Ajker Patrika

গর্ভবতীদের চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন

ডা. প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী 
গর্ভবতীদের চিকিৎসায় রিহ্যাবিলিটেশন

গর্ভকালীন সেবা নারীদের প্রজননস্বাস্থ্যের অপরিহার্য অংশ। গর্ভাবস্থায় প্রায়শই হাড়, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি ও স্নায়ুসংক্রান্ত জটিলতা দেখা যায়। ফলে একজন হবু মা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েন। এতে মা ও অনাগত শিশুকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় প্রয়োজন অনুযায়ী সীমিতসংখ্যক ওষুধ ব্যবহার করতে হয়। এ অবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসা জরুরি।
গর্ভাবস্থায় সাধারণত যেসব বিষয়ে পুনর্বাসন চিকিৎসা করা হয়, সেগুলো হলো—

প্রথম তিন মাস

  • পিঠ, কোমর অথবা পা ব্যথা হওয়া।
  • ক্লান্তি বোধ করা।

দ্বিতীয় তিন মাস

  • হাত ও আঙুলে ঝিঁঝি ধরা, অবশ হয়ে যাওয়া।
  • অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
  • অস্বস্তি অনুভব করা।

বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসের সমস্যা দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় তিন মাসেও অব্যাহত থাকতে পারে। 

কারণ

  • হরমোনজনিত।
  • মেরুদণ্ডের বক্রতার পরিবর্তন।
  • শারীরিক স্থূলতা।
  • স্নায়ুর ওপর অতিরিক্ত চাপ।

গর্ভাবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন চিকিৎসার উদ্দেশ্য

  • মায়েদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো।
  • মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
  • গর্ভকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো।
  • গর্ভকালীন স্বাস্থ্য জটিলতার চিকিৎসা করা
  • নিরাপদ মাতৃত্ব।
  • প্রসবকালীন ও প্রসব-পরবর্তী জটিলতা হ্রাস করা।

গর্ভবতীদের পুনর্বাসন চিকিৎসা
চিকিৎসক রোগনির্ণয়ের জন্য অনেকটাই রোগীর উপসর্গ অনুযায়ী ক্লিনিক্যাল পরীক্ষার ওপর নির্ভরশীল থাকেন। তবে সামান্য প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষারও প্রয়োজন হতে পারে। রোগীর কাউন্সেলিংয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।

ওষুধ
গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহার সীমিত। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।

শারীরিক অনুশীলন
গর্ভাবস্থায় নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় সক্রিয় নারীদের শরীরের পরিবর্তিত অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া সহজ হয়। তাই যতক্ষণ স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন, ততক্ষণ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে শারীরিক ব্যায়াম চালিয়ে যেতে বাধা নেই। তবে নিজেকে কখনোই ক্লান্ত করা যাবে না। স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি দৈনিক ২০ থেকে ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে পাঁচ দিন হাঁটার চেষ্টা করতে হবে। নিয়মিত ব্যায়ামে শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ভালো হয়।

খাবার

  • প্রতি বেলা গর্ভ-পূর্ববর্তী খাবারের চেয়ে একটু বেশি করে খাবার খেতে হবে।
  • স্বাস্থ্যসম্মত পুষ্টিকর খাবার, সবুজ শাক-সবজি ও ফল খেতে হবে।
  • ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে।

দৈনন্দিন কাজ

  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। দুপুরের খাবারের পর ২ ঘণ্টা এবং রাতে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতে হবে।
  • শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে হবে।
  • ভারী কাজ করা যাবে না।
  • পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
  • সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে।
  • এক পাশ ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।
  • প্রয়োজনে দুই হাঁটুর মাঝখানে একটি ছোট বালিশ ব্যবহার করতে হবে। 

সতর্কতা

  • চলাফেরায় তাড়াহুড়া করা যাবে না।
  • তীব্র মাত্রার কোনো শারীরিক অনুশীলন করা যাবে না।
  • কোনোক্রমেই পেটে ঠান্ডা বা গরম সেঁক অথবা ম্যাসাজ করা যাবে না।
  • হাইহিল জুতা পরা যাবে না। আরামদায়ক জুতা পরতে হবে।
  • যেকোনো বিপদচিহ্ন দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।

পরামর্শ দিয়েছেন: ডা. প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিশেষজ্ঞ,আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর, ঢাকা

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নতুন মেট্রো নয়, রুট বাড়ানোর চিন্তা

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত