Ajker Patrika

স্বাস্থ্য বাজেটের অর্ধেক কাজে লাগানো যায় না

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
স্বাস্থ্য বাজেটের অর্ধেক কাজে লাগানো যায় না

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাজেট বাস্তবায়নের দক্ষতা তুলনামূলকভাবে কম। স্বাস্থ্য খাতে বাজেট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটা প্রধান প্রতিবন্ধক। এ মন্ত্রণালয়ের জন্য যে উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ দেওয়া হয়, গড়ে তার ৫০ শতাংশই অব্যয়িত থেকে যায়। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পি. গ্রান্ট স্কুল অব পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্নয়ন সমন্বয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত স্বাস্থ্য বাজেটবিষয়ক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানানো হয়। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।

গ্রামাঞ্চলে যাঁরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নেন, তাঁদের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে স্বাস্থ্য বাজেট বরাদ্দের ধারায় কী ধরনের পরিবর্তন দরকার, এ বিষয়ে গবেষণার ভিত্তিতে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান। তিনি জানান, জিডিপির শতাংশ হিসাবে বাংলাদেশের মাথাপিছু কারেন্ট হেলথ এক্সপেন্ডিচার (স্বাস্থ্য ব্যয়) মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। স্বাস্থ্য খাতে সরকারি ব্যয় কম হওয়ার কারণে জনগণকে স্বাস্থ্য ব্যয়ের বড় অংশ (অর্থাৎ আউট-অব-পকেট স্বাস্থ্যব্যয়) বহন করতে হচ্ছে। এ জন্য স্বাস্থ্য খাতে পরিকল্পিতভাবে বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।

ড. আতিউর বলেন, বর্তমানে জাতীয় বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে ৫ শতাংশের কিছু বেশি স্বাস্থ্যের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এর সঙ্গে আরও ২-৩ শতাংশ যুক্ত করে সেই বাড়তি বরাদ্দ যদি গ্রামাঞ্চলে বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহের বাজেট এবং সেবাকেন্দ্রে শূন্য পদে লোক নিয়োগ দিয়ে তাঁদের মজুরি ও বেতন বাবদ খরচ করা যায়, তাহলে জনগণের ওপর স্বাস্থ্যব্যয়ের চাপ উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমে আসবে।

মূল নিবন্ধে বলা হয়, বর্তমানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য এ খাতে বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা দরকার। আলোচকেরা জানান, বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুষম বণ্টনেরও ব্যবস্থা করতে হবে।

সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. মামুন-আল-রশীদ। তিনি বলেন, বরাদ্দকৃত বাজেট ব্যয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর দক্ষতা ও সমন্বয়ের ঘাটতি স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির ক্ষেত্রে প্রধানতম প্রতিবন্ধক। তাই বরাদ্দ বাস্তবায়নের দক্ষতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে হবে।

ঢাকাসহ কয়েকটি বড় শহরে যে মানের স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় তা দেশের অন্য অঞ্চলেও পাওয়া গেলে জনগণের ওপর স্বাস্থ্যব্যয়ের চাপ অনেকাংশে কমানো সম্ভব বলে জানান আলোচকেরা। তাঁরা বলেন, স্বাস্থ্যব্যয়ের অতিরিক্ত চাপের কারণে অনেক সময়ই তুলনামূলক নিম্ন আয়ের পরিবারগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। স্বাস্থ্যসেবার ব্যয় আরও কমানো গেলে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী জেবুন্নেছা বেগম বলেন, জনগণের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একার পক্ষে সম্ভব নয়। সবাইকে এর জন্য কাজ করতে হবে। স্বাস্থ্যসেবা খাতের বর্তমান অবস্থার জন্য নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের দায় রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

আলোচকেরা বলেন, দেশে ১৪ শতাংশ মানুষ খরচের ভয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যান না। আবার অনেকেই আছেন যাঁরা সরকারি হাসপাতালে সব সুযোগ-সুবিধা থাকার পরও বেশি টাকা খরচ করে বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নেন। এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরি। সভায় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং চিকিৎসকেরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বরাদ্দ বৃদ্ধি, জনবল নিয়োগ, বিনা মূল্যে ওষুধ সরবরাহ বৃদ্ধির পরামর্শ দেন। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আন্দালিব রহমান পার্থর স্ত্রীকে বিদেশ যেতে বাধা

‘মেয়েরা যেন আমার মরা মুখ না দেখে’, চিরকুট লিখে ঠিকাদারের ‘আত্মহত্যা’

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত