অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
হাতের রেখা দেখে ভাগ্য বোঝা যাক আর না-ই যাক, মুখ দেখে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ঠিকই চিনে নেবেন অসুখ। আপনিও পারবেন নিজের অসুখ চিনতে। আয়নায় বারবার নিজের মুখ দেখেন। এবার নিজের মুখ সূক্ষ্মভাবে দেখুন, পাবেন স্বাস্থ্যের শুলুক-সন্ধান।
হলুদ হলো চোখ ও ত্বক
হয়েছে জন্ডিস। রক্তের হিমোগ্লোবিন গেছে ভেঙে আর বেরোল এই রঞ্জক বিলিরুবিন। এভাবে হলদে হলো সব। অনেক সময় শিশু ৩৮ সপ্তাহের আগে জন্মালে তার গা হতে পারে হলুদ। তবে এটি স্বাভাবিক। এদের লিভার সে সময় পরিপক্ব হয় না। তবে পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে চোখ আর ত্বক হলুদ হতে পারে রোগের চিহ্ন। হতে পারে হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমণ আর লিভার ও পিত্তথলি এবং অগ্ন্যাশয়ের কোনো সমস্যা।
আঁচিল
থাকতে পারে ত্বকে দাগ, ফোসকা ও আঁচিল। আঁচিল হলে কিছু আলাদা নজর দিতে হবে। সে জন্য দেখতে হবে সেটি অসম কি না। আঁচিলের কিনার কি অসমতল? খাঁজকাটা? রং কি অসম? পরিধি কি মটরদানার চেয়ে বড়? কয়েক সপ্তাহে কি তাতে কোনো পরিবর্তন হয়েছে? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন।
ক্ষত
মুখ আর ঠোঁটের চারদিকে হয় ফোসকা বা কোল্ড শোর। এটি ঘটে হারপিস-১ ভাইরাসের জন্য। বেশির ভাগ এমন ফোসকা হয় মুখের লালা থেকে, যৌন সংস্পর্শে নয়।
এই ভাইরাস একবার সংক্রমিত হলে থেকে যায়। বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা হলে বা কড়া রোদে বেরোলে এমন ক্ষত হয়। তবে এটি এমনি এমনি চলে যায়। তেমন চিকিৎসা লাগে না।
ঠোঁট ফাটা
অনেকেরই সময়-অসময়ে ঠোঁট ফাটে। তবে শীতে বাম লাগালে সমস্যা কমে, ঠোঁট আর্দ্র হয়। অনেক সময় পানিশূন্যতার কারণে ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। হতে পারে অ্যালার্জি বা স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলাফল।
প্রজাপতি র্যাশ
বেশির ভাগ র্যাশ অত ভাবনার বিষয় নয়, এমনি চলে যায়। তবে প্রজাপতি র্যাশ এমন সাধারণ নয়। এটি চিবুকের দুই দিকে ছড়িয়ে পড়ে প্রজাপতির মতো। এ হলো লুপাসের লক্ষণ। এটি এমন এক রোগ, যেখানে শরীর নিজ কোষের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় ও আক্রমণ করে। সঙ্গে জ্বর, হাড়ের গিঁটে ব্যথা হয় এবং ঠান্ডায় আঙুল হয় নীল। এ রকম হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অস্বাভাবিক জায়গায় লোম
অবাঞ্ছিত জায়গায়, যেমন পুরুষের বয়স হলে কান ও ভ্রুর চারপাশে কিংবা নারীদের থুতনি আর চিবুকে লোম হতে পারে। তরুণীদের মুখাবয়বে লোম পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের জন্য হতে পারে। এটি হলে সন্তান ধারণ হয়ে পড়ে কঠিন।
চোখের পাতা নেমে আসা
একে বলে টোসিস। এতে এক বা দুই চোখের পাতা হতে পারে আনত। গুরুতর হলে দৃষ্টিতে হয় সমস্যা। কেউ জন্মের সময় এই সমস্যা নিয়ে আসে আর কারও এমন
হয় ধীরে ধীরে। এ সমস্যা অনেক সময় নিরীহ থাকে। তবে সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
মুখের এক দিক নাড়াতে সমস্যা
শরীরের এক দিক নড়াতে সমস্যা হলে চিকিৎসক দেখান অবিলম্বে। শুধু মুখের এক দিক নড়াতে কষ্ট হলে আর উপসর্গ না থাকলে সেটা হলো বেলস পলসি। এই রোগে মুখের পেশি নিয়ন্ত্রণ করে এমন স্নায়ুকে ভাইরাস আক্রমণ করে। এমন হলে কয়েক ঘণ্টা বা দিনে ফুলে যায় মুখের এক দিক। ব্যথা হয় চোয়াল বা কানের পেছনে। এটি তেমন গুরুতর নয়। এমনিতে চলে যায় ৩ থেকে ৬ মাসে।
মুখমণ্ডলের প্যারালাইসিস
মুখের নিচের দিক ঝুলে পড়া, দুর্বলতা বা হঠাৎ প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া, বাহু বা পা অবশ হয়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বাক্য উচ্চারণে জড়তা, একটি জিনিসকে দুটি দেখা, খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা—এসব লক্ষণে হতে পারে স্ট্রোক। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অক্ষি পল্লবের ওপরে হলুদ দাগ
ওপর আর নিচের অক্ষি পল্লবের ওপর হলুদ স্ফীতি হলে সেটি জেন্থেলসমা। এ হলো কোলেস্টেরলপুঞ্জ। তবে এটি তেমন ভয়ের নয়। কিন্তু এটি হলে আপনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তাই দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
চোখ গেছে ফুলে
ঘুম কম, হরমোনের পরিবর্তন, উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য পানি জমে চোখ ফুলে যেতে পারে। যে পেশিগুলো চোখ ধরে রাখে, সেগুলো দুর্বল হয়ে যায়। ফলে চোখ লাল হয়ে চুলকানি হয়। অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে ফোলা চোখ।
মেলাজমা
এটি হলে মুখে হয় ধূসর বাদামি প্যাঁচ। গর্ভকালে বা জন্মনিরোধক পিল খেলে এমন হতে পারে। তবে এটি এমনি মিলিয়ে যায় কালক্রমে।
কেশহানি
অক্ষি পল্লব বা ভ্রুর চুল পড়ে গেলে ও ছোপ ছোপ দাগ হলে বুঝবেন আপনি এলোপেশিয়া এরিয়েটা নামে একটি রোগে আক্রান্ত। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
হাতের রেখা দেখে ভাগ্য বোঝা যাক আর না-ই যাক, মুখ দেখে অভিজ্ঞ চিকিৎসক ঠিকই চিনে নেবেন অসুখ। আপনিও পারবেন নিজের অসুখ চিনতে। আয়নায় বারবার নিজের মুখ দেখেন। এবার নিজের মুখ সূক্ষ্মভাবে দেখুন, পাবেন স্বাস্থ্যের শুলুক-সন্ধান।
হলুদ হলো চোখ ও ত্বক
হয়েছে জন্ডিস। রক্তের হিমোগ্লোবিন গেছে ভেঙে আর বেরোল এই রঞ্জক বিলিরুবিন। এভাবে হলদে হলো সব। অনেক সময় শিশু ৩৮ সপ্তাহের আগে জন্মালে তার গা হতে পারে হলুদ। তবে এটি স্বাভাবিক। এদের লিভার সে সময় পরিপক্ব হয় না। তবে পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে চোখ আর ত্বক হলুদ হতে পারে রোগের চিহ্ন। হতে পারে হেপাটাইটিস ভাইরাস সংক্রমণ আর লিভার ও পিত্তথলি এবং অগ্ন্যাশয়ের কোনো সমস্যা।
আঁচিল
থাকতে পারে ত্বকে দাগ, ফোসকা ও আঁচিল। আঁচিল হলে কিছু আলাদা নজর দিতে হবে। সে জন্য দেখতে হবে সেটি অসম কি না। আঁচিলের কিনার কি অসমতল? খাঁজকাটা? রং কি অসম? পরিধি কি মটরদানার চেয়ে বড়? কয়েক সপ্তাহে কি তাতে কোনো পরিবর্তন হয়েছে? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজুন।
ক্ষত
মুখ আর ঠোঁটের চারদিকে হয় ফোসকা বা কোল্ড শোর। এটি ঘটে হারপিস-১ ভাইরাসের জন্য। বেশির ভাগ এমন ফোসকা হয় মুখের লালা থেকে, যৌন সংস্পর্শে নয়।
এই ভাইরাস একবার সংক্রমিত হলে থেকে যায়। বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা হলে বা কড়া রোদে বেরোলে এমন ক্ষত হয়। তবে এটি এমনি এমনি চলে যায়। তেমন চিকিৎসা লাগে না।
ঠোঁট ফাটা
অনেকেরই সময়-অসময়ে ঠোঁট ফাটে। তবে শীতে বাম লাগালে সমস্যা কমে, ঠোঁট আর্দ্র হয়। অনেক সময় পানিশূন্যতার কারণে ঠোঁট শুষ্ক হতে পারে। হতে পারে অ্যালার্জি বা স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলাফল।
প্রজাপতি র্যাশ
বেশির ভাগ র্যাশ অত ভাবনার বিষয় নয়, এমনি চলে যায়। তবে প্রজাপতি র্যাশ এমন সাধারণ নয়। এটি চিবুকের দুই দিকে ছড়িয়ে পড়ে প্রজাপতির মতো। এ হলো লুপাসের লক্ষণ। এটি এমন এক রোগ, যেখানে শরীর নিজ কোষের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় ও আক্রমণ করে। সঙ্গে জ্বর, হাড়ের গিঁটে ব্যথা হয় এবং ঠান্ডায় আঙুল হয় নীল। এ রকম হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অস্বাভাবিক জায়গায় লোম
অবাঞ্ছিত জায়গায়, যেমন পুরুষের বয়স হলে কান ও ভ্রুর চারপাশে কিংবা নারীদের থুতনি আর চিবুকে লোম হতে পারে। তরুণীদের মুখাবয়বে লোম পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমের জন্য হতে পারে। এটি হলে সন্তান ধারণ হয়ে পড়ে কঠিন।
চোখের পাতা নেমে আসা
একে বলে টোসিস। এতে এক বা দুই চোখের পাতা হতে পারে আনত। গুরুতর হলে দৃষ্টিতে হয় সমস্যা। কেউ জন্মের সময় এই সমস্যা নিয়ে আসে আর কারও এমন
হয় ধীরে ধীরে। এ সমস্যা অনেক সময় নিরীহ থাকে। তবে সমস্যা বেশি হলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
মুখের এক দিক নাড়াতে সমস্যা
শরীরের এক দিক নড়াতে সমস্যা হলে চিকিৎসক দেখান অবিলম্বে। শুধু মুখের এক দিক নড়াতে কষ্ট হলে আর উপসর্গ না থাকলে সেটা হলো বেলস পলসি। এই রোগে মুখের পেশি নিয়ন্ত্রণ করে এমন স্নায়ুকে ভাইরাস আক্রমণ করে। এমন হলে কয়েক ঘণ্টা বা দিনে ফুলে যায় মুখের এক দিক। ব্যথা হয় চোয়াল বা কানের পেছনে। এটি তেমন গুরুতর নয়। এমনিতে চলে যায় ৩ থেকে ৬ মাসে।
মুখমণ্ডলের প্যারালাইসিস
মুখের নিচের দিক ঝুলে পড়া, দুর্বলতা বা হঠাৎ প্যারালাইজড হয়ে যাওয়া, বাহু বা পা অবশ হয়ে যাওয়া, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বাক্য উচ্চারণে জড়তা, একটি জিনিসকে দুটি দেখা, খাবার গিলতে অসুবিধা হওয়া, মাথা ঝিমঝিম করা—এসব লক্ষণে হতে পারে স্ট্রোক। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
অক্ষি পল্লবের ওপরে হলুদ দাগ
ওপর আর নিচের অক্ষি পল্লবের ওপর হলুদ স্ফীতি হলে সেটি জেন্থেলসমা। এ হলো কোলেস্টেরলপুঞ্জ। তবে এটি তেমন ভয়ের নয়। কিন্তু এটি হলে আপনি হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকির মধ্যে আছেন। তাই দ্রুতই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
চোখ গেছে ফুলে
ঘুম কম, হরমোনের পরিবর্তন, উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার জন্য পানি জমে চোখ ফুলে যেতে পারে। যে পেশিগুলো চোখ ধরে রাখে, সেগুলো দুর্বল হয়ে যায়। ফলে চোখ লাল হয়ে চুলকানি হয়। অ্যালার্জির কারণেও হতে পারে ফোলা চোখ।
মেলাজমা
এটি হলে মুখে হয় ধূসর বাদামি প্যাঁচ। গর্ভকালে বা জন্মনিরোধক পিল খেলে এমন হতে পারে। তবে এটি এমনি মিলিয়ে যায় কালক্রমে।
কেশহানি
অক্ষি পল্লব বা ভ্রুর চুল পড়ে গেলে ও ছোপ ছোপ দাগ হলে বুঝবেন আপনি এলোপেশিয়া এরিয়েটা নামে একটি রোগে আক্রান্ত। এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
অনেক বছর ধরে স্থূলতাকে একক রোগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি উঠেছে। কারণ এটি শুধু ডায়াবেটিস, হৃদ্রোগ, স্ট্রোক কিংবা কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় না, স্থূলতা নিজেও এমন একটি স্বতন্ত্র স্বাস্থ্য সমস্যা, যার আলাদাভাবে চিকিৎসা প্রয়োজন।
৪ ঘণ্টা আগেদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু নিয়ে আরও ৩৮০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ সময়ে চিকিৎসাধীন কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গুবিষয়ক এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০ ঘণ্টা আগেপিতৃত্বকালীন ছুটির প্রয়োজন নেই বলে মনে করেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, ‘আমার মনে হয় না আলাদা পিতৃত্বকালীন ছুটি দরকার আছে। ছুটি যদি দিতে হয়, তাহলে বাবারও শিশুকে সময় দিতে হবে।’ আজ সোমবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে
২১ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ, ভারতসহ পুরো উপমহাদেশে ‘আম’-এর আবেদন আলাদা। কিন্তু এই উপমহাদেশে বেশ সাধারণ একটি রোগ—ডায়াবেটিস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ভারতে প্রায় ৭ কোটি ৭০ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এবং আরও প্রায় ২ কোটি ৫০ লাখ মানুষ প্রি-ডায়াবেটিস অবস্থায় আছে, যাদের ডায়াবেটিস
১ দিন আগে