Ajker Patrika

পদত্যাগ করলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা

আজকের পত্রিকা ডেস্ক­
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৬: ৪১
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। ছবি: এএফপি
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। ছবি: এএফপি

জাপানের ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির বিভাজন ঠেকাতে পদত্যাগ করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। আজ রোববার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে। মূলত গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত জাপানের জাতীয় নির্বাচনে তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর থেকেই তাঁর অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ে।

গত জুলাইয়ের জাতীয় নির্বাচনে পার্লামেন্টে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারানোর পর দল থেকেই শিগেরু ইশিবার পদত্যাগের দাবি ওঠে। এই প্রেক্ষাপটেই পদত্যাগ করলেন তিনি। শুরুতে তিনি সে দাবি মানেননি। বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা শুল্কচুক্তি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করতে চান।

গত বছর দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর নেতৃত্বেই একের পর এক নির্বাচনে হারে জোট। এমনকি পার্লামেন্টের দুই কক্ষেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় তাঁর দল ও জোট। এরপর, গত অক্টোবরে তাঁর নেতৃত্বাধীন জোট নিম্নকক্ষে পার্লামেন্টের সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়।

জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়ছে—এমন উদ্বেগ থেকে ভোটারদের ক্ষোভই ছিল এই পরাজয়ের মূল কারণ। এর ফলে ইশিবার সরকারের পক্ষে নীতিগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন কঠিন হয়ে পড়েছে। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা বাড়তে থাকায় দলের ডানপন্থী অংশ থেকে তাঁকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছিল। জুলাইয়ের নির্বাচনের ফলাফলের দায় তাঁকে নিতে হবে বলেই তাদের দাবি।

সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, শনিবার রাতে জাপানের কৃষিমন্ত্রী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সঙ্গে বৈঠক করে তাঁকে পদত্যাগে রাজি করানোর চেষ্টা করেন।

প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এখনো ইশিবার পদত্যাগ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলেনি। তবে জাপান সরকার নিশ্চিত করেছে, রোববার সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেবেন ইশিবা। এর এক দিন পরই ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নেতৃত্ব নির্বাচনের ব্যাপারে ভোট করার কথা ছিল।

সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের মধ্যে আছেন—রক্ষণশীল নেতা সানায়ে তাকাইচি, যিনি গত বছরের এলডিপির শীর্ষ নেতা নির্বাচনের লড়াইয়ে দ্বিতীয় দফায় অল্প ব্যবধানে ইশিবার কাছে হেরেছিলেন। আরেকজন হলেন বর্তমান কৃষিমন্ত্রী শিনজিরো কোইজুমি, যার পরিবার দীর্ঘদিন ধরে জাপানের রাজনীতিতে সক্রিয়।

মেইজি ইয়াসুদা রিসার্চ ইনস্টিটিউটের অর্থনীতিবিদ কাজুতাকা মা’এদা বলেন, ‘এলডিপির বারবার নির্বাচনী পরাজয়ের পর ইশিবার ওপর রাজনৈতিক চাপ যে তৈরি হচ্ছিল, তাতে তাঁর পদত্যাগ অনিবার্য ছিল।’

কাজুতাকা আরও বলেন, ‘কোইজুমি ও তাকাইচিই সবচেয়ে সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে দেখা হচ্ছে। কোইজুমি বড় ধরনের পরিবর্তন আনবেন বলে আশা করা হচ্ছে না। তবে তাকাইচির সম্প্রসারণবাদী রাজস্ব নীতি আর সুদের হারের ব্যাপারে সতর্ক অবস্থান আর্থিক বাজারে আলাদা করে নজর কাড়তে পারে।’

এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে জাপানি গাড়ি আমদানির ওপর শুল্ক ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামানোর ঘোষণা দেন। জুলাইয়ে যে চুক্তি হয়েছিল, সেটিই আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হলো।

চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা বেশির ভাগ জাপানি রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপিত হবে। তবে শনিবার টোকিওর প্রধান শুল্ক আলোচক জানিয়েছেন, এই বাণিজ্য চুক্তি এখনো `চূড়ান্ত হয়নি'। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র এখনো ওষুধ ও সেমিকন্ডাক্টরের ওপর শুল্কসংক্রান্ত আদেশ জারি করেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত