Ajker Patrika

ফসলি খেতে গর্ত খুঁড়ে পাশের সড়ক সংস্কার

পীরগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ২৬ জুন ২০২২, ১৫: ৪৮
ফসলি খেতে গর্ত খুঁড়ে পাশের সড়ক সংস্কার

পীরগঞ্জে ফসলি জমিতে গর্ত করে মাটি নিয়ে পাশের চার সড়ক সংস্কারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মাটি নেওয়া হলেও কৃষকদের নিয়ম অনুযায়ী মূল্য দেওয়া হয়নি। আর জোর করে মাটি নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা দেওয়া কৃষকদের ঠিকাদারের লোকজন মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন।

উপজেলার টুকুরিয়া, বড় আলমপুর, চতরা ও কাবিলপুর ইউনিয়নে এ সড়ক সংস্কার চলছে। গত শুক্রবার প্রকল্পের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা রাস্তাগুলোর কাজ পরিদর্শন করেছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে পীরগঞ্জে ৯ কোটি টাকা ব্যয়ে দুটি প্যাকেজে চারটি ইউনিয়নের রাস্তা সংস্কারের কাজ হচ্ছে। এতে মাটির কাজের জন্য দেড় কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কৃষকের আবাদি জমি এস্কাভেটর যন্ত্র দিয়ে গর্ত করে মাটি তুলে রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ধর্মদাসপুর ও শিমুলবাড়ীর কাশেম মিয়া, আমজাদ সরকার ও তাজেরুল বলেন, তাঁরা শুনেছেন, রাস্তায় মাটি কিনে নিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু তাঁরা টাকা পাননি। তাঁরা জমি থেকে মাটি কাটায় বাঁধা দিলে ঠিকাদারের লোকজন মামলার হুমকি দিয়ে জোর করে গর্ত করেছেন। এখন এই গর্ত কীভাবে ভরাট করবেন তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তাঁরা।

বড় আলমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘লোকজনকে হুমকি দিয়ে ঠিকাদারের স্থানীয় কয়েকজন জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়েছেন। আমি ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকদের ক্ষতিপূরণের জন্য দাবি করছি। রাস্তাটির কাজের উদ্বোধনী দিনেও আমি এ ব্যাপারে বক্তব্য দিয়েছি।’

কাজটি করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল বিল্ডার্স অ্যান্ড কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। যোগাযোগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটির প্রতিনিধি সুমন মিয়া বলেন, ‘আমরা কৃষকদের মাটির টাকা দিইনি। এ ব্যাপারে পরে কথা বলব।’ এ বলেই তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিরোদা রানী রায় বলেন, ‘আমি বড় আলমপুর ইউনিয়নের ধর্মদাসপুরে রাস্তার এইচবিবি কাজের উদ্বোধন করতে গিয়েই প্রথমে পাশের জমি থেকে মাটি কাটার ছবি তুলেছি। আমি এ ব্যাপারে শেষ পর্যন্ত দেখব।’

প্রকল্পের উপপরিচালক (ডিপিডি) মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘ঠিকাদার যদি মাটির টাকা না দেয়, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিকেরা পিডির কাছে লিখিত অভিযোগ করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে আমরা মাটির টাকা দেওয়ার জন্য ঠিকাদারকে চাপ সৃষ্টি করতে পারব।’

জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) সুব্রত পাল চৌধুরী বলেন, ‘পীরগঞ্জের ওই রাস্তাগুলোতে মাটি দেওয়ার জন্য টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে। ঠিকাদার যদি টাকা না দেয় তাহলে আমার সঙ্গে কথা বলবেন। আর রাস্তার কিনারা থেকে পাঁচ ফুট দূরের মাটি নেওয়া যাবে। অবশ্যই জমির মালিকদের সঙ্গে সমঝোতা করতে হবে। যদি কৃষক তাঁর জমি থেকে মাটি নিতে না দেন, সে ক্ষেত্রে মাটি অন্য স্থান থেকে পরিবহন করে আনতে হবে। এ জন্য টাকা বরাদ্দ দেওয়া আছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত