Ajker Patrika

কারসাজির সন্দেহে ডলার

আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২২, ১০: ৫৪
কারসাজির সন্দেহে ডলার

শত কড়াকড়িতেও ডলারের দাম সহনীয় না হওয়ায় এর পেছনে কারসাজি আর পাচারের সন্দেহ প্রকট হচ্ছে। এক মাসের ব্যবধানে আমদানি পর্যায়ে অন্তত ২৩ হাজার কোটি টাকার ডলার সাশ্রয় হলেও বাজারে এর প্রভাব নেই। ব্যাংক রেটের চেয়ে খোলাবাজারে অন্তত ১৫ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে ডলার। বিশ্লেষকেরা মনে করেন, এর পেছনে একটি জালিয়াত চক্র সক্রিয়। এর মাধ্যমে ডলার পাচার হয়ে যাচ্ছে বলে তাঁরা সন্দেহ করছেন। এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ ব্যাংকও কঠোর অভিযান শুরু করেছে। কয়েকটি মানি চেঞ্জারেরর লাইসেন্স স্থগিত এবং আরও কিছুকে শোকজ করা হয়েছে। তারপরও কারসাজি ও পাচার হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সম্প্রতি ভারতে পাচারকালে ৮০ হাজার ডলার উদ্ধারও করা হয়েছে।

জানা যায়, কয়েক মাস ধরে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ডলার সংকট তীব্র হয়। সরকার দফায় দফায় ডলারের দামের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়ন করে। একই সঙ্গে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গাড়িসহ সব ধরনের বিলাসী পণ্য আমদানিতে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। ফলে এক মাসের ব্যবধানে অন্তত ৩১ শতাংশ কম ঋণপত্র খোলা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এতে দেশের প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকার সমমানের ডলার সাশ্রয় হয়। এই যে ২৩ হাজার কোটি টাকার ডলার সাশ্রয় হলো, বাজারে অবশ্য এর প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

খোলাবাজারে ঠিকই ডলারের দাম বেড়ে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনামতো যেখানে ডলারের ব্যাংক রেট ৯৫ টাকার নিচে, সেখানে খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১১২ টাকা পর্যন্ত। সাধারণত ডলারের বেশি চাহিদা তৈরি হয় আমদানির জন্য ঋণপত্র খোলায়। সেখানে যেহেতু চাহিদা কমেছে, তাহলে খোলাবাজারে কেন দাম এত বেশি হবে–এ প্রশ্ন সামনে এসেছে। এর নেপথ্যের কারণ খুঁজতে মাঠে নামে বাংলাদেশ ব্যাংকের টিম। তারা দফায় দফায় অভিযান চালিয়ে এরই মধ্যে ৫টি মানি চেঞ্জারের লাইসেন্স স্থগিত করে দিয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪২টি মানি চেঞ্জারকে সন্দেহজনক লেনদেনের জন্য শোকজ করেছে। ৯টি প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে। ডলারের দামে কারসাজির সন্দেহে যখন এতসব পদক্ষেপ চলমান, তখনই চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৮০ হাজার ডলার উদ্ধারের খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডলার পাচারের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এরই মধ্যে তারা ডলার পাচার ঠেকাতে সব সীমান্ত এলাকায় নজরদারি বাড়িয়েছে।

বিশ্লেষকেরা মনে করেন, বিভিন্ন পদক্ষেপের পরও ডলারের অস্বাভাবিক দাম, খোলাবাজারে বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযান আর সীমান্ত দিয়ে ডলার পাচারের ঘটনা ধরা পড়ার পর ডলার পাচার আর এর পেছনে কারসাজির বিষয়টি স্পষ্ট হয়েছে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পর্ষদ পরিচালক ও জনতা ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ডলারের বাজার অস্থিরতার পেছনে একটি অসাধু চক্র কাজ করছে। তারা ডলার পাচারের সঙ্গে জড়িত। তিনি বলেন, দেশে ১০ থেকে ১৫ লাখ বিদেশি কাজ করে। তারা খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে এগুলো অবৈধ উপায়ে পাচার করে। ড. জামাল উদ্দিন ধারণা করছেন, ডলার কারসাজির পেছনে কেন্দ্রীয় ব্যাংক, কোনো কোনো ব্যাংক কর্মকর্তার যোগসাজশ থাকতে পারে। এখানে বিএসইসিরও দায় রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, একদিকে আমদানি কমে আসছে, রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি আছে। একই সঙ্গে রেমিট্যান্স প্রবাহও এখন ভালো। ফলে এখন আর ডলারের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ নেই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

হোলি আর্টিজানের ঘটনায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ আটক ছিলেন অনিন্দ্য, রাজশাহীর সাবেক মেয়র লিটনের চাচাতো ভাই তিনি

‘তেলের ক্রেতা’ হিসেবে ভারতকে আর পাবে না রাশিয়া, জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প

সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় দুই কোম্পানির ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করল বাংলাদেশ

রাবির অধ্যাপকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন নিয়ম ভঙ্গের জন্য ট্রান্স নারী শিক্ষার্থীকে আজীবন বহিষ্কার, জানতে চান ১৬২ নাগরিক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত