Ajker Patrika

৪ দিন ধরে পুলিশ ফাঁড়িতে আটক যুবকের মৃত্যু, ইনচার্জ গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নবীনগর প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮: ৫২
মো. আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত
মো. আবদুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে পুলিশ ফাঁড়িতে চোর সন্দেহে চার দিন আটকে রাখা মো. আবদুল্লাহ (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যুকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এ ঘটনায় সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মো. মহিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার ও সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ সোমবার বিকেলে (২৯ সেপ্টেম্বর) ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওবায়দুর রহমান ও নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আবদুল্লাহ বাঞ্ছারামপুর উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের আবুল মিয়ার ছেলে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে তাঁকে মৃত অবস্থায় আনা হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরের দিকে জেলার নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জের বাড়াইল গ্রামের মুদিদোকানি তবি মিয়ার বাড়ির স্টিলের আলমারি থেকে নগদ ৫ লাখ ৩৭ হাজার টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় তবি মিয়ার আত্মীয় সিরাজুল ইসলাম থানায় একটি অভিযোগ করেন।

এ ঘটনায় পুলিশ মাসুদ রানা (৩০) ও বাবু মিয়া (২৩) নামের দুজনকে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুদ রানা তাঁর শ্যালক আবদুল্লাহকে মূল অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করেন। এর সূত্র ধরে ২৩ সেপ্টেম্বর সকালে সলিমগঞ্জ বাজারের সিএনজিস্ট্যান্ড থেকে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় আবদুল্লাহকে আটক করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্থানীয় কয়েকজন আবদুল্লাহকে মারধর করে ওই বাড়িতে নিয়ে যান এবং সেখানে নির্যাতন চালান। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় আবদুল্লাহকে সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়িতে সোপর্দ করা হয়।

পরিবার ও স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, ফাঁড়িতে নেওয়ার পরও আবদুল্লাহর ওপর নির্যাতন চলে। ভুক্তভোগী যুবকের পরিবারের দাবি, ফাঁড়িতে আবদুল্লাহর হাতের নখ প্লায়ার্স দিয়ে উপড়ে ফেলা হয়, কপালের চামড়া ছিলে ফেলা হয়।

নিহত যুবকের ভাই শাকিল মিয়া বাদী হয়ে গতকাল রাতে সলিমগঞ্জ অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মহিউদ্দিনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারভুক্ত অপর তিন আসামি হলেন নবীনগর উপজেলার সলিমগঞ্জের বাড়াইলের তবি মিয়া (৩৪), একই গ্রামের আল আমিন (৩২) ও বাঞ্ছারামপুরের বাহেরচরের আয়নাল হক (৩০)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামিরা সম্মিলিতভাবে আবদুল্লাহকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন এবং পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেন।

আজ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিহত আবদুল্লাহর লাশের সুরতহাল প্রস্তুত করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার প্রিন্স সরকার। তিনি জানান, নিহত যুবকের কপাল, দুই হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম পাওয়া গেছে।

সলিমগঞ্জ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা
সলিমগঞ্জ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় লোকজন। ছবি: আজকের পত্রিকা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের আরএম ও চিকিৎসক শাহিনুল আলম সুমন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘গতকাল সন্ধ্যায় আবদুল্লাহ নামের একজন রোগীকে আনা হয়েছে। আমরা তাকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। আজ তার পোস্টমর্টেম করা হয়েছে।’

এ ব্যাপারে নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘সলিমগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের না জানিয়ে যুবককে ফাঁড়িতে আটকে রাখে। এ ঘটনায় নিহত যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে গ্রেপ্তার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে পাঠানো হয়েছে। আমাদের পুলিশ সুপার মহোদয় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, এসআই মহিউদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আজ সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি তাঁকে বাংলাদেশ পুলিশ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

পীরগাছায় দিনের বেলায় কেটে রাখা জমির ধান লুটের অভিযোগ

পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
জমিতে বিছিয়ে রাখা এই ধানগুলোই রাতে লুট করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
জমিতে বিছিয়ে রাখা এই ধানগুলোই রাতে লুট করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

রংপুরের পীরগাছায় দিনের বেলায় কেটে রাখা এক কৃষকের ধান লুটের অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার কিসামত ঝিনিয়া ডাক্তারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে খবর পেয়ে পীরগাছা থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে লুটকারীরা সটকে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতেই এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়।

ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মান্নান জানান, তিনি ক্রয়সূত্রে মালিক হয়ে ৩০ বছর ধরে ৩৫ শতক জমি ভোগদখল করে আসছেন। চলতি মৌসুমে সেই জমিতে তিনি আমন ধান চাষ করেছিলেন। কিছুদিন আগে পাকা ধান কেটে খড়সহ জমিতে বিছিয়ে রেখে শুকাচ্ছিলেন। বেশ কিছুদিন ধরে তাঁর প্রতিবেশী আব্দুস সোবহান সেই জমি নিজের বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে অহেতুক বিরোধে জড়ান। সেই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আব্দুস সোবহান তাঁর ছেলেদেরকে সঙ্গে নিয়ে জমির ধান লুট করে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। ঘটনার সময় ভুক্তভোগী কৃষক আব্দুল মান্নান বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আব্দুস সোবহান তাঁর লোকজনসহ তাঁকে ধাওয়া করেন। একপর্যায়ে দৌড়ে নিজ বাড়িতে ঢুকে রক্ষা পান। পরে তিনি জাতীয় সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুস সোবহান বলেন, ‘এই জমি আমার। তাই আমার জমির ধান আমি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছি।’

তবে স্থানীয়রা জানান, ওই জমি আব্দুল মান্নান দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছেন। ওই জমিতে ধান আব্দুল মান্নানই চাষ করেছিলেন।

পীরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোমেল বড়ুয়া জানান, এ ব্যাপারে তিনি একটি এজাহার পেয়েছেন। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

গাইবান্ধায় এনসিপির আহ্বায়ক হলেন জাসদের কেন্দ্রীয় নেতা

আনোয়ার হোসেন শামীম, গাইবান্ধা
গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া খাদেমুল ইসলাম খুদি। ছবি: সংগৃহীত
গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন পাওয়া খাদেমুল ইসলাম খুদি। ছবি: সংগৃহীত

গাইবান্ধা জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে জাসদের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খাদেমুল ইসলাম খুদিকে গাইবান্ধা জেলা এনসিপির আহ্বায়ক হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

ফেসবুকে অনেকেই কমিটি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছেন। জেলাজুড়ে বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। এ ছাড়া অতীতে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্য—বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে করা মন্তব্যগুলো ফের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অনেক পোস্ট ও ভিডিওতে খাদেমুল ইসলাম খুদিকে ইনুর সঙ্গে একই মঞ্চে দেখা যায়। এর আগে গত বুধবার এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম স্বাক্ষরিত ৫২ সদস্যের এই কমিটি প্রকাশ করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, খাদেমুল ইসলাম খুদি দীর্ঘদিন ধরে হাসানুল হক ইনুর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। গত অক্টোবর মাসে সাদুল্যাপুর উপজেলায় ‘সুধী সমাবেশ’ করার নামে খাদেমুল ইসলাম খুদি একটি রাজনৈতিক বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন। প্রশাসন বিষয়টি জানতে পারলে খুদি সমাবেশ শুরুর আগেই ব্যানার সরিয়ে সরে পড়েন। এ ছাড়া সরকার পরিবর্তন হওয়ার পরপরই তিনি বিভিন্ন কৌশলে দলবদল করতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত জুলাই আন্দোলন-নেতৃত্বকারী এ দলের জেলায় শীর্ষ পদটি পেয়ে যান। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর ঘনিষ্ঠতার সুযোগে খুদি মোটা অঙ্কের বিনিময়ে গাইবান্ধা জেলা এনসিপিতে শীর্ষ পদটি নিশ্চিত করেছেন।

ফেসবুকে এস এম এনামুল হক নামে একজন লিখেছেন, ‘যারা সারা জীবন আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করেছে, তারা কীভাবে এনসিপির আহ্বায়ক হন? টাকার বিনিময়ে কি শহীদদের রক্ত বিক্রি করা হচ্ছে?’ মামুন সরকার নামে আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘আওয়ামী লীগের আরেক নাম এনসিপি।’ রফিক খন্দকার বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার জন্যই এ কমিটি।’

নাম না প্রকাশের শর্তে খাদেমুল ইসলাম খুদির এক বাল্যবন্ধু বলেন, খুদি ছাত্রজীবন থেকেই ক্ষমতা ও পদ-পদবির প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। যদিও তিনি জাসদের রাজনীতির সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলেন, পরে তিনি প্রায়ই আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন।

এদিকে নতুন কমিটির বিরোধিতা করে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এনসিপির জেলা কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে দেন। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত কার্যালয় তালাবদ্ধ ছিল। নেতা-কর্মীদের কাউকে দেখা যায়নি। ঘোষিত কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব এস এম মনিরুজ্জামান সবুজ পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি লেখেন, ‘নীতি-আদর্শ বিসর্জন দিয়ে স্বৈরাচারের দোসরকে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শহীদদের সঙ্গে বেইমানি করা হয়েছে।’

জানতে চাইলে গাইবান্ধা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব বায়োজিদ বোস্তামী জীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগপন্থী প্রভাবশালী মহলের দোসর, সুবিধাবাদী চরিত্র ও বিতর্কিত ব্যক্তিদের অযৌক্তিকভাবে পদ দেওয়া হয়েছে। এতে ত্যাগী ও প্রকৃত কর্মীরা বঞ্চিত হয়েছেন।’ তিনি দ্রুত কমিটি বাতিলের দাবি জানান।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে এনসিপির উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলমের মোবাইলে বারবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মুন্সিগঞ্জ-৩: প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের সেতু অবরোধ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি
আজ বিকেলে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
আজ বিকেলে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপি ঘোষিত মো. কামরুজ্জামান রতনের প্রার্থিতা বাতিলের দাবিতে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ সড়কে ষষ্ঠ বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সেতু ব্লকেড করেছেন মনোনয়নবঞ্চিত প্রার্থীর সমর্থকেরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মুক্তারপুর এলাকায় সেতুর ওপর টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন তাঁরা।

বিকেল ৫টার দিকেও (এই প্রতিবেদন লেখার সময়) অবরোধ চলছিল। অবরোধের কারণে ঢাকা–মুন্সিগঞ্জ সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুল হাইয়ের ছোট ভাই মো. মহিউদ্দিন-সমর্থিত নেতা-কর্মীরা।

প্রসঙ্গত, গতকাল বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনে দলের সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান রতনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন। এর প্রতিবাদে রাতেই জেলা শহরে মির্জা ফখরুল ও রতনের কুশপুত্তলিকা দাহ ও মুক্তারপুর এলাকায় মশালমিছিল করেন মহিউদ্দিনপন্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় আজ দিনভর এ ব্লকেড কর্মসূচি চলে।

অবরোধ চলাকালে উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সাইদুর রহমান ফকির, শাহাদাত হোসেন সরকার, শহর বিএনপির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট মাহবুব-উল-আলম স্বপন, পঞ্চসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, জেলা যুবদলের সাবেক সদস্যসচিব মু. মাসুদ রানা, জেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. আবুল হাসেমসহ দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ঋণের টাকা শোধ না করায় গুলি করে হত্যা করা হয় রফিককে, গ্রেপ্তার ১

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় হেলমেটধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে রফিক ইসলাম (৫৫) হত্যার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শুক্রবার সকালে মামলার পর পুলিশ ফারুক হোসেন (২৮) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

পুলিশ বলছে, রফিক ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আল আমিন নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু একাধিকবার চাওয়ার পরও সেই টাকা পরিশোধ না করায় ক্ষিপ্ত হয়ে আল আমিন লোকজন নিয়ে রফিককে গুলি করে করেন।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলার পচাভিটা এলাকায় একটি চায়ের দোকানে দুর্বৃত্তরা এলোপাতাড়ি গুলি করে। এ সময় রফিক ইসলাম গুলিতে নিহত এবং দুজন আহত হন।

রফিকুল ইসলাম উপজেলার পচাভিটা গ্রামের বাসিন্দা। আহত হয়েছেন একই গ্রামের রবজেল ফরাজি (৫২) ও ইউসুফ হোসেন (৫৫)। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

ঘটনার পর রাতেই দৌলতপুর থানা-পুলিশ ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) যৌথভাবে তদন্তে নামে। আজ সকালে নিহতের স্ত্রী রোকেয়া খাতুন অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি পচাভিটা গ্রামের ফুলচাঁদ আলীর ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ছেলেকে বিদেশে পাঠানোর কথা বলে আল আমিন নামের স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ধার নিয়েছিলেন রফিক। তবে দীর্ঘদিনেও তিনি সেই টাকা পরিশোধ করেননি। এ নিয়ে আল আমিন ক্ষুব্ধ ছিলেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার রফিক ও তাঁর স্ত্রী ব্যাংক থেকে ৫৪ হাজার টাকা তুলেছেন বলে খবর পান আল আমিন। পরে টাকা পরিশোধ করতে বলা নিয়ে কামালপুর বাজারে আল আমিনের সঙ্গে রফিকের কথা-কাটাকাটি হয়। এরই জেরে সন্ধ্যায় আল আমিন ও তাঁর সহযোগীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যান। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। রফিক ওই দোকানে বসে চা পান করছিলেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মহসিন আলী এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হেলমেটধারী দুর্বৃত্তদের গুলিতে রফিক নিহত হওয়ার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পরে আসামিকে আদালতে হাজির করা হবে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদেরও গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত