Ajker Patrika

বিতর্কের উত্তাপে কেরালা স্টোরি

বিতর্কের উত্তাপে কেরালা স্টোরি

কখনো রাজনৈতিক স্বার্থে, কখনো বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর মত প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে সিনেমার আশ্রয় নেওয়া হয়। কারণ কেবল সিনেমাই পারে অল্প সময়ে দর্শকদের মাঝে বিরাট প্রভাব বিস্তার করতে। বিভিন্ন দেশে তাই যুগে যুগে তৈরি হয়েছে প্রোপাগান্ডা সিনেমা। ভারতেও ইদানীং এ প্রবণতা বেড়েছে। গত বছর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমা নিয়ে যে তুলকালাম ঘটে গেছে ভারতে, সে পরিস্থিতি ফিরে এসেছে আবারও। এবার বিতর্ক শুরু হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ নিয়ে।

শুক্রবার ভারতে মুক্তি পেয়েছে সুদীপ্ত সেন পরিচালিত সিনেমাটি। মুক্তির দিন থেকেই ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ দেখতে হলে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শক। ফলে মাত্র পাঁচ দিনে সিনেমাটির আয় ৫০ কোটি রুপি ছাড়িয়ে গেছে। শুধু বক্স অফিস পরিস্থিতিই নয়, সিনেমাটিকে কেন্দ্র একই সঙ্গে উত্তপ্ত ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশও। তামিলনাড়ুতে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র প্রদর্শন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যেখানকার গল্প নিয়ে সিনেমাটি তৈরি, নিষিদ্ধ হয়েছে সেই কেরালাতেও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গেও বন্ধ করা হয়েছে এর প্রদর্শন। গত সোমবার সন্ধ্যা থেকেই একে একে কলকাতার মাল্টিপ্লেক্সগুলোতে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’র সব শো বাতিল করা হয়।

বিষয়টি নিয়ে পরিচালক সুদীপ্ত সেন বলেন, ‘এই ধরনের পদক্ষেপ একেবারে অবৈধ। যে সিনেমাকে সেন্সর বোর্ড ছাড়পত্র দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছেন, সিনেমাটি দেশের নাগরিকদের দেখার অধিকার রয়েছে। সেটার স্ক্রিনিং বন্ধ করার কোনো আইন আছে কি না জানা নেই। তবে ভারতীয় বিচারব্যবস্থার ওপর আমার আস্থা রয়েছে। আমরা আইনের পথেই যা করার করব।’

একদিকে যেমন দ্য কেরালা স্টোরি নিষিদ্ধ হচ্ছে, অন্যদিকে বিজেপিশাসিত কয়েকটি রাজ্যে সিনেমাটিকে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। আরও বেশি দর্শককে উৎসাহিত করা হচ্ছে দ্য কেরালা স্টোরি দেখার জন্য। এ সিনেমার প্রশংসায় সরব হয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ তাঁর দলের অনেকে।

বাংলায় নিষিদ্ধ হওয়ার পরদিনই বিতর্কিত ‘দ্য কেরালা স্টোরি’কে করমুক্ত ঘোষণা করে উত্তর প্রদেশ। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ টুইট করে জানিয়েছেন, কেবিনেট মন্ত্রীদের সঙ্গে বসে সিনেমাটি দেখবেন তিনি। এর আগে মধ্যপ্রদেশ একে করমুক্ত ঘোষণা করে।

কী আছে এ সিনেমায়
নির্মাতা দাবি করেছেন, সত্য ঘটনা অবলম্বনে বানানো হয়েছে ‘দ্য কেরালা স্টোরি’। দেখানো হয়েছে, কেরালার একটি গ্রামের এক হিন্দু কলেজছাত্রী শালিনীকে টার্গেট করে তার এক মুসলমান সহপাঠী, মৌলবাদীদের সঙ্গে যার যোগাযোগ আছে। তাদের পরিকল্পনায় শালিনী এক মুসলমান যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে, তাদের বিয়ে হয়। এরপর শালিনীকে মৌলবাদে দীক্ষিত করা হয়। নাম বদল করে ফাতিমা হয়ে যাওয়া শালিনীকে পাচার করা হয় ইসলামিক স্টেটে।
সিনেমায় দাবি করা হয়েছে, কেরালা থেকে শালিনীর মতো এমন ৩২ হাজার নারীকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করে সিরিয়া ও আফগানিস্তানে আইএসআইয়ের প্রশিক্ষণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এতে সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানা হিসেবে দেখানো হয়েছে কেরালাকে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত