Ajker Patrika

সড়কে খানাখন্দ, জনদুর্ভোগ

অরূপ রায়, সাভার
সড়কে খানাখন্দ, জনদুর্ভোগ

খানাখন্দে ভরা চলাচল অনুপযোগী সড়কের কারণে সাভার পৌর এলাকার একটি মহল্লার নামই বদলে গেছে। ছয় নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম ভাগলপুর মহল্লাকে লোকজন এখন খিচুড়িপাড়া হিসেবে চেনেন।

ভাগলপুর খেয়াঘাট থেকে সিরামিকস বাজার পর্যন্ত ৪০০ মিটার দীর্ঘ সড়কটি পশ্চিম ভাগলপুর মহল্লার প্রায় ১৫ হাজার লোকের একমাত্র ভরসা। এ ছাড়া মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরের ফোর্ডনগর, ধল্লা ও মোল্লাপাড়াসহ আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার মানুষ খেয়া পার হয়ে সাভারের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন এই সড়ক ব্যবহার করেন। তাই সিঙ্গাইরের কয়েকটি গ্রামসহ স্থানীয়দের কাছে সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর পরেও সড়কটি সংস্কার বা মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না।

পশ্চিম ভাগলপুরের ব্যবসায়ী জাবেদ মিয়া বলেন, ‘এক যুগেরও বেশি সময় আগে পৌরসভা থেকে সড়কটি ইটের সলিং করে দেওয়া হয়েছিল। এরপর আর সড়কটি সংস্কার বা মেরামত করা হয়নি। এ অবস্থায় ওই সড়কে ভাগলপুরের বালু ব্যবসায়ীদের ট্রাক চলাচল করায় সড়কটি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।’

ব্যবসায়ী এনামুল হক স্বপন বলেন, ‘সড়কটির কারণে এলাকার কয়েক হাজার মানুষকে সারা বছর দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। মানুষ হেঁটে চলাচল করতে পারে না। চলাচলের এই দুর্ভোগের কারণে ক্ষোভে ও কষ্টে এলাকাবাসী পশ্চিম ভাগলপুরের নাম দিয়েছে খিচুড়িপাড়া।’

ফোর্ডনগরের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, তাঁদের এলাকাসহ ধল্লা ও মোল্লাপাড়ার কয়েক শ মানুষ সারা বছর সবজির চাষ করেন। ওই সবজি সাভারের সিরামিকস বাজারে বিক্রি করেন তাঁরা। বেহাল সড়কের কারণে খেয়া পার হওয়ার পর তাঁদের মাথায় করে সবজি নিতে হয়।

শুধু ভাগলপুর খেয়াঘাট থেকে সিরামিকস বাজার সড়কই নয়, গতকাল শুক্রবার পৌর এলাকার নামাগেন্ডা, ভাগলপুর, বক্তারপুর, বাজার রোড, নামাবাজার, কাজিমুকমাপাড়া, বিনোদবাইদ, ব্যাংক কলোনি, জালেশ্বর, ইমান্দিপুর, মজিদপুর এবং চাপাইনসহ বিভিন্ন মহল্লা ঘুরে আরও অনেক সড়ক চোখে পড়ে, যা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। হাজারো খানাখন্দে ভরা এসব সড়ক দীর্ঘদিন সংস্কার করা হয় না বলে জানান স্থানীয়রা।

পৌরসভার তথ্য অনুযায়ী প্রায় ১৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাভার পৌরসভায় ২৩০ কিলোমিটার পাকা সড়ক রয়েছে। এইচবিবি ও ফ্ল্যাট সলিং সড়ক রয়েছে ১৯ কিলোমিটার। আর কাঁচা সড়ক রয়েছে প্রায় ১৮ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক পুনর্নির্মাণ বা সংস্কার করা প্রয়োজন।

পৌরসভার অন্তত ৩০ হাজার লোকের দুর্ভোগের অন্যতম কারণ উলাইল থেকে মাঝিরমোড় সড়ক। দীর্ঘদিন সংস্কার বা মেরামত না করায় পিচ, খোয়া ও সুরকি উঠে এবং বিভিন্ন অংশ দেবে গিয়ে সড়কটি অনেকটা খালের মতো হয়ে গেছে।

নামাগেন্ডার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘উলাইল-মাঝিরমোড় সড়কে সারা বছরই পানি ও কাদা জমে থাকে। বৃষ্টি হলে গর্তে ২-৩ ফুট পানি জমে। এ কারণে সড়কের দুই পাশের এলাকায় অনেকে ভাড়া থাকতে চান না।’

ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভার বাসস্ট্যান্ড থেকে নামাবাজার পর্যন্ত সড়কে কার্পেটিং করা হয় ২০১৬ সালে। প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কটি উন্নয়ন করার ৬ বছরের মধ্যে এটির পিচ ও খোয়া উঠে খানাখন্দে ভরে গেছে।

স্কুলশিক্ষক মনির হোসেন বলেন, সাভার পৌর এলাকার প্রধান সমস্যা সড়ক, আবর্জনা, বিশুদ্ধ পানি ও নর্দমা। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা এসব সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু ভোটের পরে আর প্রতিশ্রুতি পালন করেন না।

সাভার পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইমাম বলেন, ‘স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর পৌর এলাকার ভেতরে বেশ কয়েকটি সড়ক, নর্দমা ও সেতু নির্মাণের কাজ করছে। উলাইল-মাঝিরমোড় সড়ক ওই প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ফরিদপুরে পালিয়ে যাওয়া আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার, থানার ওসিকে বদলি

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় ভারতের উদ্বেগ

বিদায় বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট

কাতারের রাজপরিবারের দেওয়া বিলাসবহুল বিমান না নেওয়াটা বোকামি: ট্রাম্প

সৌদি আরবের সঙ্গে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির চুক্তি করে নিজের রেকর্ড ভাঙল যুক্তরাষ্ট্র

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত