Ajker Patrika

সরব নগরের রাজনীতি

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২১, ১২: ০৭
সরব নগরের রাজনীতি

সরব হয়ে উঠছে বরিশাল নগরীর রাজনীতি। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি এখন রাজপথে তৎপর। পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই যুগ পূর্তিতে আজ ২ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার নগরীতে বড় ধরনের মহড়া করছে ক্ষমতাসীনরা। দক্ষিণাঞ্চলে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হেভিওয়েট নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর হাত ধরে এ চুক্তি বাস্তবায়ন হওয়ায় তার অনুসারীর ইস্যুটিকে ২৪ বছর পর জাতীয়ভাবে আলোচিত করতে চায়। কেন্দ্রীয় নেতাদের এনে জমকালো আয়োজনে কর্মসূচি পালনে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বরিশাল আওয়ামী লীগ।

অপরদিকে দলের চেয়ারপারসনের বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে পরদিন শুক্রবার বিভাগীয় সমাবেশ করবে বরিশাল বিএনপি। এ নিয়ে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভায় দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে পড়া বিএনপি অনেকটাই চাঙা। এদিকে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই কর্মসূচি নিয়েই নগরে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা ও চুলচেরা বিশ্লেষণ।

দেখা গেছে, পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্তি উপলক্ষে ব্যাপক সাজসজ্জা করা হয়েছে। ব্যানার, তোরণ, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা নগর। নগরভবনের সামনে করা হয়েছে জনসভার মঞ্চ। গত মঙ্গলবার রাতে মঞ্চস্থল পরিদর্শনকালে বরিশাল সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ফেসবুক লাইভে বলেন, যেহেতু ২৪ বছর তাই এবার ব্যতিক্রমীভাবে শান্তিচুক্তির পূর্তি পালন করার চেষ্টা চলছে। নেতা–কর্মীরা উৎসাহের সঙ্গে সাজসজ্জার কাজ করছে। দক্ষিণের বহু এলাকা থেকে নেতা-কর্মীরা আসবেন। এবার কেন্দ্রীয় নেতা–কর্মীরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে জানান মেয়র সাদিক।

নগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমনের সূত্রে জানা গেছে, পার্বত্য শান্তিচুক্তির দুই যুগ পূর্তিতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় দলীয় কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধু ও সাবেক কৃষি মন্ত্রী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ এবং বেলা ২টায় নগরভবনের সামনে সমাবেশ ও আনন্দ শোভাযাত্রা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম। কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ।

নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গিরের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ডা. শাম্মী আহমেদ, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় প্রমুখ।

আওয়ামী লীগের সমাবেশের একদিন আগেই নগরীর কাকোলির মোড়, নগরভবনের সামনে এবং ফলপট্টির মোড়ের পথ আটকে দেওয়া হয় বুধবার থেকেই। নগরীর প্রাণকেন্দ্রের সড়ক আগাভোগে যানবাহন আটকে দেওয়ায় জনগণের চলাচলে চরম দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। ট্রাফিক বিভাগ বড় বেরিক্যাড দিয়ে ৩ দিকের পথ আটকে দিলেও মেট্রোপলিটনের ট্রাফিক বিভাগ থেকে এ বিষয়ে জবাব পাওয়া যায়নি।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আনোয়ার হোসাইন জানান, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত শান্তিচুক্তি দেশের রাজনীতিতে অবদান রেখেছে। এটি জাতীয়ভাবে তুলে ধরতে চান তাঁরা। বরিশাল থেকে বড় কর্মসূচি করে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চান। এ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় নেতারাও আসছেন। আশা করছেন তাঁদের মাধ্যমে বার্তাটা পৌঁছাবে উচ্চ পর্যায়ে। সমাবেশে নগরীসহ বাবুগঞ্জ, বাকেরগেঞ্জ থেকে কর্মী আসবে।

পরদিনই বিএনপির সমাবেশ প্রসঙ্গে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সেটি বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রোগ্রাম। রাজনৈতিক দল হিসেবে তারা করতেই পারে। তবে তারা কেন রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন না করে আন্দোলন করছেন। আসলে বিএনপিই খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি করছে। বরিশালে বিএনপির নতুন কমিটি হয়েছে, তাদের একটি মহড়াও হবে এ সমাবেশে।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচির পরদিন শুক্রবার জিলা স্কুল মাঠে বিএনপি বিভাগীয় সমাবেশে ডেকেছে। এ সমাবেশ উপলক্ষে গত কয়েক দিন ধরে চলছে প্রস্তুতি। বুধবারও নগরীতে প্রস্তুতি সভা করেছে যুবদল।

বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান ফারুক জানান, বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথি থাকবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস এবং বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস আক্তার জাহান শিরিন। সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও বিভাগীয় সমাবেশে গঠিত টিমের সদস্য বিলকিস জাহান শিরিন বলেন, বিভাগীয় সমাবেশ সফলে ৬ জেলা থেকেই কর্মী আনবেন। নেত্রীর মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসায় পাঠানোই এ সমাবেশের উদ্দেশ্য। সমাবেশ বাস্তবায়নে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা চলছে। ২ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি পরদিন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...