Ajker Patrika

মুরগি খামারে লোকসান

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০১ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪: ১০
মুরগি খামারে লোকসান

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে মুরগির খাবার ও টিকার দাম বাড়ছে। এতে মধ্যস্বত্বভোগীরা বেশি লাভ করতে পারলেও খামারিরা লোকসানে আছেন। অনেকে খামার বন্ধও করে দিয়েছেন।

ফুলবাড়ীতে দুই শতাধিক মুরগির খামারি ব্যক্তিগত উদ্যোগে পোলট্রি ব্যবসা শুরু করেন। প্রথম দিকে লাভের মুখ দেখলেও ২০১৬ সাল থেকে পর্যায়ক্রমে খাবার, টিকা ও বাচ্চার দাম বাড়ায় লাভ কমতে থাকে। সেই সঙ্গে গরমের সময় নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় কলেরা রোগে মুরগির মড়ক হয়। এর পাশাপাশি করোনা আসার ফলে বন্ধ হয়ে যায় বিক্রি। ফলে ক্ষতির সম্মুখীন হন খামারিরা।

জানা গেছে, উপজেলায় সবচেয়ে বেশি লেয়ার খামার রয়েছে বালারহাটে। এখানে ৭৪টি খামার আছে। এ এলাকার খামারি কুরুষাফেরুষা মলিকার কুটি গ্রামের ধরলা পোলট্রি ফার্মের মালিক সাইদুর রহমান ডলার বলেন, ‘২০০৫ সালে ৫ লাখ টাকা ব্যয় করে ১ হাজার ব্রাউন জাতের লেয়ারের বাচ্চা দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। ২০১৫-১৬ সালে লাভের মুখ দেখি। এ জন্য খামার বড় করি। বর্তমানে খামারে ২০ হাজার লেয়ার মুরগি রয়েছে। কিন্তু কাঁচামালের মূল্য বাড়ার কথা বলে কোম্পানিগুলো ১ হাজার ৬০০ টাকা খাদ্যের বস্তা ২ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করছে। ফলে প্রতি বস্তায় ৭০০ টাকা বাড়তি মূল্য দিতে হচ্ছে। ফলে আমরা মাঠে মারা যাচ্ছি।’

উপজেলার ফুর্তি গ্রামের সাদৃশ্য পোলট্রি ফার্মের মালিক মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ফার্মে ৬ হাজার লেয়ার জাতের মুরগি আছে। আমি ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা লগ্নি করে অবকাঠামো তৈরি করেছি। এনজিও থেকে ঋণ করেছি ৬ লাখ টাকা। মাসে কিস্তি দিতে হয় ৬০ হাজার টাকা। মাসে ডিম বিক্রি হয় ৯০ হাজার টাকার। সবকিছু বাদ দিয়ে আমার ৩০ হাজার টাকা ঘাটতি থাকে।’ এমন কথা জানান ওই এলাকার দোয়া পোলট্রি ফার্মের মালিক সিমু, আপন পোলট্রি ফার্মের মালিক ফজলু মিয়া। তারা বলেন, আমাদের প্রতিবেশী এমদাদুল হক খামারের ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।

খামারিরা জানান, একটি লেয়ার মুরগি ১২০ দিন পর ডিম পাড়া শুরু করে। ১৫০ দিনে পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হয়। এ সময় গড়ে ৯৮ ভাগ মুরগি ডিম দেয়। ৭ থেকে ৮ মাস পর্যন্ত এ ধারা অব্যাহত থাকে।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন মাহমুদুল হাসান জানান, বর্তমানে প্রান্তিক খামারিদের ক্ষতির প্রধান কারণ হচ্ছে খাদ্যের ক্রমাগত দাম বাড়া। দেশের বাইরে থেকে আনা কাঁচামালের কারণে দাম বাড়ছে। আরেকটি কারণ হলো একই বয়সের বাচ্চা কিনতে হচ্ছে বেশি দামে। দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে খামারিদের লাভটা বেশি নিশ্চিত করা যাবে।

অপরদিকে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সরকার জানান, করোনা পরবর্তীতে খামারিরা উৎপাদনে এসেছে। খাদ্যের মূল্য কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। বিষয়টি জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় উত্থাপন এবং এর সমাধান চাওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত