Ajker Patrika

অবিশ্বাস্য

সম্পাদকীয়
অবিশ্বাস্য

বিশ্বাস করতে মন চায় না, কষ্ট লাগে কিন্তু বিশ্বাস না করেও উপায় নেই। লোভ যে মানুষকে অমানুষে পরিণত করতে পারে, তার প্রমাণ জোগাড় এখন আর কঠিন কোনো কাজ নয়।

আমাদের সমাজে ইদানীং মানুষের দ্বারা সংঘটিত এমন সব ঘটনার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হচ্ছে, যেগুলো পড়ে মন খারাপ হয়। প্রশ্ন জাগে, মানুষ কীভাবে এ রকম হিতাহিতজ্ঞানশূন্য হয়ে পড়ছে? যখন দেশে শিক্ষার হার কম ছিল, তখনো অনেক মানুষের মধ্যে কাণ্ডজ্ঞানের অভাব দেখা যেত না। সাধারণভাবেই গুরুজনদের শ্রদ্ধা-বিশ্বাস করার রীতি ছিল, মা-বাবা হলে তো কথাই ছিল না। সন্তানের মঙ্গল চিন্তা যেমন মা-বাবার সারাক্ষণের ধ্যান-জ্ঞান ছিল, তেমনি মা-বাবার প্রতিও ছিল সন্তানের অপরিসীম শ্রদ্ধা-ভক্তি।

আবার সম্পত্তি নিয়ে আত্মীয়স্বজনের মধ্যে বিরোধও আমাদের দেশে কোনো নতুন বা অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। জমিজমা নিয়ে পারিবারিক বিরোধ-কলহ, মামলা-মোকদ্দমা, এমনকি খুনোখুনির ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি, তা-ও নয়। তবে এগুলো ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী বিষয়। পরিবার-পরিজন নিয়ে শান্তিতে বসবাসই ছিল সাধারণ নিয়ম।

সমাজে ভালো এবং খারাপ—দুটোই আছে। এমনকি আগের একান্নবর্তী পরিবারগুলোতেও খারাপ সদস্য ছিল না, তা নয়। তবে খারাপ বা দুষ্ট প্রকৃতির মানুষ অন্যের কাছে প্রশ্রয় কম পেয়েছে। ভালোর পক্ষে ও খারাপের বিরুদ্ধে থাকার একটি স্বাভাবিক প্রবণতা অনেকের মধ্যেই ছিল।

এখন সময় বদলেছে। জটিলতা বেড়েছে। মানুষের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যেও পরিবর্তন এসেছে। হিংসা-বিদ্বেষ বেড়েছে। সদ্ভাব-সদাচরণ ক্রমেই দুর্লভ হয়ে উঠছে। লক্ষ করলেই দেখা যাবে, হিংসা ও ক্রোধের মাত্রা বেড়েছে।

আজকের পত্রিকায় শুক্রবার প্রকাশিত একটি খবর পড়েই ওপরের কথাগুলো বলা। জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার ঢাকিরগাঁও গ্রামে বৃদ্ধ মায়ের ঘরে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক সন্তানের বিরুদ্ধে। বৃদ্ধার নাম আশরাফ বিবি। সন্তানের নাম জিয়াউর রহমান।

আশরাফ বিবির অভিযোগ, গত বছরের ১৬ আগস্ট তাঁর বড় ছেলে জিয়াউর রহমান প্রতারণা করে বাড়ির ৪ শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেন। বিষয়টি জানতে পেরে চাঁদপুর আদালতে মামলা করেন আশরাফ বিবি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁকে কয়েকবার মারধর করেন জিয়াউর। এ নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। মায়ের করা মামলায় জিয়াউরকে তিন দিন জেলহাজতে থাকতে হয়।

পরে মীমাংসার শর্তে জামিনে বের হয়ে আসেন তিনি। কিন্তু জামিনে বের হয়ে মীমাংসায় না গিয়ে উল্টো তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেন। ঘটনার আগের দিন জিয়াউর রহমানের স্ত্রী নীলুফা আক্তার হুমকি দিয়ে বলেন, তাঁর ঘরটি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হবে, হয়েছেও তাই।

অবশ্য জিয়াউর রহমান নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন এবং মাকেই দুষছেন। পুড়ে যাওয়া ঘর ও জমিও নিজের দাবি করেছেন তিনি। কিন্তু মতলব পৌরসভার মেয়র আওলাদ হোসেন লিটন বলেছেন, পুরো ঘটনা তাঁর জানা। জিয়াউর রহমান খুব দুষ্ট প্রকৃতির লোক।আমাদের কথা, এই দুষ্ট প্রকৃতির লোকটির জন্য তাঁরই বৃদ্ধ মায়ের জীবন যেন সংশয়াপন্ন হয়ে না ওঠে, সে ব্যবস্থা সমাজকেই করতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত