ডা. ফরিদা ইয়াসমিন সুমি
পোস্ট-নেটাল ব্লু কী
মাতৃত্বের নীল সময়, মেটার্নিটি ব্লু বা পোস্ট-নেটাল পরিস্থিতি একধরনের মানসিক বিপর্যস্ততা বা মেন্টাল ডিজঅর্ডার। সন্তান হওয়ার পরবর্তী সময়ে একজন মায়ের তিন ধরনের মেন্টাল ডিসঅর্ডার হতে পারে। এগুলো হলো পোস্ট-নেটাল ব্লু, পোস্ট-নেটাল ডিপ্রেশন ও পিউপেরাল সাইকোসিস।
এর মধ্যে পোস্ট-নেটাল ব্লু সবচেয়ে কমন এবং এটি খুব একটা মারাত্মক নয়।
এই ‘ব্লু বা নীল সময়’ সাধারণত ১০-১২ দিনের মধ্যে কেটে যায়। তবে দুই সপ্তাহের বেশি এ সমস্যা থাকলে সতর্ক হতে হবে। কেননা এটি পিউপেরাল মেন্টাল ডিজঅর্ডারের পরবর্তী পর্যায় ডিপ্রেশন বা সাইকোসিসের দিকে মোড় নিতে পারে।
ব্লু কেন হয়
প্রসবের পর রক্তে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনকে এর কারণ বলে মনে করা হয়, তবে সবার ক্ষেত্রে যে এমনটি হবে তা নয়। যাঁরা প্রথম মা হন, তাঁদের পক্ষে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়াটা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত, শিশু সামলানো, বুকের দুধ খাওয়ানোর দায়িত্ব, রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে না পারা, সময়মতো বিশ্রাম নিতে না পারা, স্বামীর সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব, আত্মীয়স্বজন এলে তাঁদের আপ্যায়ন করা–সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় মাকে। তা ছাড়া অনেক সময় আত্মীয়স্বজনেরা সন্তান সম্পর্কে নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করেন, যা এ সময় মায়ের জন্য খুব পীড়াদায়ক। এ জন্য পোস্ট-নেটাল ব্লু হতে পারে।
অনেক মা সন্তান হওয়ার ফলে স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তনগুলোকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন না। এই পরিবর্তনের ফলে তাঁর সৌন্দর্য কমে গেছে বলে মনে করেন। সৌন্দর্য কমে যাওয়ার ফলে স্বামী তাঁকে আগের মতো ভালোবাসবেন কি না, স্বামীর কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে কি না—এসব নিয়ে মা ভেতরে-ভেতরে ভীষণ দ্বিধাগ্রস্ত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন।
মোটকথা, সবকিছু মিলিয়ে মা হওয়া নারীরা হয়ে পড়েন ভীষণ বিপন্ন আর একা। তাঁর এই একাকিত্ব, তাঁর এই কষ্ট তিনি কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করতে না পেরে নিজে নিজে কষ্ট পান এবং বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তৈরি হতে পারে পোস্ট-নেটাল ব্লু।
এ সময়ে যা করণীয়
পোস্ট-নেটাল ব্লুর বিশেষ কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এই স্পর্শকাতর সময়ে নতুন মায়েদের দরকার সঠিক যত্ন, সঙ্গ, মনোযোগ ও সহানুভূতি। নতুন শিশু, বিপর্যস্ত পরিস্থিতি, পরিবর্তিত শরীর নিয়ে মা থাকেন ভীষণ বিব্রত। তাঁকে বোঝাতে হবে এই পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক ও সাময়িক। নিয়মিত যত্ন ও ব্যায়াম তাঁকে আগের শারীরিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় মাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে হবে, তাঁকে আশ্বস্ত করতে হবে, মা যাতে তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারেন এবং শিশুর ও নিজের যত্ন নিতে পারেন, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে হবে।
চট করে রেগে গেলে, যখন-তখন কান্না করলে তাঁর প্রতি বিরক্তি প্রকাশ না করে, তাঁকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে, পর্যাপ্ত সঙ্গ দিতে হবে। মায়ের এই অসহায় মুহূর্তে তিনি খুব মনোযোগ প্রত্যাশা করেন, বিশেষ করে স্বামী ও আপনজনদের কাছ থেকে। তাঁর প্রতি মনোযোগী হতে হবে, তাঁকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এই সমস্যাকে অবহেলা করলে তা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে, যা অনেক সময় সংসারে অশান্তি ডেকে আনে। কাজেই ওষুধ নয়, স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের খোলামেলা আলোচনা, পর্যাপ্ত সঙ্গদান ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব মাতৃত্বের এই নীল সময় দূর করার জন্য যথেষ্ট।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।
পোস্ট-নেটাল ব্লু কী
মাতৃত্বের নীল সময়, মেটার্নিটি ব্লু বা পোস্ট-নেটাল পরিস্থিতি একধরনের মানসিক বিপর্যস্ততা বা মেন্টাল ডিজঅর্ডার। সন্তান হওয়ার পরবর্তী সময়ে একজন মায়ের তিন ধরনের মেন্টাল ডিসঅর্ডার হতে পারে। এগুলো হলো পোস্ট-নেটাল ব্লু, পোস্ট-নেটাল ডিপ্রেশন ও পিউপেরাল সাইকোসিস।
এর মধ্যে পোস্ট-নেটাল ব্লু সবচেয়ে কমন এবং এটি খুব একটা মারাত্মক নয়।
এই ‘ব্লু বা নীল সময়’ সাধারণত ১০-১২ দিনের মধ্যে কেটে যায়। তবে দুই সপ্তাহের বেশি এ সমস্যা থাকলে সতর্ক হতে হবে। কেননা এটি পিউপেরাল মেন্টাল ডিজঅর্ডারের পরবর্তী পর্যায় ডিপ্রেশন বা সাইকোসিসের দিকে মোড় নিতে পারে।
ব্লু কেন হয়
প্রসবের পর রক্তে ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের হঠাৎ পরিবর্তনকে এর কারণ বলে মনে করা হয়, তবে সবার ক্ষেত্রে যে এমনটি হবে তা নয়। যাঁরা প্রথম মা হন, তাঁদের পক্ষে শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নেওয়াটা অনেক সময় কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রসব-পরবর্তী রক্তপাত, শিশু সামলানো, বুকের দুধ খাওয়ানোর দায়িত্ব, রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে না পারা, সময়মতো বিশ্রাম নিতে না পারা, স্বামীর সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব, আত্মীয়স্বজন এলে তাঁদের আপ্যায়ন করা–সব মিলিয়ে এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় মাকে। তা ছাড়া অনেক সময় আত্মীয়স্বজনেরা সন্তান সম্পর্কে নানা রকম বিরূপ মন্তব্য করেন, যা এ সময় মায়ের জন্য খুব পীড়াদায়ক। এ জন্য পোস্ট-নেটাল ব্লু হতে পারে।
অনেক মা সন্তান হওয়ার ফলে স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তনগুলোকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন না। এই পরিবর্তনের ফলে তাঁর সৌন্দর্য কমে গেছে বলে মনে করেন। সৌন্দর্য কমে যাওয়ার ফলে স্বামী তাঁকে আগের মতো ভালোবাসবেন কি না, স্বামীর কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা কমে যাবে কি না—এসব নিয়ে মা ভেতরে-ভেতরে ভীষণ দ্বিধাগ্রস্ত ও চিন্তিত হয়ে পড়েন।
মোটকথা, সবকিছু মিলিয়ে মা হওয়া নারীরা হয়ে পড়েন ভীষণ বিপন্ন আর একা। তাঁর এই একাকিত্ব, তাঁর এই কষ্ট তিনি কারও সঙ্গে ভাগাভাগি করতে না পেরে নিজে নিজে কষ্ট পান এবং বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন। সেখান থেকে তৈরি হতে পারে পোস্ট-নেটাল ব্লু।
এ সময়ে যা করণীয়
পোস্ট-নেটাল ব্লুর বিশেষ কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। এই স্পর্শকাতর সময়ে নতুন মায়েদের দরকার সঠিক যত্ন, সঙ্গ, মনোযোগ ও সহানুভূতি। নতুন শিশু, বিপর্যস্ত পরিস্থিতি, পরিবর্তিত শরীর নিয়ে মা থাকেন ভীষণ বিব্রত। তাঁকে বোঝাতে হবে এই পরিবর্তন খুবই স্বাভাবিক ও সাময়িক। নিয়মিত যত্ন ও ব্যায়াম তাঁকে আগের শারীরিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় মাকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসতে হবে, তাঁকে আশ্বস্ত করতে হবে, মা যাতে তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারেন এবং শিশুর ও নিজের যত্ন নিতে পারেন, সে ব্যাপারে সহযোগিতা করতে হবে।
চট করে রেগে গেলে, যখন-তখন কান্না করলে তাঁর প্রতি বিরক্তি প্রকাশ না করে, তাঁকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে, পর্যাপ্ত সঙ্গ দিতে হবে। মায়ের এই অসহায় মুহূর্তে তিনি খুব মনোযোগ প্রত্যাশা করেন, বিশেষ করে স্বামী ও আপনজনদের কাছ থেকে। তাঁর প্রতি মনোযোগী হতে হবে, তাঁকে গুরুত্ব দিতে হবে।
এই সমস্যাকে অবহেলা করলে তা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে, যা অনেক সময় সংসারে অশান্তি ডেকে আনে। কাজেই ওষুধ নয়, স্বামী ও পরিবারের সদস্যদের খোলামেলা আলোচনা, পর্যাপ্ত সঙ্গদান ও সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব মাতৃত্বের এই নীল সময় দূর করার জন্য যথেষ্ট।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক (গাইনি) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।
গত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল রোববার সকাল ৮টা থেকে আজ সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ৪২৯ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তবে এই সময়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
৪ ঘণ্টা আগেচলতি মাসে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বছরের মধ্যে শীর্ষে উঠেছে। চলতি বছর এ পর্যন্ত যত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে, তার ৫৬ শতাংশই এসেছে জুনে। জুনে রোগী বৃদ্ধির এই ধারা এ পর্যন্ত রেকর্ড। রোগতত্ত্ববিদেরা বলছেন, আগামী তিন থেকে চার মাস রোগীর সংখ্যা বাড়া চলতে পারে। তাঁদের আশঙ্কা, রোগী বৃদ্ধির গতি এবং মৃত্যুও
১৯ ঘণ্টা আগেগত ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল শনিবার সকাল ৮টা থেকে আজ রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত) ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এক নারীর (২৭) মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি এ সময় আরও ৩৮৩ জন ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
১ দিন আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ সময় কারও মৃত্যু হয়নি। আজ রোববার (২৯ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১ দিন আগে