Ajker Patrika

সরকার পতনের পর এবার কী হতে যাচ্ছে নেপালে

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৯
ছবি: সংগৃহীত
ছবি: সংগৃহীত

নেপালে সাম্প্রতিক আন্দোলনের ঝড়ে প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি পদত্যাগ করেছেন। ৭৩ বছর বয়সী এই কমিউনিস্ট নেতা এক বছরের মাথায় ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা এবং দীর্ঘদিনের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার ব্যর্থ হওয়ায় তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে দেশজুড়ে তীব্র বিক্ষোভ শুরু হয়।

আন্দোলনে অন্তত ২২ জন নিহত এবং প্রায় ৩৫০ জন আহত হন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে অলি-সমর্থিত মন্ত্রিসভার বেশ কয়েকজন সদস্য একে একে পদত্যাগ করেন। শুধু তাই নয়, ক্ষুব্ধ বিক্ষোভকারীরা অলির ব্যক্তিগত বাসভবন ও সংসদ ভবনেও আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ অবস্থায় সেনাবাহিনী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সিভিল প্রশাসন একযোগে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানায়। তাদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, রাজনৈতিক সংলাপের মাধ্যমেই সংকটের সমাধান করতে হবে।

নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পৌডেল ইতিমধ্যে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। নেপালের পার্লামেন্টে মোট ২৭৫ জন আইনপ্রণেতা রয়েছেন—যার মধ্যে ১৬৫ জন সরাসরি নির্বাচিত এবং বাকি ১১০ জন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে নির্বাচিত। ২০২৭ সালে পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও চলমান অস্থিরতা দেশটিকে হয়তো আগাম ভোটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

বর্তমানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো—নতুন সরকারের বৈধতা ও স্থায়িত্ব। বহু সংসদ সদস্য ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন। ফলে রাজনৈতিক সমঝোতা ছাড়া কার্যকর সরকার গঠন কঠিন হয়ে উঠবে। ভেতরে-ভেতরে সংসদ ভেঙে নতুন নির্বাচনের চাপ বাড়ছে।

দেশটির সামরিক বাহিনী ও প্রশাসনের সতর্কবার্তায় স্পষ্ট, বিদেশি শক্তির প্রভাব এড়িয়ে নেপালকে নিজস্ব পথে এগোতে হবে। তবে আন্দোলনের অভিঘাতের পর দেশ কোন পথে যাবে—তা এখনো অনিশ্চিত। তরুণ প্রজন্মের এই বিদ্রোহ রাজনৈতিক সংস্কারের সূচনা ঘটাবে, নাকি শুধু আরেক দফা ক্ষমতার পালাবদল আনবে—তা এখন সময়ের অপেক্ষা।

এদিকে নেপালে চলমান বিক্ষোভ ও সহিংস পরিস্থিতির মধ্যে সেনাবাহিনী কঠোর অবস্থান নিয়েছে। মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাতে সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়—যদি সহিংস কর্মকাণ্ড, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ অব্যাহত থাকে, তবে রাত ১০টা (স্থানীয় সময়) থেকে সেনাসহ সব নিরাপত্তা সংস্থা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে বাধ্য হবে।

নেপাল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল রাজারাম বসনেত স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কিছু গোষ্ঠী বর্তমান সংকটকে কাজে লাগিয়ে সাধারণ নাগরিক ও সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির মারাত্মক ক্ষতি করছে, লুটপাটে লিপ্ত হচ্ছে এবং অগ্নিসংযোগ ঘটাচ্ছে। যদি এই কর্মকাণ্ড বন্ধ না হয়, তবে নেপাল সেনা এবং অন্যান্য সব নিরাপত্তা সংস্থা রাত ১০টার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ থাকবে।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সেনাবাহিনী জনগণের নিরাপত্তা ও রাষ্ট্র রক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। এ জন্য নাগরিকদের সেনাবাহিনীর এই প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেনা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি পর্যালোচনার ভিত্তিতে পরবর্তী আপডেট জানানো হবে।

এ ছাড়া লুট হওয়া অস্ত্র-শস্ত্র ফেরত দেওয়ার জন্যও সেনাবাহিনী আল্টিমেটাম দিয়েছে। মুখপাত্র বসনেত বলেন, ‘যারা অস্ত্র লুট করেছে আমরা তাদের রাত ১০টার মধ্যে তা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিচ্ছি।’

এর আগে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নেপালের সেনাপ্রধান অশোক রাজ সিগদেল জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি তরুণ প্রজন্মের বিক্ষোভকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন—সহিংস পথ পরিহার করে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেটের ক্ষুধায় খেয়েছেন ২৯ চামচ, ১৯ টুথব্রাশ

জাতিসংঘে বিশাল বহর নিয়ে গিয়ে পতিত সরকারের চর্চা করল অন্তর্বর্তী সরকার: টিআইবি

পাকিস্তানকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ

স্ত্রীকে নিয়ে টানাটানি করা সেই দুই পুরুষের জামিন, কারাফটকে উত্তেজনা

উত্তর দিক থেকে সিগন্যাল নেই—শাপলা প্রতীক না পাওয়ার কারণ জানালেন হাসনাত

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত