Ajker Patrika

বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা

সম্পাদকীয়
বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা

সিদ্দিকবাজারে ঘটল আরও একটি বেদনাদায়ক দুর্ঘটনা। গুলিস্তানের নর্থ সাউথ রোডে অবস্থিত একটি ভবনে বিস্ফোরণের যে দুঃখজনক ঘটনাটি ঘটে, তাতে এখন পর্যন্ত ১৮ জন মানুষের প্রাণহানির সংবাদ পাওয়া গেছে। সাততলা ভবনের বেসমেন্টে মূল বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু কেন এ রকম দুর্ঘটনা ঘটল, সেটা পরিষ্কার হয়নি। বেসমেন্টে পানি জমে যাওয়ায় সেখানে আদতেই কী ঘটেছিল, তা নিয়ে কিছু বলতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। দুর্ঘটনার কারণ উদ্ঘাটনের জন্য ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশনস ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

অল্প কয়েক দিন আগেই ঢাকার সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার একটি ভবনে প্রায় একই রকম বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তাতেও তিনজন নিহত হয়েছে। সেই শোক কাটিয়ে ওঠার আগেই সিদ্দিকবাজারে ঘটল এ রকম দুর্ঘটনা।

কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল, সে ব্যাপারে কোনো দিশা পাওয়া যায়নি এখন পর্যন্ত। দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা, সেটাও নির্ণয় করা যায়নি। কিন্তু এ কথা তো ঠিক, নিশ্চয়ই ভবনটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থার ঘাটতি ছিল। নইলে হঠাৎ করে সাততলা একটি ভবনে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটতে পারে না। ভবনের কলাম ও বিমগুলোর নাজুক অবস্থার কথাও শোনা গেছে। আদৌ কী কারণে এতগুলো প্রাণহানি হলো, তার কারণ খুঁজে বের করা জরুরি।

আমরা সংবাদমাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের নিয়ে প্রকাশিত খবরগুলোয় যে বর্ণনা দেখেছি, তাতে বেদনায় ভরে গেছে মন। পুরান ঢাকায় এমন অনেক ভবন রয়েছে, যা যথাযথ সংস্কারের অভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। ফলে এ ধরনের দুর্ঘটনার সংবাদ অদূর ভবিষ্যতে যদি আরও শোনা যায়, তাহলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। খুবই গুরুত্ব দিয়ে এই ভবনগুলো চিহ্নিত করে সেখান থেকে বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়া দরকার। ভবনগুলো ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হলেই কেবল এখানে বসবাস কিংবা দোকান খুলে ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া উচিত।

কেন একের পর এক এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে, তা নিয়ে কেউ কেউ বলেছেন, সব কটি বিস্ফোরণের ক্ষেত্রেই ‘জমে থাকা গ্যাস’ই দায়ী হতে পারে। কেন ভবনে গ্যাস জমে থাকবে, এ জন্য কে বা কারা দায়ী, তা নিয়ে বিশেষ কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে বাড়ির মালিকেরা এই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। দুর্ঘটনা ঘটার পরই কেবল তা নিয়ে মাতামাতি হয়। আবার কিছুদিন পর আলোচনা স্তিমিত হয়ে যায়। অনেকেরই মনে পড়ে যেতে পারে, ২০২১ সালের ২৭ জুন মগবাজারে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণের কথা। সে সময়ও তিনতলা ভবনের নিচতলায় জমে থাকা গ্যাসই ছিল দুর্ঘটনার কারণ।

যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দুর্ঘটনার কারণ নির্ণয় করে ভবিষ্যতে যেন এভাবে অকারণে প্রাণহানি না ঘটে, তার ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। নইলে বেদনায় ছেয়ে যাওয়া খবরগুলো দিনের পর দিন দেশের নাগরিকদের আঘাত করতেই থাকবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পেহেলগাম হামলা: ধরা খেয়ে গেল মোদির কাশ্মীর ন্যারেটিভ

বিবাহিতদের পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশ না করার প্রস্তাব

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: বিমানবাহিনীকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা

সারজিসের সামনেই বগুড়ায় এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের মধ্যে হাতাহাতি-সংঘর্ষ

‘ঘুষের জন্য’ ৯১টি ফাইল আটকে রাখেন মাউশির ডিডি: দুদক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত