অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
সম্প্রতি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ, স্থূলতা আর পুষ্টিবিজ্ঞানে কিছু নতুন ভাবনা আসায় এ ধরনের উপবাসের কার্যকারিতা ভালোভাবে বোঝা গেছে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মানে হচ্ছে, দিনের একটি সময় উপোস বা না খেয়ে থাকা। শরীরের চাহিদা বুঝে তা ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা হতে পারে।
ওজন বাগে আনতে শুধু শরীরচর্চাই নয়, দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাসও। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে খাবারের ব্যাপারে খুব কড়া বিধিনিষেধ থাকে না বলে তরুণেরা এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ায় দিনে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলে বাকি সময় উপোস কাটাতে হয়। এই ডায়েটিংয়ের রকমফের আছে।
সময় সীমিত আহার
প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় না খেয়ে বাকি সময় খাওয়া। জনপ্রিয় হলো ১৬:৮ পদ্ধতি; অর্থাৎ দিনে ১৬ ঘণ্টা উপোস, ৮ ঘণ্টা খাওয়া। এ সময় দু-তিনবার খাওয়া যেতে পারে।
৫ অনুপাত ২ ডায়েট
সপ্তাহের ৫ দিন স্বাভাবিক খাবেন আর দুই দিন সীমিত ক্যালরির খাবার খাবেন। ওই দুই দিন ৫০০ থেকে ৬০০ ক্যালরি করে খেতে হবে।
খাওয়া, বন্ধ, আবার খাওয়া
সপ্তাহে দু-এক দিন ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে এ প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ এক দিন খাওয়া, অন্য দিন না খেয়ে থাকা। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংকে ঠিক ডায়েট না
বলে ডায়েট নমুনা বলা যায়। দিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরি নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহণ করে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, রাতের খাবারের পর থেকে সকালের নাশতা বা মধ্যাহ্নভোজনের মধ্যে সময়ের নির্দিষ্ট ব্যবধান রাখতে হবে। এতে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকে। বেশ কিছু গবেষণায় ওজন ঝরানোর জন্য এটিকে কার্যকর বলা হচ্ছে। ওজন ঝরানোর ব্যাপারে প্রচলিত পদ্ধতি ক্যালরি সীমিত করা বা কঠোর নিয়ন্ত্রণের চেয়ে এটি ভালো।
গবেষকদের মতে, এ ধরনের খাদ্যাভ্যাস বিপাকের ওপর ফেলে ইতিবাচক প্রভাব। এতে বাড়ে ইনসুলিনের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে বিপাকক্রিয়া, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও ফ্যাট থাকে নিয়ন্ত্রণে। ফলে বাড়ে দীর্ঘায়ু হওয়ার সম্ভাবনা, কমে প্রদাহ।
সম্প্রতি এনজিএম জার্নালের এক প্রকাশনায় দেখা গেছে, এ প্রক্রিয়ার কঠিনটি হলো দিনে এক মিল অর্থাৎ ২৩: ১। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ১৮:৬; এতে ১৮ ঘণ্টা উপোস আর ৬ ঘণ্টায় দুটি মিল নিতে হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৪:১০ ভালো। এতে ১৪ ঘণ্টা উপোস আর ১০ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি মিল খাওয়া যায়।
সতর্কতা
» ইন্টারনেট দেখে এটি নিজে নিজে শুরু করা যাবে না।
» ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার আগে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
» গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী, ভঙ্গুর শরীর, বৃদ্ধ, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল, ডায়াবেটিস রোগী;
তাদের জন্য চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এটি করা যাবে না।
» অনেকের এই অভ্যাসে শরীরে চাপ তৈরি হয়ে হরমোন ভারসাম্যহীন হতে পারে।
» অনেকের হতে পারে দুর্বলতা, মাথা ধরা বা পানিশূন্যতার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
» এই ডায়েট গবেষণাপ্রসূত ও স্বাস্থ্যের জন্য হিতকর। তবে সঠিক ক্যালরি গ্রহণ না করলে পুষ্টির অভাব হতে পারে। তাতে চুল উঠে যাওয়া, ঋতুস্রাবের সময় পিছিয়ে যাওয়া, হরমোনের ভারসাম্যহানি ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
» এই ডায়েটে খাদ্যের ওপর বিধিনিষেধ কড়া না থাকলেও খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার। প্রচুর শাকসবজি, মাছ-মাংস খেতে হবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়।
» এই ফাস্টিং পদ্ধতির অনেকগুলো ধরন আছে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ কার কোন ধরন ভালো হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেবেন। ব্যক্তিবিশেষে ধরনে হেরফের হবে।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
সম্প্রতি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। কারণ, স্থূলতা আর পুষ্টিবিজ্ঞানে কিছু নতুন ভাবনা আসায় এ ধরনের উপবাসের কার্যকারিতা ভালোভাবে বোঝা গেছে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মানে হচ্ছে, দিনের একটি সময় উপোস বা না খেয়ে থাকা। শরীরের চাহিদা বুঝে তা ১০ থেকে ১৬ ঘণ্টা হতে পারে।
ওজন বাগে আনতে শুধু শরীরচর্চাই নয়, দরকার সঠিক খাদ্যাভ্যাসও। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে খাবারের ব্যাপারে খুব কড়া বিধিনিষেধ থাকে না বলে তরুণেরা এর প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছেন। এ প্রক্রিয়ায় দিনে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় খাবার খেয়ে ফেলে বাকি সময় উপোস কাটাতে হয়। এই ডায়েটিংয়ের রকমফের আছে।
সময় সীমিত আহার
প্রতিদিন ১২ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় না খেয়ে বাকি সময় খাওয়া। জনপ্রিয় হলো ১৬:৮ পদ্ধতি; অর্থাৎ দিনে ১৬ ঘণ্টা উপোস, ৮ ঘণ্টা খাওয়া। এ সময় দু-তিনবার খাওয়া যেতে পারে।
৫ অনুপাত ২ ডায়েট
সপ্তাহের ৫ দিন স্বাভাবিক খাবেন আর দুই দিন সীমিত ক্যালরির খাবার খাবেন। ওই দুই দিন ৫০০ থেকে ৬০০ ক্যালরি করে খেতে হবে।
খাওয়া, বন্ধ, আবার খাওয়া
সপ্তাহে দু-এক দিন ২৪ ঘণ্টা না খেয়ে থাকতে হবে এ প্রক্রিয়ায়। অর্থাৎ এক দিন খাওয়া, অন্য দিন না খেয়ে থাকা। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংকে ঠিক ডায়েট না
বলে ডায়েট নমুনা বলা যায়। দিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরি নির্দিষ্ট সময়ে গ্রহণ করে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকা। তবে পুষ্টিবিদদের মতে, রাতের খাবারের পর থেকে সকালের নাশতা বা মধ্যাহ্নভোজনের মধ্যে সময়ের নির্দিষ্ট ব্যবধান রাখতে হবে। এতে ক্যালরি গ্রহণের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ ও বিপাকক্রিয়া নিয়ন্ত্রণে থাকে। বেশ কিছু গবেষণায় ওজন ঝরানোর জন্য এটিকে কার্যকর বলা হচ্ছে। ওজন ঝরানোর ব্যাপারে প্রচলিত পদ্ধতি ক্যালরি সীমিত করা বা কঠোর নিয়ন্ত্রণের চেয়ে এটি ভালো।
গবেষকদের মতে, এ ধরনের খাদ্যাভ্যাস বিপাকের ওপর ফেলে ইতিবাচক প্রভাব। এতে বাড়ে ইনসুলিনের সাড়া দেওয়ার ক্ষমতা। ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ে বিপাকক্রিয়া, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল ও ফ্যাট থাকে নিয়ন্ত্রণে। ফলে বাড়ে দীর্ঘায়ু হওয়ার সম্ভাবনা, কমে প্রদাহ।
সম্প্রতি এনজিএম জার্নালের এক প্রকাশনায় দেখা গেছে, এ প্রক্রিয়ার কঠিনটি হলো দিনে এক মিল অর্থাৎ ২৩: ১। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ১৮:৬; এতে ১৮ ঘণ্টা উপোস আর ৬ ঘণ্টায় দুটি মিল নিতে হয়। তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, ১৪:১০ ভালো। এতে ১৪ ঘণ্টা উপোস আর ১০ ঘণ্টার মধ্যে তিনটি মিল খাওয়া যায়।
সতর্কতা
» ইন্টারনেট দেখে এটি নিজে নিজে শুরু করা যাবে না।
» ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করার আগে চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভালো।
» গর্ভবতী, স্তন্যদানকারী, ভঙ্গুর শরীর, বৃদ্ধ, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল, ডায়াবেটিস রোগী;
তাদের জন্য চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদের পরামর্শ ছাড়া এটি করা যাবে না।
» অনেকের এই অভ্যাসে শরীরে চাপ তৈরি হয়ে হরমোন ভারসাম্যহীন হতে পারে।
» অনেকের হতে পারে দুর্বলতা, মাথা ধরা বা পানিশূন্যতার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া।
» এই ডায়েট গবেষণাপ্রসূত ও স্বাস্থ্যের জন্য হিতকর। তবে সঠিক ক্যালরি গ্রহণ না করলে পুষ্টির অভাব হতে পারে। তাতে চুল উঠে যাওয়া, ঋতুস্রাবের সময় পিছিয়ে যাওয়া, হরমোনের ভারসাম্যহানি ও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
» এই ডায়েটে খাদ্যের ওপর বিধিনিষেধ কড়া না থাকলেও খেতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার। প্রচুর শাকসবজি, মাছ-মাংস খেতে হবে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায়।
» এই ফাস্টিং পদ্ধতির অনেকগুলো ধরন আছে। চিকিৎসক ও পুষ্টিবিদ কার কোন ধরন ভালো হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেবেন। ব্যক্তিবিশেষে ধরনে হেরফের হবে।
লেখক: সাবেক অধ্যক্ষ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ
ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া বা অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া (ওএসএ) নামের সমস্যায় ভোগেন বিশ্বের বহু মানুষ। তবে নিয়মিত শঙ্খ বাজালে এ সমস্যা কমে যেতে পারে বলে দাবি করছেন গবেষকেরা।
১ ঘণ্টা আগেবিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) কাউন্সিলে সভাপতি, মহাসচিবসহ পূর্ণ প্যানেলে জয় পেয়েছেন হারুন-শাকিল প্যানেল। গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষে মধ্যরাতে নির্বাচন কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফলাফল ঘোষণা করেন।
১৮ ঘণ্টা আগেচিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হতে চলেছে। অস্ত্রোপচারের পর ক্ষত সারাতে সেলাই বা স্ট্যাপলারের ব্যবহারের বদলে এবার আলোর মাধ্যমে সক্রিয় হওয়া বডি গ্লু বা শরীরবান্ধব আঠা ব্যবহার করার পথে এগোচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
১ দিন আগেশরীরের ব্যথায় কখনো ভোগেনি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। গ্লোবাল বার্ডেন অব ডিজিজের এক গবেষণা বলছে, বিশ্বে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজন শরীরে ব্যথার সমস্যায় ভুগছে। তাদের কারও গিরায় ব্যথা, কারও পেশিতে, আবার কেউ হাড়ের ব্যথায় আক্রান্ত। বাংলাদেশে ব্যথার সমস্যায় ভোগা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৪ কোটি।
২ দিন আগে