Ajker Patrika

এক সেতুর অভাবে তিন উপজেলাবাসীর ভোগান্তি

ফটিকছড়ি (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১২: ২০
এক সেতুর অভাবে তিন উপজেলাবাসীর ভোগান্তি

কান্নহাটে হালদা নদীর ওপর সেতু নেই। একটি সেতুর জন্য ভুগছেন তিন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। তাদের দাবি, কান্নহাটে সেতু নির্মাণ করা হলে দুর্ভোগ লাঘব হবে। সময় বাঁচবে। অর্থনৈতিকভাবেও তারা লাভবান হবে।

সরেজমিন স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফটিকছড়ি উপজেলার সমিতিরহাট, জাফতনগর, আবদুল্লাহপুর, ফতেপুর, হাটহাজারীর নাঙ্গলমোড়া, গুমানমর্দন ও রাউজানের নোয়াজিশপুর ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ প্রতিদিন হাটহাজারীর কান্নহাট ঘাট ও বাজারে আসেন। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে তিন উপজেলাবাসীর ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীসহ সবার যাতায়াত সহজ হবে।

স্থানীয় লোকজন জানান, পাকিস্তান আমলে স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ কানু চৌধুরী এলাকাবাসীর পারাপারের সুবিধায় একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন। তাঁরই নামানুসারে তখন সেখানে একটি হাট বসে। এটি কান্নহাট নামে পরিচিত। তবে বর্ষা মৌসুম এলেই সাঁকো বিলীন হয়ে যায়। পারাপার হতে নৌকায় লাগে।

তাঁরা আরও জানান, বাজারের ইজারাদার শুষ্ক মৌসুমে সাঁকো তৈরি করলে চলাচল কিছুটা সহজ হয়। কিন্তু বর্ষাতে দুর্ভোগ বাড়ে। সাঁকো না থাকায় তখন নৌকা একমাত্র ভরসা হয়ে পড়ে। এতে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, ব্যবসায়ীসহ সবার দুর্ভোগ বাড়ে।

ফটিকছড়ি উপজেলার নিচিন্তাপুর গ্রামের নুরুল করিম বলেন, ‘দিন যায় কিন্তু এলাকার লোকজনের ভাগ্য বদলায় না। এখানে একটি সেতু হলে এলাকার লোকজনের দুর্ভোগ কমত। উৎপাদিত শাকসবজি হাটহাজারী ও রাউজানের বিভিন্ন বাজারে সহজে নিয়ে বিক্রি করা যেত।’

জাফতনগর গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী আবদুর রশিদ বলেন, ‘কান্নহাটের ঘাট হচ্ছে তিন উপজেলাবাসীর মিলন মোহনা। এখানে একটি সেতু হলে রাউজানের হলদিয়া রাবারবাগান থেকে শুরু করে হাটহাজারীর সরকারহাট দিয়ে চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াত সহজ হবে। এতে এলাকার লোকজনের জীবনযাত্রার মানও বাড়বে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কষ্ট করে ঘাট পারাপার হতে হয়। যথাসময়ে তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারে না। সেতু হলে এ সমস্যার সমাধান হবে।’

রাউজান কলেজের ছাত্র আশিষ চক্রবর্ত্তী বলে, মাত্র একটি সেতুর জন্য তিন উপজেলাবাসী আধুনিক সভ্যতা থেকে পিছিয়ে রয়েছে। তিনি সরকারের কাছে এখানে একটি সেতুর প্রত্যাশা করে।

হাটহাজারীর লাঙ্গলমোড়া গ্রামের পথচারী বিলকিছ বেগম বলেন, ‘প্রতিবার নির্বাচনের আগেই সেতুর বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন প্রার্থীরা। নির্বাচন যায়-আসে। কিন্তু জনপ্রতিনিধিরা আর সেতুর কাছে আসেন না।’

রাউজানের হলদিয়া গ্রামের কৃষক বদিউল আলম বলেন, ‘সেতু না থাকায় খেতের ফসল বাজারে নিতে কষ্ট হয়। পরিবহন খরচ বেশি হওয়ায় খেতেই সবজি নষ্ট হয়। এ কারণে চাষে লাভের মুখ দেখি না।’

ফটিকছড়ি উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী আবদুস সালাম বলেন, ‘গত বছর ম্যাপ ও প্রকল্প প্রাক্কলন তৈরি করে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।’

ফটিকছড়ি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুসাইন মোহাম্মদ আবু তৈয়ব বলেন, ‘হাটহাজারী ও রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ করে সেতু নির্মাণে উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

রাউজান উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল বলেন, ‘নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণের চেষ্টা করছি। বর্তমান সরকার উন্নয়নে বিশ্বাসী। কান্নহাটে স্বপ্নের সেই সেতু হবেই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত