বিবিসি বাংলা
২০০৮ সালে ভারতের কেরালায় আসেন এক পাকিস্তানি পরিবার। কেরালায় আদিনিবাস হওয়ায় রক্তের টানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মা-ছেলে ও দুই বোন। বাবা চলে যান পাকিস্তানে। এরপর কেটে যায় কয়েক বছর। ২০১৭ সালে মা-ছেলে আবেদনের পর পরই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পরিত্যাগপত্র না থাকায় ভারতের নাগরিকত্ব পাননি দুই বোন। আজও পাকিস্তান দিচ্ছে না সেই সনদটি। এতে ভারতে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন দুই বোন। আবার তারা যে আসলেই পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, সেই নথি তাদের হাতে দেয়নি দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাস। ফলে ভারতও তাদের নাগরিকত্ব দিতে পারছে না।
২০০৮ সাল থেকে ভারতের কেরালায় থাকছেন এই দুই বোন। সম্প্রতি তারা আদালতে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে পাকিস্তান দূতাবাসে তারা নিজেদের পাসপোর্ট জমা দেন। কিন্তু সেই সময়ে তাদের বয়স ২১ বছর হয়নি, আর পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়স না হলে নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করা যায় না। তাই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র তাদের দেওয়া হয়নি। তবে ২১ বছর বয়স হওয়ার পরে তারা যখন আবারও পাকিস্তানের দূতাবাসের কাছে নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র নিতে যান, তখনো সেই নথি তাদের দেওয়া হয়নি। এর কোনো কারণও দেখানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই দুই বোনের মা রাশিদা বানো। তবে এ বিষয়ে তাঁর দুই মেয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে চাননি।
মা ও ছেলে ভারতীয়, দুই মেয়ে রাষ্ট্রহীন
রাশিদা বানো ও তাঁর ছেলে অবশ্য ইতিমধ্যেই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন, তবে তাঁর দুই মেয়ে ভারতের নাগরিকত্ব না পাওয়ায় দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সবাই। এই পরিস্থিতিতে তাঁর দুই মেয়ে পাসপোর্টের জন্যও আবেদন করতে পারছেন না। এ বিষয়ে জানতে, ভারতের পাকিস্তান দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি। কিন্তু সেখান থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলতেই থাকে, কখনো সেটা সংঘর্ষেও গড়ায়, যেমনটা হয়েছিল চলতি বছরের মে মাসে। কিন্তু তার মধ্যেও অভিবাসন চলতেই থাকে—বিশেষত ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়ে যেসব পরিবারের সদস্যরা বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি আলাদা দেশে রয়ে গিয়েছিলেন। গত কয়েক দশকে এই প্রক্রিয়াটা আরও কঠিন হয়ে গেছে, কারণ এখন নথিপত্র যাচাইয়ের কাজে খুব বেশি কড়াকড়ি করা হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, সাত হাজারেরও বেশি পাকিস্তানির ভারতীয় নাগরিকত্বের আবেদন অমীমাংসিত হয়ে পড়ে রয়েছে। ভারতের সংসদে এই তথ্য পেশ করা হয়েছিল।
নাগরিকত্ব পেতে আদালতে
রাশিদা বানো জানান, পাকিস্তান দূতাবাস থেকে যখন তাঁর মেয়েদের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদ দেওয়া হল না, তখন তারা অনুরোধ করেছিলেন যাতে তাদের পাকিস্তানি পাসপোর্টগুলো ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলোও দেওয়া হয়নি।
তাঁর দুই মেয়ের কাছে এখন শুধু ২০১৮ সালে পাকিস্তান দূতাবাসের দেওয়া একটি করে নথি আছে। ওই নথিতে লেখা আছে যে, তারা পাকিস্তানের পাসপোর্ট জমা দিয়েছে এবং তাদের যদি ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়, তাহলে পাকিস্তানের কোনো আপত্তি নেই।
তবে ‘নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র’ হিসেবে এই নথি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করতে চায়নি। এরপরেই ওই দুই বোন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত বছর কেরালা হাইকোর্টের এক-সদস্যের বেঞ্চ তাদের পক্ষেই রায় দেয়। আদালত বলে, আবেদনকারীরা যে ওই নথিটি পেশ করতে পারবেন না, তা স্পষ্ট। ‘একটা অসম্ভব কাজ করতে বলা হচ্ছে তাদের,’ এমন মন্তব্য করে ভারত সরকারকে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন কোর্ট।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৩শে আগস্ট কেরালা হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ আগের রায় বদলে দেয়।
রায়ে বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি ভারতের নাগরিক হওয়ার যোগ্য কী না, তা ভারতীয় রাষ্ট্রই একমাত্র তা চূড়ান্ত করতে পারে, এ ক্ষেত্রে কোনো বিপরীত দাবি যদি অন্য কোনো দেশের সরকার করে, তা গ্রাহ্য হতে পারে না। আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্ব পরিত্যাগেই এই প্রক্রিয়ার আইনি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।’
এরপরও অবশ্য ওই দুই বোনের সামনে অবশ্য উচ্চতর আদালতে আবেদন করার সুযোগ আছে। কিন্তু ভারতের কোর্ট যে নথি চাচ্ছে, সেটি তাদের কাছে নেই।
ভারত থেকেই পাকিস্তানে যায় পরিবারটি
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সী কেউ নিজে নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করতে না পারলেও তাদের বাবা যদি নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন করেন, সেই আবেদনে তাদেরও নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এই দুই বোনের বাবা মুহাম্মদ মারুফের জন্ম হয়েছিল কেরালাতেই। কিন্তু নয় বছর বয়সে তিনি অনাথ হয়ে যাওয়ায় তাঁর দাদি তাঁকে দত্তক নিয়েছিলেন। তিনি যখন ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানে চলে যান, তখন নাতিকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
রাশিদা বানো জানান, তাঁর বাবা-মা ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। ১৯৭১ সালে আত্মীয়দের সঙ্গে পাকিস্তানে বেড়াতে গিয়ে তারা আটকে পড়েন। যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সেই সময়ে। বেশ কয়েক মাস সেখানে আটকে থাকার পরে রাশিদা বানোর বাবা সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানের নাগরিকত্বের আবেদন করাটা বোধ হয় সহজতর হবে। এর কয়েক বছর পরেই রাশিদা বানোর জন্ম হয়।
এরপর পাকিস্তানে মুহাম্মদ মারুফের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরে তিনি চারটি সন্তানের জন্ম দেন। একসময় নিজেদের শিকড়ের কাছাকাছি থাকবেন বলে, পুরো পরিবার ২০০৮ সালে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা নিয়ে ভারতে চলে আসেন। কিন্তু মুহাম্মদ মারুফ ভারতের জীবনযাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। তখন তিনি পাকিস্তানে ফিরে যান। অন্যদিকে, রাশিদা বানো ও তাঁর ছেলে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়ে যান।
পাকিস্তানি পরিচয়পত্র দেখালে কটূক্তি
রাশিদা বানো বলেন, তারা পাকিস্তানি পরিচয়পত্র দেখালে মাঝে মাঝেই তাঁর পরিবারকে কটূক্তি সহ্য করতে হয়। কিন্তু তাদের কাছে তো অন্তত কোনো একটা নথি রয়েছে–তার দুই মেয়ের তো সেটুকুও নেই। মোবাইল ফোনের সংযোগ নেওয়ার মতো ছোটখাটো কাজ হোক বা তাঁর দুই মেয়ের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে এই পরিবারটিকে। ভারত সরকার অবশ্য তাঁর দুই মেয়েকে আধার কার্ড প্রদান করেছে—যা মোটামুটিভাবে পরিচয়পত্র হিসেবেই ভারতে বিবেচিত হয়। কিন্তু নাগরিকত্বের প্রমাণ না থাকার ফলে তারা ন্যূনতম অধিকারও ভোগ করতে পারেন না।
পাসপোর্ট না থাকার ফলে তাঁর দুই মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান রাশিদা বানো। তাঁর এক মেয়ের স্বামীকে মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি ছেড়ে ভারতে ফিরে আসতে হয়েছে, কারণ তাঁর মেয়ে বিদেশে যেতে পারবেন না। আবার অন্য মেয়ের একমাত্র নাতির বিদেশে চিকিৎসা করানোর দরকার থাকলেও তারা ভারত ছেড়ে যেতে পারছেন না।
তাদের আইনজীবী এম শশীধরণ বললেন, ‘২০১৭ সালে এই দুই বোন নথি হাতে পায়নি, কারণ তারা সেই সময়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। এখন তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছে, আবার তারা পাকিস্তানে ফিরেও যেতে পারবে না কারণ তারা পাকিস্তানি পাসপোর্ট তো জমা দিয়ে দিয়েছে। তাহলে তারা ওই সনদপত্র পাবে কী করে?’ তাদের জীবন এখানেই আটকে গেছে।’
২০০৮ সালে ভারতের কেরালায় আসেন এক পাকিস্তানি পরিবার। কেরালায় আদিনিবাস হওয়ায় রক্তের টানে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন মা-ছেলে ও দুই বোন। বাবা চলে যান পাকিস্তানে। এরপর কেটে যায় কয়েক বছর। ২০১৭ সালে মা-ছেলে আবেদনের পর পরই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে যান। কিন্তু পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পরিত্যাগপত্র না থাকায় ভারতের নাগরিকত্ব পাননি দুই বোন। আজও পাকিস্তান দিচ্ছে না সেই সনদটি। এতে ভারতে রাষ্ট্রহীন হয়ে পড়েছেন দুই বোন। আবার তারা যে আসলেই পাকিস্তানের নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করেছেন, সেই নথি তাদের হাতে দেয়নি দিল্লির পাকিস্তান দূতাবাস। ফলে ভারতও তাদের নাগরিকত্ব দিতে পারছে না।
২০০৮ সাল থেকে ভারতের কেরালায় থাকছেন এই দুই বোন। সম্প্রতি তারা আদালতে জানিয়েছেন, ২০১৭ সালে পাকিস্তান দূতাবাসে তারা নিজেদের পাসপোর্ট জমা দেন। কিন্তু সেই সময়ে তাদের বয়স ২১ বছর হয়নি, আর পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছর বয়স না হলে নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করা যায় না। তাই নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র তাদের দেওয়া হয়নি। তবে ২১ বছর বয়স হওয়ার পরে তারা যখন আবারও পাকিস্তানের দূতাবাসের কাছে নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র নিতে যান, তখনো সেই নথি তাদের দেওয়া হয়নি। এর কোনো কারণও দেখানো হয়নি বলে জানিয়েছেন ওই দুই বোনের মা রাশিদা বানো। তবে এ বিষয়ে তাঁর দুই মেয়ে সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে চাননি।
মা ও ছেলে ভারতীয়, দুই মেয়ে রাষ্ট্রহীন
রাশিদা বানো ও তাঁর ছেলে অবশ্য ইতিমধ্যেই ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে গেছেন, তবে তাঁর দুই মেয়ে ভারতের নাগরিকত্ব না পাওয়ায় দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন সবাই। এই পরিস্থিতিতে তাঁর দুই মেয়ে পাসপোর্টের জন্যও আবেদন করতে পারছেন না। এ বিষয়ে জানতে, ভারতের পাকিস্তান দূতাবাসে যোগাযোগ করেছিল বিবিসি। কিন্তু সেখান থেকে কোনো জবাব পাওয়া যায়নি।
ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলতেই থাকে, কখনো সেটা সংঘর্ষেও গড়ায়, যেমনটা হয়েছিল চলতি বছরের মে মাসে। কিন্তু তার মধ্যেও অভিবাসন চলতেই থাকে—বিশেষত ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময়ে যেসব পরিবারের সদস্যরা বিচ্ছিন্ন হয়ে দুটি আলাদা দেশে রয়ে গিয়েছিলেন। গত কয়েক দশকে এই প্রক্রিয়াটা আরও কঠিন হয়ে গেছে, কারণ এখন নথিপত্র যাচাইয়ের কাজে খুব বেশি কড়াকড়ি করা হয়। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্যে দেখা গেছে, সাত হাজারেরও বেশি পাকিস্তানির ভারতীয় নাগরিকত্বের আবেদন অমীমাংসিত হয়ে পড়ে রয়েছে। ভারতের সংসদে এই তথ্য পেশ করা হয়েছিল।
নাগরিকত্ব পেতে আদালতে
রাশিদা বানো জানান, পাকিস্তান দূতাবাস থেকে যখন তাঁর মেয়েদের নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদ দেওয়া হল না, তখন তারা অনুরোধ করেছিলেন যাতে তাদের পাকিস্তানি পাসপোর্টগুলো ফেরত দিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেগুলোও দেওয়া হয়নি।
তাঁর দুই মেয়ের কাছে এখন শুধু ২০১৮ সালে পাকিস্তান দূতাবাসের দেওয়া একটি করে নথি আছে। ওই নথিতে লেখা আছে যে, তারা পাকিস্তানের পাসপোর্ট জমা দিয়েছে এবং তাদের যদি ভারতের নাগরিকত্ব প্রদান করা হয়, তাহলে পাকিস্তানের কোনো আপত্তি নেই।
তবে ‘নাগরিকত্ব পরিত্যাগের সনদপত্র’ হিসেবে এই নথি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করতে চায়নি। এরপরেই ওই দুই বোন আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
গত বছর কেরালা হাইকোর্টের এক-সদস্যের বেঞ্চ তাদের পক্ষেই রায় দেয়। আদালত বলে, আবেদনকারীরা যে ওই নথিটি পেশ করতে পারবেন না, তা স্পষ্ট। ‘একটা অসম্ভব কাজ করতে বলা হচ্ছে তাদের,’ এমন মন্তব্য করে ভারত সরকারকে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেন কোর্ট।
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোর্টের ওই নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন করে। পরবর্তীতে চলতি বছরের ২৩শে আগস্ট কেরালা হাইকোর্টের দুই সদস্যের বেঞ্চ আগের রায় বদলে দেয়।
রায়ে বলা হয়, ‘কোনো ব্যক্তি ভারতের নাগরিক হওয়ার যোগ্য কী না, তা ভারতীয় রাষ্ট্রই একমাত্র তা চূড়ান্ত করতে পারে, এ ক্ষেত্রে কোনো বিপরীত দাবি যদি অন্য কোনো দেশের সরকার করে, তা গ্রাহ্য হতে পারে না। আনুষ্ঠানিকভাবে নাগরিকত্ব পরিত্যাগেই এই প্রক্রিয়ার আইনি স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে।’
এরপরও অবশ্য ওই দুই বোনের সামনে অবশ্য উচ্চতর আদালতে আবেদন করার সুযোগ আছে। কিন্তু ভারতের কোর্ট যে নথি চাচ্ছে, সেটি তাদের কাছে নেই।
ভারত থেকেই পাকিস্তানে যায় পরিবারটি
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী ২১ বছরের কম বয়সী কেউ নিজে নাগরিকত্ব পরিত্যাগ করতে না পারলেও তাদের বাবা যদি নাগরিকত্ব পরিত্যাগের আবেদন করেন, সেই আবেদনে তাদেরও নাম অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এই দুই বোনের বাবা মুহাম্মদ মারুফের জন্ম হয়েছিল কেরালাতেই। কিন্তু নয় বছর বয়সে তিনি অনাথ হয়ে যাওয়ায় তাঁর দাদি তাঁকে দত্তক নিয়েছিলেন। তিনি যখন ১৯৭৭ সালে পাকিস্তানে চলে যান, তখন নাতিকেও সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন।
রাশিদা বানো জানান, তাঁর বাবা-মা ভারতীয় নাগরিক ছিলেন। ১৯৭১ সালে আত্মীয়দের সঙ্গে পাকিস্তানে বেড়াতে গিয়ে তারা আটকে পড়েন। যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় দুই দেশের সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল সেই সময়ে। বেশ কয়েক মাস সেখানে আটকে থাকার পরে রাশিদা বানোর বাবা সিদ্ধান্ত নেন, পাকিস্তানের নাগরিকত্বের আবেদন করাটা বোধ হয় সহজতর হবে। এর কয়েক বছর পরেই রাশিদা বানোর জন্ম হয়।
এরপর পাকিস্তানে মুহাম্মদ মারুফের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। পরে তিনি চারটি সন্তানের জন্ম দেন। একসময় নিজেদের শিকড়ের কাছাকাছি থাকবেন বলে, পুরো পরিবার ২০০৮ সালে দীর্ঘমেয়াদি ভিসা নিয়ে ভারতে চলে আসেন। কিন্তু মুহাম্মদ মারুফ ভারতের জীবনযাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারেননি। তখন তিনি পাকিস্তানে ফিরে যান। অন্যদিকে, রাশিদা বানো ও তাঁর ছেলে ভারতীয় নাগরিকত্ব পেয়ে যান।
পাকিস্তানি পরিচয়পত্র দেখালে কটূক্তি
রাশিদা বানো বলেন, তারা পাকিস্তানি পরিচয়পত্র দেখালে মাঝে মাঝেই তাঁর পরিবারকে কটূক্তি সহ্য করতে হয়। কিন্তু তাদের কাছে তো অন্তত কোনো একটা নথি রয়েছে–তার দুই মেয়ের তো সেটুকুও নেই। মোবাইল ফোনের সংযোগ নেওয়ার মতো ছোটখাটো কাজ হোক বা তাঁর দুই মেয়ের সন্তানদের স্কুলে ভর্তি করাতে গিয়েও সমস্যায় পড়তে হয়েছে এই পরিবারটিকে। ভারত সরকার অবশ্য তাঁর দুই মেয়েকে আধার কার্ড প্রদান করেছে—যা মোটামুটিভাবে পরিচয়পত্র হিসেবেই ভারতে বিবেচিত হয়। কিন্তু নাগরিকত্বের প্রমাণ না থাকার ফলে তারা ন্যূনতম অধিকারও ভোগ করতে পারেন না।
পাসপোর্ট না থাকার ফলে তাঁর দুই মেয়ের ব্যক্তিগত জীবনেও সমস্যা দেখা দিয়েছে বলে জানান রাশিদা বানো। তাঁর এক মেয়ের স্বামীকে মধ্যপ্রাচ্যে চাকরি ছেড়ে ভারতে ফিরে আসতে হয়েছে, কারণ তাঁর মেয়ে বিদেশে যেতে পারবেন না। আবার অন্য মেয়ের একমাত্র নাতির বিদেশে চিকিৎসা করানোর দরকার থাকলেও তারা ভারত ছেড়ে যেতে পারছেন না।
তাদের আইনজীবী এম শশীধরণ বললেন, ‘২০১৭ সালে এই দুই বোন নথি হাতে পায়নি, কারণ তারা সেই সময়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক ছিল। এখন তারা প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গেছে, আবার তারা পাকিস্তানে ফিরেও যেতে পারবে না কারণ তারা পাকিস্তানি পাসপোর্ট তো জমা দিয়ে দিয়েছে। তাহলে তারা ওই সনদপত্র পাবে কী করে?’ তাদের জীবন এখানেই আটকে গেছে।’
প্রাণঘাতী ভূমিকম্পের কয়েক দিন পরও পূর্ব আফগানিস্তানের হাজারো মানুষ এখনো নিরাপদ আশ্রয়হীন অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। একদিকে বাড়িঘর লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। অন্যদিকে খাবারের সংকট। তীব্র ক্ষুধা নিয়ে মাথা গোঁজার জন্য ধ্বংসস্তূপের পাশের খোলা আকাশের নিচের স্থানটুকুই তাদের ভরসা।
২ ঘণ্টা আগেসামরিক শক্তিতে বিশ্বের সামনে নতুন আত্মবিশ্বাসের জানান দিল চীন। বেইজিংয়ের তিয়েনআনমেন স্কয়ারে গতকাল বিজয় দিবসের বিশাল কুচকাওয়াজে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ঘোষণা করেন, চীনের পুনরুত্থান অবশ্যম্ভাবী। এটি আর ঠেকানো যাবে না। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বে আধুনিকায়নের পথে কঠোর পরিশ্রমের...
২ ঘণ্টা আগেপাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশ থেকে যাওয়া হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন, পার্সি, খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। গত সোমবার রাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, এসব দেশের মুসলিমরা বাদে যাঁরা ভারতে গেছেন...
২ ঘণ্টা আগেএস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা, যা ন্যাটোর পরিভাষায় ‘এসএ-২১ গ্রোলার’ নামে পরিচিত। এটি ১৯৮০-এর দশকের শেষ দিকে রাশিয়ার আলমাজ-আন্তে সেন্ট্রাল ডিজাইন ব্যুরো দ্বারা উন্নত করা হয়। এর লক্ষ্য ছিল আমেরিকান এমআইএম-১০৪ (MIM-104) প্যাট্রিয়টের মতো পশ্চিমা আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থার মোকাবিলা করা এবং পুরোনো এস-২০০
৫ ঘণ্টা আগে