Ajker Patrika

৮০ হাজার মানুষের সামনে শিশুকে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করাল তালেবান, জাতিসংঘের নিন্দা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০: ৪৩
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

আফগানিস্তানে আবারও জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনা ঘটিয়েছে তালেবান প্রশাসন। এবার ভয়াবহ এই দৃশ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ১৩ বছরের এক কিশোর। দেশটির খোস্ত প্রদেশের একটি বড় স্টেডিয়ামে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের সামনে নিজ পরিবারের খুনিকে গুলি করে হত্যা করতে বাধ্য করা হয় ওই শিশুটিকে। ঘটনাটিকে ‘অমানবিক ও নিষ্ঠুর’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘ।

তালেবান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়া অভিযুক্তের নাম মঙ্গল। তিনি নারী, শিশুসহ ওই কিশোরের পরিবারের ১৩ জন সদস্যকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিলেন। পরে আফগানিস্তানের তিন ধাপের বিচারব্যবস্থা—নিম্ন আদালত, আপিল আদালত ও সুপ্রিম কোর্ট ওই ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন এবং তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা দণ্ড কার্যকরের অনুমোদন দেন।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, শরিয়া আইনের ‘কিসাস’ নীতির আওতায় এই দণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি মূলত এক ধরনের প্রতিশোধমূলক শাস্তি, যেমন—‘চোখের বদলে চোখ’।

আদালত জানান, ভুক্তভোগীদের পরিবারকে ক্ষমা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা ক্ষমার পথ প্রত্যাখ্যান করে কিসাসের দাবিতে অটল থাকায় মৃত্যুদণ্ড চূড়ান্ত হয়।

যেখানে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে সেই স্টেডিয়ামে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকলেও বাইরে থেকে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে—হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুদণ্ড দেখার জন্য জড়ো হয়েছেন। এদিন আরও দুজনের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও ভুক্তভোগী পরিবারের সব সদস্য উপস্থিত না থাকায় সেগুলো কার্যকর করা হয়নি।

২০২১ সালে ক্ষমতায় ফেরার পর তালেবানের কঠোর শরিয়া ব্যাখ্যার আওতায় এটি ছিল ১১ তম মৃত্যুদণ্ড। দেশটিতে হত্যা, ব্যভিচার ও চুরির মতো অপরাধে প্রকাশ্য শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড, অঙ্গহানি বা বেত্রাঘাতের প্রচলন রয়েছে। একই সঙ্গে তারা নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনজীবনে অংশগ্রহণ প্রায় পুরোপুরি নিষিদ্ধ করে রেখেছে।

এদিকে জাতিসংঘের আফগানিস্তান বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি রিচার্ড বেনেট মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগেই এটি বন্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ড আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী, বর্বর এবং নিষ্ঠুর শাস্তি।’ ১৯৯০-এর দশকে তালেবান প্রথমবার যখন ক্ষমতায় ছিল, সেই সময়টিতেও তারা নিয়মিত প্রকাশ্য ফাঁসি, বেত্রাঘাত ও পাথর ছোড়ার শাস্তি দিত।

দুই দশক পর দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে তালেবান আবারও প্রকাশ্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সূচনা করে। সে সময়ও একটি স্টেডিয়ামে হত্যাকাণ্ডের শিকার এক ব্যক্তির বাবা নিজ হাতে খুনিকে গুলি করেছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...