Ajker Patrika

ইউরোপের সামনে সৌদি চ্যালেঞ্জ

উপল বড়ুয়া, ঢাকা
ইউরোপের সামনে সৌদি চ্যালেঞ্জ

লড়াইটা আগে ছিল লাতিন বনাম ইউরোপের। ব্রাজিলের ‘জিঙ্গা’ ও আর্জেন্টিনার ‘ট্যাঙ্গো’র বিপরীতে ইংল্যান্ড-জার্মানির ‘ল্যাব ফুটবল’। তবে দৃশ্যপটে মধ্যপ্রাচ্যের অনাহুত আগমন যেন সে লড়াইকে তৃতীয় মাত্রা দিয়েছে।

অবশ্য বড় চ্যালেঞ্জটা ইউরোপের সামনে। দলবদলের বাজারে টাকার বস্তা নিয়ে নামা সৌদি প্রো লিগের কাছে একের পর খেলোয়াড় হারাতে হচ্ছে শীর্ষ লিগের ক্লাবগুলোকে। লাতিন আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা থেকে প্রতিভাবান ফুটবলারদের এনে এত দিন ফুটবলের একচ্ছত্র বাজার নিয়ন্ত্রণ করেছে ইউরোপ। কিন্তু সেখানেই বাগড়া দিয়েছে সৌদি আরব।

চোখ কপালে তোলার মতো একেকটি চুক্তি, অন্যান্য বাড়তি সুবিধা তো আছেই—ফুটবলাররাও বা কেন ইউরোপের নাভিশ্বাস তোলা প্রতিযোগিতা ছেড়ে মরুর বুকে ফুল ফোটাতে যাবেন না! সেই রাস্তাটা সুগম করেন গত জানুয়ারিতে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো আল নাসরে যোগ দিয়ে। এরপর গ্রীষ্মকালীন দলবদলে করিম বেনজেমা, এনগোলা কান্তে, রিয়াদ মাহরেজ, সাদিও মানেদের মতো তারকাদের নিয়ে সেই তালিকা দীর্ঘই হয়েছে। যার সর্বশেষ সংযোজন নেইমার।

এই বিশ্বায়নের যুগে অবাধ পুঁজির শক্তি দেখাতে নামা সৌদি বসন্ত কত দিন স্থায়ী হয়, সেটি ভবিষ্যতে জানা যাবে। তার আগে ইউরোপ কীভাবে এই চাপ সামাল দেবে, সেটিই দেখার বিষয়। তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের প্রধান রিচার্ড মাস্টার্স ইংল্যান্ডের শীর্ষ লিগের জন্য সৌদি প্রো লিগকে হুমকি হিসেবে দেখছেন না। কারণ, ইংলিশ ফুটবলে যে সমৃদ্ধ ইতিহাস ও ঐতিহ্য সে তুলনায় সৌদি ফুটবল কিছুই নয়।

তবে প্রিমিয়ার লিগের কোচরা ঠিকই ভয়ে আছেন। হুট করে সৌদির এক অভাবনীয় প্রস্তাবে যদি তাদের সেরা খেলোয়াড়টিকে হারাতে হয়! এমনটা তাদের সঙ্গে তো ঘটেছে। লিভারপুল হারিয়েছে তাদের অধিনায়ক জর্ডান হেন্ডারসন ও ম্যানচেস্টার সিটি রিয়াদ মাহরেজকে।
এমনকি সৌদি লিগকে থামাতে উয়েফা ও ফিফাকে সমাধান খোঁজারও আহ্বান করেছেন অলরেড কোচ ইউর্গেন ক্লপ। সিটি কোচ পেপ গার্দিওলাও খুশি নন সৌদির খেলোয়াড় কেনা নিয়ে। ইউরোপে এবারের দলবদল শেষ হবে ১ সেপ্টেম্বর। তবে সৌদি প্রো লিগের এরপরও হাতে থাকছে আরও তিন সপ্তাহ। তাদের ট্রান্সফারের এই সময় কমাতেই ফুটবলের দুই সংস্থার কাছে মূলত এই আর্জি। এই মাসের শুরুতে তো তিনিই একপ্রকার রেগেমেগে বলে ফেলেন, ‘সৌদি আরবের ট্রান্সফার উইন্ডো আরও তিন সপ্তাহ বাকি থাকা আমার কাছে শঙ্কার বিষয়।’

তাতেও কি আর ক্ষান্ত হবে ক্রীড়াক্ষেত্রে বিনিয়োগের স্বাদ পাওয়া দেশটির পাবলিক ইনফেস্টমেন্ট ফান্ড (পিআইএফ)! সৌদিও চায় বিশ্বের বড় বড় ক্রীড়া ইভেন্ট আয়োজন করতে। গত বছর কাতারে ফুটবল বিশ্বকাপ হয়েছে। সৌদিও ফুটবল বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদার লড়াই আয়োজনে উঠেপড়ে নামছে মাঠে। 

কয়েক মাস আগেও ইউরোপের ফুটবল ছিল তারকায় ঠাঁসা। তবে মান্না দে’র ‘কফিহাউস’ গানের মতো সেই আড্ডা ভেঙে গেছে। ‘নিখিলেস প্যারিসে, মঈদুল ঢাকাতে’ যাওয়ার মতো রোনালদো সৌদিতে, মেসি যুক্তরাষ্ট্রে। আর হারাধনের শেষ ছেলে নেইমারও গেছেন নতুন ঠিকানায়। ইউরোপের ‘ল্যাব ফুটবল’ ছেড়ে অনেকে ক্যারিয়ারের সায়াহ্নে পাড়ি জমান বিভিন্ন দেশে। তবে একসঙ্গে এত তারকা শীর্ষ ফুটবল ছেড়ে যায়নি। 

বর্তমানে যে চার ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা আছেন, তাঁদের তিনজনই চলে গেছেন। বাকি আছেন লুকা মদরিচ। সৌদি থেকে রিয়াল মাদ্রিদ তারকাও প্রস্তাব পেয়েছিলেন। রেকর্ড অঙ্কের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কিলিয়ান এমবাপ্পেকেও। তাঁরা গেলে হয়তো আরও ম্লান হয়ে যেত ইউরোপ। অবশ্য ভবিষ্যতে নতুন তারকা ঠিকই পেয়ে যাবে তারা। তবে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী লিগ যে অর্থনৈতিকভাবেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে গেল, সেটি কাটাতে সময় তো লাগবেই তাদের।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মামলার আসামিসহ বিএসইসির ২২ কর্মকর্তাকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত

সরকারি টাকায় ব্যক্তিগত সড়ক কার্পেটিং বিচারপতি খিজির হায়াতের, প্রমাণ পেয়েছে দুদক

অভিনেতা সিদ্দিককে মারধর করে থানায় সোপর্দ, ছিঁড়ে ফেলা হয় পরনের পোশাক

বগুড়ায় ছাত্রদল নেতার ওপর হামলা, পাঁচ নেতা-কর্মীকে শোকজ

ঐকমত্য কমিশনের সদস্যদের তেলের বরাদ্দ ২৫০ থেকে বেড়ে ৫০০ লিটার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত