Ajker Patrika

মানুষের জীবনের গল্প বেচে বিখ্যাত

মানুষের জীবনের গল্প বেচে বিখ্যাত

বিশ্বস্তজনের কাছে মানুষ একান্ত নিজের কথাটাও বলতে পারে অবলীলায়। এমনই একজন বিশ্বস্ত মানুষ হয়ে উঠেছেন চীনের ফ্রিল্যান্স লেখক কং পিংপিং। তাই তো এ পর্যন্ত অন্তত দুই হাজার গল্প ও ঘটনা এসেছে তাঁর মেইলে। একান্ত এ গল্পগুলো প্রকাশ করতে চাইলেও নানা কারণে তা করতে পারেননি সংশ্লিষ্টরা। এখন পিংপিংয়ের মাধ্যমে এ গল্পগুলো জানার সুযোগ পাচ্ছেন লাখলাখ মানুষ। এর মধ্যে অনেক গল্প পাঠকের কাছে হয়ে উঠছে অনুপ্রেরণার উৎস।

চীনা সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে ই–কমার্স সাইট তাওবাও–এ ‘সি ওয়াই’ নামে একটি শপ চালু করেন পিংপিং। মূলত মানুষের মনে জমে থাকা কথা, গল্প সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতেই তাঁর এ পদক্ষেপ। এ কাজে বেশ সাড়া পেয়েছেন পিংপিং। অসংখ্য লোক তাঁকে জীবনের গল্প মেইল করেন। তিনি এ গল্পগুলো কিছুটা সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন। এ গল্প পড়ার জন্য আট বছরের মধ্যে তাঁর শপে ফলোয়ার দাঁড়ায় তিন লাখের বেশি।

কং পিংপং মানুষের কাছ থেকে গল্প নিয়ে, মানুষের কাছেই পৌঁছে দেন। তবে, বিনামূল্যে নয়। সিওয়াই স্টোরি নামের অনলাইন দোকান থেকে মানুষের জীবনের গল্প পড়তে হলে কিছু পয়সা খরচ করতে হয়, চীনা মুদ্রায় যার পরিমাণ ১ ইউয়ান (১৫ সেন্ট)। এক ইউয়ান পরিশোধ করলে পাঠক একটি ঘটনা পড়ার সুযোগ পান। বর্তমান বিনিময় হার অনুযায়ী বাংলাদেশের মুদ্রায় তা ১২ দশমিক ৭১ টাকা। জীবনের গল্প বিক্রি থেকে আসা এ অর্থের ৮০ শতাংশ চলে যায় মূল লেখকের পকেটে।

‘সিওয়াই স্টোরি’ শপের গল্পগুলো মূলত অনুপ্রেরণামূলক ও চলমান জীবনের ঘটনা। পিংপিং এ গল্পগুলোকে শুধু অনুপ্রেরণামূলক ও শক্তিশালীই নয়, আবেগ মুক্তির একটি মাধ্যমও মনে করেন। তাঁর মতে, মানুষের বিশ্বাসে ভরপুর এ দোকান একটি জীবনের গল্পের এই ব্যাংক, যা কখনো দেউলিয়া হবে না বলেও বিশ্বাস তাঁর।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিয়াংসু নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কং পিং পিং বলেন, ‘কিছু প্রেরক আমার ই–মেইলে গল্প পাঠিয়ে সঙ্গে একটি প্রতিক্রিয়াও জানায়। অনেকেই বলেন, “মেইল পাঠানোর মুহূর্তে আমার মনে হয়—অবশেষে ঘটনাটি প্রকাশ করলাম!”’

এখন পর্যন্ত সিওয়াই স্টোরি থেকে সর্বাধিক ৯ হাজারবার বিক্রি হয়েছে মাদকাসক্ত বাবাকে মেয়ের ক্ষমা করে দেওয়ার একটি গল্প। এ গল্পের শিরোনাম—‘ইউ উইল নেভার বি অ্যাবল টু হেইট সামওয়ান’।

মেয়ের জবানিতে লেখা এ গল্পে বলা হয়, ‘আমার বাবা মাদকাসক্ত। মাদকের পেছনে আমাদের সকল সম্পদ খরচ করেছেন। এমনকি শেষ সম্বল বাড়িটিও। আমার বাল্যকালের স্মৃতি বলতেও ওই একটি জিনিসই ছিল। চোখের সামনে ভেসে ওঠে, আমাদের সামনে বাবা তাঁর কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে মাদক গ্রহণ করছেন।’

সে গল্প মানুষকে ভীষণ নাড়া দেয়। সেখানে বলা হয়, কলেজে পড়ার সময় বাবার কাছে একবার ৫০০ ইউয়ান চেয়েছিল মেয়েটি। বাবা তাঁকে অর্ধেকের কম অর্থ দেন। ওই দিন গভীর রাতে বাবা মেয়েটিকে একটি ম্যাসেজে পাঠান, যেখানে লেখা ছিল, ‘এমন অপ্রয়োজনীয় বাবা হয়েছি বলে দুঃখিত।’ গল্পে মেয়েটি লিখছেন, ‘ম্যাসেজটি দেখামাত্রই আমি বাবাকে ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। কারণ, আমি বুঝতে পারি বাবা আমাকে আসলেই গভীরভাবে ভালোবাসেন। শুধু আমাকে কিছু দেওয়ার সামর্থ্য তাঁর নেই।’

এই দোকান থেকে সর্বাধিক বিক্রিত গল্পের তালিকায় রয়েছে একটি দুর্দান্ত প্রেমের গল্প। ওই গল্পে দেখা যায়, ১০ বছর অপেক্ষার পর প্রেমিক প্রেমিকার মিলনের ঘটনা। প্রেমিক জিমোর একজন খুব ভালো বন্ধু জিমো ও সিসির প্রেম নিয়ে গল্পটি লেখেন। গল্পে সিসির সঙ্গে দেখা করার জন্য জিমো সপ্তাহে একদিন ৩০ ঘণ্টা ট্রেন ভ্রমণ করে জিয়ান থেকে চেংডু যেতেন। এমন গভীর প্রেমের পরও পারিবারিক চাপে সিসি অন্য একজনকে বিয়ে করতে বাধ্য হন। সে সংসারে জন্ম হয় এক ছেলে সন্তানের। অন্যদিকে বিয়ে না করে একা জীবন কাটাতে থাকেন জিমো। এক দশক পর জিমো জানতে পারেন, কয়েকদিন আগে সিসির সংসার ভেঙে গেছে। তখন জিমো ও সিসি পরস্পরকে গ্রহণ করে আবার প্রেম শুরু করেন। ২০১৪ সালের ১ মে ১০ বছরের ছেলেসহ সিসিকে বিয়ে করেন জিমো।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইস্পাহানে বাংকার বাস্টার মারেনি যুক্তরাষ্ট্র, অক্ষত ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম

বাবুই পাখির কান্না কেউ শুনল না, কেটে ফেলা হলো তালগাছটি

ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক মেরামতে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ভারতের সংসদীয় কমিটির দীর্ঘ বৈঠক

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা: নান্দাইলে সাবেক এমপি-মন্ত্রীকন্যার বিরুদ্ধে মামলা

গোষ্ঠীস্বার্থে বহু মানুষের স্বপ্ন নষ্ট করেছে এই প্ল্যাটফর্ম: দায়িত্ব ছেড়ে উমামা ফাতেমার পোস্ট

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত