Ajker Patrika

ইউক্রেনে রাশিয়ার নজিরবিহীন ড্রোন হামলায় আক্রান্ত কিয়েভ, ওডেসা

অনলাইন ডেস্ক
আপডেট : ১০ জুন ২০২৫, ২০: ৩০
কিয়েভে ড্রোন হামলার পর আগুন নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। ছবি: সিএনএন
কিয়েভে ড্রোন হামলার পর আগুন নেভাতে কাজ করছেন ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী। ছবি: সিএনএন

ইউক্রেনজুড়ে গতকাল সোমবার রাতভর ভয়াবহ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ ও দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী ওডেসা এই হামলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এই হামলাকে ‘কিয়েভে চালানো অন্যতম বৃহৎ হামলা’ বলে বর্ণনা করেছেন। রাশিয়ার ড্রোন কিয়েভের সাতটি জেলা ও ওডেসায় একটি মাতৃসদন হাসপাতালকে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে।

আজ মঙ্গলবার সিএনএন জানিয়েছে, রাশিয়া এক রাতেই ইউক্রেনের দিকে ৩১৫টি ড্রোন নিক্ষেপ করে। মধ্যরাতের পরপরই কিয়েভে সাইরেন বেজে ওঠে। এ সময় নাগরিকদের বাংকার, বাথরুম বা করিডরে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। শহরের কেন্দ্রস্থলে টানা তিন ঘণ্টা ড্রোনের শব্দ ও প্রতিরক্ষাব্যবস্থার গোলাগুলির আওয়াজও শোনা যায়। এত বিপুলসংখ্যক ড্রোন হামলা এর আগে কিয়েভে দেখা যায়নি।

কিয়েভ শহরের সামরিক প্রশাসনের প্রধান তিমুর তাকাশেঙ্কো জানান, হামলায় উঁচু দালান, বাড়িঘর, গাড়ি ও গুদামে আগুন ধরে যায়। তিনি এটিকে তাঁদের সবার জন্য এক বিভীষিকাময় রাত হিসেবে বর্ণনা করেন। সর্বশেষ এই হামলায় এখন পর্যন্ত একজন নিহত এবং চারজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক্সে লিখেছেন, ‘আজ কিয়েভে অন্যতম বড় আঘাত হানা হয়েছে। রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ও শাহেদ ড্রোনের হামলা শান্তি প্রতিষ্ঠার বিশ্ব চেষ্টাগুলোকে ব্যর্থ করে দিচ্ছে।’

এদিকে পৃথক আরেকটি হামলার ঢেউ ওডেসা শহরে আঘাত হানে। সেখানে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও পাঁচটি ইস্কান্দার-কে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রও ছোড়া হয়। স্থানীয় প্রসিকিউটর অফিসের তথ্যমতে, ওডেসায় অন্তত ২ জন নিহত ও ৯ জন আহত হন। প্রেসিডেন্টের চিফ অব স্টাফ আন্দ্রি ইয়ারমাক নিশ্চিত করেছেন, ওডেসায় একটি মাতৃসদন হাসপাতালও হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রয়টার্সের ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, এক নারী নার্স হাসপাতালের মেঝে থেকে ভাঙা কাচ সরাচ্ছেন। ৭৮ বছর বয়সী ওডেসার বাসিন্দা ভায়োলেটা বলেন, ‘আমার গাড়ির গ্যারেজ ধ্বংস হয়ে গেছে, আমার অ্যাপার্টমেন্টের ছাদ ভেঙে পড়েছে। আমি সময়মতো সাইরেন শুনে করিডরে আশ্রয় নিয়েছিলাম, না হলে বাঁচতাম না।’

৬০ বছর বয়সী লুদমিলা বলেন, ‘চার বছর ধরে হামলা শুনেছি, কিন্তু এবারই প্রথম এতটা কাছ থেকে ধ্বংসযজ্ঞ দেখলাম। কাচ, প্লাস্টার উড়ে পড়ছিল চারদিকে। মনোবল ধরে রাখা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে।’

এই ক্রমবর্ধমান হামলা ইউক্রেনীয় নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মানসিক স্বাস্থ্যকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আবারও সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন সরকার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত