Ajker Patrika

বাজার গরম

সম্পাদকীয়
বাজার গরম

আলী হাসানের নতুন গান অনেকেই হয়তো শুনেছেন। গানের শিরোনাম—বাজার গরম। বরাবরের মতোই আলী হাসান তাঁর গানে বাস্তব পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেছেন। চাল-ডাল-তেল-নুন-মাছ-মাংস-সবজি—সবকিছুর দাম চড়া, যেন সোনার দামে কেনা। এমন অভিন্ন তথ্য নিয়ে আজকের পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে একটি সংবাদ। ‘মাছ-সবজি সবই চড়া’ শিরোনামের খবরটি থেকে জানা যায় বর্তমান বাজারের গরম পরিস্থিতি।

ইলিশ মাছের দামের কথা বাদ দিন। এই বাজার আরও আগে থেকেই গরম। এখন অন্যান্য মাছের দামও ভাবিয়ে তুলতে বাধ্য করছে ক্রেতাদের। বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমছে। দেশে পাইকারি বাজারে কিছুটা কমলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি মূল্যে। চিনির ক্ষেত্রেও ঘটছে একই কাণ্ড। সরকার-নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না ডিম, আলু কিংবা দেশি পেঁয়াজ। তেজ দেখাচ্ছে বেগুন আর মরিচও। সব ধরনের সবজির দামই চড়া। এসব খাদ্যপণ্যের ভিড়ে মাংসের কথা তোলা তো আরও আতঙ্কের ব্যাপার। কিনতে গেলে হাত দিয়ে দেখবেন তাপমাত্রা স্বাভাবিক। যেই না বিক্রেতা দাম বলবেন, অমনি ‘ছ্যাঁৎ’ করে জ্বলে উঠতে পারে আপনার মন!

ভাবতে খুব অবাক লাগে, যে দেশে নদীতে জাল ফেলে ইলিশ ধরা হয়, সেই দেশে ইলিশের দাম চড়া। আর এই মাছ চাষ করতে হলে খরচাপাতি মিলিয়ে এর দাম হয়তো আকাশ ফুটো করে উঠে যেত! একদিকে আলুর বাম্পার ফলনের খবরে মন খুশি হয়ে ওঠে, অপরদিকে এর চড়া দামে বেজার না হয়ে উপায় থাকে না।

করোনা পরিস্থিতি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যে বিশ্ববাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তা সহজেই অনুমেয়। কিন্তু সব ধরনের খাদ্যপণ্যের অতিরিক্ত দাম মেনে নিতে আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের নাগরিকদের কষ্ট হয় বৈকি। খাদ্যপণ্যের দামটাই শুধু বাড়ে, বেতন বাড়ে না—এমন অভিযোগ সাধারণ ক্রেতাদের।

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দিন দিন বড় আর মজবুত হচ্ছে। সরকার কেন এই সিন্ডিকেট ভাঙতে পারছে না—এ প্রশ্নের উত্তর হাতড়ে পাওয়া যাচ্ছে না। শুধু দাম নির্ধারণ করে দিলেই হয় না, বাজার তদারকির দায়িত্বও সরকারের। সরকারের পক্ষে বাজার যাঁরা নিয়ন্ত্রণ করেন, তাঁরা সবাই যদি ব্যবসায়ী হন, তবে নিজেদের ফায়দা যে তাঁরা লুটবেন—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সৎ ব্যবসায়ীর পক্ষে অতিমুনাফার লোভ সংবরণ করাও কঠিন কিছু নয়। আর ব্যবসায়ীরা রাজনীতি বা রাজনীতিবিদেরা ব্যবসা করলে তো বাজার নিয়ন্ত্রণেই থাকার কথা। কিন্তু তা হচ্ছে না কেন? কুকুরে লেজ নাড়ায় না, লেজ কুকুরকে নাড়ায়?

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ড. গোলাম রহমান বলেছেন, দেশে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ না করা হলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে না; অর্থাৎ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করলে বাজার নিয়ন্ত্রণও সম্ভব হবে। এখন কীভাবে এই মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, তা নিশ্চয়ই সরকারের হর্তাকর্তারা বেশ ভালো করে জানেন। প্রত্যেকে শুধু নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করলেই কেল্লাফতে!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সাংবাদিক বিভুরঞ্জন সরকারের খোঁজ মিলছে না

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের নতুন বেতন নির্ধারণে কমিটি

চাকরির নামে মিরপুর-শেওড়াপাড়ায় বাসায় ডেকে নারীর সঙ্গে ভিডিও ধারণের পর টাকা হাতিয়ে নিত ‘হানি ট্র্যাপ’ চক্র

দুস্থদের ৩৪ লাখ টাকা নিয়ে লাপাত্তা মোহনগঞ্জ সমাজসেবা কর্মকর্তা

৫ দুর্বল ব্যাংক একীভূতকরণে অর্থায়ন নিয়ে শঙ্কা

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত