Ajker Patrika

রুশ ক্ষেপণাস্ত্রেই বিধ্বস্ত হয় আজারবাইজানের বিমান—দায় স্বীকার পুতিনের

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইনসের এই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছিল। ছবি: এএফপি
গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইনসের এই উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়েছিল। ছবি: এএফপি

গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর আজারবাইজান এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজ বাকু থেকে রাশিয়ার গ্রোজনি যাওয়ার পথে কাজাখস্তানের আকতাউয়ের কাছাকাছি স্থানে বিধ্বস্ত হয়। এতে ৩৮ জনের প্রাণহানি ঘটে। এ ঘটনার শুরু থেকে ধারণা করা হচ্ছিল, এর পেছনে রাশিয়ার হাত ছিল। শেষ পর্যন্ত এ ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়। ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেনের ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে গিয়ে ভুলবশত যাত্রীবাহী ওই উড়োজাহাজ ভূপাতিত হয়।

এরপর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের কাছে রাশিয়ার আকাশসীমায় ঘটে যাওয়া ‘দুঃখজনক ঘটনার’ জন্য ক্ষমাও চান। তবে এবার পুতিন ওই হামলার দায় স্বীকার করলেন।

পুতিন স্বীকার করেছেন, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে আজারবাইজানের একটি যাত্রীবাহী বিমান ভূপাতিত হওয়ার পেছনে রুশ বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীর ভুল দায়ী। পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের একটি ড্রোনকে লক্ষ্য করে রুশ বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী যে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল, তা আজারবাইজান এয়ারলাইনসের ওই বিমানের কাছাকাছি বিস্ফোরিত হয়।

সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার তাজিকিস্তানের রাজধানী দুশানবেতে সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর এক সম্মেলনে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন এ বক্তব্য দেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ঘটনার জন্য দায়ীদের বিচার করা হবে এবং নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

আজারবাইজানি কর্তৃপক্ষ জানায়, রুশ ক্ষেপণাস্ত্রের ভুল লক্ষ্যবস্তু হওয়ার কারণে বিমানটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়। এরপর এটি পশ্চিম কাজাখস্তানে জরুরি অবতরণের চেষ্টা করলে বিধ্বস্ত হয়। বিমানে ৬৭ জন যাত্রী ছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৩৮ জন মারা যান।

ঘটনার পরপরই পুতিন ‘দুঃখজনক দুর্ঘটনা’ বলে আলিয়েভের কাছে ক্ষমা চান, তবে তখন দায় স্বীকার করেননি। অপর দিকে আলিয়েভ অভিযোগ করেছিলেন, মস্কো ঘটনাটি ‘গোপন’ করার চেষ্টা করছে।

বিমান দুর্ঘটনাকে ঘিরে দুই দেশের আগের উষ্ণ সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এ ছাড়া রাশিয়ার এক শহরে আজারবাইজানি বংশোদ্ভূত কয়েকজনের মৃত্যুর ঘটনাও উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। একই সময় আজারবাইজানে কয়েকজন রুশ নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়।

আজ আলিয়েভের সঙ্গে বৈঠকে পুতিন বলেন, ‘ইউক্রেনের ড্রোন লক্ষ্য করে আমাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে আজারবাইজানের বিমানের দিকে নিক্ষিপ্ত হয়। দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বিমানটির মাত্র ১০ মিটার দূরে বিস্ফোরিত হয়েছিল।’

পুতিন আরও বলেন, ‘রাশিয়া অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেবে এবং দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ কথাগুলো নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি নৈতিক সহায়তা হলেও আমরা যাঁদের হারিয়েছি, তাঁদের ফিরিয়ে আনতে পারব না।’

পুতিন আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে যে টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে, তা শিগগির কাটিয়ে ওঠা যাবে। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি, আমাদের সহযোগিতা পুনরায় আগের মতো বন্ধুত্বপূর্ণ ও মিত্রতার মনোভাবেই এগিয়ে যাবে।’

এদিকে ইলহাম আলিয়েভ রুশ প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আপনি ব্যক্তিগতভাবে বিষয়টি তদারক করছেন—এটি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

আলিয়েভ আরও বলেন, ‘আজ আমরা দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনার সুযোগ পেয়েছি এবং আশা করি, আমাদের এই বার্তা দুই দেশের জনগণের কাছেও ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পাবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত