ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে আছেন মাহফুজ আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক মাহফুজ আলম এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ছিলেন। তিনি এ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাঁকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় চালানো হয়েছে নানা প্রচারণা। এসব প্রচারণার অন্যতম হচ্ছে, মাহফুজ আলম ইসলামি উগ্রপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে। যদিও এমন প্রচারণার কোনো সত্যতাই নেই। সম্প্রতি তিনি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনায় এসেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাঁকে নিয়ে এবার প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক। তার এ দেশে কোনো পূর্বপুরুষের বংশ পরম্পরায় নেই।’

গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘কামরুল হাসান রানা (Kamrul Hasan Rana)’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমন দাবিতে পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটির কমেন্টবক্সে একই অ্যাকাউন্ট থেকে আরও দাবি করা হয়, ‘লক্ষ্মীপুরের রায়পুরায় তার গ্রামের বাড়ি বললেও মূলত সেখানে সে রিফিউজি, মিয়ানমার তার মাতৃভূমি’, ‘হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় জড়িত ছিল এই মাহফুজ, সেখানে জীবন নিয়ে ফেরা একমাত্র জঙ্গি ছিল সে, তারপর আত্মগোপনে যায়, এবং আত্মগোপনে থেকে আগের নাম মাহফুজ বিন আবদুল্লাহ পাল্টে, ছদ্মনাম মাহফুজ আলম নাম দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।’
এটি ছাড়াও আরও বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে দাবিটি ছড়িয়েছে।
দাবিটির উৎস অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে ইউটিউবে‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।

ভিডিওটিতে ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক’ দাবি প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিয়ে তথাকথিত ‘ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট’ সূত্রে চ্যানেলটির হাতে ‘ভয়ংকর’ তথ্য এসেছে। ভিডিওটির ৩১ সেকেন্ডের মাথায় কথিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি পড়ে শোনানো হয়।
দাবি করা হয়, ‘মাহফুজ আব্দুল্লাহ তাঁর আসল নাম নয়। সে পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁর আসল বাড়িও কিন্তু লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নয়। সে মূলত ভিনদেশি, মিয়ানমারের। ইন্টারন্যাশনাল জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে তার বেশি যোগাযোগ আছে।’
ভিডিওটিতে মাহফুজ আলমকে হিজবুত তাহরীরের ‘দ্বিতীয় জঙ্গি ব্যাচ’–এর সর্দার দাবি করা হয়। ঢাকায় ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়া হোলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে মাহফুজ আলমের সম্পৃক্ততা ছিল এবং হোলি আর্টিজান থেকে জীবন নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একমাত্র জঙ্গি তিনি।
ভিডিওটিতে ভয়েস ওভার দেওয়া কণ্ঠটি দাবি করে, মাহফুজ মিয়ানমারের নাগরিক। ছোটকালে তাঁকে প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পাঠানো হয় এবং সেখানে ইসলামিক স্টেট (আইএস) তাঁকে প্রশিক্ষণ দেয়। একই সময়ে মাহফুজ আলমের নামে মাদ্রাসায় প্রোফাইল তৈরি করা হয়, যাতে তিনি সহজে মাদ্রাসার সনদ পেয়ে যান।
দাবিগুলোর সত্যতা কী?
মাহফুজ আলম আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক— দাবিটির সূত্র হিসেবে ভারতীয় ‘ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট’ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে মাহফুজ আলমকে নিয়ে ভারতীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন কোনো প্রতিবেদনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।

আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে হোলি আর্টিজান হামলার সঙ্গেও মাহফুজ আলমের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। বিবিসি বাংলায় হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা নিয়ে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঘটনার পরদিন সকালে কমান্ডো বাহিনীর বিশেষ অভিযানে হামলাকারী পাঁচজন জঙ্গি নিহত হয়।
আদালতের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মূল পরিকল্পনা করেন তামিম চৌধুরী, যিনি কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জে এক অভিযানে নিহত হন। হোলি আর্টিজানে চালানো কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন—রোহান ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল, সামিউল মোবাশ্বির, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং নিবরাস ইসলাম। এ ছাড়া পরে জঙ্গিবিরোধী অন্য অভিযানগুলোতে নিহত হন—তামিম চৌধুরী, মারজান, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান, তানভীর কাদেরী, তারেক রায়হান এবং ছোটো রায়হান।
এ ঘটনায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন—জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে রাশ, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মামুনুর রশিদ রিপন এবং শরিফুল ইসলাম খালিদ।
চেতনা নামের ইউটিউব চ্যানেলটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যম নয়। চ্যানেলটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০২০ সালের এপ্রিলে খোলা হয়েছে এবং যুক্তরাজ্য থেকে পরিচালিত হয়।
চ্যানেলটিতে প্রচারিত কনটেন্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চ্যানেলটিতে চটকদার থাম্বনেইলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেন্টমার্টিনে পর্যটন প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন আলোচিত বিষয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেন্টমার্টিন হস্তান্তর করতে গোপনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, পাকিস্তান থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসা জাহাজে অস্ত্রের চালান ছিল।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। এর ফলে অর্ধ শতক পর প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চালু হয়। গত ১১ নভেম্বর করাচি বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে প্রথম কোনো জাহাজ। শিপিং লাইন ও কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া কন্টেইনারে ছিল শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য। এসব পণ্যের ওজন ৬ হাজার ৩৩৭ টন। পাকিস্তানের ১৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য সরবরাহ করে।
আজকের পত্রিকা গত ১৬ নভেম্বর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি দেখুন—পাকিস্তানের জাহাজ থেকে চট্টগ্রামে নামল ৩৭০ কন্টেইনার, কী কী পণ্য এল
চলতি মাসের শুরুতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশে ফিরছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সে সময় তাঁকে বিমানবন্দরে হেনস্তা করে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সমর্থক। এ ঘটনার একটি ভিডিও চ্যানেলটিতে শেয়ার করে দাবি করা হয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতারা তাঁকে ঘিরে ধরে।

মাহফুজ আলমকে মিয়ানমারের নাগরিক দাবিতে পোস্ট করা ভিডিওটির থাম্বনেইলেও মাহফুজ আলমের এডিটেড ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। থাম্বনেইলে ব্যবহৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের ইংরেজি সংস্করণে পাওয়া যায়। সংবাদমাধ্যমটিতে ২০১২ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে থাম্বনেইলে ব্যবহৃত মূল ছবিটি পাওয়া যায়। গ্রুপ ছবিটির সামনে থাকা ব্যক্তির মুখমণ্ডল এডিট করে সেখানে মাহফুজ আলমের মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাড়িতে সরেজমিন অনুসন্ধান
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া দাবিটি অধিকতর যাচাইয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর গ্রামে সরেজমিন অনুসন্ধানে যান আজকের পত্রিকার রামগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ফারুক হোসেন। মাহফুজ আলম সম্পর্কে অনলাইনে বই বিক্রির প্রতিষ্ঠান রকমারির ওয়েবসাইটের লেখক প্রোফাইলে থাকা তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজ আলমের জন্ম ১৯৯৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর গ্রামে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, সাত ভাই-বোনের মধ্যে মাহফুজ আলম মেজ। তাঁর বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা পেশায় ব্যবসায়ী ও রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। মা তানজিলা বেগম গৃহিণী।
মাহফুজ আলম সম্পর্কে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মন্নান মোল্লা (৮০) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রয়াত মুনছুর মোল্লার ছেলে প্রয়াত মকবুল আহম্মেদ মোল্লা। মকবুল আহম্মেদ মোল্লার ছেলে আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লার মেজ ছেলে মাহফুজ আলম। ছোটবেলা থেকে মাহফুজ আলম স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। তিনি কখনো কোনো খারাপ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। আমরা গর্বিত, তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা হয়েছেন।’
স্থানীয় পূর্ব নারায়ণপুর দারুল কোরআন ইসলামী দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. কামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাহফুজ আলম আমার সরাসরি ছাত্র ছিলেন। তিনি প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। ৮ম শ্রেণি থেকে তিনি ও তাঁর ভাই ২০১০ সালে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পুরো উপজেলায় যথাক্রমে তৃতীয় ও দ্বিতীয় হন। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী গল্লাক মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। মাহফুজ আলমের তিন বোনও এই মাদ্রাসা থেকে পড়ালেখা করেছেন।’
মাহফুজ আলমের আরেকজন শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মাহফুজ আলম পূর্ব নারায়ণপুর দারুল কোরআন ইসলামী দাখিল মাদ্রাসা থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে অন্য মাদ্রাসায় চলে যান। অত্যন্ত মেধাবী এ শিক্ষার্থীর রোল সব সময় এক ছিল।’
মাহফুজ আলমের এক সহপাঠী সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মূলত স্কুলের শিক্ষার্থী হলেও কোরআন শরিফ পড়া শিখতে এ মাদ্রাসায় ভর্তি হই। তখন আমি আর মাহফুজ আলম একত্রে এ মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছি। মাহফুজ আলম ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। মাহফুজ আলমের সহপাঠী হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
স্থানীয় স্কলার’স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রফিক উল্যাহ বলেন, ‘মাহফুজ আলম আমার খুবই পরিচিত এবং এ অঞ্চলের কৃতি সন্তান হিসেবে আমরা তার জন্য গর্ববোধ করি। তার বিরুদ্ধে যারা বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে আমরা সেটির তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ইছাপুরবাসী গর্ববোধ করি মাহফুজ আলমের মতো একজন রত্ন পেয়েছি।’
মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বর্তমানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। আজ সোমবার রাতে বাড়ি ফিরবেন জানিয়ে সেলফোনে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেজ ছেলে মাহফুজ আলমের যে কোনো বিষয়ে জানতে আপনারা এলাকায় যেতে পারেন। এলাকার লোকজনের দোয়া–আদর ও ভালোবাসায় আমার ছেলে আজ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন।’
এসব কিছুই প্রমাণ করে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে উপদেষ্টা হিসেবে আছেন মাহফুজ আলম। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সমন্বয়ক মাহফুজ আলম এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিশেষ সহকারী ছিলেন। তিনি এ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তাঁকে ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় চালানো হয়েছে নানা প্রচারণা। এসব প্রচারণার অন্যতম হচ্ছে, মাহফুজ আলম ইসলামি উগ্রপন্থী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, বিশেষ করে হিযবুত তাহরীরের সঙ্গে। যদিও এমন প্রচারণার কোনো সত্যতাই নেই। সম্প্রতি তিনি আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনায় এসেছেন। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে তাঁকে নিয়ে এবার প্রচারণা চালানো হচ্ছে যে, ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক। তার এ দেশে কোনো পূর্বপুরুষের বংশ পরম্পরায় নেই।’

গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় ‘কামরুল হাসান রানা (Kamrul Hasan Rana)’ নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে এমন দাবিতে পোস্ট দেওয়া হয়। পোস্টটির কমেন্টবক্সে একই অ্যাকাউন্ট থেকে আরও দাবি করা হয়, ‘লক্ষ্মীপুরের রায়পুরায় তার গ্রামের বাড়ি বললেও মূলত সেখানে সে রিফিউজি, মিয়ানমার তার মাতৃভূমি’, ‘হলি আর্টিজান জঙ্গি হামলায় জড়িত ছিল এই মাহফুজ, সেখানে জীবন নিয়ে ফেরা একমাত্র জঙ্গি ছিল সে, তারপর আত্মগোপনে যায়, এবং আত্মগোপনে থেকে আগের নাম মাহফুজ বিন আবদুল্লাহ পাল্টে, ছদ্মনাম মাহফুজ আলম নাম দিয়ে আত্মপ্রকাশ করে।’
এটি ছাড়াও আরও বিভিন্ন ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট, পেজ ও গ্রুপ এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম থেকে দাবিটি ছড়িয়েছে।
দাবিটির উৎস অনুসন্ধানে প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে ইউটিউবে‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।

ভিডিওটিতে ‘উপদেষ্টা মাহফুজ আলম আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক’ দাবি প্রসঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ভিডিওটিতে দাবি করা হয়, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে নিয়ে তথাকথিত ‘ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট’ সূত্রে চ্যানেলটির হাতে ‘ভয়ংকর’ তথ্য এসেছে। ভিডিওটির ৩১ সেকেন্ডের মাথায় কথিত গোয়েন্দা প্রতিবেদনটি পড়ে শোনানো হয়।
দাবি করা হয়, ‘মাহফুজ আব্দুল্লাহ তাঁর আসল নাম নয়। সে পাকিস্তানে জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাঁর আসল বাড়িও কিন্তু লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নয়। সে মূলত ভিনদেশি, মিয়ানমারের। ইন্টারন্যাশনাল জঙ্গি নেটওয়ার্কগুলোর সঙ্গে তার বেশি যোগাযোগ আছে।’
ভিডিওটিতে মাহফুজ আলমকে হিজবুত তাহরীরের ‘দ্বিতীয় জঙ্গি ব্যাচ’–এর সর্দার দাবি করা হয়। ঢাকায় ২০১৬ সালে ঘটে যাওয়া হোলি আর্টিজানে হামলার সঙ্গে মাহফুজ আলমের সম্পৃক্ততা ছিল এবং হোলি আর্টিজান থেকে জীবন নিয়ে পালিয়ে যাওয়া একমাত্র জঙ্গি তিনি।
ভিডিওটিতে ভয়েস ওভার দেওয়া কণ্ঠটি দাবি করে, মাহফুজ মিয়ানমারের নাগরিক। ছোটকালে তাঁকে প্রশিক্ষণের জন্য পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পাঠানো হয় এবং সেখানে ইসলামিক স্টেট (আইএস) তাঁকে প্রশিক্ষণ দেয়। একই সময়ে মাহফুজ আলমের নামে মাদ্রাসায় প্রোফাইল তৈরি করা হয়, যাতে তিনি সহজে মাদ্রাসার সনদ পেয়ে যান।
দাবিগুলোর সত্যতা কী?
মাহফুজ আলম আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক— দাবিটির সূত্র হিসেবে ভারতীয় ‘ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট’ উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাসঙ্গিক কি-ওয়ার্ড সার্চে মাহফুজ আলমকে নিয়ে ভারতীয় কোনো সংবাদমাধ্যমে এমন কোনো প্রতিবেদনের বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি।

আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগের অনুসন্ধানে হোলি আর্টিজান হামলার সঙ্গেও মাহফুজ আলমের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। বিবিসি বাংলায় হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা নিয়ে ২০২৩ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ঘটনার পরদিন সকালে কমান্ডো বাহিনীর বিশেষ অভিযানে হামলাকারী পাঁচজন জঙ্গি নিহত হয়।
আদালতের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, হোলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার মূল পরিকল্পনা করেন তামিম চৌধুরী, যিনি কয়েক বছর আগে নারায়ণগঞ্জে এক অভিযানে নিহত হন। হোলি আর্টিজানে চালানো কমান্ডো অভিযানে নিহত জঙ্গিরা হলেন—রোহান ইমতিয়াজ, খায়রুল ইসলাম পায়েল, সামিউল মোবাশ্বির, শফিকুল ইসলাম উজ্জ্বল এবং নিবরাস ইসলাম। এ ছাড়া পরে জঙ্গিবিরোধী অন্য অভিযানগুলোতে নিহত হন—তামিম চৌধুরী, মারজান, সারোয়ার জাহান মানিক, বাশারুজ্জামান, তানভীর কাদেরী, তারেক রায়হান এবং ছোটো রায়হান।
এ ঘটনায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন—জাহাঙ্গীর হোসেন ওরফে রাজিব গান্ধী, আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে রাশ, সোহেল মাহফুজ ওরফে হাতকাটা মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, মামুনুর রশিদ রিপন এবং শরিফুল ইসলাম খালিদ।
চেতনা নামের ইউটিউব চ্যানেলটি নিয়ে অনুসন্ধানে দেখা যায়, এটি মূলধারার কোনো সংবাদমাধ্যম নয়। চ্যানেলটির বিস্তারিত বিবরণী থেকে জানা যায়, এটি ২০২০ সালের এপ্রিলে খোলা হয়েছে এবং যুক্তরাজ্য থেকে পরিচালিত হয়।
চ্যানেলটিতে প্রচারিত কনটেন্টগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, চ্যানেলটিতে চটকদার থাম্বনেইলে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, সেন্টমার্টিনে পর্যটন প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপসহ সাম্প্রতিক বিভিন্ন আলোচিত বিষয়ে মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্য ছড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হলো—আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল পালাতে গিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেন্টমার্টিন হস্তান্তর করতে গোপনে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন, পাকিস্তান থেকে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আসা জাহাজে অস্ত্রের চালান ছিল।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর পাকিস্তান থেকে পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি শিথিল করা হয়েছে। এর ফলে অর্ধ শতক পর প্রথমবারের মতো দুই দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চালু হয়। গত ১১ নভেম্বর করাচি বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে সরাসরি চট্টগ্রাম বন্দরে আসে প্রথম কোনো জাহাজ। শিপিং লাইন ও কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তান থেকে আমদানি হওয়া কন্টেইনারে ছিল শিল্পের কাঁচামাল ও ভোগ্যপণ্য। এসব পণ্যের ওজন ৬ হাজার ৩৩৭ টন। পাকিস্তানের ১৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এসব পণ্য সরবরাহ করে।
আজকের পত্রিকা গত ১৬ নভেম্বর এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনটি দেখুন—পাকিস্তানের জাহাজ থেকে চট্টগ্রামে নামল ৩৭০ কন্টেইনার, কী কী পণ্য এল
চলতি মাসের শুরুতে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশে ফিরছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। সে সময় তাঁকে বিমানবন্দরে হেনস্তা করে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সমর্থক। এ ঘটনার একটি ভিডিও চ্যানেলটিতে শেয়ার করে দাবি করা হয়, এটি যুক্তরাষ্ট্রে ঘটেছে। সেখানে আওয়ামী লীগ নেতারা তাঁকে ঘিরে ধরে।

মাহফুজ আলমকে মিয়ানমারের নাগরিক দাবিতে পোস্ট করা ভিডিওটির থাম্বনেইলেও মাহফুজ আলমের এডিটেড ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। থাম্বনেইলে ব্যবহৃত ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের ইংরেজি সংস্করণে পাওয়া যায়। সংবাদমাধ্যমটিতে ২০১২ সালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে থাম্বনেইলে ব্যবহৃত মূল ছবিটি পাওয়া যায়। গ্রুপ ছবিটির সামনে থাকা ব্যক্তির মুখমণ্ডল এডিট করে সেখানে মাহফুজ আলমের মুখ বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের বাড়িতে সরেজমিন অনুসন্ধান
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া দাবিটি অধিকতর যাচাইয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর গ্রামে সরেজমিন অনুসন্ধানে যান আজকের পত্রিকার রামগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি ফারুক হোসেন। মাহফুজ আলম সম্পর্কে অনলাইনে বই বিক্রির প্রতিষ্ঠান রকমারির ওয়েবসাইটের লেখক প্রোফাইলে থাকা তথ্য অনুযায়ী, মাহফুজ আলমের জন্ম ১৯৯৫ সালে লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর গ্রামে।
সরেজমিন অনুসন্ধানে জানা যায়, সাত ভাই-বোনের মধ্যে মাহফুজ আলম মেজ। তাঁর বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা পেশায় ব্যবসায়ী ও রামগঞ্জ উপজেলার ইছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক। মা তানজিলা বেগম গৃহিণী।
মাহফুজ আলম সম্পর্কে সাবেক ইউপি সদস্য আবদুল মন্নান মোল্লা (৮০) আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রয়াত মুনছুর মোল্লার ছেলে প্রয়াত মকবুল আহম্মেদ মোল্লা। মকবুল আহম্মেদ মোল্লার ছেলে আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লার মেজ ছেলে মাহফুজ আলম। ছোটবেলা থেকে মাহফুজ আলম স্থানীয় মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেন। তিনি কখনো কোনো খারাপ কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন না। আমরা গর্বিত, তিনি বাংলাদেশ সরকারের উপদেষ্টা হয়েছেন।’
স্থানীয় পূর্ব নারায়ণপুর দারুল কোরআন ইসলামী দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. কামাল উদ্দিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মাহফুজ আলম আমার সরাসরি ছাত্র ছিলেন। তিনি প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এ মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিলেন। ৮ম শ্রেণি থেকে তিনি ও তাঁর ভাই ২০১০ সালে বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পুরো উপজেলায় যথাক্রমে তৃতীয় ও দ্বিতীয় হন। এরপর তিনি পার্শ্ববর্তী গল্লাক মাদ্রাসায় ভর্তি হন। পরবর্তীতে তিনি তামিরুল মিল্লাত মাদ্রাসা ও পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন। মাহফুজ আলমের তিন বোনও এই মাদ্রাসা থেকে পড়ালেখা করেছেন।’
মাহফুজ আলমের আরেকজন শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ‘মাহফুজ আলম পূর্ব নারায়ণপুর দারুল কোরআন ইসলামী দাখিল মাদ্রাসা থেকে অষ্টম শ্রেণি পাস করে অন্য মাদ্রাসায় চলে যান। অত্যন্ত মেধাবী এ শিক্ষার্থীর রোল সব সময় এক ছিল।’
মাহফুজ আলমের এক সহপাঠী সাখাওয়াত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি মূলত স্কুলের শিক্ষার্থী হলেও কোরআন শরিফ পড়া শিখতে এ মাদ্রাসায় ভর্তি হই। তখন আমি আর মাহফুজ আলম একত্রে এ মাদ্রাসায় পড়ালেখা করেছি। মাহফুজ আলম ছোটবেলা থেকেই অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন। মাহফুজ আলমের সহপাঠী হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।’
স্থানীয় স্কলার’স স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক রফিক উল্যাহ বলেন, ‘মাহফুজ আলম আমার খুবই পরিচিত এবং এ অঞ্চলের কৃতি সন্তান হিসেবে আমরা তার জন্য গর্ববোধ করি। তার বিরুদ্ধে যারা বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে আমরা সেটির তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা ইছাপুরবাসী গর্ববোধ করি মাহফুজ আলমের মতো একজন রত্ন পেয়েছি।’
মাহফুজ আলমের বাবা আজিজুর রহমান বাচ্চু মোল্লা বর্তমানে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কক্সবাজারে অবস্থান করছেন। আজ সোমবার রাতে বাড়ি ফিরবেন জানিয়ে সেলফোনে তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার মেজ ছেলে মাহফুজ আলমের যে কোনো বিষয়ে জানতে আপনারা এলাকায় যেতে পারেন। এলাকার লোকজনের দোয়া–আদর ও ভালোবাসায় আমার ছেলে আজ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়ের উপদেষ্টা হয়েছেন।’
এসব কিছুই প্রমাণ করে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক দাবিতে প্রচারিত ভিডিওটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫আজকের পত্রিকা ডেস্ক

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া ফটোকার্ড।
আজকের পত্রিকা কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করছে, এই ধরনের কোনো খবর আজকের পত্রিকাতে কখনোই প্রকাশিত হয়নি। ফটোকার্ডটিতে আজকের পত্রিকার লোগো ব্যবহার করা হলেও এর ভেতরের খবর ও শিরোনাম সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।
আজকের পত্রিকা সর্বদা সত্য ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
বর্তমান সময়ে এ ধরনের ভুয়া ফটোকার্ড ও খবর নিয়ে পাঠকদের সচেতনতা জরুরি। যেকোনো সন্দেহজনক খবর যাচাই করার জন্য অনুরোধ রইল।

ইউটিউবে ‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।
২৫ নভেম্বর ২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতে রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে এই ভিডিও শেয়ার করে দাবি করছেন, একটি সিসিটিভি ফুটেজ। ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ঘটনাটি ভারতের মধ্যপ্রদেশের পেঞ্চ এলাকার। ওই ব্যক্তি দেশীয় মদ পান করে মাতাল হয়ে রাস্তায় বেরিয়েছিলেন। তিনি এতটা মাতাল ছিলেন যে বাঘকেও মদ খাওয়ানোর চেষ্টা করেন। বাঘ অবশ্য তাঁর হাতে মদ্যপানে রাজি হয়নি! পরে ওই বাঘটিকে উদ্ধার করে বন বিভাগ। বাঘটি ওই ব্যক্তির কোনো ক্ষতি করেনি।

ভিডিওটি দেখে অনেকেই বিস্মিত ও উদ্বিগ্ন—কেউ বিশ্বাস করেছেন, এটি বাস্তব কোনো ঘটনা; কেউ আবার মনে করছেন, এটি নিছকই কৃত্রিম ভিডিও। কিন্তু সত্যিটা কী? দ্য কুইন্টের সাংবাদিক অভিষেক আনন্দ ও ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা বুম বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ করেছে।
বুম ভিডিওটি নিয়ে বিভিন্ন কিওয়ার্ড দিয়ে এ-সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুসন্ধান করেছে, কিন্তু কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্রে এমন ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। এরপর তারা সরাসরি মধ্যপ্রদেশের সেওনি জেলার পুলিশ কন্ট্রোল রুমে যোগাযোগ করে। দ্য কুইন্ট ও বুমকে সেওনি জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর থেকে স্পষ্ট জানানো হয়—তাদের জানামতে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি যাচাই করা হয়। তিনি বলেন, ভিডিওটির সঙ্গে পেঞ্চ এলাকার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি আরও ব্যাখ্যা দেন, বনের বাঘের সঙ্গে এমন ঘনিষ্ঠভাবে মানুষের যোগাযোগ সম্ভব নয়, যদি না বাঘটিকে বন্দী করে দীর্ঘদিন ধরে পোষ মানানো হয়। তাঁর ভাষায়, ‘বনের বাঘ কখনো এমন আচরণ করে না, এটা বাস্তবে সম্ভব নয়।’
ভিডিওর সন্দেহজনক দিক বা ভিজ্যুয়াল অসংগতি
বুম ভিডিওটির একটি উচ্চমানের সংস্করণ সংগ্রহ করে তাতে কিছু অস্বাভাবিক দিক লক্ষ করে। দেখা যায়, ভিডিওটির পটভূমির দৃশ্যে কিছু অস্পষ্ট বস্তু নড়াচড়া করছে, যা বাস্তব ভিডিওর মতো স্বাভাবিক নয়।
বাঘের মাথায় হাত রাখা ব্যক্তির আঙুলগুলো বিকৃতভাবে বাঁকানো, যেন সফটওয়্যারে তৈরি কৃত্রিম ছায়া। এমনকি হাতে থাকা বোতলের মুখ কখনো দেখা যায়, আবার মিলিয়ে যায়—এই ভিজ্যুয়াল অসংগতিগুলো ইঙ্গিত দেয়, এটি ধারণকৃত কোনো ফুটেজ নয়। সব মিলিয়ে ভিডিওটির একাধিক ফ্রেমে গ্রাফিক বিকৃতি স্পষ্ট।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর বিশ্লেষণ
এরপর ভিডিওটি পরীক্ষা করা হয় ডিপফেক-ও-মিটার নামের একটি উন্নত টুলে। এটি তৈরি করেছে ইউনিভার্সিটি অব বাফেলোর মিডিয়া ফরেনসিকস ল্যাব। এই টুল ভিডিওটির বিভিন্ন অংশ বিশ্লেষণ করে দেখায়, এতে ‘উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক নির্মাণের চিহ্ন’ রয়েছে।

এরপর বুম তাদের অংশীদার ডিপফেক অ্যানালাইসিস ইউনিটের সাহায্য নেয়। তারা ভিডিওটি পরীক্ষা করে ‘Is It AI’ এবং ‘AI Or Not’—নামক দুটি আলাদা টুলে। উভয় টুলের বিশ্লেষণে দেখা যায়, ভিডিওটি এআই দিয়ে নির্মিত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৬৯ শতাংশ।
এই ফলাফল অনুযায়ী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ভিডিওর মানুষের সঙ্গে প্রাণীর মিথস্ক্রিয়া এবং আলো-ছায়ার ত্রুটি স্পষ্ট করে দিচ্ছে এটি আসল নয়, বরং জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বানানো একটি দৃশ্য।
ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর বহু ব্যবহারকারী এটিকে সত্যি বলে বিশ্বাস করেছেন। কিছু পোস্টে দাবি করা হয়েছে, ভিডিওর ওই ব্যক্তির নাম রাজু পাতিল। ৫২ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন দিনমজুর। তিনি নেশাগ্রস্ত অবস্থায় রাস্তায় বাঘটিকে আদর করছিলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে অক্ষত অবস্থায় রয়ে গেছেন।
একাধিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শনাক্তকরণ টুলের ফলাফল এবং প্রশাসনিক যাচাই মিলিয়ে নিশ্চিতভাবে বলা যায়—ভিডিওটি বাস্তব নয়, বরং এআই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরি একটি কৃত্রিম দৃশ্য। পেঞ্চ টাইগার রিজার্ভের উপপরিচালক রাজনীশ সিংহও সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘এই ভিডিওর কোনো অংশই পেঞ্চের নয়। এটি সম্পূর্ণ ভুয়া।’

ইউটিউবে ‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।
২৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
ভারতের সংবাদমাধ্যমটি গতকাল এক প্রতিবেদনে দাবি করে, পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যান জেনারেল সাহির শামশাদ মির্জাকে এমন একটি পতাকা উপহার দিয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস, যেখানে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাংলাদেশের মানচিত্রের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
সিএ ফ্যাক্ট চেক জানায়, প্রকৃতপক্ষে অধ্যাপক ইউনূস উপহার দিয়েছেন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ নামে একটি চিত্রসংকলন—যেখানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীদের আঁকা রঙিন গ্রাফিতি ও দেয়ালচিত্র সংকলিত হয়েছে।
‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রকাশিত একটি সচিত্র দলিল, যেখানে ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগে অর্জিত বিপ্লবের ইতিহাস ফুটে উঠেছে।
গ্রাফিতি সংকলনের প্রচ্ছদে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদ আবু সাইদের পিছনে রক্তরাঙ্গা বাংলাদেশের মানচিত্র প্রদর্শিত হয়েছে।
প্রচ্ছদে দৃশ্যমান মানচিত্রটি গ্রাফিতি হিসেবে অঙ্কিত হওয়ায় বাংলাদেশের মূল মানচিত্রের পরিমাপের কিছুটা হেরফের হয়েছে বলে কারো কাছে মনে হতে পারে। কিন্তু ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের কোনো অংশ গ্রাফিতি মানচিত্রটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে বলে দাবি করাটা সম্পূর্ণ অসত্য এবং কল্পনাপ্রসূত। বাংলাদেশের মানচিত্রের সাথে উল্লেখিত গ্রাফিতিতে দৃশ্যমান মানচিত্রের তুলনামূলক বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, অঙ্কিত মানচিত্রটিতে বাংলাদেশের প্রকৃত মানচিত্র প্রায় হুবহুভাবেই প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা এর আগেও একই গ্রাফিতি সংকলন ‘দ্য আর্ট অব ট্রায়াম্ফ’ জাতিসংঘের মহাসচিব, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোসহ বিশ্ব নেতাদের উপহার দিয়েছেন।

ইউটিউবে ‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।
২৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
১৩ আগস্ট ২০২৫ফ্যাক্টচেক ডেস্ক

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

একটি মেরিন পার্কে এক নারী প্রশিক্ষককে চুবিয়ে হত্যা করেছে অরকা বা কিলার তিমি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। মর্মান্তিক ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে দাবি করা হয়, প্যাসিফিক ব্লু মেরিন পার্কে ‘জেসিকা র্যাডক্লিফ’ নামে একজন প্রশিক্ষককে একটি অরকা আক্রমণ করে হত্যা করেছে।
ভিডিওটি টিকটক, ফেসবুক এবং এক্সে ভাইরাল হয়েছে। তবে, একাধিক ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা নিশ্চিত করেছে যে, এই ভিডিওটি সম্পূর্ণ বানোয়াট এবং এর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই।
ভিডিওতে যা দেখানো হয়েছে
ভাইরাল হওয়া ক্লিপটিতে দেখা যায়, একজন তরুণী একটি অরকার পিঠে দাঁড়িয়ে নাচছেন। দর্শকেরা তখন উল্লাস করছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পর হঠাৎ অরকাটি ওই তরুণীকে আক্রমণ করে পানির নিচে টেনে নিয়ে যায়। ভিডিওটি শেয়ার করা অনেক ব্যবহারকারী দাবি করেছেন, পানির নিচে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওই তরুণীর মৃত্যু হয়।
ঘটনা বা প্রশিক্ষকের কোনো প্রমাণ নেই
ভিডিওটি ব্যাপকভাবে শেয়ার হওয়া সত্ত্বেও, জেসিকা র্যাডক্লিফ নামে একজন প্রশিক্ষক অরকার আক্রমণে মারা গেছেন—এই দাবির পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কর্তৃপক্ষ, মেরিন পার্ক এবং প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের অস্তিত্ব বা এমন কোনো ঘটনার রেকর্ড খুঁজে পায়নি। দ্য স্টার পত্রিকার মতে, ভিডিওটি কাল্পনিক; এমনকি ভিডিওতে থাকা কণ্ঠস্বরগুলোও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি বলে মনে করা হচ্ছে।
অন্যান্য প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, এমন দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে সাধারণত যে ধরনের আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়, এই ঘটনায় তার কোনোটিই পাওয়া যায়নি। ফরেনসিক বিশ্লেষণ অনুসারে, ভিডিওর মধ্যে পানির অস্বাভাবিক গতিবিধি এবং অদ্ভুত বিরতিও নিশ্চিত করে যে এটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। এমনকি ভিডিওতে যে পার্কের নাম বলা হয়েছে, সেটিও ভুয়া।

সম্পূর্ণভাবে এআই-নির্মিত
ফোর্বস ম্যাগাজিন ক্লিপটিকে ‘একটি প্রতারণা’ বলে চিহ্নিত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, এমন একটি মর্মান্তিক ঘটনা যদি সত্যিই ঘটতো, তাহলে তা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হতো। ভিডিওর দৃশ্য এবং শব্দ সম্ভবত চাঞ্চল্যকর প্রভাব তৈরির জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল দিয়ে সাজানো হয়েছে। দ্য ইকোনমিক টাইমস উল্লেখ করেছে, এই গল্পের চরিত্র এবং নাম কোনো যাচাইযোগ্য রেকর্ডের সঙ্গে মেলে না। ফলে বলা যেতে পারে যে, পুরো গল্পটি বানোয়াট।
সত্যিকারের দুর্ঘটনার সঙ্গে মিল
এই ধরনের প্রতারণামূলক ভিডিওগুলোতে কিছুটা সত্যের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জনের চেষ্টা করা হয়। ভিডিওটি ২০১০ সালে সি ওয়ার্ল্ডে ডন ব্রাঞ্চেউ এবং ২০০৯ সালে অ্যালেক্সিস মার্টিনেজ-এর বাস্তব জীবনের মৃত্যুর ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেয়। উভয় প্রশিক্ষকই অরকার আক্রমণে মারা যান। কিন্তু এই ঘটনাগুলো জেসিকা র্যাডক্লিফের গল্পের মতো নয়, কারণ সেগুলো নথিভুক্ত এবং কর্তৃপক্ষের তরফে নিশ্চিত করা হয়েছে।
কেন এই ধরনের প্রতারণা ভাইরাল হয়
বিশেষজ্ঞরা বলেন, একটি ভিডিওর আবেগপূর্ণ তীব্রতা এবং বাস্তবসম্মত উৎপাদন কৌশল এটি ভাইরাল হতে সাহায্য করে। এই ধরনের ক্লিপগুলো বুদ্ধিমান সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রাণীদের বন্দী করে রাখার নৈতিকতা নিয়ে মানুষের গভীর উদ্বেগগুলোকে কাজে লাগায়। একই সঙ্গে, এগুলো চাঞ্চল্যকর বিষয়বস্তু ব্যবহার করে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকিং হলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
কথিত জেসিকা র্যাডক্লিফকে নিয়ে অরকার আক্রমণের ভিডিওটি একটি সম্পূর্ণ বানোয়াট। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি। এই নামে কোনো প্রশিক্ষকের অস্তিত্বেরও কোনো প্রমাণ নেই।

ইউটিউবে ‘Chetona।। চেতনা’ নামের একটি চ্যানেলে ‘ভয়ংকর তথ্য, মাহফুজ আফগান ট্রেনিংপ্রাপ্ত মিয়ানমারের নাগরিক।’ শিরোনামে পোস্ট করা একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন পোস্টেও সূত্র হিসেবে এই ভিডিও ব্যবহার করা হয়েছে। গত শনিবার (২৩ নভেম্বর) প্রায় ৯ মিনিটের ভিডিওটি চ্যানেলটিতে পোস্ট করা হয়।
২৫ নভেম্বর ২০২৪
সম্প্রতি আজকের পত্রিকার নাম ও ফটোকার্ড ব্যবহার করে ‘হরেকৃষ্ণ হরিবোল, দাঁড়িপাল্লা টেনে তোলঃ পরওয়ার’ শিরোনামে একটি ভুয়া ফটোকার্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
৪ দিন আগে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাতের রাস্তার মাঝখানে এক মধ্যবয়সী ব্যক্তি এক হাতে একটি স্বচ্ছ বোতল, অপর হাতে বাঘের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। এমনকি বাঘটির মুখে বোতল গুঁজে দিতেও দেখা যায় তাঁকে।
৪ দিন আগে
বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের যৌথবাহিনীর চেয়ারম্যানকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল যুক্ত বাংলাদেশের মানচিত্রসংবলিত পতাকা উপহার দিয়েছেন বলে ভারতের সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের দাবি সম্পূর্ণ অসত্য ও কল্পনাপ্রসূত বলে জানিয়েছে সিএ (প্রধান উপদেষ্টা) ফ্যাক্ট চেক।
৯ দিন আগে