Ajker Patrika

লোকসানের শঙ্কায় ফুলচাষি

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৫: ৪৭
লোকসানের শঙ্কায় ফুলচাষি

করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় ঝিকরগাছার গদখালীর ফুলচাষিরা নতুন করে লোকসান শঙ্কায় পড়েছেন। টানা দুই বছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ, ঘূর্ণিঝড় আম্ফানসহ অসময়ের বৃষ্টির ক্ষতি কাটিয়ে যখন নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন ফুলচাষিরা, তখন করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ ফুলচাষিদের আবার শঙ্কায় ফেলেছে। ফুলচাষিরা বলছেন, বিজয় দিবসে কিছুটা দাম পেলেও সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের দাম কমতে শুরু করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার গদখালী ফুলবাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সংক্রমণ বাড়ার আগে বিভিন্ন ফুল যে দামে বিক্রি হয়েছিল বর্তমান সে দাম নেমে এসেছে ৪ ভাগের ১ ভাগে। বাজারে এখন প্রতি হাজার গাঁদা ফুল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়, যা সপ্তাহখানেক আগে ছিল ৮০০-৯০০ টাকা। একটি গোলাপ ফুল বিক্রি হচ্ছে ২ টাকা করে, যা আগে বিক্রি হয়েছে ৪-৬ টাকায়। প্রতিটি রজনীগন্ধা বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৫-৬ টাকায়, যা আগে ছিল ৭-১০ টাকা। রংভেদে প্রতিটি গ্ল্যাডিওলাস বিক্রি হচ্ছে ৬-৯ টাকায়, যা আগে ছিল ৯-১৫ টাকায়। জারবেরা বিক্রি হচ্ছে ৬-৮ টাকায়, যা আগে ছিল ৮-১৫ টাকায়। প্রতি আঁটি কামিনীপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়, যা আগে ছিল ৫০-৬০ টাকা। জিপসির আঁটি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকায়, যা আগে বিক্রি হতো ৩০-৪৫ টাকায়।

গদখালী বাজারের ফুল ব্যবসায়ী সেলিম রেজা বলেন, ‘করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার নতুন করে যে বিধিনিষেধ দিয়েছে তাতে সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজন কমে গেছে। ফলে ফুলের চাহিদাও কমে গেছে। তাই বাজারে ফুলের দাম একপ্রকার নেই বললেই চলে।’

হাড়িয়া মাঠের ফুলচাষি শাহজান আলী বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের দাম কমে গেছে। ফলে ফুল তোলার মতো হলেও তুলছি না। যদি দাম ভালো পাই, তাহলে আমার শেডের জারবেরা ফুল প্রায় দুই লাখ টাকায় বিক্রি হবে। আর যে দুই বিঘায় গ্ল্যাডিওলাস ও এক বিঘা জমিতে গাঁদা ফুল রয়েছে তা ৪-৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব।’

ফুল কানন পানিসারা মাঠে জারবেরা ফুলের খেত পরিচর্যা করছিলেন ফুলচাষি আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘এক বিঘা জমিতে জারবেরা, চন্দ্রমল্লিকা, চায়না গোলাপ রয়েছে। তা ছাড়া ১০ কাঠা জমিতে গ্ল্যাডিওলাস ও ১৫ কাঠা জমিতে গাঁদা ফুল রয়েছে। গত বছর করোনাভাইরাসের প্রকোপ এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষত কাটিয়ে বিজয় দিবসে দেড় লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছিলাম। আশা করছিলাম এ বছরের বিভিন্ন দিবসে অন্তত চার লাখ টাকার ফুল বিক্রি করতে পারবে। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুলের দাম কমে গেছে। ফুলের দাম যদি আরও পড়ে যায় এবং লকডাউন শুরু হয় তাহলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে মরা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।’

কথা হয় কুলিয়া গ্রামের শের আলী, হাড়িয়ার মোমেনা খাতুন, ইমামুল হোসেনের, বল্লার শামীম রেজা, রাশিদুল ইসলাম, আজিজুর রহমানের সঙ্গে। ইমামুল হোসেন বলেন, ‘করোনাকালীন খেতে লাখ লাখ টাকার ফুল থাকতেও শেডের টিন বিক্রি করে সংসার চালাতে হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ‘এর আগে করোনাকালীন ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের পক্ষ থেকে ফুলচাষিদের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এবার করোনার সংক্রমণ নতুন করে বাড়ার পর আবারও ফুলের দাম কমে গেছে। কৃষকদের অবস্থা বিবেচনা করে আবারও সহযোগিতার চেষ্টা করা করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

নারী কমিশনের রিপোর্ট বাতিল হলে অন্যগুলোও বাতিলযোগ্য: উমামা ফাতেমা

এস আলমের জামাতার পেটে ৩৭৪৫ কোটি টাকা

হেফাজতের সমাবেশে জুলাইয়ের নারীদের গালিগালাজের নিন্দা জানাই: রিফাত রশিদ

ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগী নেই ১ শতাংশও

জামায়াতের ‘রোহিঙ্গা রাজ্যের প্রস্তাব’ প্রত্যাখ্যান করল মিয়ানমার সরকার

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত