টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে জেলেনস্কি বলেন, ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ‘হানাদারদের অঞ্চলের’ দিকে যাচ্ছে।

বিবিসি বলছে, রুশ ভূখণ্ডের ভেতরে ইউক্রেন তার অভিযান শুরু করার পাঁচ দিন পরে জেলেনস্কির পক্ষ থেকে এই স্বীকারোক্তি সামনে এল। ইউক্রেনীয় এই আক্রমণ রাশিয়াকে কার্যত অবাক করে দিয়েছে এবং সীমান্তের উভয় পাশজুড়ে জনসাধারণকে সরিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও সুমি অঞ্চলে রোববার ভোরে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিটসকো বলেছেন, আকাশ প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো ‘সক্রিয়’ রয়েছে এবং শহরে বিমান হামলার সতর্কতা অব্যাহত রয়েছে।

টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে দেওয়া বার্তায় তিনি বেসামরিক নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া কিয়েভ, এর আশপাশের অঞ্চল এবং পূর্ব ইউক্রেনের পুরো অঞ্চলে বিমান হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় বিমানবাহিনী।

এ ছাড়া শনিবারের ভাষণে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি ইউক্রেনের ‘যোদ্ধাদের’ ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তিনি দেশটির সিনিয়র সামরিক কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কির সঙ্গে রাশিয়ায় অভিযান নিয়ে আলোচনা করেছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘ইউক্রেন প্রমাণ করছে, তাঁরা প্রকৃতপক্ষে ন্যায়বিচার পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং আক্রমণকারীর ওপর প্রয়োজনীয় চাপও দিতে পারে।’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনীয় সৈন্যরা রাশিয়ার অভ্যন্তরে ১০ কিলোমিটারেরও (ছয় মাইল) বেশি এলাকাজুড়ে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি আঞ্চলিক একটি শহরও দখল করার চেষ্টা করছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণ-মাত্রায় রুশ আক্রমণ শুরু করার পর থেকে এটিই এখন পর্যন্ত ইউক্রেনীয় বাহিনীর সবচেয়ে বড় অগ্রগতি।

কুরস্ক অঞ্চলের ভারপ্রাপ্ত গভর্নর আলেক্সি স্মিরনভ বলেছেন, রোববার ভোরে কুরস্কে কমপক্ষে ১৩ জন আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। 

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় নিউজ এজেন্সি ‘তাস’ অনুসারে, এরই মধ্যে এই সীমান্ত এলাকা থেকে ৭৬ হাজারেরও বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্মিরনভ রোববার বলেছেন, তিনি বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তার জন্য অভিযান ত্বরান্বিত করতে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন।

রাশিয়া বলেছে, ট্যাংক এবং সাঁজোয়া যানসহ ইউক্রেনের এক হাজার সৈন্য গত মঙ্গলবার সকালে কুরস্ক অঞ্চলে প্রবেশ করেছে। এরপর থেকে ইউক্রেনীয় যোদ্ধারা বেশ কয়েকটি গ্রাম দখল করেছে এবং আঞ্চলিক শহর সুদজা দখল করে নেওয়ার হুমকি সৃষ্টি করেছে বলেও জানা গেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ভবিষ্যৎ ‘যুদ্ধের গতিপথ’ বদলাতে শিগগির ১০ লাখ ড্রোন কিনবে যুক্তরাষ্ট্র

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৬: ১৪
মার্কিন সেনাবাহিনী আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ ড্রোন কেনার পরিকল্পনা করেছে। ছবি: সংগৃহীত
মার্কিন সেনাবাহিনী আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অন্তত ১০ লাখ ড্রোন কেনার পরিকল্পনা করেছে। ছবি: সংগৃহীত

মার্কিন সেনাবাহিনী আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অন্তত এক মিলিয়ন বা ১০ লাখ ড্রোন কেনার পরিকল্পনা করছে। এরপর প্রতিবছর আধি মিলিয়ন থেকে কয়েক মিলিয়ন পর্যন্ত ড্রোন কেনা হতে পারে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সচিব ড্যানিয়েল ড্রিসকল। খবর রয়টার্সের।

রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড্রিসকল জানান, সেনাবাহিনীর এই বিশাল ড্রোন ক্রয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কঠিন হলেও তা সম্ভব। বর্তমানে মার্কিন সেনাবাহিনী বছরে প্রায় ৫০ হাজার ড্রোন সংগ্রহ করে। ড্রিসকল বলেন, ‘এটা বড় কাজ, কিন্তু আমরা তা করতে পারব।’

কিছুদিন আগে, ড্রিসকল নিউ জার্সির পিকাটিনি আর্সেনাল কোম্পানির কারখানা ঘুরে দেখেন। সেখানে তিনি দেখেন গবেষণার মাধ্যমে ‘নেট রাউন্ডস’ নামে এমন এক প্রযুক্তি তৈরি হচ্ছে, যা জালে ফেলে ড্রোন ধরতে পারে। পাশাপাশি নতুন ধরনের বিস্ফোরক ও ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্রব্যবস্থা সম্পর্কেও অবগত হন তিনি।

ড্রিসকল ও পিকাটিনির শীর্ষ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জন রাইম রয়টার্সকে বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে যুক্তরাষ্ট্র গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা নিচ্ছে। কারণ, ওই যুদ্ধে ড্রোন ব্যবহারের মাত্রা ইতিহাসে অভূতপূর্ব। ছোট ও সস্তা ড্রোন এখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্রে পরিণত হয়েছে। সেখানে বিমান হামলা কম হয়। কারণ, ফ্রন্টলাইনে অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট সিস্টেমের ঘন উপস্থিতি রয়েছে।

ড্রিসকল জানান, ইউক্রেন ও রাশিয়া প্রতিবছর প্রায় চার মিলিয়ন ড্রোন তৈরি করছে। আর চীন একাই তার দ্বিগুণেরও বেশি উৎপাদন সক্ষমতা রাখে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রকেও এখন এমন পর্যায়ে যেতে হবে, যেখানে ভবিষ্যতের যেকোনো যুদ্ধের জন্য নিজস্ব ড্রোন উৎপাদন সম্ভব হবে। এ জন্য দেশে মোটর, সেন্সর, ব্যাটারি ও সার্কিট বোর্ড তৈরির সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বর্তমানে এসব উপকরণের বেশির ভাগই চীনে তৈরি হয়।

ড্রিসকল বলেন, ‘আমরা আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে অন্তত এক মিলিয়ন ড্রোন কিনব বলে আশা করছি। এক-দুই বছরের মধ্যেই আমরা এমন একটি সরবরাহ ব্যবস্থা তৈরি করব, যাতে প্রয়োজন হলে বিপুলসংখ্যক ড্রোন দ্রুত তৈরি করা সম্ভব হয়।’ তিনি জানান, সেনাবাহিনী ড্রোনকে এখন ব্যয়বহুল ‘অস্ত্র’ নয়, বরং ব্যবহারযোগ্য গোলাবারুদের মতো দেখতে চায়।

ড্রোন সংগ্রহে অতীতের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে চায় পেন্টাগন। ২০২৩ সালে তারা ‘রেপ্লিকেটর’ প্রকল্প শুরু করে। যার লক্ষ্য ছিল, ২০২৫ সালের আগস্টের মধ্যে হাজারো স্বয়ংক্রিয় ড্রোন সংগ্রহ ও মোতায়েন করা। তবে এখনো সে প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

চলতি বছরের জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এক নির্দেশে বলেন, ড্রোন উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করা নানা বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে। রয়টার্স জানিয়েছে, পেন্টাগনের ‘ডজ’ ইউনিট এখন মার্কিন সেনাবাহিনীর ড্রোন কর্মসূচি পুনর্গঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তাদের লক্ষ্য আগামী কয়েক মাসে হাজার হাজার সস্তা ড্রোন কেনা।

এদিকে, মার্কিন কংগ্রেসে এমন আইন আনা হয়েছে, যাতে টেক্সাসে বছরে এক মিলিয়ন ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম একটি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপনের কথা বলা হয়েছে। তবে ড্রিসকল বলেছেন, তিনি একক কোনো কারখানার ওপর নির্ভর করতে চান না। বরং তিনি চান, এই বিনিয়োগ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হোক। তিনি বলেন, বড় প্রতিরক্ষা কোম্পানির সঙ্গে নয়, বরং এমন কোম্পানির সঙ্গে কাজ করতে চান—যারা বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহার করছে। তাঁর ভাষায়, ‘আমরা এমন নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই, যারা অ্যামাজন ডেলিভারি বা অন্য নানা বেসরকারি কাজে ড্রোন ব্যবহার করছে।’

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাণিজ্যিক ড্রোন বিক্রির বেশির ভাগই চীন থেকে আমদানি করা হয়। এর অর্ধেকেরও বেশি আসে বিশ্বের বৃহত্তম ড্রোন নির্মাতা ডিজেআই থেকে। ড্রিসকল জানান, বাড়তি ড্রোন চাহিদা মেটাতে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ রয়েছে। সেনাবাহিনী পুরোনো অস্ত্রব্যবস্থা থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নতুন প্রযুক্তিতে ব্যয় বাড়াচ্ছে। তবে তহবিল অনুমোদনের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের সমর্থন জরুরি। কারণ, অনেক আইনপ্রণেতা নিজেদের এলাকার অস্ত্র প্রকল্প বন্ধে অনীহা দেখান। ড্রিসকল বলেন, ‘ড্রোনই ভবিষ্যতের যুদ্ধের চেহারা বদলে দেবে। আমাদের আক্রমণাত্মক ও প্রতিরক্ষামূলক—দুই সক্ষমতাতেই বিনিয়োগ করতে হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সুপার টাইফুন ধেয়ে আসছে ফিলিপাইনের দিকে, বাতিল একাধিক ফ্লাইট

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ফিলিপাইনে টাইফুন কালমায়েগি যেতে না যেতেই আবার আসছে সুপার টাইফুন ফুং ওয়াং। ছবি: এএফপি।
ফিলিপাইনে টাইফুন কালমায়েগি যেতে না যেতেই আবার আসছে সুপার টাইফুন ফুং ওয়াং। ছবি: এএফপি।

ফিলিপাইনে টাইফুন কালমায়েগির তাণ্ডবে ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া জনপদে আবারও ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। যাকে ‘সুপার টাইফুন’-এর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। সরকার ইতিমধ্যেই সারা দেশে দুর্যোগ পরিস্থিতি ঘোষণা করেছে।

দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ফুং ওয়াং নামের এই টাইফুনের বায়ুপ্রবাহ ঘণ্টায় ১৮৫ কিলোমিটার (প্রায় ১৫৫ মাইল)। এ সময় প্রবল বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আজ রোববার একাধিক এলাকায় এ ঝড় আঘাত হানবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

ফিলিপাইনে এর নাম দেওয়া হয়েছে উয়ান। আজ রোববার সকালেই ফিলিপাইনের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়টি। সন্ধ্যার মধ্যে দেশের সবচেয়ে বড় দ্বীপ লুজনের উপকূলে অবস্থান করতে পারে বলে জানায় আবহাওয়া অধিদপ্তর।

এদিকে, সুপার টাইফুনের পূর্বাভাসের পর বেশ কয়েকটি স্কুল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থানীয় একাধিক ফ্লাইট বাতিল করেছে ফিলিপাইন এয়ারলাইনস।

আবহাওয়া অধিদপ্তর আশা করছে, সুপার টাইফুন ফুং ওয়াং স্থলে ওঠার পর দ্রুত দুর্বল হয়ে পড়বে। লুজন দ্বীপ অতিক্রমের সময় এটি ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই থাকবে।

গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা জানান, দেশটির পূর্বাঞ্চলে ইতিমধ্যেই ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া শুরু হয়েছে।

ঝড়ের প্রভাবে গোটা দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে সরাসরি আঘাত হানার আশঙ্কায় সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ রয়েছে কিছু নির্দিষ্ট এলাকায়। এর মধ্যে পূর্বাঞ্চলের কাতান্দুয়ানেস দ্বীপের অবস্থা আজ সকালে চরম বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সেখানের বাসিন্দাদের নিরাপদ উঁচু স্থানে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

টাইফুন ফুং ওয়াং-এর প্রভাবে আবারও নিচু এলাকাগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢাল বেয়ে কাদামাটির স্রোত নেমে এসেছে। সম্প্রতি দেশটির ওপর তাণ্ডব চালিয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির পরবর্তী উদ্ধার অভিযানও স্থগিত করতে হয়েছে। এখনো শতাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে ফিলিপাইন বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি। এখানে প্রায়ই ট্রপিক্যাল সাইক্লোন বা ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। প্রতি বছর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রায় ২০টি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়, যার অর্ধেক সরাসরি ফিলিপাইনে প্রভাব ফেলে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

বিবিসি শতভাগ ভুয়া ও বামপন্থী প্রচারযন্ত্র, দেখলে দিনটাই নষ্ট: ট্রাম্পের প্রেস সচিব

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট। ছবি: সংগৃহীত
ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন ‘শতভাগ ভুয়া সংবাদমাধ্যম’ ও ‘প্রচারযন্ত্র।’ সম্প্রতি সম্প্রচারে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ ওঠার পর তিনি এমন মন্তব্য করেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্য দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ক্যারোলিন লেভিট বলেন, যুক্তরাজ্যে সফরের সময় যখনই তিনি বিবিসির খবর দেখেন, তাঁর ‘দিনটাই নষ্ট হয়ে যায়।’ তাঁর অভিযোগ, ব্রিটিশ করদাতারা ‘বামপন্থী প্রচারযন্ত্রের’ খরচ বহনে বাধ্য হচ্ছেন।

কিছুদিন আগে, যুক্তরাজ্যের এমপিরা বলছেন, বিবিসিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের ভাষণ সম্পাদনার বিষয়ে ‘গুরুতর প্রশ্নের জবাব দিতে হবে।’ এর পরপরই লেভিট এই মন্তব্য করলেন। আরেক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ফাঁস হওয়া নথির বরাত দিয়ে জানিয়েছে, বিবিসির ‘প্যানোরামা’ নামের চলতি ঘটনাবলির এক পর্বে ট্রাম্পের ভাষণ বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল।

নথি অনুসারে, অনুষ্ঠানটি দুইটি ভিন্ন অংশ জোড়া লাগিয়ে এমনভাবে দেখিয়েছে, যেন ট্রাম্প সমর্থকদের ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি দাঙ্গার আগে ক্যাপিটলে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন এবং তাঁদের ‘প্রাণপণে লড়তে’ বলছেন। কিন্তু ভাষণের যে অংশে ট্রাম্প সমর্থকদের ‘শান্তিপূর্ণভাবে ও দেশপ্রেমিকের মতো নিজেদের মত প্রকাশের’ আহ্বান জানিয়েছিলেন সেই অংশ বাদ দেওয়া হয়েছিল।

বিবিসি এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতে পারে বলে জানা গেছে। সংস্থার এক মুখপাত্র জানান, আগামী সোমবার বিবিসির চেয়ারম্যান সংস্কৃতি, গণমাধ্যম ও ক্রীড়া কমিটিকে ‘সম্পূর্ণ ব্যাখ্যা’ দেবেন। টেলিগ্রাফকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লেভিট বলেন, ‘বিবিসির এই উদ্দেশ্যমূলকভাবে বিকৃত ও নির্বাচিত সম্পাদনা প্রমাণ করে তারা সম্পূর্ণ ভুয়া সংবাদমাধ্যম। যুক্তরাজ্যের জনগণের সময় নষ্ট করার মতো কোনো বিশ্বাসযোগ্যতা তাদের আর নেই।’

লেভিট বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে যখনই আমি যুক্তরাজ্যে যাই এবং হোটেলে বিবিসি চালাতে বাধ্য হই, তাদের প্রচারণা আর মিথ্যা শুনে আমার দিনটা বিষিয়ে যায়। তারা বারবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ও তাঁর আমেরিকাকে উন্নত করা ও বিশ্বকে নিরাপদ করার প্রচেষ্টা সম্পর্কে ভুল তথ্য ছড়ায়।’

টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, তাদের প্রতিবেদনটি তৈরি হয়েছে বিবিসির সম্পাদকীয় নীতি ও মানদণ্ড বিষয়ক কমিটির সাবেক উপদেষ্টা মাইকেল প্রেসকটের লেখা এক স্মারক বা মেমোর ভিত্তিতে। প্রেসকট চলতি বছর শুরুর দিকে পদত্যাগ করেন এবং নথি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। ধারণা করা হচ্ছে, নথিটি এক হুইসেলব্লোয়ার ফাঁস করেছেন।

প্রকাশিত অংশে বলা হয়েছে, ‘প্যানোরামায় ভাষণ সম্পাদনার ধরন সম্পূর্ণ বিভ্রান্তিকর ছিল। ট্রাম্প সরাসরি সমর্থকদের ক্যাপিটলে গিয়ে লড়ার আহ্বান দেননি—এই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে দাঙ্গা উসকানির অভিযোগে কোনো ফেডারেল মামলা হয়নি।’ নথিতে আরও বলা হয়, প্রেসকট বিবিসি আরবির গাজা যুদ্ধসংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন।

টেলিগ্রাফের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রেসকট অভিযোগ করেছেন যে বিবিসির ভেতরে ‘ব্যবস্থাগত সমস্যা’ রয়েছে, যা ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ এখনো সমাধান করেনি। তিনি দাবি করেন, বিবিসি আরবি ও মূল বিবিসি ওয়েবসাইটের গাজা যুদ্ধ কাভারেজে ‘স্পষ্ট পার্থক্য’ রয়েছে। প্রেসকটের অভিযোগ, বিবিসি আরবি নিয়মিত এমন বিশ্লেষকদের ব্যবহার করেছে, যারা ইহুদি-বিরোধী বা হামাসপন্থী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

আসামের গোয়ালপাড়ায় আরও ৫৮০ পরিবারকে উচ্ছেদ, অধিকাংশই ‘বাংলাভাষী মুসলমান’

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আসামের গোয়ালপাড়ায় ফের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ছবি: সংগৃহীত
আসামের গোয়ালপাড়ায় ফের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ছবি: সংগৃহীত

আসামে ফের শুরু হয়েছে তথাকথিত উচ্ছেদ অভিযান। স্থানীয় সময় আজ রোববার সকালে পশ্চিম আসামের গোয়ালপাড়া জেলায় জেলা প্রশাসন ও বন কর্তৃপক্ষ মিলে প্রায় ১ হাজার ১৪০ বিঘা (প্রায় ১৫৩ হেক্টর) জমিতে একটি বড় উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছে। উচ্ছেদ অভিযানের শিকার অধিকাংশই বাংলাভাষী মুসলমান। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।

গোয়ালপাড়া জেলা কমিশনার প্রদীপ তিমুং বলেছেন, এই উচ্ছেদ অভিযান অন্তত দুই দিন লাগতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা ৫৮০টি পরিবারকে উচ্ছেদ নোটিশ দিয়েছি। পুরো এলাকা দহিকাটা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মধ্যে পড়ে। এই লোকজন সেই বনভূমি দখল করে বসতি গঠন করেছিল।’

এ বছরে আসামে ব্যাপক উচ্ছেদ অভিযান দেখা গেছে। রাজ্য সরকার বলছে, এটি ‘এক ধর্মের লোকদের জনমিতিক আগ্রাসন’ রোধ করার প্রয়াস। উচ্ছেদের ফলে যাদের ক্ষতি হয়েছে তাদের মধ্যে অনেকেই বাংলাভাষী মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ।

জুলাই ও আগস্ট মাসে এই উচ্ছেদ অভিযান সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছায়। তবে ১৯ সেপ্টেম্বর আসামের সুপরিচিত শিল্পী গায়ক জুবিন গার্গের মৃত্যুর পর তাঁকে ঘিরে রাজ্যের খবর কেবলই সেই ঘটনার দিকে ঘুরে যাওয়ায় অভিযান কিছুটা থমকে পড়ে। রোববারের এই অভিযান হচ্ছে গত দুই মাসে প্রথম বড় উচ্ছেদ অভিযান।

গোয়ালপাড়া জেলায় আগেও একাধিক বড় উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে ১২ জুলাই পাইকান সংরক্ষিত বনে প্রায় ১৪০ হেক্টর বনভূমি দখলমুক্ত করার জন্য উচ্ছেদ চালানো হয়েছিল। আর ১৬ জুন জেলার হাসিলা বিল এলাকায় জলাভূমি দখল করে থাকা কিছু ৬০০ পরিবারের বিরুদ্ধে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।

আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা দুই দিন আগে ফেসবুক লাইভে এই উচ্ছেদ অভিযানের ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, জুবিন গার্গের মৃত্যুর পর রাজ্যে যে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে এবং তদন্ত নিয়ে সরকারের ওপর যে চাপ এসেছে, তা নিয়েই কিছু লোক ‘নেপালের মতো পরিস্থিতি’ তৈরি করার চেষ্টা করছে।

বিশ্বশর্মা বলেন, ‘অনেকে ভাবছিল, উচ্ছেদ বন্ধ হয়ে যাবে। তারা ভেবেছিল, হিমন্ত বিশ্ব শর্মার ওপর এত চাপ পড়েছে, তিনি আর অভিযান চালানোর সাহস দেখাবেন না। আমি আপনাদের জানাতে চাই, আমি কাউকে খুশি করে দিতে পারব না। ৯ ও ১০ নভেম্বর গোয়ালপাড়ার দহিকাটা বনে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে।’

কেন্দ্রীয় আসাম ফরেস্ট সার্কেল, সেন্ট্রাল আসাম সার্কেলের বন সংরক্ষক সানিদেও ইন্দ্রদেও চৌধুরী জানিয়েছেন, রোববারের অভিযানে ১ হাজারেরও বেশি বনকর্মী ও পুলিশ সদস্য নিয়োজিত ছিল। তিনি বলেন, ‘শুধু গোয়ালপাড়া জেলাতেই এ বছর আমরা উচ্ছেদ করে ৯০০ হেক্টরেরও বেশি বনভূমি পুনরুদ্ধার করেছি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত