Ajker Patrika

আচরণবিধি মানতে অনীহা

দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২৫
আচরণবিধি মানতে অনীহা

ষষ্ঠ ধাপে দোহার উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ৩১ জানুয়ারি। নির্বাচনী দিন ঘনিয়ে আসায় এসব ইউপিতে জমে উঠেছে শেষ মুহূর্তের প্রচার। কিন্তু আচরণবিধি নিয়ে নীরব প্রশাসন।

আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলটির বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) প্রার্থীদের পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকা। তবে এ ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না নির্বাচন অফিসের দেওয়া বিধিনিষেধ। এমনকি বিধিনিষেধ প্রয়োগে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টদের তৎপরতাও চোখে পড়েনি।

দোহার উপজেলার ৫টি ইউপি ঘুরে দেখা যায়, কাকডাকা ভোর থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। ভোটারদের দিচ্ছেন নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি। প্রার্থীদের ব্যানার পোস্টারে ছেয়ে গেছে পুরো এলাকা। নিয়মের তোয়াক্কা না করেই চলছে প্রচার। নির্বাচন কমিশনের আইনে রয়েছে প্রার্থীদের পোস্টার রশি দিয়ে টানানোর কথা। কিন্তু সেটা কেউই মানছেন না। স্কুলের দেয়াল, চায়ের দোকান, ঘরের দরজায় স্টিকার, বিদ্যুতের খুঁটি, অটোরিকশায় স্টিকার লাগানো হয়েছে। তবে প্রার্থীদের দাবি আচরণবিধি মেনেই পোস্টার লাগাচ্ছেন তাঁরা।

আচরণবিধি সম্পর্কে ঢাকার জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম গত ১৫ জানুয়ারি দোহারের পাঁচটি ইউপির সব চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীদের নিয়ে একটি আলোচনা সভা করেন। সেখানে তিনি প্রার্থীদের বলেন, নির্বাচনের পোস্টার রশি দিয়ে টানাতে হবে। স্টিকার বা আঠা দিয়ে পোস্টার লাগানো যাবে না। বিধিনিষেধের কারণে ৫০ জনের বেশি লোক নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না। স্কুল-কলেজ বা কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে নির্বাচনী প্রচার চালানো যাবে না।

নৌকা প্রতীকে কুসুমহাটি ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কাদের মণ্ডল বলেন, ‘আমরা যখন লোকদের পোস্টার দিয়েছি তখন না করে দিয়েছি, আঠা দিয়ে যেন পোস্টার না লাগায়। কিন্তু ছোট বাচ্চারা না বুঝে দু-এক জায়গায় আঠা দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে।’ স্টিকারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু আমি না প্রত্যেকে ইউপিতে সবাই স্টিকার লাগাচ্ছে।’

উপজেলার কুসুমহাটি ইউপির সদস্য প্রার্থী শাওন ইসলাম বাদশাহ জানান, তিনি নিয়ম মেনেই ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। পোস্টার বিষয় জনতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার ল্যামিনেটিং করা পোস্টার সব নামিয়ে ফেলেছি। কিন্তু বাংলাবাজারে কিছু পোস্টার আছে, সেগুলোও নামিয়ে ফেলব।’

থানার মোড়ের অটোরিকশাচালক জুয়েল শেখ বলেন, ‘আমরা যাত্রী নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যাতায়াত করি। আর যে সময় যার সামনে পড়ি সেই আমাদের অটোরিকশায় তাঁদের স্টিকার লাগিয়ে দেন এবং যাত্রীদের ভোট দিতে বলেন।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুসুমহাটি ইউপির এক চা দোকানি বলেন, ‘এইখানে একেক সময় একেকজন আইসা ভোট চায়। সে সময় তাঁরা তাঁদের মার্কার লিফলেট হাতে দিয়ে ভোট চান অথবা দোকানে স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে যান। এমন করেই তাঁদের পোস্টার দিয়ে দোকান ভরে রেখেছেন। এখন আমি কী করতাম? আমি কি তাঁদের কইছি আমার দোকানে পোস্টার লাগাতে? আমি এখানে কয়েক কাপ চা বেইচ্চা খাই! প্রার্থীদের ধারণা চায়ের দোকানে লোকজন বসে আড্ডা দেয়। সে জন্য তাঁরা চায়ের দোকানে বসে থাকা লোকের কাছে ভোট চান আর পোস্টার-স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে যান।’

জানা যায়, দোহার উপজেলার ৫ ইউপিতে মোট চেয়ারম্যান প্রার্থী রয়েছেন ৩৪ জন, সদস্য প্রার্থী রয়েছেন ১৫৪ জন এবং সংরক্ষিত আসনে নারী সদস্য প্রার্থী ৪৫ জন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন।

এ বিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম জানান, এ পর্যন্ত আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগে দুজন প্রার্থীকে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরপর আর কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী কাজ নিয়ে ব্যস্ততা থাকার কারণে আর কোনো ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়নি।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত