রহমান মৃধা
সুইডেনে বাড়িতে টিভি থাকলে খাজনা দিতে হয়, এখনো সেটা বহাল রয়েছে। অতীতে কিছুটা সহজ ছিল ফাঁকি দেওয়ার, এখন সে গুড়ে বালি। অতীতে কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে ফোন করে বা হঠাৎ করে বাসায় বা বাড়িতে এসে তলব করত। অনেকে খাজনা দেওয়ার ভয়ে টিভি নেই বলেছে, অনেকে ধরা খেয়ে প্রচুর দণ্ডও দিয়েছে। ১ কোটি লোকের বাস এখানে। আনুমানিক ৮০ শতাংশ লোকের বাড়িতে টিভি আছে। তারপরও রাষ্ট্র সঠিক খাজনা না পাওয়ার কারণে কয়েক বছর আগে বাধ্যতামূলক খাজনা নির্ধারণ করে।
এখন ১৮ বছর থেকে শুরু করে সবার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৩০০ ক্রোনার বছরে খাজনা দিতে হয়।
টিভি থাক আর না থাক, বাড়িতে একজন বা দশজন থাকে সেটা ব্যাপার না, সবাইকে বাধ্যতামূলক টিভির খাজনা দিতে হয়। যাই হোক, খাজনাপাতি সবই যখন দিই এবং টিভি যখন আছে মাঝেমধ্যে তা-ও একটু দেখি। সেদিন সকালের একটি অনুষ্ঠান নজর কেড়েছে। সেটা থেকে জানলাম প্রতিবছর বিশ্বে গড়ে ১০ শতাংশ নারী (বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে বয়স্ককাল পর্যন্ত) এন্ডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
নারীর জরায়ু এবং যোনিপথের মধ্যবর্তী অংশে একটা টিস্যুকে বলা হয় এন্ডোমেট্রিয়াম। এই এন্ডোমেট্রিয়ামের সংক্রমণ থেকেই এন্ডোমেট্রিওসিসের উৎপত্তি। এ রোগের লক্ষণ মূলত তলপেট কিংবা শ্রোণিপথের ব্যথা। এমনকি এ সময় ঋতুস্রাবও হয়ে থাকে। মূল সমস্যা এখানেই যে অনেকে এই ব্যথাকে ঋতুস্রাবের সময়কালীন ব্যথা ভেবে ভুল করেন। এন্ডোমেট্রিওসিসের ফলে যে অসংখ্য সমস্যা হতে পারে, তা হয়তো অনেকের জানা নেই। মাসিকের সময় তলপেটজুড়ে তীব্র ব্যথা, অনেক সময় সিজারের সেলাইয়ের দাগ বরাবর প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। মাসিকের দুই-তিন দিন আগে থেকে শুরু হতে পারে ব্যথা, যা মাসিকের সময় তীব্র আকার ধারণ করে। মাসিক শেষ হওয়ার পরও কয়েক দিন ব্যথা থেকে যায়। মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও একটি লক্ষণ হতে পারে। সহবাসের সময় অসহ্য ব্যথা হতে পারে। ৪০-৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে এর কারণে বন্ধ্যা বা সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে। এই রোগ শনাক্ত করা মুশকিল, তবে আলট্রাসনোগ্রাফিতে সামান্য ধারণা পাওয়া যেতে পারে। একমাত্র ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে সঠিকভাবে সমস্যাটি নির্ণয় করা যায়। এন্ডোমেট্রিওসিসকে শনাক্ত করার জন্য ল্যাপারোস্কপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তার মানে কি এই ব্যাধি হলে কোনো সমাধান নেই? আছে, যদি এই ব্যাধির কারণগুলো বুঝতে পারা যায়। বিশ্বের অনেক দেশে অনেকেই এই ব্যথাটুকুকে স্বাভাবিক বা অপারেশনের পরবর্তী ব্যথা ভেবে নেয়, তাই অধিকাংশ সময় এই রোগ গুরুতর হয়ে ওঠে। এখন প্রশ্ন হলো এন্ডোমেট্রিওসিস হলে ব্যথা হয় কেন? যখন এই ব্যাধিতে আক্রান্ত নারী রজঃস্বলা হয়ে ওঠে তখন তার তলপেটের কোষ এবং টিস্যু থেকে রক্তক্ষরণ হয়। মূলত জরায়ুর বাইরের টিস্যু এবং কোষ—উভয় থেকেই রক্তক্ষরণ হয় বিধায় তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। তলপেটে অবস্থানরত অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সেই রক্তক্ষরণের ফলে চাপ সৃষ্টি হয়।
আমি চিকিৎসক নই। তবু টিভিতে ঘটনাটি জানার পর মনে হলো বিষয়টি লিখি। লেখার মূল উদ্দেশ্য, দেশের চিকিৎসকদের অনুপ্রেরণা দেওয়া, তাঁরা যেন নানা ধরনের গণমাধ্যমের সাহায্যে এ ধরনের জটিল রোগগুলো এবং তা প্রতিরোধের নানা উপায়গুলো তুলে ধরেন।
সচরাচর আমরা নিজের শরীরের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারি না। চেপে রাখার ফলে সমস্যাগুলো আরও গুরুতর হয়। চেপে না রেখে বরং শরীরের প্রতি আরও সচেতন হতে হবে।
একটু খেলাধুলা বা শরীরচর্চা নিশ্চয়ই এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অন্যান্য রোগকে প্রতিরোধে সাহায্য করে। দুগ্ধজাত দ্রব্য, রেডমিট, কফি, গম থেকে তৈরি খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। পেটব্যথা হোক কিংবা অন্য যেকোনো লক্ষণ, সবচেয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।
সুইডেনের টিভিতে নিয়মিত নানা ধরনের রোগের ওপর চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা নাগরিকের নিজ শরীরের প্রতি আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশেও নিশ্চয়ই এ ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবু বিষয়টি তুলে ধরলাম পাঠককে খানিকটা মনে করিয়ে দিতে যে যেকেনো উপসর্গে সচেতনতা জরুরি।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
সুইডেনে বাড়িতে টিভি থাকলে খাজনা দিতে হয়, এখনো সেটা বহাল রয়েছে। অতীতে কিছুটা সহজ ছিল ফাঁকি দেওয়ার, এখন সে গুড়ে বালি। অতীতে কর্তৃপক্ষ মাঝেমধ্যে ফোন করে বা হঠাৎ করে বাসায় বা বাড়িতে এসে তলব করত। অনেকে খাজনা দেওয়ার ভয়ে টিভি নেই বলেছে, অনেকে ধরা খেয়ে প্রচুর দণ্ডও দিয়েছে। ১ কোটি লোকের বাস এখানে। আনুমানিক ৮০ শতাংশ লোকের বাড়িতে টিভি আছে। তারপরও রাষ্ট্র সঠিক খাজনা না পাওয়ার কারণে কয়েক বছর আগে বাধ্যতামূলক খাজনা নির্ধারণ করে।
এখন ১৮ বছর থেকে শুরু করে সবার ক্ষেত্রে ১ হাজার ৩০০ ক্রোনার বছরে খাজনা দিতে হয়।
টিভি থাক আর না থাক, বাড়িতে একজন বা দশজন থাকে সেটা ব্যাপার না, সবাইকে বাধ্যতামূলক টিভির খাজনা দিতে হয়। যাই হোক, খাজনাপাতি সবই যখন দিই এবং টিভি যখন আছে মাঝেমধ্যে তা-ও একটু দেখি। সেদিন সকালের একটি অনুষ্ঠান নজর কেড়েছে। সেটা থেকে জানলাম প্রতিবছর বিশ্বে গড়ে ১০ শতাংশ নারী (বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু করে বয়স্ককাল পর্যন্ত) এন্ডোমেট্রিওসিসে আক্রান্ত হচ্ছেন।
নারীর জরায়ু এবং যোনিপথের মধ্যবর্তী অংশে একটা টিস্যুকে বলা হয় এন্ডোমেট্রিয়াম। এই এন্ডোমেট্রিয়ামের সংক্রমণ থেকেই এন্ডোমেট্রিওসিসের উৎপত্তি। এ রোগের লক্ষণ মূলত তলপেট কিংবা শ্রোণিপথের ব্যথা। এমনকি এ সময় ঋতুস্রাবও হয়ে থাকে। মূল সমস্যা এখানেই যে অনেকে এই ব্যথাকে ঋতুস্রাবের সময়কালীন ব্যথা ভেবে ভুল করেন। এন্ডোমেট্রিওসিসের ফলে যে অসংখ্য সমস্যা হতে পারে, তা হয়তো অনেকের জানা নেই। মাসিকের সময় তলপেটজুড়ে তীব্র ব্যথা, অনেক সময় সিজারের সেলাইয়ের দাগ বরাবর প্রচণ্ড ব্যথা হতে পারে। মাসিকের দুই-তিন দিন আগে থেকে শুরু হতে পারে ব্যথা, যা মাসিকের সময় তীব্র আকার ধারণ করে। মাসিক শেষ হওয়ার পরও কয়েক দিন ব্যথা থেকে যায়। মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও একটি লক্ষণ হতে পারে। সহবাসের সময় অসহ্য ব্যথা হতে পারে। ৪০-৬০ শতাংশের ক্ষেত্রে এর কারণে বন্ধ্যা বা সন্তান ধারণে সমস্যা হতে পারে। এই রোগ শনাক্ত করা মুশকিল, তবে আলট্রাসনোগ্রাফিতে সামান্য ধারণা পাওয়া যেতে পারে। একমাত্র ল্যাপারোস্কপির মাধ্যমে সঠিকভাবে সমস্যাটি নির্ণয় করা যায়। এন্ডোমেট্রিওসিসকে শনাক্ত করার জন্য ল্যাপারোস্কপির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। তার মানে কি এই ব্যাধি হলে কোনো সমাধান নেই? আছে, যদি এই ব্যাধির কারণগুলো বুঝতে পারা যায়। বিশ্বের অনেক দেশে অনেকেই এই ব্যথাটুকুকে স্বাভাবিক বা অপারেশনের পরবর্তী ব্যথা ভেবে নেয়, তাই অধিকাংশ সময় এই রোগ গুরুতর হয়ে ওঠে। এখন প্রশ্ন হলো এন্ডোমেট্রিওসিস হলে ব্যথা হয় কেন? যখন এই ব্যাধিতে আক্রান্ত নারী রজঃস্বলা হয়ে ওঠে তখন তার তলপেটের কোষ এবং টিস্যু থেকে রক্তক্ষরণ হয়। মূলত জরায়ুর বাইরের টিস্যু এবং কোষ—উভয় থেকেই রক্তক্ষরণ হয় বিধায় তীব্র ব্যথা অনুভূত হয়। তলপেটে অবস্থানরত অন্যান্য অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে সেই রক্তক্ষরণের ফলে চাপ সৃষ্টি হয়।
আমি চিকিৎসক নই। তবু টিভিতে ঘটনাটি জানার পর মনে হলো বিষয়টি লিখি। লেখার মূল উদ্দেশ্য, দেশের চিকিৎসকদের অনুপ্রেরণা দেওয়া, তাঁরা যেন নানা ধরনের গণমাধ্যমের সাহায্যে এ ধরনের জটিল রোগগুলো এবং তা প্রতিরোধের নানা উপায়গুলো তুলে ধরেন।
সচরাচর আমরা নিজের শরীরের সমস্যাগুলোকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারি না। চেপে রাখার ফলে সমস্যাগুলো আরও গুরুতর হয়। চেপে না রেখে বরং শরীরের প্রতি আরও সচেতন হতে হবে।
একটু খেলাধুলা বা শরীরচর্চা নিশ্চয়ই এন্ডোমেট্রিওসিসের মতো অন্যান্য রোগকে প্রতিরোধে সাহায্য করে। দুগ্ধজাত দ্রব্য, রেডমিট, কফি, গম থেকে তৈরি খাবার এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। পেটব্যথা হোক কিংবা অন্য যেকোনো লক্ষণ, সবচেয়ে আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া শ্রেয়।
সুইডেনের টিভিতে নিয়মিত নানা ধরনের রোগের ওপর চিকিৎসকেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন, যা নাগরিকের নিজ শরীরের প্রতি আরও সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশেও নিশ্চয়ই এ ধরনের সুযোগ রয়েছে। তবু বিষয়টি তুলে ধরলাম পাঠককে খানিকটা মনে করিয়ে দিতে যে যেকেনো উপসর্গে সচেতনতা জরুরি।
লেখক: সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি বেড়েই চলছে। এ কারণে চালক ও যাত্রীদের কাছে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠছে এই সড়ক। ডাকাতির শিকার বেশি হচ্ছেন প্রবাসফেরত লোকজন। ডাকাতেরা অস্ত্র ঠেকিয়ে লুট করে নিচ্ছে সর্বস্ব। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়েও ঘটছে ডাকাতির ঘটনা।
০২ মার্চ ২০২৫বিআরটিসির বাস দিয়ে চালু করা বিশেষায়িত বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) লেনে অনুমতি না নিয়েই চলছে বেসরকারি কোম্পানির কিছু বাস। ঢুকে পড়ছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। উল্টো পথে চলছে মোটরসাইকেল। অন্যদিকে বিআরটিসির মাত্র ১০টি বাস চলাচল করায় সোয়া চার হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প থেকে...
১৬ জানুয়ারি ২০২৫গাজীপুর মহানগরের বোর্ডবাজার এলাকার ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা পিকনিকে যাচ্ছিলেন শ্রীপুরের মাটির মায়া ইকো রিসোর্টে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বাসগুলো গ্রামের সরু সড়কে ঢোকার পর বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে যায় বিআরটিসির একটি দোতলা বাস...
২৪ নভেম্বর ২০২৪ঝড়-জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষায় সন্দ্বীপের ব্লক বেড়িবাঁধসহ একাধিক প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫৬২ কোটি টাকা। এ জন্য টেন্ডারও হয়েছে। প্রায় এক বছর পেরিয়ে গেলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ শুরু করছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তাগাদায়ও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন...
২০ নভেম্বর ২০২৪