Ajker Patrika

কুখ্যাত মাফিয়া মিং পরিবারের ১১ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিল চীন

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫২
চীনের আদালতে কাঠগড়ায় মিং পরিবারের সদস্যরা। ছবি: বিবিসি
চীনের আদালতে কাঠগড়ায় মিং পরিবারের সদস্যরা। ছবি: বিবিসি

চীনের একটি আদালত কুখ্যাত মিং পরিবার-এর ১১ জন সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভির বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিরা মিয়ানমারের লাউকাই শহরে জালিয়াতি ও অপরাধচক্র পরিচালনা করত।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর ওয়েনঝো-তে ঘোষিত রায়ে মোট ৩৯ জনকে দণ্ডিত করা হয়। এর মধ্যে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ড, আরও পাঁচজনকে দুই বছরের স্থগিত মৃত্যুদণ্ড, ১১ জনকে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের পাঁচ থেকে ২৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আদালত জানান, ২০১৫ সাল থেকে মিং পরিবার টেলিযোগাযোগ জালিয়াতি, অবৈধ ক্যাসিনো, মাদক পাচার ও দেহ ব্যবসাসহ নানা অপরাধে যুক্ত ছিল। প্রতারণা ও জুয়া খেলার মাধ্যমে তাদের ১ হাজার কোটি ইউয়ান (প্রায় ১৭ হাজার ৬৯ কোটি টাকা) আয় হয়েছে বলে প্রমাণ মিলেছে।

বিবিসি জানায়, মিয়ানমারের শান রাজ্যের সীমান্তবর্তী ছোট্ট লাউকাই শহরটি মিং পরিবারের নিয়ন্ত্রণে ছিল। একসময় চীনা জুয়াড়িদের চাহিদা পূরণে তৈরি ক্যাসিনোগুলো ধীরে ধীরে প্রতারণা ও অর্থপাচারের ঘাঁটিতে পরিণত হয়। জাতিসংঘ এই অঞ্চলকে ‘স্ক্যামডেমিক’ এর কেন্দ্রস্থল আখ্যা দিয়েছে, যেখানে লাখের বেশি বিদেশিকে প্রতারণার কাজে বাধ্য করা হয়েছিল।

সবচেয়ে কুখ্যাত ছিল ‘ক্রাউচিং টাইগার ভিলা’ নামে একটি কম্পাউন্ড। এই কম্পাউন্ডে অন্তত ১০ হাজার কর্মীকে আটকে রেখে নির্যাতন চালানো হতো। আদালতের নথিতে বলা হয়, কর্মীদের মধ্যে কেউ পালাতে চাইলে মিং পরিবারের সদস্যরা তাঁকে গুলি চালাত, যাতে ওই ব্যক্তি চীনে ফিরে যেতে না পারেন।

২০২৩ সালে মিয়ানমার সরকার কঠোর অভিযান চালিয়ে মিং পরিবারের বহু সদস্যকে গ্রেপ্তার করে চীনের হাতে তুলে দেয়। ধারণা করা হচ্ছে, এই পরিবারের প্রধান মিং শুয়েচাং আত্মহত্যা করেছেন। অন্য সদস্যরা চীনে এসে দোষ স্বীকার করে অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন।

লাউকাই শহরটির নিয়ন্ত্রণ এখন বিদ্রোহী মিয়ানমারের গোষ্ঠীর হাতে। এই গোষ্ঠীর সঙ্গেও চীনের সংযোগ রয়েছে বলে মনে করা হয়। ইতিমধ্যেই সেখানে আটক হাজারো প্রতারণা কর্মীকে চীনা পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।

মিং পরিবারের বিরুদ্ধে চীনের আদালতের এই রায় সীমান্তবর্তী প্রতারণা চক্র দমনে কঠোর বার্তা বহন করছে। বেইজিংয়ের চাপের মুখে এই বছর থাইল্যান্ডও একই ধরনের ব্যবস্থা নেয়। তবে ব্যবসাটি পুরোপুরি বন্ধ হয়নি; বর্তমানে এর বড় অংশ স্থানান্তরিত হয়েছে কম্বোডিয়ায়। তবে মিয়ানমারে এটি এখনো কিছু মাত্রায় সক্রিয় রয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত