Ajker Patrika

বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ এবং দুর্গন্ধ

সম্পাদকীয়
বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ এবং দুর্গন্ধ

সিদ্ধান্তটা আরও দুই বছর আগেই নেওয়া হয়েছিল—বর্জ্য থেকে উৎপাদন করা হবে বিদ্যুৎ। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম চীনের বেইজিংয়ে বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্ল্যান্ট পরিদর্শন করতে গিয়ে সে কথা মনে করিয়ে দিলেন। রাজধানী ঢাকার বর্জ্য দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে একদিকে যেমন শহরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা যাবে, অন্যদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে আয় করাও সম্ভব হবে। এমন ভালো খবর শুনে আনন্দ তো লাগারই কথা।

হয়তো প্রায় সবাই এ কথা স্বীকার করে নেবেন যে ঢাকা শহরের অলি-গলি ছাড়াও অনেক প্রধান সড়কে আবর্জনার ভাগাড়ের দেখা মেলে। আবার উড়াল সড়কের নিচেও পরিকল্পিত ভাগাড় রয়েছে। এসব ভাগাড়ের পাশ দিয়ে পথচারী বা যানজটে বসে থাকা যাত্রীদের দম বন্ধ করে চলা ছাড়া যেন কোনো উপায় নেই। ব্যস্ত সড়কগুলোতে এমন ভাগাড় থাকা কতটা যুক্তিসংগত, সেই প্রশ্ন রয়েই যায়। যতই ভাগাড়ের দেয়ালে চিত্রকর্ম করে সৌন্দর্য বাড়ানো হোক না কেন, দুর্গন্ধ তো দূর করা যায় না! সিটি করপোরেশন আবর্জনা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সিদ্ধান্ত তো নিয়ে নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু ব্যস্ত সড়কের বর্জ্যের দুর্গন্ধ দূর করতে কোনো উপায় নিয়ে যে আপাতত ভাবছে না, তা বর্তমান অবস্থা কোনো রকম ব্যাখ্যা ছাড়াই বলে দিচ্ছে।

আনন্দের খবরে আবার একটু ফিরে আসা যাক। মেয়র আতিক বলেছেন, যে বর্জ্যের কারণে ঢাকা শহরের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, সেই ক্ষতিকর বর্জ্য সম্পদে পরিণত করা যাবে তা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প চালু হলে। তাতে আয়ের পাশাপাশি শহর হবে পরিবেশবান্ধব। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তথ্যমতে, রাজধানীর গাবতলীর পাশের আমিনবাজার এলাকায় ডিএনসিসির জায়গায় বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে চায়না মেশিনারি ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশনের ও ডিএনসিসির এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুসারে, চীনা কোম্পানি নিজ ঝুঁকিতে প্ল্যান্ট স্থাপন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। সিটি করপোরেশন প্রয়োজনীয় জমি ও নিয়মিত বর্জ্য সরবরাহ করবে এবং উৎপাদিত বিদ্যুৎ কিনে নেবে বিদ্যুৎ বিভাগ।

আগামী জুলাই মাসে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন মেয়র আতিক। তাই একটু নড়েচড়ে বসা যায়! অন্যান্য সফল প্রকল্পের মতো এই প্রকল্পও যদি সফলতা অর্জন করতে পারে, তবে দিনশেষে লাভ তো সব স্তরের জনসাধারণেরই।

বিদ্যুৎ একটা দেশের অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম প্রধান উৎস, তা নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। নানা ঝুট-ঝামেলার কারণে যে লোডশেডিং হচ্ছে কম-বেশি দেশের সবখানেই, তা-ও অস্বীকার করা যাবে না। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে এ ধরনের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তবে পদক্ষেপ দ্রুত নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে না হয় কাজের প্রমাণ মেলে, কথায় তো আর চিড়ে ভেজে না।

আর বর্জ্য থেকে শুধু বিদ্যুৎ না, দুর্গন্ধও যে প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয়, সে কথা কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না উদ্যোক্তাদের!

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পাইপলাইনে জ্বালানি পরিবহন: ৩৪ হাজার লিটার ঘাটতি যমুনার প্রথম পার্সেলে

১টা বাজলেই আর স্কুলে থাকে না শিক্ষার্থীরা, ফটকে তালা দিয়েও ঠেকানো গেল না

চিকিৎসক হওয়ার আগেই শীর্ষ সবার শীর্ষে

আসামে ‘দেখামাত্র গুলির নির্দেশ’ বহাল থাকবে দুর্গাপূজা পর্যন্ত

ভিকারুননিসায় হিজাব বিতর্ক: বরখাস্ত শিক্ষককে পুনর্বহালের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত