Ajker Patrika

মাছমিষ্টিতে জমজমাট মেলা

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) প্রতিনিধি
আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২২, ১২: ১৮
মাছমিষ্টিতে জমজমাট মেলা

জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলার গোপীনাথপুরে দোলপূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হয়েছে উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় ঐতিহ্যবাহী দোলপূর্ণিমা মেলা। মেলায় বিশেষ আকর্ষণ মাছের আদলে তৈরি মাছমিষ্টি; যা সর্বনিম্ন ৪ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১২ কেজি ওজনের হয়ে থাকে।

এই বাহারি মিষ্টি তৈরি করে পসরা সাজিয়ে বসেছেন প্রায় দেড় শ মিষ্টির দোকানি। মেলা ছাড়া এই মিষ্টি এলাকায় পাওয়া যায় না। তাই মেলায় আগত লোকেরা এ মাছের আদলে তৈরি মাছমিষ্টি বেশি কিনে থাকেন। এ ছাড়া মেলায় বিক্রি হয় লাভমিষ্টি, কাঠিমিষ্টি কদমা নামের মিষ্টি প্রভৃতি।

তবে সময়ের আবর্তে এ মেলার আয়তন কমতে শুরু করেছে। গত দুই বছর করোনার কারণে মেলা বসেনি। আর এবার মেলায় কোনো বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় লোকসমাগম কম হয়েছে।

জানা গেছে, দোলপূর্ণিমার দিন থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ১৩ দিন। তবে মূল মেলা ১৩ দিনের হলেও তা চলে মাসব্যাপী।

সৈয়দপুর থেকে মেলায় আসা হাকিম মণ্ডলের সঙ্গে গতকাল দুপুরে কথা হয়। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘করোনায় গত দুই বছর মেলা বন্ধ ছিল। এবার মেলা হচ্ছে শুনে ১ দিন ১ রাতের জন্য মেলায় এসেছিলাম। কিন্তু এসে শুনি এবার মেলায় কোনো বিনোদনের জন্য যাত্রা, সার্কাস কিছুই নেই। তাই চার কেজি ওজনের একটি মাছমিষ্টি কিনে নিয়ে বাড়ি যাচ্ছি।’

বগুড়া থেকে আসা গৃহবধূ সুমাইয়া পারভীন বলেন, ‘বগুড়া থেকে গোপীনাথপুর দোলযাত্রা মেলায় যোগাযোগব্যবস্থা ভালো হওয়ায় সকালবেলা বাসে করে স্বামীকে নিয়ে মেলায় এসেছি। মেলায় লোকজন কম থাকায় শান্তিতে বেড়াতে পেরেছি।’

আক্কেলপুর পৌরসভার হাস্তাবসন্তপুর গ্রামের নূরউন নবী দ্বীনু বলেন, ‘মেলায় খাবারের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে মাছের আদলে তৈরি মাছমিষ্টি। দামও খুব একটা বেশি নয়। তাই পরিবারের জন্য তিন কেজি ওজনের মাছমিষ্টি কিনেছি।’

উপজেলার ভিকনী গ্রামের মিষ্টির দোকানি আব্দুল হাকিম বলেন, ‘মেলায় আজকের দিনে সবচেয়ে বড় মিষ্টি (চার কেজি ওজন) আমি তৈরি করেছি।’ মেলায় অন্যদিন ৪ থেকে শুরু করে ১২ কেজি ওজনের মাছমিষ্টি দোকানিরা তৈরি করে থাকেন বলে তিনি জানান। মেলায় বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় এবার লোকসমাগম কম। তাই বেচাবিক্রি একটু কম হচ্ছে।

কুরানো বাজার এলাকার মিষ্টির দোকানি সজিব হোসেন বলেন, ‘মেলা শুরুর প্রথমে যখন গোহাটি ছিল, তখন লোকসমাগম বেশি ছিল। তখন দৈনিক ১২ কেজি ওজনের মাছমিষ্টি বিক্রি করতাম।’

গোপীনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেলা কমিটির সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, মেলায় আগত লোকজনের নিরাপত্তার জন্য পুলিশের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী রয়েছে। দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে টানা দুই বছর মেলা বন্ধ এবং এবারের মেলায় বিনোদনের ব্যবস্থা না থাকায় লোকসমাগম কম।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, মেলায় আগত লোকজনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবেই চলছে দোলযাত্রার মেলা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত