Ajker Patrika

অনলাইনে ভিডিও দেখে রকেট বানাল চীনা তরুণ, উড়ল ৪০০ মিটার উচ্চতায়

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

অনলাইনে ভিডিও দেখে আস্ত একটি রকেট বানিয়ে ফেলেছে ১৮ বছর বয়সী চীনা তরুণ ঝ্যাং শিজি। এই ঘটনা রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছে চীনজুড়ে। চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঝ্যাংয়ের তৈরি রকেট ৪০০ মিটার পর্যন্ত উচ্চতায় পৌঁছেছে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, চীনের হান প্রদেশের একটি গ্রামে বাস করেন ঝ্যাং। রকেট নির্মাণের বিষয়ে আগে থেকে কিছুই জানতেন না তরুণ ঝ্যাং। প্রথম ১৪ বছর বয়সে রকেট তৈরির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন তিনি। পরে, বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তিনি ডিআইওয়াই (ডু ইট ইওরসেল্ফ) রকেট তৈরির ভিডিও দেখতে শুরু করেন।

ঝ্যাং তখন মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী। বোনের পুরোনো নষ্ট ল্যাপটপ নিয়ে ঠিক করে সেটির মাধ্যমে অনলাইনে রকেট তৈরি সম্পর্কে পড়াশোনা শুরু করেন। শুরুর দিকে ঝ্যাং তাঁর পরিবারের শূকরের খামার থেকে নাইট্রেট সংগ্রহ করে রান্নাঘরে থাকা চিনি ও পানির সঙ্গে মিশিয়ে জ্বাল দিয়ে রকেটের জ্বালানি তৈরি করার চেষ্টা করেন। একসময় তরুণ ঝ্যাং বুঝতে পারেন, তাঁর তৈরি জ্বালানি পর্যাপ্ত বিশুদ্ধ হচ্ছে না। পরে, স্কুলে শেখা ফিলট্রেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে সার থেকে আরও বিশুদ্ধ জ্বালানি তৈরি করেন ঝ্যাং।

ঝ্যাংয়ের শিক্ষক বলেন, ‘গ্রামের স্কুলের সীমিত সম্পদ ব্যবহার করে রকেট তৈরি করছে ঝ্যাং। ইন্টারনেট তাকে দারুণভাবে সহায়তা করেছে। নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে হাতের নাগালে থাকা জিনিস দিয়েই রকেটটি বানিয়েছে সে।’

ঝ্যাং জানান, পিভিসি টিউব ও সিমেন্টের মতো সস্তা উপকরণ ব্যবহার করে রকেট ইঞ্জিন তৈরি করার চেষ্টা করেছিলেন। তবে তাঁর সেই প্রচেষ্টা সফল হয়নি। ঝ্যাং থ্রি–ডি মডেলিং ও সফটওয়্যার ডিজাইন শেখেন ভিডিও দেখে। পরে, রকেটের যন্ত্রাংশ তৈরি করতে নববর্ষের উপহার হিসেবে পাওয়া অর্থ এবং বন্ধুদের কাছ থেকে ধার করে একটি পুরোনো থ্রি–ডি প্রিন্টার কেনেন তিনি।

২০২৩ সালের জুন মাসে নিজের জন্মদিনে বাবা ও সহপাঠীদের নিজের প্রথম পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ দেখতে আমন্ত্রণ জানান ঝ্যাং। সেদিন বৃষ্টির কারণে অবশ্য তাঁর উৎক্ষেপণ ব্যর্থ হয়। পরদিন আবার চেষ্টা চালান, যাতে তিনি ঠিকই সফল হন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, প্রায় শতাধিকবার চেষ্টার পর অবশেষে নিজের তৈরি রকেট ৪০০ মিটার উচ্চতায় পাঠাতে পেরেছেন এই তরুণ। এ প্রচেষ্টায় তিনি একাধিক একক ধাপের এবং একটি দুই ধাপের রকেট তৈরি করেন।

এ প্রচেষ্টায় তাঁর স্কুল তাঁকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার ইউয়ান (প্রায় ৫০০ ডলার) দিয়েছে বলে জানিয়েছে ঝ্যাং। গবেষণা চালাতে স্কুলেই তাকে আলাদা জায়গাও দেওয়া হয়েছিল। এ ছাড়া, গবেষণাকাজে সহপাঠীদের কাছে ব্যাপক সহায়তা পেয়েছেন বলেও জানান তিনি।

৩০ বছর ধরে ঝ্যাংয়ের স্কুলে শিক্ষকতা করা লং বলেন, তিনি এত বছরের পেশাজীবনে এই প্রথম কোনো শিক্ষার্থীর ভেতর বিজ্ঞানের প্রতি এত প্রগাঢ় ভালোবাসা দেখেছেন। লং বলেন, ‘শখ একজন ব্যক্তির সেরা শিক্ষক।’

ঝ্যাংয়ের বাবা প্রাদেশিক রাজধানী চাংশাতে রাইডশেয়ার চালক এবং মা অন্য একটি শহরে ন্যানির কাজ করেন।

চীনের প্রথম সারির মহাকাশ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটি। সেখানে অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে পড়ালেখার সুযোগ পেয়েছেন ঝ্যাং।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের হাতে ইসরায়েলের ‘কয়েক লাখ পৃষ্ঠার’ গোপন নথি, পারমাণবিক স্থাপনার ছবি প্রকাশ

আ.লীগের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত

ভারত–চীন সীমান্তের শীতল লাদাখ জেন–জি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ কেন

ভারতের কাছে হারের পর বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন রুবেল

চীনা নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বাণিজ্য জোট আরসিইপিতে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত