Ajker Patrika

ইরাবতীর প্রতিবেদন

মিয়ানমারে ‘ভুয়া ভোটের’ বৈধতা নিতে ভারতের দ্বারস্থ জান্তা সরকার

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
নেপিদোতে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের চেয়ার থান সোয়ের সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত
নেপিদোতে মিয়ানমারের নির্বাচন কমিশনের চেয়ার থান সোয়ের সঙ্গে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুর। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের সেনাশাসকেরা চার বছর আগে এক অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ফল বাতিল, গঠিত নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করে। এখন তারা আবারও ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে এক নতুন নির্বাচন আয়োজন করছে। আন্তর্জাতিক মহল ‘ভুয়া ভোট’ বলে নিন্দা করলেও জান্তা সরকার এই ভোটকে বৈধতা দিতে ভারতের সমর্থন চাইছে।

থাইল্যান্ড থেকে প্রকাশিত মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আসন্ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে বিদেশি সরকার ও সংস্থাগুলোকে তাদের দূতাবাসের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হবে। এর তিন দিন পর, মিয়ানমারে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুর ইয়াঙ্গুন থেকে নেপিদোতে গিয়ে জান্তার নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান থান সোয়ের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনায় ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে কথা হয়।

২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকেই আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে থেকেও ভারত মিয়ানমারের সেনাশাসকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। বিশ্বের ‘সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র’ ভারত বারবার জান্তার নির্বাচন কমিশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে, সমর্থন জানিয়েছে এবং নির্বাচনী রোডম্যাপে প্রযুক্তিগত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে।

গত বছরের জুনে রাষ্ট্রদূত অভয় ঠাকুর তৎকালীন নির্বাচন কমিশন প্রধান কো কো’র সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে ভারত নিজেদের নির্বাচনী প্রযুক্তি ও মানবসম্পদ দিয়ে সহায়তার প্রস্তাব দেয়। সর্বশেষ বৈঠকটি হয় ৩১ আগস্ট। চীনে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও জান্তা প্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের মধ্যে বৈঠকে মোদি নাকি জান্তার নির্বাচনের প্রতি সমর্থন জানান এবং পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলেন।

এরপর ১৭ সেপ্টেম্বর মোদির ৭৫ তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা পাঠান মিন অং হ্লাইং। তিনি লিখেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক পরিবর্তনের সময়ে আপনি ও ভারতের জনগণ যে বোঝাপড়া ও স্থায়ী সমর্থন দেখিয়েছেন, তার জন্য ধন্যবাদ।’

পশ্চিমা দেশগুলো মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী জনগণের সঙ্গে একাত্ম হয়ে জান্তার এই ভোটকে দ্বিতীয় দফার সামরিক ক্ষমতা দখল বলে নিন্দা করছে। কিন্তু ভারত উল্টো নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সমর্থন দিয়ে আসছে এবং প্রযুক্তিগত ও মানবিক সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছে।

চীন, রাশিয়া, বেলারুশ ও কম্বোডিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী মিত্রদের পাশে দাঁড়িয়ে ভারত এখন একমাত্র বড় গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে জান্তার নির্বাচনে সমর্থন দিচ্ছে। প্রতিবেশী থাইল্যান্ড ও লাওসও সমর্থন জানিয়েছে। লাওসের প্রেসিডেন্ট থোংলুন সিসৌলিথ এ মাসের শুরুতে চীনে মিন অং হ্লাইংয়ের সঙ্গে বৈঠকে পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়েও কথা বলেছেন বলে জান্তা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম জানিয়েছে।

প্রথম ধাপের ভোট হবে ২৮ ডিসেম্বর। এটি হবে ১০২টি টাউনশিপে। ভোটে সেনাসমর্থিত ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির জয় নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ গণতন্ত্রপন্থী দলগুলো—যেমন ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি—নিষিদ্ধ। দলের নেত্রী অং সান সুকিসহ শীর্ষ নেতারা এখনো জান্তার কারাগারে বন্দী।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ইরানের হাতে ইসরায়েলের ‘কয়েক লাখ পৃষ্ঠার’ গোপন নথি, পারমাণবিক স্থাপনার ছবি প্রকাশ

আ.লীগের অপরাধীদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত

ভারত–চীন সীমান্তের শীতল লাদাখ জেন–জি আন্দোলনে অগ্নিগর্ভ কেন

ভারতের কাছে হারের পর বাংলাদেশকে ধুয়ে দিলেন রুবেল

চীনা নেতৃত্বাধীন বৃহত্তম বাণিজ্য জোট আরসিইপিতে যোগ দিতে চায় বাংলাদেশ

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত