ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন—এমন একটি প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েক বছর ধরে প্রচারিত হচ্ছে। সম্প্রতি সেটাই আবার ভাইরাল হয়েছে। এর উত্তরে দাবি করা হচ্ছে, স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে। কারণ, গোসলের সময় আমরা প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজাই, যা একদম উচিত নয়। এটি ভুল পদ্ধতি। এভাবে প্রথমেই মাথায় পানি দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিকনালি (ক্যাপিলারি) ও ধমনি একসঙ্গে ছিঁড়ে যেতে পারে। এর ফলে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এবং মানুষ মাটিতে পড়ে যায়।
বিশ্বের একাধিক গবেষণা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে পোস্টগুলোতে আরও দাবি করা হয়, গোসলের সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। চিকিৎসকদের মতে, গোসল করার সময় কিছু নিয়ম মেনে গোসল করা উচিত। সঠিক নিয়ম মেনে গোসল না করলে হতে পারে মৃত্যুও। গোসল করার সময় প্রথমেই মাথা ও চুল ভেজানো একদম উচিত নয়। কারণ, মানুষের শরীরে রক্তসঞ্চালন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় প্রথমেই পানি দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তসঞ্চালনের গতি বহু গুণ বেড়ে যায়। সে সময় বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও। তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে মস্তিষ্কের ধমনি ছিঁড়ে যেতে পারে।
গোসলের সঠিক নিয়ম দাবি করে পোস্টগুলোতে বলা হয়, প্রথমে পায়ের পাতা ভেজাতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে ওপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে। তারপর মুখে পানি দিতে হবে। সবার শেষে মাথায় পানি দেওয়া উচিত। এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেন আছে, তাদের অবশ্যই পালন করা উচিত। গোসলের ক্রমের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নিয়ে প্রচারিত এ পোস্টগুলো কেবল বাংলাতেই নয়, বিভিন্ন সময়ে ইংরেজিতেও ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর দাবির সত্যতা যাচাইয়ের আগে জেনে নেওয়া যাক স্ট্রোক কী? কেন হয়?
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইট থেকে স্ট্রোক সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। এতে বলা হয়, স্ট্রোককে কখনো কখনো বলা হয় ব্রেইন অ্যাটাক। স্ট্রোক ঘটে যখন কোনো কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বা মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালি ফেটে যায়। উভয় ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মারা যায়। স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা বা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কে কী ঘটে? সিডিসি বলছে, সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মস্তিষ্কের অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। ধমনির মাধ্যমে মস্তিষ্কে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছায়। এই রক্তপ্রবাহে বাধা পেলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষগুলো কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যেতে শুরু করে।
সিডিসি জানায়, স্ট্রোকের দুটি ধরন আছে। যথা:
১. ইস্কেমিক স্ট্রোক: বেশির ভাগ মানুষ এই ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। রক্ত জমাট বেঁধে গেলে বা অন্যান্য কণা মস্তিষ্কের রক্তনালিতে বাধা সৃষ্টি করলে ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে। অনেক সময় রক্তনালিতে চর্বি জমা হয়েও (একে প্ল্যাকও বলা হয়) মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হতে পারে।
২. হ্যামোরেজিক স্ট্রোক: এই ধরনের স্ট্রোক ঘটে যখন মস্তিষ্কের কোনো ধমনি ফেটে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলোতে ধমনির রক্ত বেশি চাপ দেয়। তখন কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যানিউরিজমের (রক্তনালি, যেমন ধমনির দেয়ালে অস্বাভাবিক ফোলা ভাব বা স্ফীতি) কারণে হেমোরেজিক স্ট্রোক হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবির সঙ্গে হ্যামারেজিক স্ট্রোকের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কিন্তু আসলেই কি গোসলে প্রথমে মাথায় পানি দিলে স্ট্রোক হয়?
স্ট্রোকের কারণ অনুসন্ধানে ইউকে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, জনস হপকিন্স মেডিসিন, মায়ো ক্লিনিকের মতো চিকিৎসাবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট খুঁজে দেখে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। প্রতিষ্ঠানগুলো স্ট্রোকের কারণ হিসেবে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, অতিরিক্ত মাত্রার কোলেস্টেরল গ্রহণ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, মানসিক চাপ, বয়স, পারিবারিক ইতিহাসের মতো বিষয়গুলোকে উল্লেখ করেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানই কোথাও গোসলের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক আছে এমন কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত নাইজেরিয়ার স্নায়ুবিশেষজ্ঞ ওলুবুনমি ওমোজোওলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নাইজেরিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য ক্যাবল। তিনি সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, গোসলের সময় মাথায় প্রথমে পানি ঢালার সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নিয়ে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়।
তিনি বলেন, গোসলের সময় মাথায় পানি ঢালা প্রাথমিকভাবে মাথার উপরিভাগের রক্তনালিগুলো প্রভাবিত করে। তবে এই রক্তনালিগুলোর কারণে স্ট্রোক হয় না। স্ট্রোক হয় মূলত মস্তিষ্কের গভীরে থাকা রক্তনালির কারণে, যেগুলো গোসলের সময় মাথায় ঢালা পানির মাধ্যমে প্রভাবিত হয় না। তাই দাবিটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। স্ট্রোক হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ আছে। একজন ব্যক্তি কীভাবে গোসল করেন, প্রথমে মাথায় নাকি পায়ে পানি দেন এর সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান মোনাস হেলথের স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষণার প্রধান থানহ ফান দাবিটির সত্যতা প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, অধিকাংশ স্ট্রোক মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে হয়। এই জমাট রক্ত হৃৎপিণ্ড বা বড় রক্তনালি যেমন, ক্যারোটিড ধমনি থেকে আসে। স্ট্রোকের অন্যান্য সাধারণ কারণ হলো রক্তনালি ফেটে যাওয়া। গোসলের ক্রম ও স্ট্রোকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
দেশটির স্ট্রোক ফাউন্ডেশনের ক্লিনিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ব্রুস ক্যাম্পবেলও এএফপিকে ফেসবুকে প্রচারিত দাবিগুলোর ভিত্তি নেই বলে জানান। তিনি বলেন, স্ট্রোকের সঙ্গে গোসলের সম্পর্ক নিয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; বরং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ক্যাম্পবেল রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর খাবার, ধূমপান ত্যাগ, অ্যালকোহল গ্রহণ একদম কমিয়ে আনা এবং প্রতিনিয়ত ব্যায়াম ও চেকআপ করার পরামর্শ দেন।
অনুসন্ধানে স্ট্রোকের রোগীদের গোসলের ক্ষেত্রে আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের কিছু নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়। এতে স্ট্রোকের কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা কীভাবে নিরাপদে গোসল করতে পারবে এই সম্পর্কে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে গোসলের কোনো ক্রমধারা বা মাথায় আগে বা পরে পানি ঢালা নিয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনেও গোসল করা নিয়ে বেশ কিছু নিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়। এখানেও ফেসবুকে দাবি করা গোসলের নিয়ম সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত পশ্চিম আফ্রিকাভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দুবাওয়াও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে জানিয়েছে, যেকোনো ক্রমে গোসল করার সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই। যেসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়, সেগুলোর মধ্যে আছে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং স্থূলতা।
অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ ও স্ট্রোক-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতে, গোসলে গিয়ে প্রথমে মাথায় পানি ঢালার সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া স্ট্রোক থেকে বাঁচতে গোসলের সঠিক নিয়ম বলে যে তথ্যগুলো প্রচার করা হচ্ছে, সেগুলোও ভিত্তিহীন।

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন—এমন একটি প্রশ্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েক বছর ধরে প্রচারিত হচ্ছে। সম্প্রতি সেটাই আবার ভাইরাল হয়েছে। এর উত্তরে দাবি করা হচ্ছে, স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয়ে থাকে। কারণ, গোসলের সময় আমরা প্রথমেই মাথা এবং চুল ভেজাই, যা একদম উচিত নয়। এটি ভুল পদ্ধতি। এভাবে প্রথমেই মাথায় পানি দিলে রক্ত দ্রুত মাথায় উঠে যায় এবং কৈশিকনালি (ক্যাপিলারি) ও ধমনি একসঙ্গে ছিঁড়ে যেতে পারে। এর ফলে স্ট্রোক বা মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয় এবং মানুষ মাটিতে পড়ে যায়।
বিশ্বের একাধিক গবেষণা প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে পোস্টগুলোতে আরও দাবি করা হয়, গোসলের সময় স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। চিকিৎসকদের মতে, গোসল করার সময় কিছু নিয়ম মেনে গোসল করা উচিত। সঠিক নিয়ম মেনে গোসল না করলে হতে পারে মৃত্যুও। গোসল করার সময় প্রথমেই মাথা ও চুল ভেজানো একদম উচিত নয়। কারণ, মানুষের শরীরে রক্তসঞ্চালন একটা নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় হয়ে থাকে। শরীরের তাপমাত্রা বাইরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে। চিকিৎসকদের মতে, মাথায় প্রথমেই পানি দিলে সঙ্গে সঙ্গে রক্তসঞ্চালনের গতি বহু গুণ বেড়ে যায়। সে সময় বেড়ে যেতে পারে স্ট্রোকের ঝুঁকিও। তা ছাড়া মাত্রাতিরিক্ত রক্তচাপের ফলে মস্তিষ্কের ধমনি ছিঁড়ে যেতে পারে।
গোসলের সঠিক নিয়ম দাবি করে পোস্টগুলোতে বলা হয়, প্রথমে পায়ের পাতা ভেজাতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে ওপর দিকে কাঁধ পর্যন্ত ভেজাতে হবে। তারপর মুখে পানি দিতে হবে। সবার শেষে মাথায় পানি দেওয়া উচিত। এই পদ্ধতি যাদের উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং মাইগ্রেন আছে, তাদের অবশ্যই পালন করা উচিত। গোসলের ক্রমের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নিয়ে প্রচারিত এ পোস্টগুলো কেবল বাংলাতেই নয়, বিভিন্ন সময়ে ইংরেজিতেও ইন্টারনেটে প্রচারিত হয়েছে।
ফেসবুকে প্রচারিত পোস্টগুলোর দাবির সত্যতা যাচাইয়ের আগে জেনে নেওয়া যাক স্ট্রোক কী? কেন হয়?
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ওয়েবসাইট থেকে স্ট্রোক সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়। এতে বলা হয়, স্ট্রোককে কখনো কখনো বলা হয় ব্রেইন অ্যাটাক। স্ট্রোক ঘটে যখন কোনো কারণে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় বা মস্তিষ্কের কোনো রক্তনালি ফেটে যায়। উভয় ক্ষেত্রেই মস্তিষ্কের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা মারা যায়। স্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি, দীর্ঘমেয়াদি অক্ষমতা বা এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
স্ট্রোক হলে মস্তিষ্কে কী ঘটে? সিডিসি বলছে, সঠিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মস্তিষ্কের অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে। ধমনির মাধ্যমে মস্তিষ্কে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত পৌঁছায়। এই রক্তপ্রবাহে বাধা পেলে অক্সিজেনের অভাবে মস্তিষ্কের কোষগুলো কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যেতে শুরু করে।
সিডিসি জানায়, স্ট্রোকের দুটি ধরন আছে। যথা:
১. ইস্কেমিক স্ট্রোক: বেশির ভাগ মানুষ এই ধরনের স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়। রক্ত জমাট বেঁধে গেলে বা অন্যান্য কণা মস্তিষ্কের রক্তনালিতে বাধা সৃষ্টি করলে ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটে। অনেক সময় রক্তনালিতে চর্বি জমা হয়েও (একে প্ল্যাকও বলা হয়) মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হতে পারে।
২. হ্যামোরেজিক স্ট্রোক: এই ধরনের স্ট্রোক ঘটে যখন মস্তিষ্কের কোনো ধমনি ফেটে যায়। এর ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলোতে ধমনির রক্ত বেশি চাপ দেয়। তখন কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উচ্চ রক্তচাপ এবং অ্যানিউরিজমের (রক্তনালি, যেমন ধমনির দেয়ালে অস্বাভাবিক ফোলা ভাব বা স্ফীতি) কারণে হেমোরেজিক স্ট্রোক হতে পারে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবির সঙ্গে হ্যামারেজিক স্ট্রোকের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। কিন্তু আসলেই কি গোসলে প্রথমে মাথায় পানি দিলে স্ট্রোক হয়?
স্ট্রোকের কারণ অনুসন্ধানে ইউকে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস, জনস হপকিন্স মেডিসিন, মায়ো ক্লিনিকের মতো চিকিৎসাবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট খুঁজে দেখে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। প্রতিষ্ঠানগুলো স্ট্রোকের কারণ হিসেবে উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা, অতিরিক্ত মাত্রার কোলেস্টেরল গ্রহণ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত অ্যালকোহল গ্রহণ, মানসিক চাপ, বয়স, পারিবারিক ইতিহাসের মতো বিষয়গুলোকে উল্লেখ করেছে। কোনো প্রতিষ্ঠানই কোথাও গোসলের সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক আছে এমন কোনো তথ্য উল্লেখ করেনি।
দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত নাইজেরিয়ার স্নায়ুবিশেষজ্ঞ ওলুবুনমি ওমোজোওলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে নাইজেরিয়ার সংবাদমাধ্যম দ্য ক্যাবল। তিনি সংবাদমাধ্যমটিকে জানান, গোসলের সময় মাথায় প্রথমে পানি ঢালার সঙ্গে স্ট্রোকের সম্পর্ক নিয়ে প্রচারিত দাবিটি সঠিক নয়।
তিনি বলেন, গোসলের সময় মাথায় পানি ঢালা প্রাথমিকভাবে মাথার উপরিভাগের রক্তনালিগুলো প্রভাবিত করে। তবে এই রক্তনালিগুলোর কারণে স্ট্রোক হয় না। স্ট্রোক হয় মূলত মস্তিষ্কের গভীরে থাকা রক্তনালির কারণে, যেগুলো গোসলের সময় মাথায় ঢালা পানির মাধ্যমে প্রভাবিত হয় না। তাই দাবিটির কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। স্ট্রোক হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ আছে। একজন ব্যক্তি কীভাবে গোসল করেন, প্রথমে মাথায় নাকি পায়ে পানি দেন এর সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই।
অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান মোনাস হেলথের স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষণার প্রধান থানহ ফান দাবিটির সত্যতা প্রসঙ্গে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগকে বলেন, অধিকাংশ স্ট্রোক মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হওয়ার কারণে হয়। এই জমাট রক্ত হৃৎপিণ্ড বা বড় রক্তনালি যেমন, ক্যারোটিড ধমনি থেকে আসে। স্ট্রোকের অন্যান্য সাধারণ কারণ হলো রক্তনালি ফেটে যাওয়া। গোসলের ক্রম ও স্ট্রোকের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত দাবিটির সপক্ষে কোনো প্রমাণ নেই।
দেশটির স্ট্রোক ফাউন্ডেশনের ক্লিনিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি প্রফেসর ব্রুস ক্যাম্পবেলও এএফপিকে ফেসবুকে প্রচারিত দাবিগুলোর ভিত্তি নেই বলে জানান। তিনি বলেন, স্ট্রোকের সঙ্গে গোসলের সম্পর্ক নিয়ে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি; বরং স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে ক্যাম্পবেল রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্যকর খাবার, ধূমপান ত্যাগ, অ্যালকোহল গ্রহণ একদম কমিয়ে আনা এবং প্রতিনিয়ত ব্যায়াম ও চেকআপ করার পরামর্শ দেন।
অনুসন্ধানে স্ট্রোকের রোগীদের গোসলের ক্ষেত্রে আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশনের কিছু নির্দেশনা খুঁজে পাওয়া যায়। এতে স্ট্রোকের কারণে শারীরিকভাবে অক্ষম ব্যক্তিরা কীভাবে নিরাপদে গোসল করতে পারবে এই সম্পর্কে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে গোসলের কোনো ক্রমধারা বা মাথায় আগে বা পরে পানি ঢালা নিয়ে কোনো তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট হেলথ লাইনেও গোসল করা নিয়ে বেশ কিছু নিয়ম খুঁজে পাওয়া যায়। এখানেও ফেসবুকে দাবি করা গোসলের নিয়ম সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত পশ্চিম আফ্রিকাভিত্তিক ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান দুবাওয়াও বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে জানিয়েছে, যেকোনো ক্রমে গোসল করার সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই। যেসব কারণে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়, সেগুলোর মধ্যে আছে উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরল এবং স্থূলতা।
অর্থাৎ বিশেষজ্ঞ ও স্ট্রোক-সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মতে, গোসলে গিয়ে প্রথমে মাথায় পানি ঢালার সঙ্গে স্ট্রোকের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ছাড়া স্ট্রোক থেকে বাঁচতে গোসলের সঠিক নিয়ম বলে যে তথ্যগুলো প্রচার করা হচ্ছে, সেগুলোও ভিত্তিহীন।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন? কারণ, গোসলের সময় আগে মাথায় পানি ঢালা—এমন এক দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ দাবির পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি? চলুন, জেনে নিই।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন? কারণ, গোসলের সময় আগে মাথায় পানি ঢালা—এমন এক দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ দাবির পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি? চলুন, জেনে নিই।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন? কারণ, গোসলের সময় আগে মাথায় পানি ঢালা—এমন এক দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ দাবির পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি? চলুন, জেনে নিই।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

স্ট্রোক সাধারণত বাথরুমেই বেশি হয় কেন? কারণ, গোসলের সময় আগে মাথায় পানি ঢালা—এমন এক দাবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ দাবির পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে কি? চলুন, জেনে নিই।
১৪ জানুয়ারি ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে