Ajker Patrika

২০ বছরের চুক্তিতে ভেনেজুয়েলায় তেল উৎপাদন করবে চীনা কোম্পানি

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৩৬
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর ভেনেজুয়েলায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর ভেনেজুয়েলায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। ছবি: রয়টার্সের সৌজন্যে

আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার মধ্যে থাকা ভেনেজুয়েলায় ১ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে চীনের একটি বেসরকারি কোম্পানি। চায়না কনকর্ড রিসোর্সেস করপোরেশন (সিসিআরসি) নামের এ কোম্পানি সম্প্রতি তেল উৎপাদনের জন্য ভেনেজুয়েলার সঙ্গে ২০ বছরের চুক্তি করেছে বলে জানা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির এক নির্বাহী বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, এ চুক্তির আওতায় ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ দৈনিক ৬০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভেনেজুয়েলায় এই প্রথম কোনো বেসরকারি চীনা প্রতিষ্ঠান এমন বড় বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার পর ভেনেজুয়েলায় বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এরপর প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার চীন ও রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে।

সিসিআরসি গত বছর থেকে লাগো সিনকো ও লাগুনিলাস লাগো নামের দুটি তেলক্ষেত্রে কাজ শুরু করার জন্য আলোচনা চালায়। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের মে মাসে তারা ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পিডিভিএসএর সঙ্গে ২০ বছরের একটি উৎপাদন-ভাগ চুক্তি (Production Sharing Contract) সই করে। চুক্তিটি ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলায় ভেনেজুয়েলার ‘অ্যান্টি-ব্লকেড ল’-এর আওতায় আনা হয়েছিল।

তবে ভেনেজুয়েলার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী অঞ্চল মারাকাইবো হ্রদের এ তেলক্ষেত্রগুলোতে কাজ করতে গিয়ে সিসিআরসির মতো অনভিজ্ঞ কোম্পানিগুলোকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ সমস্যা সমাধানে প্রতিষ্ঠানটি গত সেপ্টেম্বর থেকে ৬০ জন বিশেষজ্ঞ ও একটি ড্রিল রিগ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তাদের লক্ষ্য, ১০০টি কূপ পুনরুদ্ধার করে উৎপাদন বাড়ানো। বর্তমানে এ দুটি তেলক্ষেত্রে দৈনিক উৎপাদন ১২ হাজার ব্যারেল।

২০২৬ সালের শেষ নাগাদ মোট ৫০০টি কূপ থেকে দৈনিক উৎপাদন ৬০ হাজার ব্যারেলে উন্নীত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ তেল হালকা ও ভারী—দুই ধরনের হবে—হালকা ক্রুড ওয়েল যাবে পিডিভিএসএর কাছে আর ভারী ক্রুড ওয়েল চীনে রপ্তানি করা হবে।

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় তেল কোম্পানিগুলো ভেনেজুয়েলায় কাজ করতে না আসায় সিসিআরসির মতো ছোট কোম্পানিগুলোর জন্য সুযোগ তৈরি হয়েছে। বর্তমানে পিডিভিএসএ দৈনিক প্রায় ১০ লাখ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সীমিত অনুমতির কারণে সম্ভব হয়েছে।

২০১৯ সালের পর থেকে চীনের রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানিগুলো ভেনেজুয়েলায় তাদের সরাসরি কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তবে চীনের স্বাধীন শোধনাগারগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে ভেনেজুয়েলার তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে। বেইজিং মাদুরো সরকারের বড় মিত্র। বর্তমানে ভেনেজুয়েলার প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি তেল রপ্তানি হচ্ছে চীনে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত