Ajker Patrika

রাখাইনে ঘাঁটি দখলের দাবি আরসার, আরাকান আর্মির অস্বীকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৩: ০১
রাখাইনের মংডু সীমান্তে আরাকান আর্মির এক সদস্য টহল দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত
রাখাইনের মংডু সীমান্তে আরাকান আর্মির এক সদস্য টহল দিচ্ছে। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) অন্যতম প্রধান একটি ঘাঁটি দখলের দাবি করেছে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি—আরসা। তবে আরাকান আর্মি সেই দাবি অস্বীকার করেছে। থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গা আরসা বিদ্রোহীরা রাখাইনের মংডুর উত্তরাঞ্চলে যে ঘাঁটি দখলের দাবি করেছে, সেটি অস্বীকার করেছে আরাকান আর্মি (এএ)। গত সোমবার আরসা দাবি করে যে, টানা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লড়াইয়ের পর তারা ওই ঘাঁটি দখল করেছে। তবে এএ বলছে, এ দাবি মিথ্যা। বিদ্রোহীরা একটি ফাঁকা জায়গায় সাজানো ভিডিও বানিয়ে বিভ্রান্ত করছে।

এএর মুখপাত্র খাইং থুখা ইরাবতীকে জানান, আরসা আসলে মংডুতে তাদের সীমান্তচৌকিতে হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু এএ পাল্টা আক্রমণ করলে আরসার সদস্যরা পালিয়ে যায়।

বর্তমানে রাখাইনের বেশির ভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে এএ। তাদের অভিযোগ, মংডু দখলের পর থেকে তারা বারবার হামলার মুখে পড়ছে আরসা ও রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) হাতে। এসব হামলার পেছনে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কিছু অংশের উসকানি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে এএ।

সংগঠনটির দাবি, মংডু নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে এএর অন্তত তিনজন সদস্য ও বহু সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে। এএর মুখপাত্র খাইং থুখা বলেন, ‘সাম্প্রতিক দিনে দামানথার ও আশপাশের গ্রাম থেকে প্রায় এক ডজন মানুষ নিখোঁজ হয়েছে। তাদের অপহরণ করেছে মুসলিম বিদ্রোহীরা। কাউকে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, আবার কাউকে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছি।’

আরসা ও আরএসওর বিরুদ্ধে ‘ধূর্ত খেলা’ খেলার অভিযোগ এনেছে এএ। ২০১৬ ও ২০১৭ সালে আরসা মংডু ও বুথিডংয়ে পুলিশ চৌকিতে হামলা চালিয়েছিল। এর জেরে মিয়ানমার সেনারা ‘ক্লিয়ারেন্স অপারেশন’ চালায়। এতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। তখন বিশ্বজুড়ে গণহত্যার অভিযোগ ওঠে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে।

কিন্তু বর্তমানে এ দুই সংগঠন জান্তার সঙ্গে আঁতাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দাবি করা হচ্ছে, জান্তা তাদের সামরিক প্রশিক্ষণও দিয়েছে। গত ১৯ সেপ্টেম্বর এক বিবৃতিতে এএ জানায়, দীর্ঘ ও দুর্বল সীমান্তপথ দিয়ে আরসা ও আরএসও মংডুতে প্রবেশ করছে। তারা স্থানীয় অমুসলিমদের হত্যা করছে বা মুক্তিপণ আদায়ের জন্য অপহরণ করছে। আবার মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এএর প্রধান তুন মিয়াত নাইং বলেন, ‘তারা সীমান্ত পেরিয়ে রাখাইনে প্রবেশ করলে সামনে যাকেই পায়, হত্যা করে। পরে নিহতদের এএর পোশাক বা সরঞ্জাম পরিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করে যে এএর সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়েছে। অথচ বাস্তবে নিহতরা সাধারণ মানুষ।’

সংঘাত চলমান অবস্থায় এএ স্থানীয়দের সতর্ক থাকতে বলেছে। বিশেষ করে বিচ্ছিন্ন এলাকায় না যেতে এবং সেসব এলাকায় যাত্রার আগে অবশ্যই এএ প্রশাসন ও নিরাপত্তা সদস্যদের জানাতে অনুরোধ করেছে সংগঠনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত