Ajker Patrika

জাটকা জব্দে সমন্বয়হীনতা

খান রফিক, বরিশাল
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৫৮
জাটকা জব্দে সমন্বয়হীনতা

বরিশালে জাটকা জব্দ ও বণ্টন নিয়ে সমন্বয়হীনতার অভিযোগ উঠেছে নৌ পুলিশ ও মৎস্য অধিদপ্তরের মধ্যে। মৎস্য কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, নৌপুলিশ তাদের কিংবা টাস্কফোর্স কমিটিকে না জানিয়েই জাটকা জব্দ করে বণ্টন করছে। তবে নৌপুলিশ দাবি করছে, মৎস্য অধিদপ্তর থেকে কোনো অভিযান পরিচালনা করছে না, তাই তারা বসে থাকতে পারে না।

গতকাল শনিবার প্রায় ১৩০ মণ জাটকা জব্দ করেছে নৌপুলিশ। সেগুলো দুস্থদের মাঝে বণ্টন করা হয় পুলিশ লাইনসে। এর আগে দুই দফায় শত মণ এবং দু শ মণ ইলিশ জব্দ করে নৌপুলিশ। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতুর ঢালে শত শত এ জাটকা বাস, ট্রাক থেকে উদ্ধার করা হচ্ছে।

বরিশাল সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ও টাস্কফোর্স কমিটির সদস্য সঞ্জিব সন্যামত বলেন, ‘নৌপুলিশ হলো সহযোগী বাহিনী। তারা জাটকা জব্দ করে ন্যস্ত করবে মৎস্য অধিদপ্তরকে। কিন্তু নৌপুলিশ তাঁদের অভিযান জানাচ্ছে না। টাস্কফোর্স কমিটিও জানে না। নিয়ম হলো টাস্কফোর্সের মাধ্যমে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে জাটকা বণ্টন হবে। কিন্তু এটা নিয়ে অসন্তোষ আছে। আগামী টাস্কফোর্স সভায় তারা সমন্বয়হীনতার বিষয়টি অবহিত করবেন।’

তবে নৌপুলিশের বরিশাল রেঞ্জ পুলিশ সুপার কফিল উদ্দিন বলেন, ‘তারা শনিবারও ১৩০ মণ জাটকা জব্দ করেছে। চলতি মাসে নিষেধাজ্ঞার পর থেকে নৌপুলিশ ৪৩০ মণ জাটকা উদ্ধার করে। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও পটুয়াখালী ও ভোলার নদী থেকে এসব জাটকা আসছে।’

টাস্কফোর্স এবং মৎস্য অধিদপ্তরকে অবহিত না করা প্রসঙ্গে কফিল উদ্দিন বলেন, ‘মৎস্য অধিদপ্তরকে জানানো তাদের দায়িত্ব না। জাটকা উদ্ধার তো মৎস্য অধিদপ্তরের কাজ। তারা যদি না ধরে, তাহলে নৌপুলিশ বসে থাকতে পারে না। মৎস্য অধিদপ্তরের দাবি করা ৩ টন জাটকা জব্দও প্রশ্নবিদ্ধ। তারা এতটা আটক করছে কি না তা যাচাই দরকার।’

মৎস্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপপরিচালক মো. আনিছুর রহমান বলেন, ‘ধরা পড়া জাটকা সাগর থেকে আসছে। সাগর তো আমাদের হাতে না। নৌপুলিশ যেভাবে মৎস্য অধিদপ্তরকে না জানিয়ে অভিযান চালাচ্ছে, এটা হতে পারে না। টাস্কফোর্সের নিয়ম ভেঙে নৌপুলিশ জাটকা ধরার এমন কর্মকাণ্ড কীভাবে করছে, তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে শত মণ জাটকা জব্দ করে নৌপুলিশ। তবে জব্দকৃত জাটকা বিতরণকালে চরম হট্টগোল বাধে। বরিশাল সদর নৌ-থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসআই নূরুল আমীন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সকালে জব্দকৃত মাছ অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।

জাটকা বিতরণের খবর পেয়ে আমানতগঞ্জ, পলাশপুর, রসুলপুর, কেডিসি ও ভাটারখালের কয়েক শ মানুষ ব্যাগ নিয়ে ভিড় করে থানার গেটে। একপর্যায়ে জাটকাপ্রত্যাশী অনেকের ওপর লাঠিচার্জ করেন পুলিশ সদস্যরা। মাছ নিতে আসা আমানতগঞ্জের একাধিক ব্যক্তি বলেন, পুলিশ অনেককে পিটিয়ে আহত করেছে। এ সময় অনেককে দেখা গেছে, ব্যাগভর্তি জাটকা নিয়ে যেতে। মৎস্য অধিদপ্তর বলছে, এ ধরনের উদ্ধারকাজ তাদের না জানিয়ে করে নৌপুলিশ। 
তবে নৌপুলিশের এসপি কফিল উদ্দিন বলেন, ‘উদ্ধারকৃত জাটকা যথাযথ নিয়মে বিতরণ করা হয়। শনিবারের উদ্ধার কার্যক্রমও জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে জানিয়ে করা হয়েছে।’

টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যসচিব ও বরিশাল জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘যেহেতু মাছের বিষয়, সেহেতু মৎস্য অধিদপ্তরকে অবহিত করা উচিত। আইনে আছে নৌপুলিশ উদ্ধার করতে পারবে। কিন্তু বিচারিক ক্ষমতা তো তাদের নেই। একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে এটি বণ্টন করতে হবে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

তোরা যারা রাজাকার, সময় থাকতে বাংলা ছাড়: ফেসবুকে বাকের মজুমদার

সমাবেশে দলীয় স্লোগান ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা দেওয়া প্রসঙ্গে এনসিপির বিবৃতি

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সমঝোতায় এক দিনে ১০০ ডলার কমল সোনার দাম

যুদ্ধ বলিউডের সিনেমা নয়: ভারতের সাবেক সেনাপ্রধান

কঠোর হচ্ছে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি, স্থায়ী বসবাসের আবেদনে অপেক্ষা ১০ বছর

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত